মা'আরিফুল হাদীস
সলাত অধ্যায়
হাদীস নং: ১৩
সলাত অধ্যায়
সালাতের সময়সমূহ
১৩. হযরত বুরায়দা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে সালাতের সময় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। সে মতে তিনি তাকে বললেন: তুমি আমাদের সাথে (আজ ও কাল এই) দুই দিন সালাত আদায় কর। (প্রথম দিন) সূর্য ঢলে পড়তেই তিনি বিলাল (রা) কে আযান দিতে বললেন। তিনি আযান দিলেন। এরপর তিনি তাকে যুহরের ইকামত দিতে বললেন এবং যুহরের সালাত আদায় করা হল। আসরের ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে তিনি বিলাল (রা) কে নির্দেশ দিলে তিনি যথারীতি আসরের আযান ইকামত দেন। উল্লেখ্য, তখন সূর্য উপরে অবস্থিত শুভ্র ও স্বচ্ছ ছিল। তারপর সূর্য ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে তিনি তাকে মাগরিবের ইকামত দিতে নির্দেশ দিলে তিনি ইকামত দেন। তারপর তিনি শাফাক অদৃশ্য হওয়া মাত্র তাকে নির্দেশ দিলে তিনি ইশার ইকামত দেন। তারপর রাত শেষে সুবহে সাদিক হওয়ার সাথে সাথে তিনি তাকে নির্দেশ দিলে তিনি ফজরের ইকামত দেন ও সালাত আদায় করেন।
তারপর দ্বিতীয় দিন এলে তিনি তাপ ঠাণ্ডা হওয়ার পরপর যুহরের আযান দানের জন্য বিলালকে নির্দেশ দেন। তিনি তাপ ঠাণ্ডা হওয়ার অপেক্ষা করেন এবং তাপ যথেষ্ট ঠাণ্ডা হওয়ার পর যুহরের (শেষ ওয়াক্ত) সালাত আদায় করেন। তারপর আসরের সালাত আদায় করেন। তবে সূর্য তখনো উপরে ছিল। কিন্তু প্রথম দিনের অপেক্ষা অধিক বিলম্বে। তারপর মাগরিবের সালাত আদায় করেন, তবে তখন 'শাফাক' অদৃষ্ট হয় নি। এরপর রাতের এক তৃতীয়াংশের পর ইশার সালাত আদায় করেন। তারপর সুবহে সাদিকের আলো ছড়িয়ে পড়ার পর ফজরের সালাত আদায় করেন। তারপর তিনি বললেন, সালাতের ওয়াক্ত সম্পর্কে প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়? লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি উপস্থিত আছি। তিনি বললেন: এই দুইদিন যা দেখলে তা-ই হচ্ছে তোমাদের সালাতের সময়। (মুসলিম)
তারপর দ্বিতীয় দিন এলে তিনি তাপ ঠাণ্ডা হওয়ার পরপর যুহরের আযান দানের জন্য বিলালকে নির্দেশ দেন। তিনি তাপ ঠাণ্ডা হওয়ার অপেক্ষা করেন এবং তাপ যথেষ্ট ঠাণ্ডা হওয়ার পর যুহরের (শেষ ওয়াক্ত) সালাত আদায় করেন। তারপর আসরের সালাত আদায় করেন। তবে সূর্য তখনো উপরে ছিল। কিন্তু প্রথম দিনের অপেক্ষা অধিক বিলম্বে। তারপর মাগরিবের সালাত আদায় করেন, তবে তখন 'শাফাক' অদৃষ্ট হয় নি। এরপর রাতের এক তৃতীয়াংশের পর ইশার সালাত আদায় করেন। তারপর সুবহে সাদিকের আলো ছড়িয়ে পড়ার পর ফজরের সালাত আদায় করেন। তারপর তিনি বললেন, সালাতের ওয়াক্ত সম্পর্কে প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়? লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি উপস্থিত আছি। তিনি বললেন: এই দুইদিন যা দেখলে তা-ই হচ্ছে তোমাদের সালাতের সময়। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ بُرَيْدَةَ قَالَ إِنَّ رَجُلًا سَأَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ وَقْتِ الصَّلَاةِ ، فَقَالَ لَهُ : « صَلِّ مَعَنَا هَذَيْنِ - يَعْنِي الْيَوْمَيْنِ - فَلَمَّا زَالَتِ الشَّمْسُ أَمَرَ بِلَالًا فَأَذَّنَ ، ثُمَّ أَمَرَهُ ، فَأَقَامَ الظُّهْرَ ، ثُمَّ أَمَرَهُ ، فَأَقَامَ الْعَصْرَ وَالشَّمْسُ مُرْتَفِعَةٌ بَيْضَاءُ نَقِيَّةٌ ، ثُمَّ أَمَرَهُ فَأَقَامَ الْمَغْرِبَ حِينَ غَابَتِ الشَّمْسُ ، ثُمَّ أَمَرَهُ فَأَقَامَ الْعِشَاءَ حِينَ غَابَ الشَّفَقُ ، ثُمَّ أَمَرَهُ فَأَقَامَ الْفَجْرَ حِينَ طَلَعَ الْفَجْرَ ، فَلَمَّا أَنْ كَانَ الْيَوْمُ الثَّانِي أَمَرَهُ فَأَبْرَدَ بِالظُّهْرِ ، فَأَبْرَدَ بِهَا ، فَأَنْعَمَ أَنْ يُبْرِدَ بِهَا ، وَصَلَّى الْعَصْرَ وَالشَّمْسُ مُرْتَفِعَةٌ أَخَّرَهَا فَوْقَ الَّذِي كَانَ ، وَصَلَّى الْمَغْرِبَ قَبْلَ أَنْ يَغِيبَ الشَّفَقُ ، وَصَلَّى الْعِشَاءَ بَعْدَمَا ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ ، وَصَلَّى الْفَجْرَ فَأَسْفَرَ بِهَا » ، ثُمَّ قَالَ : « أَيْنَ السَّائِلُ عَنْ وَقْتِ الصَّلَاةِ؟ » فَقَالَ الرَّجُلُ : أَنَا ، يَا رَسُولَ اللهِ ، قَالَ : « وَقْتُ صَلَاتِكُمْ بَيْنَ مَا رَأَيْتُمْ » (رواه مسلم)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
সালাতের প্রথম ও শেষ সময় সম্পর্কে প্রশ্নকারীকে রাসূলুল্লাহ ﷺ কেবল নিজ যবানীতে বুঝিয়ে দেয়ার চাইতে আমল করে দেখানো উত্তম মনে করেছেন। আর তাই তিনি প্রশ্নকারীকে তাঁর সাথে সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তারপর তিনি প্রথম দিন প্রথম ওয়াক্তে এবং দ্বিতীয় দিন জায়িয ওয়াক্ত পর্যন্ত বিলম্ব করে সালাত আদায় করেন এবং তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তুমি আমাদেরকে যে সময় সালাত আদায় করতে দেখেছ তা-ই হচ্ছে সালাতের প্রথম ও শেষ সময়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)