মা'আরিফুল হাদীস
সালাত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৬
সালাত অধ্যায়
আযান ও ইকামতে দীনের মৌলিক শিক্ষা ও দাওয়াত নিহিত
যদিও বাহ্যত আযান ও ইকামত সালাতের সময়ে নির্দেশ করে তথাপি একথা লক্ষণীয় যে আযান ও ইকামতের হাকীকতের যে আল্লাহ্ তা'আলা আযান ও ইকামতে বিশেষ অর্থবোধক শব্দের সমাহার ঘটিয়েছেন যা মূলতঃ দীনের প্রাণ। বরং বলা চলে, তিনি দীনের পূর্ণ বুনিয়াদী শিক্ষা ও দাওয়াত এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন। দীনের মূল বিষয় হচ্ছে আল্লাহর সত্তা ও তাঁর গুণাবলী। এ পর্যায়ে যে আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ধবনি দিয়ে লোকদের সালাতের দিকে আহবান করা হয় এর চাইতে উত্তম বাক্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। এটাই হচ্ছে একত্ববাদের মূলকথা এবং এতে রয়েছে আল্লাহর গুণবাচক নামের সমাহার। কোননা 'আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, এর মধ্যে যে প্রভাবময়ী শব্দগুচ্ছ রয়েছে, সংক্ষেপে এর চেয়ে চমৎকার শব্দগুচ্ছ নির্বাচন করা সত্যিই অসম্ভব। একথার মূলে রয়েছে এ স্বীকারোক্তি যে আল্লাহ্ আমাদের ইলাহ্ ও উপাস্য। এর সাথে সাথে এ প্রশ্ন জাগে যে, তাঁর দাসত্বের বিশুদ্ধ পদ্ধতি কিভাবে শেখা যাবে? এর উত্তরে "আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ ﷺ” এর চেয়ে উত্তম ও যুক্ত বাক্য আর হতে পারে না। এর পর 'হায়্যা আলাস সালাহ’ বলে সালাতের দাওয়াত দেওয়া হয়। আর এ ইবাদত হচ্ছে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ মাধ্যম এবং আল্লাহর অভিমুখী হওয়ার প্রথম পদক্ষেপ। এর পর 'হায়্যা আলাল ফালাহ্' বলে মূলত এই ঘোষণাই দেওয়া হয় যে, এই ইবাদতই মানুষ কে কল্যাণ, মুক্তি ও সফলতার স্বর্ণ শিখরে পৌঁছায়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি এ পথ ছেড়ে অন্য পথে বিচরণ করে সে মূলত সফলতা থেকে বঞ্চিত থেকে যায়। মনে করা যেতে পারে যে, এ যেন আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের একটি অনন্য ঘোষণা। এ আহবান এমন শব্দ যোগে করা হয় যা কেবল বিশ্বাসের সাথেই সংশ্লিষ্ট নয় বরং জীবনের সর্বপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবেও গণ্য।
পরিশেষে আল্লাহু আকবার; আল্লাহু আকবার এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' দ্বারা এই ঘোষণাই দেওয়া হয় যে, সর্বাবিধ বড়ত্ব ও মাহাত্ম্যের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ্। তিনি অংশীদার মুক্ত এবং শাশ্বত সত্য সত্তা। সুতরাং তাঁর সন্তুষ্টি আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।
আযান ও ইকামাতে দীনের মৌলিক বিষয়ে যে বিশেষ অর্থবোধক বাক্যসমূহ ব্যবহৃত হয়েছে এবং প্রভাবময়ী দাওয়াত বিঘোষিত হয়েছে তা গভীরভাবে প্রণিধানযোগ্য। বলাবাহুল্য আমাদের মসজিদসমূহ থেকে দৈনিক পাঁচবার এহেন দীনী দাওয়াত উচ্চকণ্ঠে ঘোষিত হয়।
কাজেই প্রত্যেক মুসলমান যদি তার শিশু সন্তানদের আযান তথা আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এবং আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ ﷺ' এর মর্ম সবিস্তার বুঝিয়ে দেয় তাহলে আশা করা যায় যে, তারা পারিপার্শ্বিক অনৈসলামিক দাওয়াতের শিকারে পরিণত হবে না।
আযান ও ইকামত সম্পর্কীয় কতিপয় নির্দেশ
যদিও বাহ্যত আযান ও ইকামত সালাতের সময়ে নির্দেশ করে তথাপি একথা লক্ষণীয় যে আযান ও ইকামতের হাকীকতের যে আল্লাহ্ তা'আলা আযান ও ইকামতে বিশেষ অর্থবোধক শব্দের সমাহার ঘটিয়েছেন যা মূলতঃ দীনের প্রাণ। বরং বলা চলে, তিনি দীনের পূর্ণ বুনিয়াদী শিক্ষা ও দাওয়াত এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন। দীনের মূল বিষয় হচ্ছে আল্লাহর সত্তা ও তাঁর গুণাবলী। এ পর্যায়ে যে আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ধবনি দিয়ে লোকদের সালাতের দিকে আহবান করা হয় এর চাইতে উত্তম বাক্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। এটাই হচ্ছে একত্ববাদের মূলকথা এবং এতে রয়েছে আল্লাহর গুণবাচক নামের সমাহার। কোননা 'আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, এর মধ্যে যে প্রভাবময়ী শব্দগুচ্ছ রয়েছে, সংক্ষেপে এর চেয়ে চমৎকার শব্দগুচ্ছ নির্বাচন করা সত্যিই অসম্ভব। একথার মূলে রয়েছে এ স্বীকারোক্তি যে আল্লাহ্ আমাদের ইলাহ্ ও উপাস্য। এর সাথে সাথে এ প্রশ্ন জাগে যে, তাঁর দাসত্বের বিশুদ্ধ পদ্ধতি কিভাবে শেখা যাবে? এর উত্তরে "আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ ﷺ” এর চেয়ে উত্তম ও যুক্ত বাক্য আর হতে পারে না। এর পর 'হায়্যা আলাস সালাহ’ বলে সালাতের দাওয়াত দেওয়া হয়। আর এ ইবাদত হচ্ছে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ মাধ্যম এবং আল্লাহর অভিমুখী হওয়ার প্রথম পদক্ষেপ। এর পর 'হায়্যা আলাল ফালাহ্' বলে মূলত এই ঘোষণাই দেওয়া হয় যে, এই ইবাদতই মানুষ কে কল্যাণ, মুক্তি ও সফলতার স্বর্ণ শিখরে পৌঁছায়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি এ পথ ছেড়ে অন্য পথে বিচরণ করে সে মূলত সফলতা থেকে বঞ্চিত থেকে যায়। মনে করা যেতে পারে যে, এ যেন আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের একটি অনন্য ঘোষণা। এ আহবান এমন শব্দ যোগে করা হয় যা কেবল বিশ্বাসের সাথেই সংশ্লিষ্ট নয় বরং জীবনের সর্বপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবেও গণ্য।
পরিশেষে আল্লাহু আকবার; আল্লাহু আকবার এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' দ্বারা এই ঘোষণাই দেওয়া হয় যে, সর্বাবিধ বড়ত্ব ও মাহাত্ম্যের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ্। তিনি অংশীদার মুক্ত এবং শাশ্বত সত্য সত্তা। সুতরাং তাঁর সন্তুষ্টি আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।
আযান ও ইকামাতে দীনের মৌলিক বিষয়ে যে বিশেষ অর্থবোধক বাক্যসমূহ ব্যবহৃত হয়েছে এবং প্রভাবময়ী দাওয়াত বিঘোষিত হয়েছে তা গভীরভাবে প্রণিধানযোগ্য। বলাবাহুল্য আমাদের মসজিদসমূহ থেকে দৈনিক পাঁচবার এহেন দীনী দাওয়াত উচ্চকণ্ঠে ঘোষিত হয়।
কাজেই প্রত্যেক মুসলমান যদি তার শিশু সন্তানদের আযান তথা আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এবং আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ ﷺ' এর মর্ম সবিস্তার বুঝিয়ে দেয় তাহলে আশা করা যায় যে, তারা পারিপার্শ্বিক অনৈসলামিক দাওয়াতের শিকারে পরিণত হবে না।
