মা'আরিফুল হাদীস
পবিত্রতা অধ্যায়
হাদীস নং: ১৯
পবিত্রতা অধ্যায়
কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও পরিপূর্ণভাবে উযূ করা
১৯. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: আমি কি তোমাদের এমন কাজের কথা বলব না যাতে করে আল্লাহ্ তোমাদের পাপরাশি মিটিয়ে দেবেন এবং মর্যাদা সমুন্নত করবেন? সাহাবায়ে কিরাম আরয করলেন: হে আল্লাহর রাসূল! হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি বললেন: তা হল অসুবিধা ও কষ্ট সত্ত্বেও পূর্ণরূপে উযূ করা, মসজিদে আসার জন্য অধিক পদচারণা এবং এক সালাতের পর অন্য সালাতের জন্য অপেক্ষা করা। জেনে রেখ, এটাই হচ্ছে রিবাত- প্রকৃত সীমান্ত প্রহরা। (মুসলিম)
کتاب الطہارت
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : « أَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى مَا يَمْحُو اللهُ بِهِ الْخَطَايَا ، وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّرَجَاتِ؟ » قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ : « إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ عَلَى الْمَكَارِهِ ، وَكَثْرَةُ الْخُطَا إِلَى الْمَسَاجِدِ ، وَانْتِظَارُ الصَّلَاةِ بَعْدَ الصَّلَاةِ ، فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ » (رواه مسلم)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ তিনটি কাজের প্রতি অনুপ্রাণিত করেছেন এবং বলেছেন: এসকল কাজ করায় পাপমোচন হয় এবং উত্তরোত্তর মর্যাদা বেড়ে যায়। কাজগুলো হলো:
১. উযূ করার সময় যদি কষ্টও হয় তবুও পূর্ণরূপে উযূ করা এবং সুন্নাত পরিপন্থী সংক্ষিপ্ত উযূ না করা। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায়, যদি শীতকাল হয়, পানি ভীষণ ঠাণ্ডা হয়, বা পানি এত কম হয় যাতে সুন্নাত মুতাবিক প্রতিটি অঙ্গ ধৌত করা না যায় ইত্যাদি অবস্থায় যদি পর্যাপ্ত পানির জন্য দূরে যেতে হয় এবং কষ্ট স্বীকার করে সুন্নাত মুতাবিক পুরোপুরি উযূর অঙ্গসমূহ ধৌত করা হয়, তবে তা হবে এমনই পসন্দনীয় কাজ যে, এর বরকতে আল্লাহ্ তাঁর বান্দার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন এবং মর্যাদা সমুন্নত করে দিবেন।
২. দ্বিতীয় কাজ সম্পর্কে তিনি বলেছেন: 'মসজিদের দিকে অধিক পদচারণা।' অর্থাৎ মসজিদের সাথে গভীর সম্পর্ক রাখা। সালাত আদায়ের জন্য বার বার মসজিদে যাওয়া এবং যার ঘর মসজিদ থেকে দূরে অবস্থিত তার অধিক সাওয়াব লাভ করে ধন্য হওয়া।
৩. তৃতীয় কাজ সম্পর্কে বলেছেন: এক সালাত আদায়ের পর অন্য সালাতের প্রতীক্ষায় থাকা এবং এর দিকে অন্তর নিবদ্ধ রাখা। বলাবাহুল্য, সালাত আদায়ের যার অন্তর প্রশান্তি লাভ করে কেবল তারই এহেন অবস্থা হয়ে থাকে এবং তারই ভাগ্যে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উক্তি قُرَّةُ عَيْنِى فِي الصَّلوٰة "হে আল্লাহ্! সালাত দ্বারা আমার চোখ জুড়িয়ে দাও"- এর অনুভূতির কিছুটা নসীব হয়।
