মা'আরিফুল হাদীস
সলাত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩১
সলাত অধ্যায়
আযান
রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন পবিত্র মক্কা থেকে মদীনা তাইয়্যেবা হিজরত করেন তখন জামা'আতের সাথে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদ নির্মাণ করেন। জামা'আতের সময় হলে কিভাবে সহজে লোকদের জড়ো করা যায় এ বিষয়টি তাঁকে ভাবিয়ে তুলে। রাসূলুল্লাহ ﷺ এ বিষয়ে সাহাবাগণের সাথে পরামর্শ করেন। এ পর্যায়ে কেউ কেউ বললেন, সালাতের জামা'আত শুরু করার প্রারম্ভে প্রতীক হিসেবে একটি দীর্ঘ পতাকা উড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। কেউ কেউ বললেন, কোন উঁচু জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া যেতে পারে। কেউ কেউ পরামর্শ দিলেন ইয়াহুদীরা তাদের ইবাদতখানার যেমন শিঙা বাজায় সেরূপ আমরা শিঙা বাজিয়ে লোকদের জামা'আতে শরীর করতে পারি। কেউ কেউ খ্রিস্টানদের ঘন্টা বাজানোর অভিমত দেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ ﷺ এসব অভিমত কোনটিকেই সন্তুষ্ট হলেন না। তারপর তিনি এ বিষয় চিন্তা-বিভোর থাকেন। তাঁর এ চিন্তিতভাবে সাহাবাদের ভাবিয়ে তুলে। তাঁদের মধ্যকার এক আনসার সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যায়িদ ইবনে আবদ রাবিবহ্ (রা) রাসূলুল্লাহ ﷺ কে চিন্তিত দেখে অস্থির হয়ে পড়েন। সে রাতেই তিনি স্বপ্নযোগে আযান ও ইকামতের শব্দমালা লাভ করেন। (যার সবিস্তার বিবরণ পরবর্তী হাদীস থেকে জানা যাবে)। তিনি অতি প্রত্যুষে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর কাছে গিয়ে স্বপ্নের বিষয় তাঁকে অবহিত করেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, আল্লাহ্ চাহেত তোমার স্বপ্ন যথার্থ এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়েছে। (এ কথার সত্যতা তিনি এজন্য মেনে নেন যে, সাহাবীর স্বপ্ন সংঘটিত বিষয় অবহিত হওয়ার পূর্বেই তিনি ওহী যোগে শব্দমালা অবহিত হয়েছিলেন, অথবা স্বপ্ন বৃত্তান্ত শোনার পর আল্লাহ্ তাঁর অন্তরে প্রত্যয় সৃষ্টি করেন।) মোটকথা তিনি হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে যায়িদ ইবনে আবদ রাব্বিহকে এ মর্মে নির্দেশ দেন যে, তিনি যেন হযরত বিলাল (রা) কে আযান ও ইকামতের শব্দমালা শিক্ষা দেন। উল্লেখ্য হযরত বিল্লাল (রা) উচ্চকণ্ঠের অধিকারী ছিলেন। তিনি প্রত্যেক সালাতের জন্য আযান দিতেন। এদিন থেকেই আযানের শুভ সূচনা ঘটে। আজ পর্যন্ত তা ইসলামের বিশেষ প্রতীকরূপে স্বীকৃতি পেয়ে আসছে। এই ভূমিকা পাঠের পর আযান ও ইকামত সম্পর্কে নিম্নবর্ণিত হাদীসসমূহ পাঠ করা যেতে পারে।
ইসলামে আযানের শুভ সূচনা
রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন পবিত্র মক্কা থেকে মদীনা তাইয়্যেবা হিজরত করেন তখন জামা'আতের সাথে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদ নির্মাণ করেন। জামা'আতের সময় হলে কিভাবে সহজে লোকদের জড়ো করা যায় এ বিষয়টি তাঁকে ভাবিয়ে তুলে। রাসূলুল্লাহ ﷺ এ বিষয়ে সাহাবাগণের সাথে পরামর্শ করেন। এ পর্যায়ে কেউ কেউ বললেন, সালাতের জামা'আত শুরু করার প্রারম্ভে প্রতীক হিসেবে একটি দীর্ঘ পতাকা উড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। কেউ কেউ বললেন, কোন উঁচু জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া যেতে পারে। কেউ কেউ পরামর্শ দিলেন ইয়াহুদীরা তাদের ইবাদতখানার যেমন শিঙা বাজায় সেরূপ আমরা শিঙা বাজিয়ে লোকদের জামা'আতে শরীর করতে পারি। কেউ কেউ খ্রিস্টানদের ঘন্টা বাজানোর অভিমত দেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ ﷺ এসব অভিমত কোনটিকেই সন্তুষ্ট হলেন না। তারপর তিনি এ বিষয় চিন্তা-বিভোর থাকেন। তাঁর এ চিন্তিতভাবে সাহাবাদের ভাবিয়ে তুলে। তাঁদের মধ্যকার এক আনসার সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যায়িদ ইবনে আবদ রাবিবহ্ (রা) রাসূলুল্লাহ ﷺ কে চিন্তিত দেখে অস্থির হয়ে পড়েন। সে রাতেই তিনি স্বপ্নযোগে আযান ও ইকামতের শব্দমালা লাভ করেন। (যার সবিস্তার বিবরণ পরবর্তী হাদীস থেকে জানা যাবে)। তিনি অতি প্রত্যুষে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর কাছে গিয়ে স্বপ্নের বিষয় তাঁকে অবহিত করেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, আল্লাহ্ চাহেত তোমার স্বপ্ন যথার্থ এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়েছে। (এ কথার সত্যতা তিনি এজন্য মেনে নেন যে, সাহাবীর স্বপ্ন সংঘটিত বিষয় অবহিত হওয়ার পূর্বেই তিনি ওহী যোগে শব্দমালা অবহিত হয়েছিলেন, অথবা স্বপ্ন বৃত্তান্ত শোনার পর আল্লাহ্ তাঁর অন্তরে প্রত্যয় সৃষ্টি করেন।) মোটকথা তিনি হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে যায়িদ ইবনে আবদ রাব্বিহকে এ মর্মে নির্দেশ দেন যে, তিনি যেন হযরত বিলাল (রা) কে আযান ও ইকামতের শব্দমালা শিক্ষা দেন। উল্লেখ্য হযরত বিল্লাল (রা) উচ্চকণ্ঠের অধিকারী ছিলেন। তিনি প্রত্যেক সালাতের জন্য আযান দিতেন। এদিন থেকেই আযানের শুভ সূচনা ঘটে। আজ পর্যন্ত তা ইসলামের বিশেষ প্রতীকরূপে স্বীকৃতি পেয়ে আসছে। এই ভূমিকা পাঠের পর আযান ও ইকামত সম্পর্কে নিম্নবর্ণিত হাদীসসমূহ পাঠ করা যেতে পারে।
ইসলামে আযানের শুভ সূচনা
৩১. হযরত আনাস তনয় আবু উমায়র সূত্রে তাঁর আনসার চাচা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জামা'আতে সালাত আদায় কল্পে কিভাবে লোক জমা করা যায় সে বিষয়ে নবী কারীম ﷺ চিন্তিত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ বললেন সালাতের সময় পতাকা উড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। লোকেরা যখন তা দেখবে তখন অন্যদের সালাতের জামা'আতের কথা জানাবে। কিন্তু নবী কারীম ﷺ এই অভিমত পসন্দ করলেন না। বর্ণনাকারী বলেন, তাঁর কাছে ইয়াহুদীদের শিঙার (বিউগল) প্রস্তাব দেওয়া হলো। কিন্তু তিনি এতে সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। তিনি বললেন, এ হচ্ছে ইয়াহুদীদের ব্যবহৃত একটি বস্তু। বর্ণনাকারী বলেন তারপর তাঁর নিকট খ্রিস্টানদের ঘন্টার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি বললেন, এতে খিস্টানদের ব্যবহৃত বস্তু (মোটকথা সে মজলিসে কোন সিদ্ধান্ত হল না)। রাসূলুল্লাহ ﷺ কে ভীষণ চিন্তিত দেখে আবদুল্লাহ্ ইবনে যায়িদ (রা) ভীষণ চিন্তিত হয়ে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। তারপর স্বপ্নে তাঁকে আযানের শব্দাবলী জানানো হয়। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, অতি প্রত্যুষে আবদুল্লাহ্ ইবনে যায়িদ (রা) রাসূলুল্লাহ ﷺ কে এ সংবাদ অবহিত করে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তখন নিদ্রা জাগ্রত অবস্থায় ছিলাম। ইতোমধ্যে এক আগন্তুক এসে আমাকে আযানের শব্দমালা শিখিয়ে দিল। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, হে বিলাল! উঠো এবং আবদুল্লাহ্ ইবনে যায়িদ কী বলে তা শিখে নাও। বর্ণনাকারী বলেন, বিলাল (রা) কার্যত নির্দেশ মান্য করেন এবং আযান দেন। (আবু দাউদ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي عُمَيْرِ بْنِ أَنَسٍ ، عَنْ عُمُومَةٍ لَهُ مِنْ الْأَنْصَارِ ، قَالَ : "اهْتَمَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلصَّلَاةِ كَيْفَ يَجْمَعُ النَّاسَ لَهَا ، فَقِيلَ لَهُ : انْصِبْ رَايَةً عِنْدَ حُضُورِ الصَّلَاةِ فَإِذَا رَأَوْهَا آذَنَ بَعْضُهُمْ بَعْضًا ، فَلَمْ يُعْجِبْهُ ذَلِكَ ، قَالَ : وَذُكِرَ لَهُ الْقُنْعُ يَعْنِي شَبُّورُ الْيَهُودِ فَلَمْ يُعْجِبْهُ ذَلِكَ ، وَقَالَ : هُوَ مِنْ أَمْرِ الْيَهُودِ ، قَالَ : فَذُكِرَ لَهُ النَّاقُوسُ ، فَقَالَ : هُوَ مِنْ أَمْرِ النَّصَارَى ، فَانْصَرَفَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدِ وَهُوَ مُهْتَمٌّ لِهَمِّ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَأُرِيَ الْأَذَانَ فِي مَنَامِهِ ، قَالَ : فَغَدَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِنِّي لَبَيْنَ نَائِمٍ وَيَقْظَانَ إِذْ أَتَانِي آتٍ فَأَرَانِي الْأَذَانَ ، فَقَالَ : رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : يَا بِلَالُ ، قُمْ فَانْظُرْ مَا يَأْمُرُكَ بِهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدٍ فَافْعَلْهُ ، قَالَ : فَأَذَّنَ بِلَالٌ ". (رواه ابو داؤد)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
আলোচ্য হাদীসের সম্পর্কে দু'টি কথা পরিষ্কার করা আবশ্যক। যথা (১) হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে যায়িদ (রা) সূত্রে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে সালাতে লোকদের জড়ো করার জন্য ঘন্টা তৈরীর নির্দেশ দিয়েছেন। (২) পক্ষান্তরে আনাস তনয় আবূ উমায়র বর্ণিত রিওয়ায়াত থেকে জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে যখন ঘন্টার তৈরীর কথা বলা হয়, তখন তিনি বলেন, এতো খ্রিস্টানদের ধর্মীয় বস্তু। অধমের (গ্রন্থকার) নিকট এর বিশুদ্ধ সমাধান এরূপ হতে পারে যে, সালাতে লোকদের জড়ো করার জন্য রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সামনে যে সব বস্তু পেশ করা হয় তন্মধ্যে পতাকা, আগুন প্রজ্জলিতকরণ, ইয়াহুদীদের শিঙা ইত্যাদি বস্তু ছিল। রাসূলুল্লাহ ﷺ এসব বিষয় সরাসরি প্রত্যাখান করেন। তারপর তাঁর অনুমোদনের জন্য দ্বিতীয় কোন বস্তু পেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু ঘন্টা সম্পর্কে তিনি কেবল এতটুকু বলে ক্ষান্ত করেন যে, এতো খ্রিস্টানদের ধর্মীয় বস্তু। কিন্তু একথা দ্বারা ঘন্টা অবৈধ হওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার বুঝা যায়নি। বরং তাঁর ভাষণ দ্বারা সম্ভবত কোন সাহাবী বুঝে নিয়েছিলেন যে, অন্যান্য বস্তুর তুলনায় তিনি একে প্রাধান্য দিয়েছেন। তারা এও বুঝে নিয়েছিলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ ঘন্টা অনিচ্ছাসত্ত্বেও অনুমোদন দিয়েছেন এবং যতক্ষণ এর সুষ্ঠু সমাধান বেরিয়ে না আসে ততক্ষণ এর উপর আমল করার অনুমোদন দিয়েছেন। (সম্ভবত এ কারণে কারো পক্ষ থেকে কোন বস্তু অনুমোদনের জন্য তাঁর কাছে পেশ করা হয়নি) এ অধমের মতে, হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে যায়িদ (রা) امر بالناقوس (নবী কারীম ﷺ ঘন্টার নির্দেশ দেন) বলেছেন। কখনো কখনো কোন বস্তুর অনুমোদন ও সম্মতি দানের ক্ষেত্রে مر। (নির্দেশ) শব্দ ব্যবহার করা হয়। কুরআন-হাদীসে এর অসংখ্য দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যায়।
আলোচ্য হাদীস সম্পর্কে দ্বিতীয় বিষয় হল এই যে, আযানে যে সব শব্দ দুই দুইবার বলা হয়েছে ইকামতে তা বলা হয়েছে একবার করে। হযরত আনাস (রা) সূত্রে পরে বর্ণিত রিওয়ায়াত থেকে জানা যায় যে, ইকামতে উক্ত শব্দসমূহ একবার করে বলারই নির্দেশ ছিল। কিন্তু অন্যান্য রিওয়ায়াত যা পরে বর্ণিত হবে। এর মধ্যে সহীহ্ মুসলিমের বর্ণনাও রয়েছে। আযানের মত ইকামতেও শব্দসমূহ দুই দুইবার বর্ণিত হয়েছে। কোন কোন হাদীস বিশারদ নিজ প্রজ্ঞার উপর ভিত্তি করে (ইকামতের শব্দ) এক একবার এবং অপর কিছু সংখ্যক প্রাজ্ঞ ব্যক্তি দুই দুইবারকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তবে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, ইকামতের ক্ষেত্রে উভয় পদ্ধতিই প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি। মতবিরোধ কেবল প্রাধান্য ফযীলাতের ক্ষেত্রে, অন্য ক্ষেত্রে নয়।
আলোচ্য হাদীস সম্পর্কে দ্বিতীয় বিষয় হল এই যে, আযানে যে সব শব্দ দুই দুইবার বলা হয়েছে ইকামতে তা বলা হয়েছে একবার করে। হযরত আনাস (রা) সূত্রে পরে বর্ণিত রিওয়ায়াত থেকে জানা যায় যে, ইকামতে উক্ত শব্দসমূহ একবার করে বলারই নির্দেশ ছিল। কিন্তু অন্যান্য রিওয়ায়াত যা পরে বর্ণিত হবে। এর মধ্যে সহীহ্ মুসলিমের বর্ণনাও রয়েছে। আযানের মত ইকামতেও শব্দসমূহ দুই দুইবার বর্ণিত হয়েছে। কোন কোন হাদীস বিশারদ নিজ প্রজ্ঞার উপর ভিত্তি করে (ইকামতের শব্দ) এক একবার এবং অপর কিছু সংখ্যক প্রাজ্ঞ ব্যক্তি দুই দুইবারকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তবে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, ইকামতের ক্ষেত্রে উভয় পদ্ধতিই প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি। মতবিরোধ কেবল প্রাধান্য ফযীলাতের ক্ষেত্রে, অন্য ক্ষেত্রে নয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)