মা'আরিফুল হাদীস
আখলাক অধ্যায়
হাদীস নং: ১৩৮
আখলাক অধ্যায়
আল্লাহর জন্য যারা পরস্পর ভালবাসে, তাদের জন্য আল্লাহর মহব্বত অপরিহার্য
১৩৮. হযরত মু'আয ইবন জাবাল (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল ﷺ-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা'আলা বলেন: আমার মহব্বত তাদের জন্য ওয়াজিব হয়ে গিয়েছে যারা আমার জন্য একে অন্যকে ভালবাসে, আমার জন্য একত্রে উপবেশন করে, আমার জন্য পরস্পর মুলাকাত করে এবং আমার জন্য পরষ্পর খরচ করে। (মুয়াত্তাঃ ইমাম মালিক)
کتاب الاخلاق
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : قَالَ اللَّهُ تَعَالَى : « وَجَبَتْ مَحَبَّتِي لِلْمُتَحَابِّينَ فِيَّ وَالْمُتَجَالِسِينَ فِيَّ وَالْمُتَزَاوِرِينَ فِيَّ وَالْمُتَبَاذِلِينَ فِيَّ » (رواه مالك)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
পরস্পর ভালবাসার অর্থ হল নিজেদের জন্য যা পসন্দ করা হয়, অপর ভাইয়ের জন্য পসন্দ করা, নিজের জন্য যা অপসন্দ করা হয়, তা অপর ভাইয়ের জন্য অপসন্দ করা, নিজের অভাব-অভিযোগ যেভাবে দূর করা হয়, সেভাবে অপর ভাইয়ের অভাব-অভিযোগ দূর করার জন্য চেষ্টা করা এবং যেভাবে নিজেকে ও পরিবার-পরিজনকে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করা হয়, সেভাবে অপর ভাইকে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করার জন্য সর্বদা উপদেশ ও সহায়তা করা।
একত্রে উপবেশন করার অর্থ হল আল্লাহর দীনের প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে কুরআন-হাদীসের আলোচনা করার জন্য বা আল্লাহর হামদ ও সানা করার জন্য একত্রে বৈঠকে মিলিত হওয়া। এ কাজের গুরুত্ব এত বেশি যে, আল্লাহর রাসূল ﷺ অপর এক হাদীসে বলেনঃ সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর রাস্তায় সামান্য পরিশ্রম করা দুনিয়া ও তার মধ্যস্থ সব কিছু থেকে উত্তম।
আল্লাহর জন্য পরস্পর মুলাকাত করার অর্থ হল, অপর ভাইয়ের সুখ-দুঃখে অংশগ্রহণ করার জন্য তার সাথে সাক্ষাত করা। বিপন্ন ভাইকে সাহায্য করার জন্য অগ্রসর হওয়া এবং পীড়িত ভাইকে পরিচর্যা করার বা হিম্মত দানের জন্য পরিদর্শন করা। রুগ্ন ভাইকে অবহেলাকারী ব্যক্তিকে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা এ বলে অভিযুক্ত করবেন, আমি পীড়িত ছিলাম আমার পরিচর্যা করা হয়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তি তাজ্জব হবে যে, আল্লাহ কি করে অসুস্থ হতে পারেন! তখন আল্লাহ তাকে বলবেন, তাঁর অমুক অসুস্থ বান্দার খবর সে নেয়নি। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে পরস্পর সম্পদ ব্যয় করার অর্থ হল, অপর ভাইয়ের অভাব-অনটন দূর করার জন্য নিজের সম্পদ ব্যয় করা। এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসূলের আনসার-সাহাবিগণ যে দৃষ্টান্ত কায়েম করেছেন তা সর্বকালের মু'মিন ব্যক্তিদের অনুসরণযোগ্য। হিজরতের পর আনসার সাহাবিগণ নিজেদের কৃষির জমি মুহাজিরদের সাথে সমানভাবে ভাগ বাটোয়ারা করে নেন। নবী করীম ﷺ তাদেরকে বললেনঃ মক্কা থেকে আগত মুহাজিরগণ কৃষিকাজে অনভিজ্ঞ। আনসারগণ নবী করীম ﷺ-কে বললেন, তারা নিজেরা কৃষিকাজ করবেন এবং মুহাজিরদেরকে ফসলের অংশ দান করবেন। খায়বর বিজয়ের পর আল্লাহর রাসূল আনসারদেরকে জমি দিতে চাইলেন। কিন্তু তারা তা নিতে অস্বীকার করলেন এবং নবী করীম ﷺ-কে সমস্ত জমি মুহাজির ভাইদের মধ্যে বন্টন করে দেয়ার অনুরোধ করলেন। অনুরূপভাবে হযরত উসমান (রা) তাঁর গোটা সম্পদ মুসলমানদের উন্নতি ও অভাব-অভিযোগ দূর করার জন্য ব্যয় করেছেন। মুসলমানদের পানির ব্যবস্থা ছিল না। তিনি নিজের অর্থ ব্যয় করে তাদের জন্য কুয়ার ব্যবস্থা করেন।। দুর্ভিক্ষের সময় চড়ামূল্যে পণ্য বিক্রি করে ফায়দা হাসিল করার পরিবর্তে আমদানীকৃত যাবতীয় পণ্য মুসলমানদের মধ্যে বিতরণ করে দেন।
