মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)

পোশাক-পরিচ্ছেদ ও সাজ-সজ্জা

হাদীস নং: ৪৯
পোশাক-পরিচ্ছেদ ও সাজ-সজ্জা
সোনা, রূপা, রেশম এবং বৈধ ও অবৈধ ব্যবহার্য সামগ্রী প্রসঙ্গ
নিষিদ্ধ বস্তুসমূহ সংক্রান্ত বিস্তারিত হাদীস।
৪৯। আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মীসারা, কাসসী, স্বর্ণের আংটি এবং মুফদাম (গাঢ় লালবর্ণ) হতে নিষেধ করেছেন। বর্ণনাকারী ইয়াযীদ (র) বলেন, মীসারা হল, হিংস্র পশুর চামড়া, কাসসী হল, রেশমের ডোরাকাটা কাপড়; যা মিশর থেকে আমদানী করা হয়। আর মুফদাম হল, উসফুর দ্বারা রঞ্জিত বস্ত্র।
(হাদীসটি হায়ছামী (র) বর্ণনা করে বলেছেন, এটা আহমাদ বর্ণনা করেছেন। এর সনদে বর্ণনাকারী ইয়াযীদ ইয়াশকুরী' দূর্বল। ইবন মা'ঈন (র)ও তাকে দূর্বল বলেছেন।)
كتاب اللباس والزنية
(أبواب ما جاء في الذهب والفضة والحرير وما يجوز استعماله منهما وما لا يجوز) (باب أحاديث جامعة لأمور من ذلك منهي عنها)
49- عن عبد الله بن عمر قال نهي رسول الله صلى الله عليه وسلم وعلى آله وصحبه وسلم عن الميثرة والقسية وحلقة الذهب والمفدم: قال يزيد والميثرة جلود السباع والقسية ثياب مضلعة من ابريسم بجاه بها من مصر والمفدم المشبع بالعصفر

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছটিতে বাঘ ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণীর চামড়াকে বিছানা বানাতে কিংবা পশুর পিঠে বিছিয়ে তার উপর সওয়ার হতে নিষেধ করা হয়েছে। সেকালে অনারবরা এটা করত। এটা এক রকম অহমিকা। বিলাসিতাও বটে। অহংকারী লোক মানুষকে দেখানোর জন্য এ জাতীয় বিলাসিতা সেকালেও করত, এখনও করে থাকে। গৌরব দেখানো ভালো নয়। বিলাসিতাও পসন্দনীয় নয়। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতকে নিষেধ করে দিয়েছেন যে, তারা যেন বাঘ বা অন্য কোনও হিংস্র পশুর চামড়াকে বিছানা বানিয়ে তার উপর না বসে কিংবা তাতে সওয়ার না হয় অর্থাৎ তা দ্বারা সওয়ারীর জিন না বানায়। সারকথা একজন মুমিনের দৃষ্টি থাকবে সর্বদা আখিরাতের দিকে। কীভাবে আখিরাতের মুক্তিলাভ হতে পারে, তার যাবতীয় কাজকর্ম সে লক্ষ্যেই সম্পাদিত হবে। সে ভোগ-বিলাসিতায় লিপ্ত হয়ে আখিরাত থেকে উদাসীন হবে না। তার পোশাক-আশাক ও অন্যান্য ব্যবহার্য সামগ্রী হবে সাদামাটা। এসব বস্তু অতিরিক্ত দামি বা বিলাসিতাপূর্ণ হলে অন্তরে তার প্রতি ভালোবাসার সৃষ্টি হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে এগুলো মানুষের সেবক থাকে না, উল্টো মানুষ এর সেবক হয়ে যায়। এভাবে মানুষ আখিরাত থেকে উদাসীন হয়ে এসব সামগ্রী সংগ্রহ ও এর সেবাযত্নে লিপ্ত হয়ে পড়ে, যা কিনা মানবসৃষ্টির উদ্দেশ্যেরও পরিপন্থি এবং দুনিয়ার বস্তুসামগ্রী সৃষ্টির উদ্দেশ্যের সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

মুমিনদের উচিত সর্বপ্রকার বিলাসসামগ্রী ও অহমিকাজনক বস্তুর ব্যবহার থেকে বেঁচে থাকা।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান