মা'আরিফুল হাদীস
সলাত অধ্যায়
হাদীস নং: ১৩০
সলাত অধ্যায়
রাসূলুল্লাহ এর বিভিন্ন সালাতে পঠিত কিরা'আত
১৩০. হযরত সুলায়মান ইবনে ইয়াসার সূত্রে আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি (সে সময়কার এক ইমাম সম্পর্কে) বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সালাতের (এই ইমামের মত) আর কাউকে অনুরূপ সালাত আদায় করতে দেখিনি। সুলায়মান বলেন, আমিও তাঁর পেছনে সালাত আদায় করেছি। তিনি যুহরের প্রথম দুই রাক'আত দীর্ঘ এবং শেষ দুই রাক'আত সংক্ষেপ করতেন। আর তিনি আসরের সালাতকে সংক্ষেপ করতেন এবং মাগরিবের সালাতে কিসারে মুফাস্সাল, এশায় আওসাতে মুফাস্সাল এবং ফজরে তিওয়ালে মুফাস্সাল পাঠ করতেন। (নাসায়ী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : « مَا صَلَّيْتُ وَرَاءَ أَحَدٍ أَشْبَهَ صَلَاةً بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ فُلَانٍ - قَالَ سُلَيْمَانَ – صَلَّيْتُ خَلْفَهُ فَكَانَ يُطِيلُ الرَّكْعَتَيْنِ الْأُولَيَيْنِ مِنَ الظُّهْرِ ، وَيُخَفِّفُ الْأُخْرَيَيْنِ ، وَيُخَفِّفُ الْعَصْرَ ، وَيَقْرَأُ فِي الْمَغْرِبِ بِقِصَارِ الْمُفَصَّلِ ، وَيَقْرَأُ فِي الْعِشَاء بِوَسَطِ الْمُفَصَّلِ ، وَيَقْرَأُ فِي الصُّبْحِ بِطُوَلِ الْمُفَصَّلِ » (رواه النسائى)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
"মুফাস্সাল"-কুরআন মাজীদের শেষ মনযিল তথা 'সূরা হুজুরাত' থেকে শেষ পর্যন্ত সূরাসমূহকে মুফাস্সাল বলা হয়। এতে আবার তিনটি ভাগ রয়েছে। যথা- সূরা 'হুজুরাত' থেকে 'বুরূজ' পর্যন্ত সূরাসমূহকে তিওয়ালে মুফাস্সাল, সূরা 'বুরূজ' থেকে সূরা 'বায়্যিনাহ' পর্যন্ত সূরাসমূহকে আওসাতে মুফাস্সাল এবং সূরা 'বায়্যিনাহ' থেকে সূরা 'নাস' পর্যন্ত সূরাসমূহকে কিসারে মুফাস্সাল বলা হয়।
হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বর্ণিত হাদীসে যে ব্যক্তির সালাতকে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সালাতের সাথে অধিক সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে তার নাম অজ্ঞাত। বর্ণনাটি এরূপ-রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সালাতের সাথে তাঁর সালাতের রয়েছে অপূর্ব মিল এবং তাঁর সালাতের সাথে তুলনীয় হতে পারে এমন কোন ব্যক্তির পেছনে আমি আর কখনো সালাত আদায় করিনি।
হযরত আবূ হুরায়রা ও সুলায়মান ইবনে ইয়াসার কেউই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেন নি। কিন্তু ভাষ্যকারগণ অনুমান করে উক্ত ব্যক্তির নাম চিহ্নিত করার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু তারা গ্রহণযোগ্য কোন তথ্য উপহার দিতে পারেন নি। হাদীসের বিষয়বস্তু যেহেতু পরিষ্কার তাই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম অজ্ঞাত থাকায় আসল উদ্দেশ্য যেমন ব্যাহত হবে না। তেমনি এই মাস'আলার উপর কোন প্রভাবও পড়বে না।
হযরত সুলায়মান ইবনে ইয়াসার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সালাতের যে সবিস্তার বিবরণ দিয়েছেন সে মতে হযরত আবু হুরায়রা (রা) বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায় যে, সুলায়মান ইবনে ইয়াসার (রা) অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির আমলের যে বিবরণ পেশ করেছেন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বিভিন্ন সালাতের কিরা'আত ঠিক ঐরূই ছিল। অর্থাৎ যুহরে দীর্ঘ ও আসরে হালকা কিরা'আত, মাগরিবে কিসারে মুফাস্সাল, এশায় আওসাতে মুফাসসাল এবং ফজরে তিওয়ালে মুফাস্সাল পাঠ করতেন।
হযরত উমার (রা)-এ পর্যায়ে হযরত আবূ মূসা আশ'আরী (রা)-এর উদ্দেশ্য যে পত্র প্রেরণ করেছিলেন তাতেও বিভিন্ন সময়ের সালাতের কিরা'আত সম্পর্কে একই নির্দেশনা প্রকাশ পেয়েছে। মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক গ্রন্থে নিম্নবর্ণিত শব্দযোগে হযরত উমর (রা)-এর পত্রের বিষয় উল্লেখিত হয়েছে: كَتَبَ عُمَرُ إِلَى أَبِي مُوسَى أَنِ اقْرَأْ فِي الْمَغْرِبِ ........ بطوال المفصل হযরত উমর (রা), হযরত আবূ মূসা আশ'আরী (রা)-এর উদ্দেশ্য একপত্রে লেখেন, "তুমি মাগরিবের সালাতে কিসারে মুফাস্সাল, এশায় আওসাতে মুফাস্সাল এবং ফজরে তিওয়ালে মুফাস্সাল পাঠ করবে।"
ইমাম তিরমিযী (র) এই পত্রের বরাত দিয়ে যুহরে আওসাতে মুফাস্সাল পাঠ করার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। (তিরমিযীর যুহর ও আসরের কিরা'আত অনুচ্ছেদ)
হযরত উমর (রা) রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বাণী এবং আমল অনুধাবন করেই আবূ মূসা আশ'আরীর কাছে পত্র প্রেরণ করেছিলেন। এই পত্রের উপর ভিত্তি করে অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ ইমাম বিভিন্ন সময়ের সালাতে হযরত উমর (রা)-এর পত্রকে দিক নির্দেশনারূপে স্বীকৃতি দিয়ে তা কার্যে পরিণত করাকে সর্বোৎকৃষ্ট আমল বলে অভিহিত করেছেন।
হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বর্ণিত হাদীসে যে ব্যক্তির সালাতকে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সালাতের সাথে অধিক সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে তার নাম অজ্ঞাত। বর্ণনাটি এরূপ-রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সালাতের সাথে তাঁর সালাতের রয়েছে অপূর্ব মিল এবং তাঁর সালাতের সাথে তুলনীয় হতে পারে এমন কোন ব্যক্তির পেছনে আমি আর কখনো সালাত আদায় করিনি।
হযরত আবূ হুরায়রা ও সুলায়মান ইবনে ইয়াসার কেউই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেন নি। কিন্তু ভাষ্যকারগণ অনুমান করে উক্ত ব্যক্তির নাম চিহ্নিত করার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু তারা গ্রহণযোগ্য কোন তথ্য উপহার দিতে পারেন নি। হাদীসের বিষয়বস্তু যেহেতু পরিষ্কার তাই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম অজ্ঞাত থাকায় আসল উদ্দেশ্য যেমন ব্যাহত হবে না। তেমনি এই মাস'আলার উপর কোন প্রভাবও পড়বে না।
হযরত সুলায়মান ইবনে ইয়াসার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সালাতের যে সবিস্তার বিবরণ দিয়েছেন সে মতে হযরত আবু হুরায়রা (রা) বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায় যে, সুলায়মান ইবনে ইয়াসার (রা) অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির আমলের যে বিবরণ পেশ করেছেন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বিভিন্ন সালাতের কিরা'আত ঠিক ঐরূই ছিল। অর্থাৎ যুহরে দীর্ঘ ও আসরে হালকা কিরা'আত, মাগরিবে কিসারে মুফাস্সাল, এশায় আওসাতে মুফাসসাল এবং ফজরে তিওয়ালে মুফাস্সাল পাঠ করতেন।
হযরত উমার (রা)-এ পর্যায়ে হযরত আবূ মূসা আশ'আরী (রা)-এর উদ্দেশ্য যে পত্র প্রেরণ করেছিলেন তাতেও বিভিন্ন সময়ের সালাতের কিরা'আত সম্পর্কে একই নির্দেশনা প্রকাশ পেয়েছে। মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক গ্রন্থে নিম্নবর্ণিত শব্দযোগে হযরত উমর (রা)-এর পত্রের বিষয় উল্লেখিত হয়েছে: كَتَبَ عُمَرُ إِلَى أَبِي مُوسَى أَنِ اقْرَأْ فِي الْمَغْرِبِ ........ بطوال المفصل হযরত উমর (রা), হযরত আবূ মূসা আশ'আরী (রা)-এর উদ্দেশ্য একপত্রে লেখেন, "তুমি মাগরিবের সালাতে কিসারে মুফাস্সাল, এশায় আওসাতে মুফাস্সাল এবং ফজরে তিওয়ালে মুফাস্সাল পাঠ করবে।"
ইমাম তিরমিযী (র) এই পত্রের বরাত দিয়ে যুহরে আওসাতে মুফাস্সাল পাঠ করার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। (তিরমিযীর যুহর ও আসরের কিরা'আত অনুচ্ছেদ)
হযরত উমর (রা) রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বাণী এবং আমল অনুধাবন করেই আবূ মূসা আশ'আরীর কাছে পত্র প্রেরণ করেছিলেন। এই পত্রের উপর ভিত্তি করে অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ ইমাম বিভিন্ন সময়ের সালাতে হযরত উমর (রা)-এর পত্রকে দিক নির্দেশনারূপে স্বীকৃতি দিয়ে তা কার্যে পরিণত করাকে সর্বোৎকৃষ্ট আমল বলে অভিহিত করেছেন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)