হাদীসে কুদসী
কিতাবের হাদীস সমূহ
হাদীস নং: ২৫
কিতাবের হাদীস সমূহ
২৫। আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেনঃ আমার কাছে বুরাক আনা হল। বুরাক গাধা থেকে বড় এবং খচ্চর থেকে ছোট একটি সাদা রঙের জন্তু। যতদুর দৃষ্টি যায়, এক এক পদক্ষেপে সে ততদূর চলে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ আমি এতে আরোহণ করলাম এবং বায়তুল মাকদাস পর্যন্ত এসে পৌছলাম। তারপর অন্যান্য আম্বিয়ায়ে কিরাম তাদের বাহনগুলো যে রশিতে বাধতেন, আমি সে রশিতে আমার বাহনটিও বাধলাম। তারপর মসজিদে প্রবেশ করলাম ও দু–রাকআত নামায আদায় করে বের হলাম।
জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) একটি শরারের পাত্র এবং একটি দুধের পাত্র নিয়ে আমার কাছে এলেন। আমি দুধ গ্রহণ করলাম। জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে বললেন, আপনি ফিতরতকেই গ্রহণ করলেন। তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে নিয়ে উর্ধ্বলোকে গেলেন এবং আসমান পর্যন্ত পৌছে দ্বার খুলতে বললেন। বলা হল, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি জিবরাঈল। বলা হল, আপনার সাথে কে? বললেন, মুহাম্মাদ। বলা হল, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছে? বললেন, হ্যাঁ, ডেকে পাঠানো হয়েছিল। অনন্তর আমাদের জন্য দরজা খুলে দেয়া হল। সেখানে আমি আদম (আলাইহিস সালাম)–এর সাক্ষাত পাই তিনি আমাকে মুবারকবাদ জানালেন এবং আমার মঙ্গলের জন্য দুআ করলেন।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে উর্ধ্বলোকে নিয়ে চললেন এবং দ্বিতীয় আসমান পর্যন্ত পৌছলেন ও দ্বার খুলতে বললেন। বলা হল, কে? তিনি উত্তরে বললেন জিবরাঈল। বলা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। বলা হল, তাকে কি আনতে পাঠানো হয়েছিল? বললেন, হ্যাঁ, তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দার খুলে দেয়া হলো। সেখানে আমি ঈসা ইবনে মারইয়াম ও ইয়াহয়া ইবনে যাকারিয়া (আলাইহিমুস সালাম) দুই খালাত ভাইয়ের সাক্ষাত পেলাম। তারা আমাকে মারহাবা বললেন, আমার জন্য কল্যাণের দুআ করলেন।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে নিয়ে উর্ধ্বলোকে চললেন এবং তৃতীয় আসমানের দারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। বলা হল, কে? তিনি বললেনঃ জিবরাঈল। বলা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। বলা হল, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেয়া হলো। সেখানে ইউসূফ (আলাইহিস সালাম) এর সাক্ষাত পেলাম। সমুদয় সৌন্দর্যের অর্ধেক দেয়া হয়েছিল তাঁকে। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দুআ করলেন।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে নিয়ে চতুর্থ আসমানের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। বলা হল, কে? বললেন, জিবরাঈল। বলা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। বলা হল, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? বললেন, হ্যাঁ তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দার খুলে দেওয়া হলো। সেখানে ইদরীস (আলাইহিস সালাম) এর সাক্ষাত পেলাম। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দু'আ করলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর সম্পর্কে ইরশাদ করেছেনঃ وَرَفَعْنَاهُ مَكَانًا عَلِيًّا “এবং আমি তাকে উন্নীত করেছি উচ্চ মর্যাদায়” (৫৭ঃ ১৯)।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে নিয়ে পঞ্চম আসমানের দারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। বলা হল, আপনি কে? তিনি বললেন, জিবরাঈল। বলা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। বলা হল, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। অনন্তর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হল। সেখানে হারুন (আলাইহিস সালাম) এর সাক্ষাত পেলাম। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দুআ করলেন।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে নিয়ে ষষ্ঠ আসমানের দারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। বলা হল, কে? তিনি বললেন, জিবরাঈল। বলা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। বলা হল, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠান হয়েছিল? বললেন, হ্যাঁ, তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেয়া হল। সেখানে মুসা (আলাইহিস সালাম) এর সাক্ষাত পেলাম। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দুআ করলেন।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) সপ্তম আসমানের দ্বারপ্রাস্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। বলা হল, কে? তিনি বললোন, জিবরাঈল। বলা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ বলা হল, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাঁকে ডেকে পাঠান হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেয়া হলো। সেখানে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর সাক্ষাত পেলাম। তিনি বায়তুল মা’মুরে পিঠ ঠেকিয়ে বসে আছেন। বায়তুল মামুরে প্রত্যহ সত্তর হাজার ফিরিশতা তাওয়াফের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেন, যারা আর সেখানে পুনরায় ফিরে আসার সুযোগ পান না।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে সিদরাতুল মুনতাহায় নিয়ে গেলেন। সে বৃক্ষের পাতাগুলো হস্তিনীর কানের মত আর ফলগুলো বড় বড় মটকার মত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ সে বৃক্ষটিকে যখন আল্লাহর নির্দেশে যা আবৃত করে তখন তা পরিবর্তিত হয়ে যায়। সে সৌন্দর্যের বর্ণনা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে কারো পক্ষে সম্ভব নয়। এরপর আল্লাহ তাআলা আমার উপর যা ওহী করার তা ওহী করলেন। আমার উপর দিনরাত মোট পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরয করলেন। এরপর আমি মুসা(আলাইহিস সালাম) এর কাছে ফিরে আসলাম। তিনি আমাকে বললেন, আপনার প্রতিপালক আপনার উপর কি ফরয করেছেন। আমি বললাম, পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায। তিনি বললেন, আপনার প্রতিপালকের কাছে ফিরে যান এবং একে আরো সহজ করার আবেদন করুন। কেননা আপনার উম্মত এ নির্দেশ পাননে সক্ষম হবে না। আমি বনী ইসরাঈলকে পরীক্ষা করেছি এবং তাদের বিষয়ে আমি অভিজ্ঞতা লাভ করেছি।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তখন আমি আবার প্রতিপালকের কাছে ফিরে গেলাম এবং বললাম, হে আমার রব! আমার উম্মতের জন্য এ হুকুম সহজ করে দিন। পাঁচ ওয়াক্ত কমিয়ে দেয়া হল। তারপর মুসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে ফিরে এসে বললাম, আমার থেকে পাঁচ ওয়াক্ত কমানো হয়েছে। তিনি বললেন, আপনার উম্মত এও পারবে না। আপনি ফিরে যান এবং আরো সহজ করার আবেদন করুন।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এভাবে আমি একবার মুসা (আলাইহিস সালাম) ও একবার আল্লাহর মাঝে আসা–যাওয়াহ করতে থাকলাম। শেষে আল্লাহ তাআলা বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! যাও, দিন ও রাতের পাঁচ ওয়াক্ত নামায নির্ধারণ করা হল। প্রতি ওয়াক্ত নামায দশ ওয়াক্ত নামাযের সমান সাওয়াব রয়েছে। এভাবে (পাঁচ ওয়াক্ত হল) পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাযের সমান। যে ব্যক্তি কোন নেক কাজের ইচ্ছা করল এবং তা কাজে রূপায়িত করতে পারল না, আমি তার জন্য একটি সাওয়াব লিখব; অ্যর তা কাজে রূপায়িত করলে তার জন্য লিখব দশটি সাওয়াব। পক্ষান্তরে যে কোন মন্দ কাজের অভিপ্রায় করল, অথচ তা কাজে পরিণত করল না, তার জন্য কোন গুনাহ লেখা হয় না। আর তা কাজে পরিণত করলে তার উপর লেখা হয় একটি মাত্র গুনাহ।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ তারপর আমি মুসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে নেমে এলাম এবং তাঁকে এ বিষয়ে অবহিত করলাম। তিনি তখন বললেন, প্রতিপালকের কাছে ফিরে যান এবং আরো সহজ করার প্রার্থনা করুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এ বিযয় নিয়ে বারবার আমি আমার রবের কাছে আসা–যাওয়া করেছি, এখন পূনরায় যেতে লজ্জা হচ্ছে।
জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) একটি শরারের পাত্র এবং একটি দুধের পাত্র নিয়ে আমার কাছে এলেন। আমি দুধ গ্রহণ করলাম। জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে বললেন, আপনি ফিতরতকেই গ্রহণ করলেন। তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে নিয়ে উর্ধ্বলোকে গেলেন এবং আসমান পর্যন্ত পৌছে দ্বার খুলতে বললেন। বলা হল, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি জিবরাঈল। বলা হল, আপনার সাথে কে? বললেন, মুহাম্মাদ। বলা হল, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছে? বললেন, হ্যাঁ, ডেকে পাঠানো হয়েছিল। অনন্তর আমাদের জন্য দরজা খুলে দেয়া হল। সেখানে আমি আদম (আলাইহিস সালাম)–এর সাক্ষাত পাই তিনি আমাকে মুবারকবাদ জানালেন এবং আমার মঙ্গলের জন্য দুআ করলেন।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে উর্ধ্বলোকে নিয়ে চললেন এবং দ্বিতীয় আসমান পর্যন্ত পৌছলেন ও দ্বার খুলতে বললেন। বলা হল, কে? তিনি উত্তরে বললেন জিবরাঈল। বলা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। বলা হল, তাকে কি আনতে পাঠানো হয়েছিল? বললেন, হ্যাঁ, তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দার খুলে দেয়া হলো। সেখানে আমি ঈসা ইবনে মারইয়াম ও ইয়াহয়া ইবনে যাকারিয়া (আলাইহিমুস সালাম) দুই খালাত ভাইয়ের সাক্ষাত পেলাম। তারা আমাকে মারহাবা বললেন, আমার জন্য কল্যাণের দুআ করলেন।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে নিয়ে উর্ধ্বলোকে চললেন এবং তৃতীয় আসমানের দারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। বলা হল, কে? তিনি বললেনঃ জিবরাঈল। বলা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। বলা হল, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেয়া হলো। সেখানে ইউসূফ (আলাইহিস সালাম) এর সাক্ষাত পেলাম। সমুদয় সৌন্দর্যের অর্ধেক দেয়া হয়েছিল তাঁকে। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দুআ করলেন।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে নিয়ে চতুর্থ আসমানের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। বলা হল, কে? বললেন, জিবরাঈল। বলা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। বলা হল, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? বললেন, হ্যাঁ তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দার খুলে দেওয়া হলো। সেখানে ইদরীস (আলাইহিস সালাম) এর সাক্ষাত পেলাম। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দু'আ করলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর সম্পর্কে ইরশাদ করেছেনঃ وَرَفَعْنَاهُ مَكَانًا عَلِيًّا “এবং আমি তাকে উন্নীত করেছি উচ্চ মর্যাদায়” (৫৭ঃ ১৯)।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে নিয়ে পঞ্চম আসমানের দারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। বলা হল, আপনি কে? তিনি বললেন, জিবরাঈল। বলা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। বলা হল, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। অনন্তর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হল। সেখানে হারুন (আলাইহিস সালাম) এর সাক্ষাত পেলাম। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দুআ করলেন।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে নিয়ে ষষ্ঠ আসমানের দারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। বলা হল, কে? তিনি বললেন, জিবরাঈল। বলা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। বলা হল, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠান হয়েছিল? বললেন, হ্যাঁ, তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেয়া হল। সেখানে মুসা (আলাইহিস সালাম) এর সাক্ষাত পেলাম। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দুআ করলেন।