মা'আরিফুল হাদীস
কিতাবুল আযকার ওয়াদ-দাওয়াত অধ্যায়
হাদীস নং: ২১
কিতাবুল আযকার ওয়াদ-দাওয়াত অধ্যায়
যিকিরের কালেমাসমূহ: সেগুলোর বরকত-ফযীলত
২১. হযরত সা'দ ইবনে আবূ ওক্কাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি একদা নবী করীম ﷺ-এর সাথে তাঁর এক সহধর্মিণীর ঘরে গিয়ে উপনীত হলেন। তাঁর (সেই মহিলার) সম্মুখে তখন কিছু খেজুরের বীচি অথবা পাথরের কণা ছিল, যেগুলোর সাহায্যে তিনি তাসবীহ গুণে গুণে পড়ছিলেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ তখন বললেন: আমি কি তোমাকে এর চাইতে সহজতর কিছু বাৎলে দেবো না, (অথবা তিনি বলেছেন: এর চাইতে উত্তম কিছু)। তা হলো:
سُبْحَانَ اللّٰهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ فِي السَّمَاءِ وَسُبْحَانَ اللّٰهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ فِي الْأَرْضِ وَسُبْحَانَ اللّٰهِ عَدَدَ مَا بَيْنَ ذَالِكَ وَسُبْحَانَ اللّٰهِ عَدَدَ مَا هُوَ خَالِقُ وَاللّٰهُ اَكْبَرُ مِثْلَ ذَالِكَ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ مِثْلَ ذَالِكَ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللّٰهُ مِثْلَ ذَالِكَ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰهِ مِثْلَ ذَالِكَ
সুবহানাল্লাহ- সেই পবিত্র আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি সেই সংখ্যায় যা তিনি সৃষ্টি করেছেন আসমানে, সুবহানাল্লাহ সেই সংখ্যানুপাতে, যা তিনি সৃষ্টি করেছেন যমীনে। সুবহানাল্লাহ সেই সংখ্যানুপাতে, যা তিনি সৃষ্টি করেছেন এতদুভয়ের মধ্যে। সুবহানাল্লাহ সেই সৃষ্টির সংখ্যানুপাতে, যা তিনি অনাগত কালে সৃষ্টি করবেন। অনুরূপভাবে আল্লাহু আকবর। এবং অনুরূপভাবে আলহামদুলিল্লাহ এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ অনুরূপভাবে। এবং লা-হাওলা ওলা কুওওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ অনুরূপভাবে। (জামে' তিরমিযী, সুনানে আবূ দাউদ)
سُبْحَانَ اللّٰهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ فِي السَّمَاءِ وَسُبْحَانَ اللّٰهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ فِي الْأَرْضِ وَسُبْحَانَ اللّٰهِ عَدَدَ مَا بَيْنَ ذَالِكَ وَسُبْحَانَ اللّٰهِ عَدَدَ مَا هُوَ خَالِقُ وَاللّٰهُ اَكْبَرُ مِثْلَ ذَالِكَ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ مِثْلَ ذَالِكَ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللّٰهُ مِثْلَ ذَالِكَ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰهِ مِثْلَ ذَالِكَ
সুবহানাল্লাহ- সেই পবিত্র আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি সেই সংখ্যায় যা তিনি সৃষ্টি করেছেন আসমানে, সুবহানাল্লাহ সেই সংখ্যানুপাতে, যা তিনি সৃষ্টি করেছেন যমীনে। সুবহানাল্লাহ সেই সংখ্যানুপাতে, যা তিনি সৃষ্টি করেছেন এতদুভয়ের মধ্যে। সুবহানাল্লাহ সেই সৃষ্টির সংখ্যানুপাতে, যা তিনি অনাগত কালে সৃষ্টি করবেন। অনুরূপভাবে আল্লাহু আকবর। এবং অনুরূপভাবে আলহামদুলিল্লাহ এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ অনুরূপভাবে। এবং লা-হাওলা ওলা কুওওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ অনুরূপভাবে। (জামে' তিরমিযী, সুনানে আবূ দাউদ)
کتاب الاذکار والدعوات
عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ أَنَّهُ دَخَلَ مَعَ النَّبِىِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى امْرَأَةٍ وَبَيْنَ يَدَيْهَا نَوَاةٌ، أَوْ قَالَ: حَصَاةٌ تُسَبِّحُ بِهَا، فَقَالَ: أَلاَ أُخْبِرُكِ بِمَا هُوَ أَيْسَرُ عَلَيْكِ مِنْ هَذَا أَوْ أَفْضَلُ؟ سُبْحَانَ اللهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ فِي السَّمَاءِ، وَسُبْحَانَ اللهِ عَدَدَ مَا خَلَقَ فِي الأَرْضِ، وَسُبْحَانَ اللهِ عَدَدَ مَا بَيْنَ ذَلِكَ، وَسُبْحَانَ اللهِ عَدَدَ مَا هُوَ خَالِقٌ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ مِثْلَ ذَلِكَ، وَالحَمْدُ لِلَّهِ مِثْلَ ذَلِكَ، وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ مِثْلَ ذَلِكَ. (رواه الترمذى وابوداؤد)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীসের দ্বারা জানা গেল যে, অধিক যিকির এর দ্বারা যেমন অধিক ছওয়াব হাসিল করা যায়, তেমনি তার একটি সহজ তরীকা বা পন্থা হলো তার সাথে এমন শব্দসমূহ জুড়ে দেয়া, যার দ্বারা সংখ্যার আধিক্য বুঝায়। যেমনটা উপরোক্ত হাদীসে রাসূল ﷺ শিক্ষা দিয়েছেন।
