মা'আরিফুল হাদীস
সলাত অধ্যায়
হাদীস নং: ১৬৯
সলাত অধ্যায়
দুরূদের পর এবং সালাতের পূর্বে পঠিতব্য দু'আ
১৬৯. হযরত আবূ বাকর সিদ্দীক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাকে এমন একটি দু'আ শিক্ষা দিন যা আমি সালাতের মধ্যে পাঠ করতে পারি। তিনি বললেন: তুমি বল اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا وَلَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ " হে আল্লাহ্! আমি নিজের উপর অনেক যুলম করেছি আর তুমি ব্যতীত পাপ মোচনের কেউ নেই। সুতরাং তুমি আমার পাপ মোচন এবং আমার প্রতি দয়া কর। কেননা তুমি ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।"
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ ، قَالَ قُلْتُ يَارَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : عَلِّمْنِي دُعَاءً أَدْعُو بِهِ فِي صَلاتِي. قَالَ : " قُلِ : اللهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا ، وَلا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ ، فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ ، وَارْحَمْنِي ، إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ ".
(رواه البخارى ومسلم)
(رواه البخارى ومسلم)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
আলোচ্য হাদীস দ্বারা পরিষ্কার বুঝা যায় যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ হযরত আবূ বকর (রা)-এর আবেদনের প্রেক্ষিতে সালাতে দু'আ সূরা পাঠের নির্দেশ দেন। কিন্তু হাদীসে একথা উল্লেখ নেই যে, সালামের পূর্বে তা পাঠ করতে হবে। এ পর্যায়ে হাদীসের ভাষ্যকারগণ বলেছেনঃ সালামের পূর্বেই মূলত দু'আর উপযুক্ত সময় এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ এই সময় পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছে" তাশাহহুদের পর সালামের পূর্বে বান্দার কোন চমৎকার দু'আ নির্বাচিত করে নেয়া উচিত এবং তা দ্বারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা উচিত।" যেমন ইতিপূর্বে হযরত ইবনে মাসউদ (রা) সূত্রে বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হাদীস বিধৃত হয়েছে। তাই এই বিশেষ সময়ের দু'আর জন্য হযরত আবূ বাকর (রা) রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে আবেদন করেন এবং রাসূলুল্লাহ ﷺও উক্ত সময় এই দু'আ করার নির্দেশ দেন। এজন্য সম্ভবত ইমাম বুখারী (র) بَابُ الدُّعَاء قَبْلَ السَّلَام (অনুচ্ছেদ : সালামের পূর্বে দ'আ) শিরোনামে হাদীসখানা উল্লেখ করেছেন।
এতদসত্ত্বেও তিনি দু'আর আবেদন জানিয়েছিলেন যে, সালাতে থাকা অবস্থায় পাঠ করা যায় আমাকে এমন একটি দু'আ শিখিয়ে দিন যার দ্বারা আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করব। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর চাওয়ার জবাবে এই দু'আটি শিক্ষা দেন। যা তিনি সালাতে থাকা অবস্থায় বলতে চেয়েছেন। হে আবু বকর! নামায আদায় শেষে মনে যেন এ ধারণা না জন্মে যে, আল্লাহর ইবাদতের হক আদায় হয়েছে এবং কিছু একটা করে ফেলা হয়েছে। বরং নামায শেষে একান্ত মনে রাখতে হবে যে ভুল ত্রুটি ও গুনাহে আকণ্ঠ নিমজ্জিত অবস্থা স্বীকার করে ক্ষমা প্রাপ্তির জন্য আল্লাহর দরবারে ধর্ণা দিতে হবে এই কথা বলে হে আমার প্রভূ! আমার কোন কে আমল নেই, আমার কাছে এমন কিছু নেই যার দ্বারা আমি মাফ পাবার আশা করতে পারি। কাজেই আপনি আপনার ক্ষমাশীল ও দয়াবান গুণবাচক নামের বরকতে আমাকে ক্ষমা করে দিন। তাশাহহুদ ও দরূদ পাঠের পর সালামের পর্বে আবশ্যিকভাবে এই দু'আ পাঠ করে দু'আ করা উচিত। এই দু'আ মুখস্থ করা দু'আর মর্ম অন্তরে বসিয়ে দেওয়া কোন কঠিন কাজ নয়। একটু খেয়াল করলেই অল্প সময়ে এ কাজ করা যেতে পারে। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর শেখানো এই মূল্যবান দু'আ থেকে বঞ্চিত হওয়া দুর্ভাগ্যের কারণ। আল্লাহর শপথ রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর শেখানো এক একটি দু'আ মূল দুনিয়া ও এর মধ্যকার বস্তু অপেক্ষা উত্তম।
এতদসত্ত্বেও তিনি দু'আর আবেদন জানিয়েছিলেন যে, সালাতে থাকা অবস্থায় পাঠ করা যায় আমাকে এমন একটি দু'আ শিখিয়ে দিন যার দ্বারা আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করব। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর চাওয়ার জবাবে এই দু'আটি শিক্ষা দেন। যা তিনি সালাতে থাকা অবস্থায় বলতে চেয়েছেন। হে আবু বকর! নামায আদায় শেষে মনে যেন এ ধারণা না জন্মে যে, আল্লাহর ইবাদতের হক আদায় হয়েছে এবং কিছু একটা করে ফেলা হয়েছে। বরং নামায শেষে একান্ত মনে রাখতে হবে যে ভুল ত্রুটি ও গুনাহে আকণ্ঠ নিমজ্জিত অবস্থা স্বীকার করে ক্ষমা প্রাপ্তির জন্য আল্লাহর দরবারে ধর্ণা দিতে হবে এই কথা বলে হে আমার প্রভূ! আমার কোন কে আমল নেই, আমার কাছে এমন কিছু নেই যার দ্বারা আমি মাফ পাবার আশা করতে পারি। কাজেই আপনি আপনার ক্ষমাশীল ও দয়াবান গুণবাচক নামের বরকতে আমাকে ক্ষমা করে দিন। তাশাহহুদ ও দরূদ পাঠের পর সালামের পর্বে আবশ্যিকভাবে এই দু'আ পাঠ করে দু'আ করা উচিত। এই দু'আ মুখস্থ করা দু'আর মর্ম অন্তরে বসিয়ে দেওয়া কোন কঠিন কাজ নয়। একটু খেয়াল করলেই অল্প সময়ে এ কাজ করা যেতে পারে। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর শেখানো এই মূল্যবান দু'আ থেকে বঞ্চিত হওয়া দুর্ভাগ্যের কারণ। আল্লাহর শপথ রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর শেখানো এক একটি দু'আ মূল দুনিয়া ও এর মধ্যকার বস্তু অপেক্ষা উত্তম।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)