মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)
পোশাক-পরিচ্ছেদ ও সাজ-সজ্জা
হাদীস নং: ৫৯
পোশাক-পরিচ্ছেদ ও সাজ-সজ্জা
সোনা, রূপার পাত্র ব্যবহার করা পুরুষ ও মহিলাদের হারাম।
৫৯। আবদুর রহমান ইবন আবি লায়লা (র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হুযায়ফা (রা)-এর সঙ্গে এই শস্য-শ্যামল এলাকায় (মাদায়েন) গেলাম। তিনি পানি চাইলে এক গ্রাম্য নেতা রূপা পাত্রে পানি নিয়ে এল। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি তা সে লোকের মুখমণ্ডলে ছুঁড়ে মারলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা তাকে বললাম, থামুন, থামুন। আমরা তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমাদেরকে কিছু বললেন না। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমরা নীরব রইলাম। কিছুক্ষণ পর তিনি বললেন, তোমরা কি জান, কেন আমি পাত্রটি তার মুখমণ্ডলে ছুঁড়ে মেরেছি? আমরা বললাম, না। তিনি বললেন, আমি তাকে এরূপ করতে নিষেধ করেছিলাম। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর হুযায়ফা (রা) বললেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, তোমরা স্বর্ণের পাত্রে পান কর না। বর্ণনাকারী মু'আয (র) বলেন, তোমরা স্বর্ণের পাত্রে পান কর না এবং রূপার পাত্রেও না। তোমরা মিহি রেশম ও মোটা রেশম পরিধান কর না। কেননা, এসব দুনিয়াতে তাদের (কাফিরদের) জন্য আর পরকালে এগুলো আমাদের জন্য।
(বুখারী, মুসলিম ও ইমামচতুষ্ঠয়)
(বুখারী, মুসলিম ও ইমামচতুষ্ঠয়)
كتاب اللباس والزنية
باب تحريم أواني الذهب والفضة على الرجال والنساء
59- عن عبد الرحمن بن أبي ليلى قال خرجت مع حذيفة إلى بعض هذا السواد فاستسقى فأتاه دهقان باناء من فضة قال فرماه به في وجهه، قال قلنا اسكتوا اسكتوا وإنا إن سألناه لم يحدثنا، قال فسكتنا، قال فلما كان بعد ذلك قال أتدرون لم رميت به في وجهه؟ قال قلنا لا، قال غني كنت نهيته قال فذكر أن النبي صلى الله عليه وسلم قال لا تشربوا في آنية الذهب، قال معاذ لا تشربوا في الذهب ولا في الفضة ولا تلبسوا الحرير ولا الديباج فإنهما لهم في الدنيا ولكم في الآخرة
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে নিষেধ করা হয়েছে اَلْحَرِيرُ ও اَلدِّيبَاجُ ব্যবহার করতে। الْحَرِيرُ (হারীর) অর্থ রেশম। বোঝানো উদ্দেশ্য রেশমি পোশাক। আর اَلدِّيبَاجُ (দীবাজ) অর্থ চিকন রেশমি কাপড়। মোটকথা সর্বপ্রকার রেশমি কাপড় পরিধান করাই পুরুষের জন্য হারাম ও নাজায়েয। এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে-
مَنْ لَبِسَ الْحَرِيرَ فِي الدُّنْيَا لَمْ يَلْبَسْهُ فِي الْآخِرَةِ
‘যে ব্যক্তি দুনিয়ায় রেশমি পোশাক পরে, সে আখিরাতে তা পরতে পারবে না।’ (সহীহ বুখারী: ৫৮৩২; সহীহ মুসলিম: ২০৭৩; জামে তিরমিযী: ২৮১৭; সুনানে নাসাঈ: ৫৩০৪; সুনানে ইবনে মাজাহ ৩৫৮৮; মুসনাদে আহমাদ: ১৮১; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা: ২৬৪৪৩; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৫৪৩৫; তবারানী, আল মুজামুল কাবীর: ৯৭৭৯)
তবে এ নিষেধাজ্ঞা কেবল পুরুষের জন্য। নারীর জন্য রেশমী পোশাক পরা জায়েয, যেমন তাদের জন্য স্বর্ণালংকারও জায়েয। হযরত উকবা ইবন আমির রাযি. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
الذَّهَبُ وَالْحَرِيرُ حِلٌّ لِإِنَاث أُمَّتِي وَحَرَامٌ عَلَى ذُكُورِهَا
‘সোনা ও রেশম আমার উম্মতের মহিলাদের জন্য হালাল এবং পুরুষদের জন্য হারাম।’ (তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৫১২৫; সুনানে নাসাঈ : ৫১৪৮; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা ৪২২০; নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা ৯৩৮৭)
হযরত আলী রাযি. বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বাম হাতে রেশম এবং ডান হাতে স্বর্ণ ধরলেন। তারপর দু'হাত তুলে বললেন-
إِنَّ هَذَيْنِ حَرَامٌ عَلَى ذُكُورِ أُمَّتِي، حِلٌّ لِإِنَاثهِمْ
‘এ দুটি আমার উম্মতের পুরুষদের জন্য হারাম, মহিলাদের জন্য হালাল।’ (সুনানে ইবন মাজাহ ৩৫৯৫; সুনানে আবু দাউদ: ৪০৫৭; সুনানে নাসাঈ: ৫১৪৪; সহীহ ইবন হিব্বান: ৫৪৩৪; মুসান্নাফ ইবন আবী শাইবা: ২৪৬৫৯; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর: ১২৬; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা ৭৫৫৮; শুআবুল ঈমান: ৫৬৮১)
শায়খ আবু মুহাম্মাদ রহ. এ নিষেধাজ্ঞার হিকমত বর্ণনা করেন যে, সাজসজ্জার ব্যাপারে নারীদের সংযম কম। তাই এটা তাদের জন্য হালাল করে তাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হয়েছে। বিশেষত এ কারণেও যে, তাদের সাজসজ্জা হবে কেবল স্বামীদের জন্য। এর দ্বারা বোঝা যায় পুরুষদের জন্য বেশি সাজসজ্জা ও উপভোগের বস্তু ব্যবহার করা ভালো নয়। কেননা এটা নারীর বৈশিষ্ট্য। এক রেওয়ায়েতে স্বামীদের উদ্দেশ্যে স্ত্রীদের সাজসজ্জা করাকে জিহাদতুল্য সাব্যস্ত করা হয়েছে। (শুআবুল ঈমান: ১১৫২)
হাদীছটিতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোনা-রুপার পাত্রে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন। এটা পুরুষ ও নারী কারও জন্যই জায়েয নয়। সোনা-রুপার অন্য কোনও পাত্রও ব্যবহারের অনুমতি নেই। যেমন এক বর্ণনায় আছে-
وَلَا تَأْكُلُوْا فِي صِحَافِهَا
‘এবং তোমরা সোনা-রুপার পাত্রে আহার করো না।' (সহীহ মুসলিম: ২০৬৭; নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা: ৬৫৯৭; সুনানে দারা কুতনী: ৪৭৯৫)
এক হাদীছে এ নিষেধাজ্ঞার কারণ বলা হয়েছে যে, জান্নাতে পানাহারের পাত্র হবে সোনা-রুপার। কাজেই এটা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই নিষেধ।
মোটকথা, সোনা-রুপার পাত্র ব্যবহার করা সম্পূর্ণ হারাম ও কঠিন পাপ। কাজেই ঈমানদারদেরকে অবশ্যই এর থেকে বিরত থাকতে হবে। এ জাতীয় বিলাসিতা ঈমানদারদের জন্য শোভা পায় না। এ নিষেধাজ্ঞা পানাহারের পাত্র ছাড়া অন্য আসবাবপত্রেও প্রযোজ্য, যেমন সুরমাদানি, কলম, চশমার ফ্রেম, আতরদানি ইত্যাদি।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. পুরুষদের জন্য রেশমি পোশাক পরা জায়েয নয়।
খ. সোনা-রুপার কোনও পাত্র ব্যবহার করা নারী-পুরুষ কারও জন্যই জায়েয নয়।
গ. মুমিন নর-নারীর বিলাসিতা পরিহার করা উচিত।
مَنْ لَبِسَ الْحَرِيرَ فِي الدُّنْيَا لَمْ يَلْبَسْهُ فِي الْآخِرَةِ
‘যে ব্যক্তি দুনিয়ায় রেশমি পোশাক পরে, সে আখিরাতে তা পরতে পারবে না।’ (সহীহ বুখারী: ৫৮৩২; সহীহ মুসলিম: ২০৭৩; জামে তিরমিযী: ২৮১৭; সুনানে নাসাঈ: ৫৩০৪; সুনানে ইবনে মাজাহ ৩৫৮৮; মুসনাদে আহমাদ: ১৮১; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা: ২৬৪৪৩; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৫৪৩৫; তবারানী, আল মুজামুল কাবীর: ৯৭৭৯)
তবে এ নিষেধাজ্ঞা কেবল পুরুষের জন্য। নারীর জন্য রেশমী পোশাক পরা জায়েয, যেমন তাদের জন্য স্বর্ণালংকারও জায়েয। হযরত উকবা ইবন আমির রাযি. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
الذَّهَبُ وَالْحَرِيرُ حِلٌّ لِإِنَاث أُمَّتِي وَحَرَامٌ عَلَى ذُكُورِهَا
‘সোনা ও রেশম আমার উম্মতের মহিলাদের জন্য হালাল এবং পুরুষদের জন্য হারাম।’ (তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৫১২৫; সুনানে নাসাঈ : ৫১৪৮; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা ৪২২০; নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা ৯৩৮৭)
হযরত আলী রাযি. বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বাম হাতে রেশম এবং ডান হাতে স্বর্ণ ধরলেন। তারপর দু'হাত তুলে বললেন-
إِنَّ هَذَيْنِ حَرَامٌ عَلَى ذُكُورِ أُمَّتِي، حِلٌّ لِإِنَاثهِمْ
‘এ দুটি আমার উম্মতের পুরুষদের জন্য হারাম, মহিলাদের জন্য হালাল।’ (সুনানে ইবন মাজাহ ৩৫৯৫; সুনানে আবু দাউদ: ৪০৫৭; সুনানে নাসাঈ: ৫১৪৪; সহীহ ইবন হিব্বান: ৫৪৩৪; মুসান্নাফ ইবন আবী শাইবা: ২৪৬৫৯; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর: ১২৬; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা ৭৫৫৮; শুআবুল ঈমান: ৫৬৮১)
শায়খ আবু মুহাম্মাদ রহ. এ নিষেধাজ্ঞার হিকমত বর্ণনা করেন যে, সাজসজ্জার ব্যাপারে নারীদের সংযম কম। তাই এটা তাদের জন্য হালাল করে তাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হয়েছে। বিশেষত এ কারণেও যে, তাদের সাজসজ্জা হবে কেবল স্বামীদের জন্য। এর দ্বারা বোঝা যায় পুরুষদের জন্য বেশি সাজসজ্জা ও উপভোগের বস্তু ব্যবহার করা ভালো নয়। কেননা এটা নারীর বৈশিষ্ট্য। এক রেওয়ায়েতে স্বামীদের উদ্দেশ্যে স্ত্রীদের সাজসজ্জা করাকে জিহাদতুল্য সাব্যস্ত করা হয়েছে। (শুআবুল ঈমান: ১১৫২)
হাদীছটিতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোনা-রুপার পাত্রে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন। এটা পুরুষ ও নারী কারও জন্যই জায়েয নয়। সোনা-রুপার অন্য কোনও পাত্রও ব্যবহারের অনুমতি নেই। যেমন এক বর্ণনায় আছে-
وَلَا تَأْكُلُوْا فِي صِحَافِهَا
‘এবং তোমরা সোনা-রুপার পাত্রে আহার করো না।' (সহীহ মুসলিম: ২০৬৭; নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা: ৬৫৯৭; সুনানে দারা কুতনী: ৪৭৯৫)
এক হাদীছে এ নিষেধাজ্ঞার কারণ বলা হয়েছে যে, জান্নাতে পানাহারের পাত্র হবে সোনা-রুপার। কাজেই এটা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই নিষেধ।
মোটকথা, সোনা-রুপার পাত্র ব্যবহার করা সম্পূর্ণ হারাম ও কঠিন পাপ। কাজেই ঈমানদারদেরকে অবশ্যই এর থেকে বিরত থাকতে হবে। এ জাতীয় বিলাসিতা ঈমানদারদের জন্য শোভা পায় না। এ নিষেধাজ্ঞা পানাহারের পাত্র ছাড়া অন্য আসবাবপত্রেও প্রযোজ্য, যেমন সুরমাদানি, কলম, চশমার ফ্রেম, আতরদানি ইত্যাদি।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. পুরুষদের জন্য রেশমি পোশাক পরা জায়েয নয়।
খ. সোনা-রুপার কোনও পাত্র ব্যবহার করা নারী-পুরুষ কারও জন্যই জায়েয নয়।
গ. মুমিন নর-নারীর বিলাসিতা পরিহার করা উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
বর্ণনাকারী: