মা'আরিফুল হাদীস

পবিত্রতা অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৬
পবিত্রতা অধ্যায়
উযূর নিয়ম
৩৬. হযরত উসমান (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি একবার এরূপ উযূ করেন, "তিনবার তাঁর দুই হাতের উপর পানি ঢালেন এরপর কুলি করেন এবং নাকে পানি দেন ও বের করে দিয়ে নাক পরিষ্কার করেন। তারপর সম্পূর্ণ মুখমণ্ডল তিনবার ধৌত করেন। প্রথমে তিনবার ডানহাত এবং পরে তিনবার বাম হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করেন। তারপর মাথা মাসেহ করেন। এরপর তিনবার ডান পা এবং পরে তিনবার বাম পা ধৌত করেন। এরপর তিনি বলেন, আমি যেরূপ উযূ করলাম এরূপ আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে উযূ করতে দেখেছি। তারপর তিনি (রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যে ব্যক্তি আমার ন্যায় এরূপ উযূ করে ভিন্ন চিন্তা বাদ দিয়ে পূর্ণ মনোযোগসহ দু'রাক'আত সালাত আদায় করবে তার পূর্বেকৃত গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বুখারী ও মুসলিম, তবে শব্দমালা বুখারীর)
کتاب الطہارت
عَنْ عُثْمَانَ أَنَّهُ تَوَضَّأَ فَأَفْرَغَ عَلَى يَدَيْهِ ثَلاَثًا ، ثُمَّ تَمَضْمَضَ وَاسْتَنْثَرَ ، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا ، ثُمَّ غَسَلَ يَدَهُ اليُمْنَى إِلَى المَرْفِقِ ثَلاَثًا ، ثُمَّ غَسَلَ يَدَهُ اليُسْرَى إِلَى المَرْفِقِ ثَلاَثًا ، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَهُ اليُمْنَى ثَلاَثًا ، ثُمَّ اليُسْرَى ثَلاَثًا ، ثُمَّ قَالَ : رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَوَضَّأَ نَحْوَ وَضُوئِي هَذَا ثُمَّ قَالَ : « مَنْ تَوَضَّأَ وُضُوئِي هَذَا ، ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ لاَ يُحَدِّثُ نَفْسَهُ فِيهِمَا بِشَيْءٍ ، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ » (رواه البخارى ومسلم واللفظ للبخارى)

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হযরত উসমান (রা) আলোচ্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর উযূর যে নিয়ম কার্যত দেখালেন তাই মূলতঃ উযূর উত্তম সুন্নাত নিয়ম। নবী কারীম ﷺ কয়বার কুলি, মুখ এবং পানি দ্বারা নাক পরিষ্কার করেছিলেন, এ হাদীসে তার উল্লেখ নেই। কিন্তু অপরাপর বর্ণনা দ্বারা তিনবারের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।
এ হাদীসে একাগ্রতা ও বিণয় নম্রতার সাথে যে দু'রাক'আত সালাত আদায়ের কথা বলা হয়েছে তা নফল সালাত নাও হতে পারে। কাজেই বলা যায়, কেউ যদি মাসনূন পদ্ধতিতে উযূ করে ফরয কিংবা সুন্নাত সালাত আদায় করে এবং তাতে পূর্ণ একাগ্রতা থাকে সেও আল্লাহ্ চাহেত প্রতিশ্রুত মাগফিরাত লাভে ধন্য হবে।
হাদীস ভাষ্যকার ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিবর্গের মতে, মনে যদি এদিক সেদিকের খেয়াল চেপে বসে তবে তাই হচ্ছে বিক্ষিপ্ত চিন্তা। কিন্তু যদি কোন খেয়াল অন্তরে বদ্ধমূল না হয় এবং তা দূরীকরণের চেষ্টা করা হয় তবে কোন ক্ষতি নেই। কারণ এসব বিষয় কামিল মু'মিনদের সামনেও ভেসে ওঠে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান