মা'আরিফুল হাদীস
সলাত অধ্যায়
হাদীস নং: ১০৬
সলাত অধ্যায়
রাসূলুল্লাহ কিভাবে সালাত আদায় করতেন?
১০৬. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ তাকবীর দ্বারা সালাত এবং আল-হামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন (সূরা ফাতিহা) দ্বারা কিরা'আত আরম্ভ করতেন। যখন রুকূ' করতেন তখন তাঁর মাথা মুবারক উঠিয়েও রাখতেন না, ঝুঁকিয়েও রাখতেন না বরং মাঝামাঝি রাখতেন। আর যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন, তখন সোজা হয়ে না দাঁড়িয়ে সিজদায় যেতেন না। তিনি প্রতি দুই রাক'আতে 'আত-তাহিয়্যাতু' (তাশাহুদ) পাঠ করতেন। তখন তিনি বাম পা বিছিয়ে রাখতেন এবং ডান পা খাড়া করে রাখতেন। তিনি শয়তানের মত নিতম্বের উপর বসতে নিষেধ করতেন। পুরুষকে তার (কনুই পর্যন্ত) দুই হাত হিংস্র জন্তুর মত বিছিয়ে রাখতে নিষেধ করেছেন। তিনি সালামের দ্বারা সালাত শেষ করতেন। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ « يَسْتَفْتِحُ الصَّلَاةَ بِالتَّكْبِيرِ. وَالْقِرَاءَةِ ، بِالْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ، وَكَانَ إِذَا رَكَعَ لَمْ يُشْخِصْ رَأْسَهُ ، وَلَمْ يُصَوِّبْهُ وَلَكِنْ بَيْنَ ذَلِكَ ، وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ لَمْ يَسْجُدْ ، حَتَّى يَسْتَوِيَ قَائِمًا ، وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السَّجْدَةِ ، لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِيَ جَالِسًا ، وَكَانَ يَقُولُ فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ التَّحِيَّةَ ، وَكَانَ يَفْرِشُ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ رِجْلَهُ الْيُمْنَى ، وَكَانَ يَنْهَى عَنْ عُقْبَةِ الشَّيْطَانِ. وَيَنْهَى أَنْ يَفْتَرِشَ الرَّجُلُ ذِرَاعَيْهِ افْتِرَاشَ السَّبُعِ ، وَكَانَ يَخْتِمُ الصَّلَاةَ بِالتَّسْلِيمِ » (رواه مسلم)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
সালাত সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদাত। তাই এর জন্য দাঁড়ানো, বসা, রুকু-সিজদা ইত্যাদির নিয়ম নির্দিষ্ট করা হয়েছে যা এ ইবাদাতে পূর্ণতার সর্বোত্তম চিত্র। বিশেষতঃ অহমিকা, বে-পরোয়াভাব, দৃষ্টিকটু এবং অশোভন হিংস্র জন্তুর সাথে সাদৃশ্য ইত্যাকার কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এ মূলনীতির উপর ভিত্তি করে রাসূলুল্লাহ ﷺ মানুষকে কুকুর, নেকড়ে বাঘ প্রভৃতি হিংস জন্তুর ন্যায় নিতম্বের উপর বসতে নিষেধ করেছেন। তিনি এ মূলনীতির উপর ভিত্তি করে 'শয়তানের ন্যায়' এবং অন্য হাদীসে কুকুরের ন্যায় বসতে নিষেধ করেছেন। ভাষ্যকার ও ফিকহবিদগণ এর দু'টি ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
অধমের (গ্রন্থকার) নিকট দু' পায়ের পাঞ্জা খাড়া রেখে গোড়ালীর উপর বসা পদ্ধতিটি প্রাধান্য পাবার দাবি রাখে। বলাবাহুল্য, এ অবস্থাটি কিছুটা অহমিকাবোধ ও তাড়াহুড়ার লক্ষণ বটে। এ পদ্ধতিতে কেবল হাঁটু ও হাতের তালু মাটিতে লাগে। কুকুর, নেকড়ে বাঘ প্রভৃতি হিংস্র প্রাণী নিতম্বের উপর ভর করে বসে থাকে। তাই রাসূলুল্লাহ ﷺ সালাতে এরূপ বসতে বিশেষভাবে নিষেধ করেছেন। বলাবাহুল্য, উপরিউক্ত পদ্ধতি কেবলমাত্র উযরবিহীন অবস্থান কার্যকর। তবে কারো যদি কোন উযর থাকে, তবে তা উযর হিসেবেই গণ্য হবে এবং তা মাকরূহ নয়। হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে উমার (রা) থেকে বর্ণিত, তাঁর পায়ে আঘাত থাকায় তিনি মাসনূন পদ্ধতিতে বসতে পারতেন না। কাজেই কখনো কখনো তিনি এরূপ বসতেন।
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সহীহ্ মুসলিম ও অন্যান্য গ্রন্থে বর্ণিত আছে যে, তিনি এ ধরনের বসাকে "তোমাদের নবীর সুন্নাত" বলে আখ্যায়িত করেছেন। একথার মর্ম এই দাঁড়ায় যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ কখনো কখনো উযরবশত হয়ত বা এরূপ বসে থাকবেন। অন্যথায় উযরবিহীন অবস্থায় সালাতে এরূপ বসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
অধমের (গ্রন্থকার) নিকট দু' পায়ের পাঞ্জা খাড়া রেখে গোড়ালীর উপর বসা পদ্ধতিটি প্রাধান্য পাবার দাবি রাখে। বলাবাহুল্য, এ অবস্থাটি কিছুটা অহমিকাবোধ ও তাড়াহুড়ার লক্ষণ বটে। এ পদ্ধতিতে কেবল হাঁটু ও হাতের তালু মাটিতে লাগে। কুকুর, নেকড়ে বাঘ প্রভৃতি হিংস্র প্রাণী নিতম্বের উপর ভর করে বসে থাকে। তাই রাসূলুল্লাহ ﷺ সালাতে এরূপ বসতে বিশেষভাবে নিষেধ করেছেন। বলাবাহুল্য, উপরিউক্ত পদ্ধতি কেবলমাত্র উযরবিহীন অবস্থান কার্যকর। তবে কারো যদি কোন উযর থাকে, তবে তা উযর হিসেবেই গণ্য হবে এবং তা মাকরূহ নয়। হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে উমার (রা) থেকে বর্ণিত, তাঁর পায়ে আঘাত থাকায় তিনি মাসনূন পদ্ধতিতে বসতে পারতেন না। কাজেই কখনো কখনো তিনি এরূপ বসতেন।
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সহীহ্ মুসলিম ও অন্যান্য গ্রন্থে বর্ণিত আছে যে, তিনি এ ধরনের বসাকে "তোমাদের নবীর সুন্নাত" বলে আখ্যায়িত করেছেন। একথার মর্ম এই দাঁড়ায় যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ কখনো কখনো উযরবশত হয়ত বা এরূপ বসে থাকবেন। অন্যথায় উযরবিহীন অবস্থায় সালাতে এরূপ বসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)