এখানে একথা লক্ষ্যণীয় যে, কোন কোন হাদীসে স্বয়ং নবী করীম ﷺ বহুলভাবে যিকির করার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন এবং সেই হাদীসও সামান্য আগে আমরা পড়ে এসেছি, যাতে তিনি দৈনিক একশবার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী পাঠকারী তার পাপরাশি মোচনের সুসংবাদ শুনিয়েছেন। এজন্যে হযরত সা'দ ইব্ন আবূ ওক্কাসের বর্ণিত এ হাদীস এবং আরেক হাদীসের দ্বারা যিকিরের আধিক্যের ব্যাপারে তা নিষিদ্ধ হওয়া বা অপসন্দনীয় হওয়া বুঝে নেওয়া মোটেই ঠিক হবে না। উক্ত হাদীসের মর্ম হচ্ছে, যিকিরের দ্বারা অধিক ছওয়াব লাভের একটি সহজতর তরীকা হচ্ছে এটাও, বিশেষত যারা অধিক ব্যস্ততার কারণে আল্লাহর যিকিরের জন্যে বেশি সময় ব্যয় করতে পারেন না, তারা এ পদ্ধতিতেও অনেক ছওয়াব হাসিল করে নিতে পারেন।
হযরত শাহ্ ওলী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী (র) এ ব্যাপারে বলেন, যে ব্যক্তি তাঁর বাতিনকে এবং তার জীবনকে যিকিরের রঙে অনুরঞ্জিত করতে আগ্রহী, বহুল পরিমাণে যিকির করা তার জন্যে অপরিহার্য। আর যিকির এর দ্বারা কেবল পারলৌকিক ছওয়াব হাসিল করাই যার উদ্দিষ্ট, তার উচিত এমন সব কালিমা যিকিরের জন্যে বেছে নেয়া, যা অর্থগত দিক থেকে উন্নততর ও প্রশস্ততর যেমনটি উপরের দু'টি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
হযরত সা'দ ইব্ন আবূ ওক্কাসের বর্ণিত হাদীসের দ্বারা একথাও জানা গেল যে, নবী করীম ﷺ-এর যুগে তসবীহ ব্যবহারের রেওয়াজ ছিল না ঠিক, তবে এ উদ্দেশ্যে কেউ কেউ খেজুর বীচি বা পাথর কণা ইত্যাদি ব্যবহার করেছেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁদেরকে তা করতে বারণ করেননি। বলাবাহুল্য, তাসবীহ এবং এ পন্থার মধ্যে কোনই প্রভেদ নেই। বরং তাসবীহ তারই উন্নততর সংস্করণ। যারা তাসবীহকে বেদ'আত বলে অভিহিত করেছেন, তাঁরা আসলে অহেতুক বাড়াবাড়ি করেছেন।
এখানে একথা লক্ষ্যণীয় যে, কোন কোন হাদীসে স্বয়ং নবী করীম ﷺ বহুলভাবে যিকির করার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন এবং সেই হাদীসও সামান্য আগে আমরা পড়ে এসেছি, যাতে তিনি দৈনিক একশবার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী পাঠকারী তার পাপরাশি মোচনের সুসংবাদ শুনিয়েছেন। এজন্যে হযরত সা'দ ইব্ন আবূ ওক্কাসের বর্ণিত এ হাদীস এবং আরেক হাদীসের দ্বারা যিকিরের আধিক্যের ব্যাপারে তা নিষিদ্ধ হওয়া বা অপসন্দনীয় হওয়া বুঝে নেওয়া মোটেই ঠিক হবে না। উক্ত হাদীসের মর্ম হচ্ছে, যিকিরের দ্বারা অধিক ছওয়াব লাভের একটি সহজতর তরীকা হচ্ছে এটাও, বিশেষত যারা অধিক ব্যস্ততার কারণে আল্লাহর যিকিরের জন্যে বেশি সময় ব্যয় করতে পারেন না, তারা এ পদ্ধতিতেও অনেক ছওয়াব হাসিল করে নিতে পারেন।
হযরত শাহ্ ওলী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী (র) এ ব্যাপারে বলেন, যে ব্যক্তি তাঁর বাতিনকে এবং তার জীবনকে যিকিরের রঙে অনুরঞ্জিত করতে আগ্রহী, বহুল পরিমাণে যিকির করা তার জন্যে অপরিহার্য। আর যিকির এর দ্বারা কেবল পারলৌকিক ছওয়াব হাসিল করাই যার উদ্দিষ্ট, তার উচিত এমন সব কালিমা যিকিরের জন্যে বেছে নেয়া, যা অর্থগত দিক থেকে উন্নততর ও প্রশস্ততর যেমনটি উপরের দু'টি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
হযরত সা'দ ইব্ন আবূ ওক্কাসের বর্ণিত হাদীসের দ্বারা একথাও জানা গেল যে, নবী করীম ﷺ-এর যুগে তসবীহ ব্যবহারের রেওয়াজ ছিল না ঠিক, তবে এ উদ্দেশ্যে কেউ কেউ খেজুর বীচি বা পাথর কণা ইত্যাদি ব্যবহার করেছেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁদেরকে তা করতে বারণ করেননি। বলাবাহুল্য, তাসবীহ এবং এ পন্থার মধ্যে কোনই প্রভেদ নেই। বরং তাসবীহ তারই উন্নততর সংস্করণ। যারা তাসবীহকে বেদ'আত বলে অভিহিত করেছেন, তাঁরা আসলে অহেতুক বাড়াবাড়ি করেছেন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)