মা'আরিফুল হাদীস
আখলাক অধ্যায়
হাদীস নং: ২৩৫
আখলাক অধ্যায়
উপরের হাত নিচের হাতের চেয়ে উত্তম
২৩৫. হযরত হাকিম ইবন হিযাম (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর নিকট সওয়াল করলাম। তিনি আমাকে দান করলেন। পুনরায় তাঁর নিকট সওয়াল করলাম। তিনি আমাকে দিলেন এবং বললেনঃ হে হাকিম! এ সম্পদ সবুজ ও সুমিষ্ট। যে নফসের বদান্যতার সাথে তা গ্রহণ করে, তাতে তার জন্য বরকত রয়েছে। যে নফসের সম্মানের জন্য তা গ্রহণ করে, তাতে তার জন্য কোন বরকত নেই এবং তার অবস্থা এরূপ যেন এক ব্যক্তি খায় কিন্তু তার পেট ভরে না। উপরের হাত নিচের হাতের চেয়ে উত্তম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকে যিনি হক সহকারে পাঠিয়েছেন তাঁর কসম, আপনার (এ দানের) পর দুনিয়া ত্যাগ করা পর্যন্ত আমি কারো নিকট থেকে কিছু গ্রহণ করব না। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الاخلاق
عَنْ حَكِيمَ بْنَ حِزَامٍ قَالَ : سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَأَعْطَانِي ثُمَّ سَأَلْتُهُ ، فَأَعْطَانِي ثُمَّ قَالَ لِي : « يَا حَكِيمُ ، إِنَّ هَذَا المَالَ خَضِرٌ حُلْوٌ ، فَمَنْ أَخَذَهُ بِسَخَاوَةِ نَفْسٍ ، بُورِكَ لَهُ فِيهِ وَمَنْ أَخَذَهُ بِإِشْرَافِ نَفْسٍ ، لَمْ يُبَارَكْ لَهُ فِيهِ ، وَكَانَ كَالَّذِي يَأْكُلُ وَلاَ يَشْبَعُ ، وَاليَدُ العُلْيَا خَيْرٌ مِنَ اليَدِ السُّفْلَى » ، قَالَ حَكِيمٌ : فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ لاَ أَرْزَأُ أَحَدًا بَعْدَكَ شَيْئًا حَتَّى أُفَارِقَ الدُّنْيَا . (رواه البخارى ومسلم)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
নফসের প্ররোচনায় কোন প্রয়োজন পূরণ করার জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী না হওয়া অনুচিত। অন্যের নিকট হাত সম্প্রসারণ করার মধ্যে কোন কল্যাণ নেই; বরং তাতে নানাবিধ অকল্যাণ ও অসম্মান রয়েছে। অন্যের সম্পত্তির প্রতি লোভ-লালসা না থাকা কিংবা অন্যের মুখাপেক্ষী না হওয়ার সংকল্প থাকা সত্ত্বেও যদি কারো নিকট কোন সম্পদ আসে, তাতে কোন অকল্যাণ নেই।
রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নাগরিকদেরকে যেসব পুরষ্কার ও ভাতা দেয়া হয়, তা গ্রহণ করা দূষণীয় নয়। কিন্তু লোভ-লালসার বশবর্তী হয়ে এ ধরনের পুরস্কার ও ভাতার জন্য বিভিন্ন মহলে ধর্না দেয়া অনুচিত। মোট কথা অন্যের মুখাপেক্ষী হওয়া নিন্দনীয়। দীন ইসলামের দৃষ্টিতে দান গ্রহণকারীর চেয়ে দাতার স্থান উপরে।
কথিত আছে যে, আলোচ্য হাদীসের বর্ণনাকারী হাকিম ইবন হিযাম (রা) একশত বিশ বছর জীবিত ছিলেন। তিনি হিজরী ৫৪ সনে হযরত মু'আবিয়া (রা)-এর শাসনকালে ইন্তিকাল করেন। তিনি নবী করীম ﷺ-এর নিকট যে ওয়াদা করেছিলেন, তা আজীবন পালন করেছেন। হযরত আবু বকর (রা) ও হযরত উমর (রা) তাঁকে সরকারি ভাতা দিতে চেয়েছেন; কিন্তু তা তিনি কবুল করেননি। হযরত উসমান (রা) বা হযরত মু'আবিয়া (রা)-এর যুগেও তিনি কোন সরকারি সাহায্য গ্রহণ করেননি। নবী করীম ﷺ-এর নসীহতের প্রতি এবং নিজের প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে সাহাবায়ে-কিরাম কতটুকু দৃঢ় ও অটল ছিলেন তার নযীর হাকীম ইবন হিযাম (রা)-এর জীবনে পাওয়া যায়।
রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নাগরিকদেরকে যেসব পুরষ্কার ও ভাতা দেয়া হয়, তা গ্রহণ করা দূষণীয় নয়। কিন্তু লোভ-লালসার বশবর্তী হয়ে এ ধরনের পুরস্কার ও ভাতার জন্য বিভিন্ন মহলে ধর্না দেয়া অনুচিত। মোট কথা অন্যের মুখাপেক্ষী হওয়া নিন্দনীয়। দীন ইসলামের দৃষ্টিতে দান গ্রহণকারীর চেয়ে দাতার স্থান উপরে।
কথিত আছে যে, আলোচ্য হাদীসের বর্ণনাকারী হাকিম ইবন হিযাম (রা) একশত বিশ বছর জীবিত ছিলেন। তিনি হিজরী ৫৪ সনে হযরত মু'আবিয়া (রা)-এর শাসনকালে ইন্তিকাল করেন। তিনি নবী করীম ﷺ-এর নিকট যে ওয়াদা করেছিলেন, তা আজীবন পালন করেছেন। হযরত আবু বকর (রা) ও হযরত উমর (রা) তাঁকে সরকারি ভাতা দিতে চেয়েছেন; কিন্তু তা তিনি কবুল করেননি। হযরত উসমান (রা) বা হযরত মু'আবিয়া (রা)-এর যুগেও তিনি কোন সরকারি সাহায্য গ্রহণ করেননি। নবী করীম ﷺ-এর নসীহতের প্রতি এবং নিজের প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে সাহাবায়ে-কিরাম কতটুকু দৃঢ় ও অটল ছিলেন তার নযীর হাকীম ইবন হিযাম (রা)-এর জীবনে পাওয়া যায়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)