হাদীসের শেষাংশে তিনি বলেছেন: এই হচ্ছে প্রকৃত 'রিবাত'। রিবাতের প্রচলিত অর্থ হচ্ছে, ইসলামী রাষ্ট্রের সীমান্ত এলাকায় প্রহরারত থাকা। প্রতিপক্ষের আক্রমণ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশের সীমান্তে যে যোদ্ধাদের মোতায়েন করা হয় এবং তারা যে প্রহরারত থাকে তারই নাম 'রিবাত'। একথা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, এ হচ্ছে একটি বিরাট মর্যাদা সম্পন্ন কাজ। কারণ সর্বদা জীবনের ঝুঁকি থাকে। হাদীসে বর্ণিত উল্লিখিত তিনটি কাজকে সম্ভবত রাসুলুল্লাহ ﷺ এ জন্য বিরাত বলেছেন যে, এসকল কাজের মাধ্যমে শয়তানের ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং শয়তানের হামলা থেকে ঈমান রক্ষা করা হয়। বলা বাহুল্য, এদিক বিবেচনায় রাষ্ট্রের সীমান্ত রক্ষার চেয়ে ঈমান রক্ষার বিষয়টি আরো অধিক গুরুত্বের দাবী রাখে।
১. উযূ করার সময় যদি কষ্টও হয় তবুও পূর্ণরূপে উযূ করা এবং সুন্নাত পরিপন্থী সংক্ষিপ্ত উযূ না করা। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায়, যদি শীতকাল হয়, পানি ভীষণ ঠাণ্ডা হয়, বা পানি এত কম হয় যাতে সুন্নাত মুতাবিক প্রতিটি অঙ্গ ধৌত করা না যায় ইত্যাদি অবস্থায় যদি পর্যাপ্ত পানির জন্য দূরে যেতে হয় এবং কষ্ট স্বীকার করে সুন্নাত মুতাবিক পুরোপুরি উযূর অঙ্গসমূহ ধৌত করা হয়, তবে তা হবে এমনই পসন্দনীয় কাজ যে, এর বরকতে আল্লাহ্ তাঁর বান্দার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন এবং মর্যাদা সমুন্নত করে দিবেন।
২. দ্বিতীয় কাজ সম্পর্কে তিনি বলেছেন: 'মসজিদের দিকে অধিক পদচারণা।' অর্থাৎ মসজিদের সাথে গভীর সম্পর্ক রাখা। সালাত আদায়ের জন্য বার বার মসজিদে যাওয়া এবং যার ঘর মসজিদ থেকে দূরে অবস্থিত তার অধিক সাওয়াব লাভ করে ধন্য হওয়া।
৩. তৃতীয় কাজ সম্পর্কে বলেছেন: এক সালাত আদায়ের পর অন্য সালাতের প্রতীক্ষায় থাকা এবং এর দিকে অন্তর নিবদ্ধ রাখা। বলাবাহুল্য, সালাত আদায়ের যার অন্তর প্রশান্তি লাভ করে কেবল তারই এহেন অবস্থা হয়ে থাকে এবং তারই ভাগ্যে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উক্তি قُرَّةُ عَيْنِى فِي الصَّلوٰة "হে আল্লাহ্! সালাত দ্বারা আমার চোখ জুড়িয়ে দাও"- এর অনুভূতির কিছুটা নসীব হয়।
হাদীসের শেষাংশে তিনি বলেছেন: এই হচ্ছে প্রকৃত 'রিবাত'। রিবাতের প্রচলিত অর্থ হচ্ছে, ইসলামী রাষ্ট্রের সীমান্ত এলাকায় প্রহরারত থাকা। প্রতিপক্ষের আক্রমণ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশের সীমান্তে যে যোদ্ধাদের মোতায়েন করা হয় এবং তারা যে প্রহরারত থাকে তারই নাম 'রিবাত'। একথা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, এ হচ্ছে একটি বিরাট মর্যাদা সম্পন্ন কাজ। কারণ সর্বদা জীবনের ঝুঁকি থাকে। হাদীসে বর্ণিত উল্লিখিত তিনটি কাজকে সম্ভবত রাসুলুল্লাহ ﷺ এ জন্য বিরাত বলেছেন যে, এসকল কাজের মাধ্যমে শয়তানের ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং শয়তানের হামলা থেকে ঈমান রক্ষা করা হয়। বলা বাহুল্য, এদিক বিবেচনায় রাষ্ট্রের সীমান্ত রক্ষার চেয়ে ঈমান রক্ষার বিষয়টি আরো অধিক গুরুত্বের দাবী রাখে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)