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) সপ্তম আসমানের দ্বারপ্রাস্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। বলা হল, কে? তিনি বললোন, জিবরাঈল। বলা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ বলা হল, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাঁকে ডেকে পাঠান হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেয়া হলো। সেখানে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর সাক্ষাত পেলাম। তিনি বায়তুল মা’মুরে পিঠ ঠেকিয়ে বসে আছেন। বায়তুল মামুরে প্রত্যহ সত্তর হাজার ফিরিশতা তাওয়াফের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেন, যারা আর সেখানে পুনরায় ফিরে আসার সুযোগ পান না।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে সিদরাতুল মুনতাহায় নিয়ে গেলেন। সে বৃক্ষের পাতাগুলো হস্তিনীর কানের মত আর ফলগুলো বড় বড় মটকার মত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ সে বৃক্ষটিকে যখন আল্লাহর নির্দেশে যা আবৃত করে তখন তা পরিবর্তিত হয়ে যায়। সে সৌন্দর্যের বর্ণনা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে কারো পক্ষে সম্ভব নয়। এরপর আল্লাহ তাআলা আমার উপর যা ওহী করার তা ওহী করলেন। আমার উপর দিনরাত মোট পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরয করলেন। এরপর আমি মুসা(আলাইহিস সালাম) এর কাছে ফিরে আসলাম। তিনি আমাকে বললেন, আপনার প্রতিপালক আপনার উপর কি ফরয করেছেন। আমি বললাম, পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায। তিনি বললেন, আপনার প্রতিপালকের কাছে ফিরে যান এবং একে আরো সহজ করার আবেদন করুন। কেননা আপনার উম্মত এ নির্দেশ পাননে সক্ষম হবে না। আমি বনী ইসরাঈলকে পরীক্ষা করেছি এবং তাদের বিষয়ে আমি অভিজ্ঞতা লাভ করেছি।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তখন আমি আবার প্রতিপালকের কাছে ফিরে গেলাম এবং বললাম, হে আমার রব! আমার উম্মতের জন্য এ হুকুম সহজ করে দিন। পাঁচ ওয়াক্ত কমিয়ে দেয়া হল। তারপর মুসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে ফিরে এসে বললাম, আমার থেকে পাঁচ ওয়াক্ত কমানো হয়েছে। তিনি বললেন, আপনার উম্মত এও পারবে না। আপনি ফিরে যান এবং আরো সহজ করার আবেদন করুন।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এভাবে আমি একবার মুসা (আলাইহিস সালাম) ও একবার আল্লাহর মাঝে আসা–যাওয়াহ করতে থাকলাম। শেষে আল্লাহ তাআলা বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! যাও, দিন ও রাতের পাঁচ ওয়াক্ত নামায নির্ধারণ করা হল। প্রতি ওয়াক্ত নামায দশ ওয়াক্ত নামাযের সমান সাওয়াব রয়েছে। এভাবে (পাঁচ ওয়াক্ত হল) পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাযের সমান। যে ব্যক্তি কোন নেক কাজের ইচ্ছা করল এবং তা কাজে রূপায়িত করতে পারল না, আমি তার জন্য একটি সাওয়াব লিখব; অ্যর তা কাজে রূপায়িত করলে তার জন্য লিখব দশটি সাওয়াব। পক্ষান্তরে যে কোন মন্দ কাজের অভিপ্রায় করল, অথচ তা কাজে পরিণত করল না, তার জন্য কোন গুনাহ লেখা হয় না। আর তা কাজে পরিণত করলে তার উপর লেখা হয় একটি মাত্র গুনাহ।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ তারপর আমি মুসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে নেমে এলাম এবং তাঁকে এ বিষয়ে অবহিত করলাম। তিনি তখন বললেন, প্রতিপালকের কাছে ফিরে যান এবং আরো সহজ করার প্রার্থনা করুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এ বিযয় নিয়ে বারবার আমি আমার রবের কাছে আসা–যাওয়া করেছি, এখন পূনরায় যেতে লজ্জা হচ্ছে।
أحاديث الكتاب
25- عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضي الله عنه، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أُتِيتُ بِالْبُرَاقِ – وَهُوَ دَابَّةٌ أَبْيَضُ طَوِيلٌ فَوْقَ الْحِمَارِ وَدُونَ الْبَغْلِ يَضَعُ حَافِرَهُ عِنْدَ مُنْتَهَى طَرْفِهِ – قَالَ فَرَكِبْتُهُ حَتَّى أَتَيْتُ بَيْتَ الْمَقْدِسِ – قَالَ – فَرَبَطْتُهُ بِالْحَلْقَةِ الَّتِي يَرْبِطُ بِهِ الأَنْبِيَاءُ – قَالَ – ثُمَّ دَخَلْتُ الْمَسْجِدَ فَصَلَّيْتُ فِيهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ خَرَجْتُ فَجَاءَنِي جِبْرِيلُ – عَلَيْهِ السَّلاَمُ – بِإِنَاءٍ مِنْ خَمْرٍ وَإِنَاءٍ مِنْ لَبَنٍ فَاخْتَرْتُ اللَّبَنَ فَقَالَ جِبْرِيلُ صلى الله عليه وسلم اخْتَرْتَ الْفِطْرَةَ .
ثُمَّ عَرَجَ بِنَا إِلَى السَّمَاءِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ فَقِيلَ مَنْ أَنْتَ قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ . قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِآدَمَ فَرَحَّبَ بِي وَدَعَا لِي بِخَيْرٍ .
ثُمَّ عَرَجَ بِنَا إِلَى السَّمَاءِ الثَّانِيَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ . فَقِيلَ مَنْ أَنْتَ قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ . قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِابْنَىِ الْخَالَةِ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ وَيَحْيَى بْنِ زَكَرِيَّاءَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِمَا فَرَحَّبَا وَدَعَوَا لِي بِخَيْرٍ .
ثُمَّ عَرَجَ بِي إِلَى السَّمَاءِ الثَّالِثَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ . فَقِيلَ مَنْ أَنْتَ قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم . قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِيُوسُفَ صلى الله عليه وسلم إِذَا هُوَ قَدْ أُعْطِيَ شَطْرَ الْحُسْنِ فَرَحَّبَ وَدَعَا لِي بِخَيْرٍ .
ثُمَّ عَرَجَ بِنَا إِلَى السَّمَاءِ الرَّابِعَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ – عَلَيْهِ السَّلاَمُ – قِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ . قَالَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِإِدْرِيسَ فَرَحَّبَ وَدَعَا لِي بِخَيْرٍ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ( وَرَفَعْنَاهُ مَكَانًا عَلِيًّا)
ثُمَّ عَرَجَ بِنَا إِلَى السَّمَاءِ الْخَامِسَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ . قِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ . قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِهَارُونَ صلى الله عليه وسلم فَرَحَّبَ وَدَعَا لِي بِخَيْرٍ .
ثُمَّ عَرَجَ بِنَا إِلَى السَّمَاءِ السَّادِسَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ . قِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ . قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِمُوسَى صلى الله عليه وسلم فَرَحَّبَ وَدَعَا لِي بِخَيْرٍ .
ثُمَّ عَرَجَ بِنَا إِلَى السَّمَاءِ السَّابِعَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ فَقِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم . قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِإِبْرَاهِيمَ صلى الله عليه وسلم مُسْنِدًا ظَهْرَهُ إِلَى الْبَيْتِ الْمَعْمُورِ وَإِذَا هُوَ يَدْخُلُهُ كُلَّ يَوْمٍ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ لاَ يَعُودُونَ إِلَيْهِ
ثُمَّ ذَهَبَ إِلَى السِّدْرَةِ الْمُنْتَهَى وَإِذَا وَرَقُهَا كَآذَانِ الْفِيَلَةِ وَإِذَا ثَمَرُهَا كَالْقِلاَلِ – قَالَ – فَلَمَّا غَشِيَهَا مِنْ أَمْرِ اللَّهِ مَا غَشِيَ تَغَيَّرَتْ فَمَا أَحَدٌ مِنْ خَلْقِ اللَّهِ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَنْعَتَهَا مِنْ حُسْنِهَا . فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَىَّ مَا أَوْحَى فَفَرَضَ عَلَىَّ خَمْسِينَ صَلاَةً فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ فَنَزَلْتُ إِلَى مُوسَى صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا فَرَضَ رَبُّكَ عَلَى أُمَّتِكَ قُلْتُ خَمْسِينَ صَلاَةً . قَالَ ارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَاسْأَلْهُ التَّخْفِيفَ فَإِنَّ أُمَّتَكَ لاَ تطِيقُ ذَلِكَ فَإِنِّي قَدْ بَلَوْتُ بَنِي إِسْرَائِيلَ وَخَبَرْتُهُمْ . قَالَ فَرَجَعْتُ إِلَى رَبِّي فَقُلْتُ يَا رَبِّ خَفِّفْ عَلَى أُمَّتِي . فَحَطَّ عَنِّي خَمْسًا فَرَجَعْتُ إِلَى مُوسَى فَقُلْتُ حَطَّ عَنِّي خَمْسًا . قَالَ إِنَّ أُمَّتَكَ لاَ تطِيقُ ذَلِكَ فَارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَاسْأَلْهُ التَّخْفِيفَ . – قَالَ – فَلَمْ أَزَلْ أَرْجِعُ بَيْنَ رَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى وَبَيْنَ مُوسَى – عَلَيْهِ السَّلاَمُ – حَتَّى قَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنَّهُنَّ خَمْسُ صَلَوَاتٍ كُلَّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ لِكُلِّ صَلاَةٍ عَشْرٌ فَذَلِكَ خَمْسُونَ صَلاَةً . وَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كُتِبَتْ لَهُ حَسَنَةً فَإِنْ عَمِلَهَا كُتِبَتْ لَهُ عَشْرًا وَمَنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا لَمْ تُكْتَبْ شَيْئًا فَإِنْ عَمِلَهَا كُتِبَتْ سَيِّئَةً وَاحِدَةً – قَالَ – فَنَزَلْتُ حَتَّى انْتَهَيْتُ إِلَى مُوسَى صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ ارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَاسْأَلْهُ التَّخْفِيفَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ قَدْ رَجَعْتُ إِلَى رَبِّي حَتَّى اسْتَحْيَيْتُ مِنْهُ "
ثُمَّ عَرَجَ بِنَا إِلَى السَّمَاءِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ فَقِيلَ مَنْ أَنْتَ قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ . قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِآدَمَ فَرَحَّبَ بِي وَدَعَا لِي بِخَيْرٍ .
ثُمَّ عَرَجَ بِنَا إِلَى السَّمَاءِ الثَّانِيَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ . فَقِيلَ مَنْ أَنْتَ قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ . قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِابْنَىِ الْخَالَةِ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ وَيَحْيَى بْنِ زَكَرِيَّاءَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِمَا فَرَحَّبَا وَدَعَوَا لِي بِخَيْرٍ .
ثُمَّ عَرَجَ بِي إِلَى السَّمَاءِ الثَّالِثَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ . فَقِيلَ مَنْ أَنْتَ قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم . قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِيُوسُفَ صلى الله عليه وسلم إِذَا هُوَ قَدْ أُعْطِيَ شَطْرَ الْحُسْنِ فَرَحَّبَ وَدَعَا لِي بِخَيْرٍ .
ثُمَّ عَرَجَ بِنَا إِلَى السَّمَاءِ الرَّابِعَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ – عَلَيْهِ السَّلاَمُ – قِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ . قَالَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِإِدْرِيسَ فَرَحَّبَ وَدَعَا لِي بِخَيْرٍ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ( وَرَفَعْنَاهُ مَكَانًا عَلِيًّا)
ثُمَّ عَرَجَ بِنَا إِلَى السَّمَاءِ الْخَامِسَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ . قِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ . قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِهَارُونَ صلى الله عليه وسلم فَرَحَّبَ وَدَعَا لِي بِخَيْرٍ .
ثُمَّ عَرَجَ بِنَا إِلَى السَّمَاءِ السَّادِسَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ . قِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ . قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِمُوسَى صلى الله عليه وسلم فَرَحَّبَ وَدَعَا لِي بِخَيْرٍ .
ثُمَّ عَرَجَ بِنَا إِلَى السَّمَاءِ السَّابِعَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ فَقِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ . قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم . قِيلَ وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ قَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ . فَفُتِحَ لَنَا فَإِذَا أَنَا بِإِبْرَاهِيمَ صلى الله عليه وسلم مُسْنِدًا ظَهْرَهُ إِلَى الْبَيْتِ الْمَعْمُورِ وَإِذَا هُوَ يَدْخُلُهُ كُلَّ يَوْمٍ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ لاَ يَعُودُونَ إِلَيْهِ
ثُمَّ ذَهَبَ إِلَى السِّدْرَةِ الْمُنْتَهَى وَإِذَا وَرَقُهَا كَآذَانِ الْفِيَلَةِ وَإِذَا ثَمَرُهَا كَالْقِلاَلِ – قَالَ – فَلَمَّا غَشِيَهَا مِنْ أَمْرِ اللَّهِ مَا غَشِيَ تَغَيَّرَتْ فَمَا أَحَدٌ مِنْ خَلْقِ اللَّهِ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَنْعَتَهَا مِنْ حُسْنِهَا . فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَىَّ مَا أَوْحَى فَفَرَضَ عَلَىَّ خَمْسِينَ صَلاَةً فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ فَنَزَلْتُ إِلَى مُوسَى صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا فَرَضَ رَبُّكَ عَلَى أُمَّتِكَ قُلْتُ خَمْسِينَ صَلاَةً . قَالَ ارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَاسْأَلْهُ التَّخْفِيفَ فَإِنَّ أُمَّتَكَ لاَ تطِيقُ ذَلِكَ فَإِنِّي قَدْ بَلَوْتُ بَنِي إِسْرَائِيلَ وَخَبَرْتُهُمْ . قَالَ فَرَجَعْتُ إِلَى رَبِّي فَقُلْتُ يَا رَبِّ خَفِّفْ عَلَى أُمَّتِي . فَحَطَّ عَنِّي خَمْسًا فَرَجَعْتُ إِلَى مُوسَى فَقُلْتُ حَطَّ عَنِّي خَمْسًا . قَالَ إِنَّ أُمَّتَكَ لاَ تطِيقُ ذَلِكَ فَارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَاسْأَلْهُ التَّخْفِيفَ . – قَالَ – فَلَمْ أَزَلْ أَرْجِعُ بَيْنَ رَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى وَبَيْنَ مُوسَى – عَلَيْهِ السَّلاَمُ – حَتَّى قَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنَّهُنَّ خَمْسُ صَلَوَاتٍ كُلَّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ لِكُلِّ صَلاَةٍ عَشْرٌ فَذَلِكَ خَمْسُونَ صَلاَةً . وَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كُتِبَتْ لَهُ حَسَنَةً فَإِنْ عَمِلَهَا كُتِبَتْ لَهُ عَشْرًا وَمَنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا لَمْ تُكْتَبْ شَيْئًا فَإِنْ عَمِلَهَا كُتِبَتْ سَيِّئَةً وَاحِدَةً – قَالَ – فَنَزَلْتُ حَتَّى انْتَهَيْتُ إِلَى مُوسَى صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ ارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَاسْأَلْهُ التَّخْفِيفَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ قَدْ رَجَعْتُ إِلَى رَبِّي حَتَّى اسْتَحْيَيْتُ مِنْهُ "
হাদীসের ব্যাখ্যা:
ইসরা ও মি'রাজের সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে বায়তুল মাকদিসে গমন করেন। সেখানে নবীগণকে নিয়ে নামায পড়েন। তারপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তাঁকে নিয়ে এক এক করে সাত আসমান পাড়ি দেন। প্রত্যেক আসমানে পৌঁছলে সে আসমানের দ্বাররক্ষী জিজ্ঞেস করে, কে? হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, আমি জিবরীল। তারপর জিজ্ঞেস করে, আপনার সঙ্গে কে? তিনি উত্তর দেন, মুহাম্মাদ। এভাবে প্রত্যেকবার তিনি পরিচয় দিতে গিয়ে নিজের নাম বলেছেন। বলেননি যে, আমি। নাম বলতে গিয়েও নিজের সুপরিচিত নাম 'জিবরীল' বলেছেন। অন্য কোনও নাম নয়। তাঁর এছাড়া আরও নাম আছে, যেমন আর-রূহুল আমীন, রূহুল কুদ্স। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিচয় দিতে গিয়েও তিনি তাঁর সুপরিচিত নাম 'মুহাম্মাদ' উল্লেখ করেছেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরও আরও বহু নাম আছে, যেমন আহমাদ, আল-মাহী, আল-হাশির, আল-আকিব ইত্যাদি। তাঁর কুনয়াত বা উপনাম হল আবুল কাসিম। তিনি খাতামুন নাবিয়্যীন। তিনি সায়্যিদুল বাশার। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম এসবের কোনওটিই না বলে উভয় প্রসিদ্ধ ও পরিচিত নামই বলেছেন। এর দ্বারা বোঝা গেল ঘরের ভেতর থেকে আগন্তুকের পরিচয় জানতে চাওয়া হলে তাকে যে নামে সবাই চেনে সেই নাম বলেই পরিচয় দিতে হবে। 'আমি' বলা কিংবা এমন কোনও নাম বা উপাধি বলাও ঠিক নয়, যা বললে জিজ্ঞাসাকারী তাকে ভালোভাবে চিনতে পারবে না। পরিচয় জিজ্ঞেস করার উদ্দেশ্যই তো চিনতে পারা। যা বললে সে চিনতে পারবে না, তা বলার ফায়দা কী? তাতে বরং ঝামেলাই বাড়ে। কথা বেশি বলতে হয়, সময়ও নষ্ট হয়।
অনেক সময় বাক্তি বড় হলে নিজ নাম বলতে আত্মসম্মানে বাধে। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম ও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে বড় মাখলূক আর কে আছে? তাঁদেরই যখন পরিচয় দিতে গিয়ে নিজ নাম বলতে কুণ্ঠাবোধ হয়নি, তখন অন্যদের কেন এতে আপত্তি লাগবে? অকপটে নিজ নাম উচ্চারণ করার দ্বারা কেবল পরিচয়দানই সহজ হয় না; এটা বিনয়েরও পরিচায়ক।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইসরা ও মি'রাজের ঘটনা সত্য। এতে বিশ্বাস রাখা জরুরি।
খ. আকাশ সাতটি। এতেও বিশ্বাস রাখতে হবে।
গ. প্রত্যেক আকাশে উপরে ওঠার দরজা আছে। আছে দরজার প্রহরীও। একেক ফিরিশতাকে আল্লাহ তা'আলা একেক দরজার দায়িত্বে নিযুক্ত করেছেন।
ঘ. দ্বাররক্ষী ফিরিশতাগণ সদা সতর্ক ও সচেতন। দায়িত্বপালনে তাদের দ্বারা কখনও কোনও ত্রুটি হয় না।
ঙ. কারও দরজায় পৌঁছলে নিজের নাম-পরিচয় দেওয়া কর্তব্য।
চ. পরিচয় দিতে গিয়ে সবাই যে নামে চেনে সেটাই বলা উচিত।
অনেক সময় বাক্তি বড় হলে নিজ নাম বলতে আত্মসম্মানে বাধে। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম ও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে বড় মাখলূক আর কে আছে? তাঁদেরই যখন পরিচয় দিতে গিয়ে নিজ নাম বলতে কুণ্ঠাবোধ হয়নি, তখন অন্যদের কেন এতে আপত্তি লাগবে? অকপটে নিজ নাম উচ্চারণ করার দ্বারা কেবল পরিচয়দানই সহজ হয় না; এটা বিনয়েরও পরিচায়ক।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইসরা ও মি'রাজের ঘটনা সত্য। এতে বিশ্বাস রাখা জরুরি।
খ. আকাশ সাতটি। এতেও বিশ্বাস রাখতে হবে।
গ. প্রত্যেক আকাশে উপরে ওঠার দরজা আছে। আছে দরজার প্রহরীও। একেক ফিরিশতাকে আল্লাহ তা'আলা একেক দরজার দায়িত্বে নিযুক্ত করেছেন।
ঘ. দ্বাররক্ষী ফিরিশতাগণ সদা সতর্ক ও সচেতন। দায়িত্বপালনে তাদের দ্বারা কখনও কোনও ত্রুটি হয় না।
ঙ. কারও দরজায় পৌঁছলে নিজের নাম-পরিচয় দেওয়া কর্তব্য।
চ. পরিচয় দিতে গিয়ে সবাই যে নামে চেনে সেটাই বলা উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)