মা'আরিফুল হাদীস
সলাত অধ্যায়
হাদীস নং: ১০৭
সলাত অধ্যায়
রাসূলুল্লাহ কিভাবে সালাত আদায় করতেন?
১০৭. রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর একদল সাহাবীসহ আবূ হুমায়দ সাঈদী (রা) বলেন: আমি আপনাদের চেয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সালাত অধিক স্মরণ রেখেছি। আমি তাঁকে দেখেছি যে, তিনি যখন তাকবীরে তাহরীমা বলতেন তখন দু'হাত দু'কাঁধ বরাবর উঠাতেন। যখন রুকূ' করতেন দু'হাত দ্বারা দু'হাঁটু শক্ত করে ধরতেন এবং পিঠকে কোমর ও ঘাড়ের সোজা রাখতেন। আর যখন মাথা উঠাতেন ঠিক সোজা হয়ে দাঁড়াতেন। যাতে (পিঠের) প্রত্যেকে গ্রন্থি স্ব-স্ব-স্থানে পৌঁছে যায়। তারপর যখন সিজদা করতেন তখন দু'হাত যমীনে না বিছিয়ে ও পেটের সাথে না মিশিয়ে (চেহারার পাশে রেখে কনুই উঁচু করে) এবং দু'পায়ের আঙ্গুলসমূহের অগ্রভাগ কিবলামুখী করে রাখতেন। এরপর দুই রাক'আতের পর নিজের বাম পায়ের উপর বসতেন এবং ডান পা খাড়া করে রাখতেন। এরপর শেষ রাক'আতে বাম পা বাড়িয়ে দিতেন, অপর পা খাড়া রাখতেন এবং নিতম্বের উপর বসতেন। (বুখারী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِىْ حُمَيْدٍ السَّاعِدِيُّ قَالَ فِىْ نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَا كُنْتُ أَحْفَظَكُمْ لِصَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ « رَأَيْتُهُ إِذَا كَبَّرَ جَعَلَ يَدَيْهِ حِذَاءَ مَنْكِبَيْهِ ، وَإِذَا رَكَعَ أَمْكَنَ يَدَيْهِ مِنْ رُكْبَتَيْهِ ، ثُمَّ هَصَرَ ظَهْرَهُ ، فَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ اسْتَوَى حَتَّى يَعُودَ كُلُّ فَقَارٍ مَكَانَهُ ، فَإِذَا سَجَدَ وَضَعَ يَدَيْهِ غَيْرَ مُفْتَرِشٍ وَلاَ قَابِضِهِمَا ، وَاسْتَقْبَلَ بِأَطْرَافِ أَصَابِعِ رِجْلَيْهِ القِبْلَةَ ، فَإِذَا جَلَسَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ جَلَسَ عَلَى رِجْلِهِ اليُسْرَى ، وَنَصَبَ اليُمْنَى ، فَإِذَا جَلَسَ فِي الرَّكْعَةِ الآخِرَةِ قَدَّمَ رِجْلَهُ اليُسْرَى ، وَنَصَبَ الأُخْرَى وَقَعَدَ عَلَى مَقْعَدَتِهِ » (رواه البخارى)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
আবূ হুমায়দ সাঈদী (রা) বর্ণিত হাদীসে তাকবীরে তাহরীমার সময় কাঁধ বরাবর হাত উঠানোর কথা উল্লিখিত হয়েছে। বুখারী ও মুসলিম মালিক ইবনে হুয়াইরিস (রা) নামে এক সাহাবী থেকে বর্ণিত আছে যে, حتى يحاذي بها أذنيه "তাকবীরে তাহরীমার সময় তিনি তাঁর হাত উভয় কানের লতি পর্যন্ত উঠাতেন"। কিন্তু এ দুই বক্তব্য পরস্পর সাংঘর্ষিক নয়। কেননা যখন হাত কানের লতি বরাবর ওঠানো হয় তখন হাতের নিম্নভাগ মূলত কাঁধের বরাবর থাকে এবং পদ্ধতিকে কান পর্যন্ত আবার কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠানোও বলা যেতে পারে।
ওয়ায়িল ইবনে হুজর (রা) নামে এক সাহাবী এ বিষয়টি আরো পরিষ্কার করে বলেছেন। সুনানে আবু দাউদে নিম্নবর্ণিত শব্দযোগে তার ভাষ্য বিবৃত হয়েছে: رفع يديه حتى كانتا بحيال منكبيه، وحاذى بإبهاميه أذنيه "তিনি তাকবীরে তাহরীমার সময় তাঁর হাত এত দূর উঠাতেন যে, তা কাঁধ বরাবর হয়ে যেত এবং বৃদ্ধ আঙ্গুল দু'টি কান বরাবর করতেন।"
হযরত আবূ হুমায়দ সাঈদী (রা) বর্ণিত আলোচ্য হাদীসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ কথা রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ শেষ বৈঠকে 'তাওয়াররুক' পদ্ধতিতে বসতেন। কিন্তু হযরত আয়েশা (রা) বর্ণিত পূর্বে উল্লিখিত হাদীস সূত্রে জানা যায় যে, আবু হুমায়দ সাঈদী (রা) এর হাদীসে প্রথম বৈঠক বসার যে পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে যাকে 'ইফতিরাশ' বলে। তিনি সাধারণত শেষ বৈঠকে অনুরূপ বসতেন। কিছু সংখ্যক আলিম এবং ভাষ্যকার বলেন, হযরত আয়েশা (রা) সূত্রে যে বর্ণনা পাওয়া যায় রাসূলুল্লাহ ﷺ সাধারণভাবে ঠিক যেভাবে বসতেন। কিন্তু কখনো সহজ আবার কখনো জায়িয একথা বুঝানোর লক্ষ্যে তিনি 'তাওয়াররুক' করতেন। দ্বিতীয় অভিমত প্রথম অভিমতের সম্পূর্ণ উল্টা। আবার এও বলা যেতে পারে যে, উভয় পদ্ধতিই শরী'আতে স্বীকৃত।
ওয়ায়িল ইবনে হুজর (রা) নামে এক সাহাবী এ বিষয়টি আরো পরিষ্কার করে বলেছেন। সুনানে আবু দাউদে নিম্নবর্ণিত শব্দযোগে তার ভাষ্য বিবৃত হয়েছে: رفع يديه حتى كانتا بحيال منكبيه، وحاذى بإبهاميه أذنيه "তিনি তাকবীরে তাহরীমার সময় তাঁর হাত এত দূর উঠাতেন যে, তা কাঁধ বরাবর হয়ে যেত এবং বৃদ্ধ আঙ্গুল দু'টি কান বরাবর করতেন।"
হযরত আবূ হুমায়দ সাঈদী (রা) বর্ণিত আলোচ্য হাদীসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ কথা রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ শেষ বৈঠকে 'তাওয়াররুক' পদ্ধতিতে বসতেন। কিন্তু হযরত আয়েশা (রা) বর্ণিত পূর্বে উল্লিখিত হাদীস সূত্রে জানা যায় যে, আবু হুমায়দ সাঈদী (রা) এর হাদীসে প্রথম বৈঠক বসার যে পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে যাকে 'ইফতিরাশ' বলে। তিনি সাধারণত শেষ বৈঠকে অনুরূপ বসতেন। কিছু সংখ্যক আলিম এবং ভাষ্যকার বলেন, হযরত আয়েশা (রা) সূত্রে যে বর্ণনা পাওয়া যায় রাসূলুল্লাহ ﷺ সাধারণভাবে ঠিক যেভাবে বসতেন। কিন্তু কখনো সহজ আবার কখনো জায়িয একথা বুঝানোর লক্ষ্যে তিনি 'তাওয়াররুক' করতেন। দ্বিতীয় অভিমত প্রথম অভিমতের সম্পূর্ণ উল্টা। আবার এও বলা যেতে পারে যে, উভয় পদ্ধতিই শরী'আতে স্বীকৃত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)