কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

৮. রোযার অধ্যায়

হাদীস নং: ২৩৮৩
আন্তর্জাতিক নং: ২৩৯০
যে ব্যক্তি রমযানের দিনে স্বীয় স্ত্রীর সাথে সহবাস করে, তার কাফ্ফারা।
২৩৮২. মুসাদ্দাদ ও মুহাম্মাদ ইবনে ঈসা ...... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা জনৈক ব্যক্তি নবী করীম (ﷺ) এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করে, আমি ধ্বংস হয়েছি। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, তোমার কী হয়েছে? সে বলে, রোযা অবস্থায় আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছি। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, আযাদ করার মত তোমার কোন দাস-দাসী আছে কী? সে বলে, না। তিনি বলেন, তুমি কি ক্রমাগত দু‘মাস রোযা রাখতে সক্ষম? সে বলে, না। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কি ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়াতে পারবে? সে বলে, না। তিনি তাকে বলেন, তুমি বস।

এ সময় নবী করীম (ﷺ) এর নিকট এক ‘ইরক’ (থলে ভর্তি) খেজুর এল। এরপর নবী করীম (ﷺ) তাকে খুরমা ভর্তি একটি থলে প্রদান করে বলেন, তুমি তা দ্বারা সাদ্‌কা করো। সে ব্যক্তি বলে, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! মদীনার উভয় পার্শ্বে আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্থ আর কোন পরিবার নেই। রাবী বলেন, এতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এমনভাবে হেসে ওঠেন যে, তাঁর সম্মুখের দন্তরাজি প্রকাশ হয়ে পড়ে। তিনি তাকে বলেন, তবে তোমরাই তা ভক্ষণ করো। রাবী মুসাদ্দাদ অন্য বর্ণনায় বলেন, তাঁর দন্তরাজি বের হয়ে পড়ে।
باب كَفَّارَةِ مَنْ أَتَى أَهْلَهُ فِي رَمَضَانَ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى، - الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، - قَالَ مُسَدَّدٌ - حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَتَى رَجُلٌ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ هَلَكْتُ . فَقَالَ " مَا شَأْنُكَ " . قَالَ وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ . قَالَ " فَهَلْ تَجِدُ مَا تُعْتِقُ رَقَبَةً " . قَالَ لاَ . قَالَ " فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ " . قَالَ لاَ . قَالَ " فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تُطْعِمَ سِتِّينَ مِسْكِينًا " . قَالَ لاَ . قَالَ " اجْلِسْ " . فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ فَقَالَ " تَصَدَّقْ بِهِ " . فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَهْلُ بَيْتٍ أَفْقَرَ مِنَّا فَضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَدَتْ ثَنَايَاهُ قَالَ " فَأَطْعِمْهُ إِيَّاهُمْ " . وَقَالَ مُسَدَّدٌ فِي مَوْضِعٍ آخَرَ أَنْيَابُهُ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

রমযানে রোযা রেখে দিনে স্ত্রী সহবাস করলে বীর্যপাত না হলেও স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে।

কাফফারা আদায়ের নিয়ম
একটি রোযার জন্য দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখতে হবে। রোযা রাখতে সক্ষম না হলে ৬০ জন ফকির-মিসকীনকে দুই বেলা পেট ভরে খাওয়াতে হবে। অথবা প্রত্যেককে এর মূল্য দিয়ে দিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না।
-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪১৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৯৪

কোনো কারণে ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে পুনরায় নতুন করে রোযা রাখতে হবে। পেছনের রোযাগুলো কাফফারার রোযা হিসাবে ধর্তব্য হবে না। তবে মহিলাদের হায়েযের কারণে ধারাবাহিকতা নষ্ট হলে অসুবিধা নেই।

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ‘যার উপর কাফফারা হিসাবে দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখা জরুরি সে যদি মাঝে অসুস্থ হওয়ার কারণে রোযা রাখতে না পারে, তাহলে আবার নতুন করে রোযা রাখা শুরু করবে।’-আলমুহাল্লা ৪/৩৩১; মাবসূত, সারাখসী ৭/১৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/১৯৬

#সংগৃহীত