উপরে বর্ণিত চার শ্রেণীর বান্দা সম্পর্কে আল্লাহ ঘোষণা করেন যে, তাদেরকে ভালবাসা তাঁর উপর ওয়াজিব হয়ে গেছে। অর্থাৎ তিনি এ ধরনের বান্দাকে তাঁর মহব্বতের প্রতিশ্রুতি দান করেছেন এবং আল্লাহ যাদেরকে ভালবাসেন তাদের যিন্দেগী চূড়ান্তভাবে কামিয়াব।
একত্রে উপবেশন করার অর্থ হল আল্লাহর দীনের প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে কুরআন-হাদীসের আলোচনা করার জন্য বা আল্লাহর হামদ ও সানা করার জন্য একত্রে বৈঠকে মিলিত হওয়া। এ কাজের গুরুত্ব এত বেশি যে, আল্লাহর রাসূল ﷺ অপর এক হাদীসে বলেনঃ সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর রাস্তায় সামান্য পরিশ্রম করা দুনিয়া ও তার মধ্যস্থ সব কিছু থেকে উত্তম।
আল্লাহর জন্য পরস্পর মুলাকাত করার অর্থ হল, অপর ভাইয়ের সুখ-দুঃখে অংশগ্রহণ করার জন্য তার সাথে সাক্ষাত করা। বিপন্ন ভাইকে সাহায্য করার জন্য অগ্রসর হওয়া এবং পীড়িত ভাইকে পরিচর্যা করার বা হিম্মত দানের জন্য পরিদর্শন করা। রুগ্ন ভাইকে অবহেলাকারী ব্যক্তিকে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা এ বলে অভিযুক্ত করবেন, আমি পীড়িত ছিলাম আমার পরিচর্যা করা হয়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তি তাজ্জব হবে যে, আল্লাহ কি করে অসুস্থ হতে পারেন! তখন আল্লাহ তাকে বলবেন, তাঁর অমুক অসুস্থ বান্দার খবর সে নেয়নি। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে পরস্পর সম্পদ ব্যয় করার অর্থ হল, অপর ভাইয়ের অভাব-অনটন দূর করার জন্য নিজের সম্পদ ব্যয় করা। এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসূলের আনসার-সাহাবিগণ যে দৃষ্টান্ত কায়েম করেছেন তা সর্বকালের মু'মিন ব্যক্তিদের অনুসরণযোগ্য। হিজরতের পর আনসার সাহাবিগণ নিজেদের কৃষির জমি মুহাজিরদের সাথে সমানভাবে ভাগ বাটোয়ারা করে নেন। নবী করীম ﷺ তাদেরকে বললেনঃ মক্কা থেকে আগত মুহাজিরগণ কৃষিকাজে অনভিজ্ঞ। আনসারগণ নবী করীম ﷺ-কে বললেন, তারা নিজেরা কৃষিকাজ করবেন এবং মুহাজিরদেরকে ফসলের অংশ দান করবেন। খায়বর বিজয়ের পর আল্লাহর রাসূল আনসারদেরকে জমি দিতে চাইলেন। কিন্তু তারা তা নিতে অস্বীকার করলেন এবং নবী করীম ﷺ-কে সমস্ত জমি মুহাজির ভাইদের মধ্যে বন্টন করে দেয়ার অনুরোধ করলেন। অনুরূপভাবে হযরত উসমান (রা) তাঁর গোটা সম্পদ মুসলমানদের উন্নতি ও অভাব-অভিযোগ দূর করার জন্য ব্যয় করেছেন। মুসলমানদের পানির ব্যবস্থা ছিল না। তিনি নিজের অর্থ ব্যয় করে তাদের জন্য কুয়ার ব্যবস্থা করেন।। দুর্ভিক্ষের সময় চড়ামূল্যে পণ্য বিক্রি করে ফায়দা হাসিল করার পরিবর্তে আমদানীকৃত যাবতীয় পণ্য মুসলমানদের মধ্যে বিতরণ করে দেন।
উপরে বর্ণিত চার শ্রেণীর বান্দা সম্পর্কে আল্লাহ ঘোষণা করেন যে, তাদেরকে ভালবাসা তাঁর উপর ওয়াজিব হয়ে গেছে। অর্থাৎ তিনি এ ধরনের বান্দাকে তাঁর মহব্বতের প্রতিশ্রুতি দান করেছেন এবং আল্লাহ যাদেরকে ভালবাসেন তাদের যিন্দেগী চূড়ান্তভাবে কামিয়াব।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)