আযান ও ইকামত সম্পর্কীয় কতিপয় নির্দেশ
৩৬. হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বিলাল (রা) কে বললেনঃ হে বিলাল! যখন তুমি আযান দেবে, ধীরস্থিরভাবে ও দীর্ঘস্বরে আযান দেবে এবং যখন ইকামত দেবে তাড়াতাড়ি ও অনুচ্চস্বরে ইকামত দেবে, তোমার আযান ও ইকামতের মাঝখানে এতটুকু সময় অবকাশ দেবে যাতে আহার গ্রহণকারী তার আহার থেকে, পানকারী তার পান থেকে এবং যার পায়খানা পেশাবের প্রয়োজন সে যেন তা সেরে নিতে পারে। আর তোমরা আমাকে না দেখা পর্যন্ত সালাতে দাঁড়াবে না। (তিরমিযী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ جَابِرٍ ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِبِلاَلٍ : يَا بِلاَلُ ، إِذَا أَذَّنْتَ فَتَرَسَّلْ فِي أَذَانِكَ ، وَإِذَا أَقَمْتَ فَاحْدُرْ ، وَاجْعَلْ بَيْنَ أَذَانِكَ وَإِقَامَتِكَ قَدْرَ مَا يَفْرُغُ الآكِلُ مِنْ أَكْلِهِ ، وَالشَّارِبُ مِنْ شُرْبِهِ ، وَالمُعْتَصِرُ إِذَا دَخَلَ لِقَضَاءِ حَاجَتِهِ ، وَلاَ تَقُومُوا حَتَّى تَرَوْنِي. (رواه الترمذى)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
আলোচ্য হাদীসে আযান ও ইকামত সম্পর্কীয় বিষয় যে সব নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে তা ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না। তবে হাদীসের সর্বশেষ অংশ 'তোমরা আমাকে না দেখা পর্যন্ত সালাতে দাঁড়াবে না'। ব্যাখ্যা সাপেক্ষ।
রাসূলুল্লাহ ﷺ হুজ্জা থেকে বেরিয়ে শিগগির মসজিদে তাশরীফ আনবেন এ অনুমানের বশবর্তী হয়ে সাহাবা কিরাম কখনো কখনো সালাতের জন্য দাঁড়ায়ে থাকতেন। তিনি তাঁদের এরূপ করতে নিষেধ করেন এবং বলেন, আমি যতক্ষণ মসজিদে না আসব এবং তোমরা আমাকে না দেখবে ততক্ষণ তোমরা সালাতের জন্য দাড়াবে না। এ নিষেধাজ্ঞার কারণ সুস্পষ্ট। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর মসজিদে তাশরীফ আনয়নের পূর্বে সালাতের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা অনর্থক কষ্টের ব্যাপার। কেননা কখনো কোন কারণে তাঁর আগমনে বিলম্বও হতে পারে। তা ছাড়া তাঁর বিনয়ী স্বভাব তাঁকে পীড়া দিত যে আল্লাহর বান্দাগণ তাঁর জন্য সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে।
রাসূলুল্লাহ ﷺ হুজ্জা থেকে বেরিয়ে শিগগির মসজিদে তাশরীফ আনবেন এ অনুমানের বশবর্তী হয়ে সাহাবা কিরাম কখনো কখনো সালাতের জন্য দাঁড়ায়ে থাকতেন। তিনি তাঁদের এরূপ করতে নিষেধ করেন এবং বলেন, আমি যতক্ষণ মসজিদে না আসব এবং তোমরা আমাকে না দেখবে ততক্ষণ তোমরা সালাতের জন্য দাড়াবে না। এ নিষেধাজ্ঞার কারণ সুস্পষ্ট। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর মসজিদে তাশরীফ আনয়নের পূর্বে সালাতের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা অনর্থক কষ্টের ব্যাপার। কেননা কখনো কোন কারণে তাঁর আগমনে বিলম্বও হতে পারে। তা ছাড়া তাঁর বিনয়ী স্বভাব তাঁকে পীড়া দিত যে আল্লাহর বান্দাগণ তাঁর জন্য সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)