মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)
তাওবা অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৭
তাওবা অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : আল্লাহ্ তাঁর রহমতের একশত ভাগের এক ভাগ তাঁর সৃষ্টিকুলের অন্তরে ন্যস্ত করেছেন
৩৭. জুনদুব ইবন বাজালী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা একজন বেদুঈন এসে তার উট থেকে নামলো এবং তাকে বাঁধলো, তারপর সে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর পিছনে সালাত আদায় করলো। সালাত আদায়ের পর সে তার উটের কাছে এসে উটের বাঁধন খুলে তার পিঠে আরোহণ করলো। তারপর আওয়াজ দিয়ে বললো, হে আল্লাহ্! আমার উপর এবং মুহাম্মদ (সা)-এর উপর রহমত নাযিল কর। আর আমাদের রহমতের মধ্যে অন্য কাউকে অন্তর্ভুক্ত করো না। তখন রাসূল (সা) বললেন, তোমরাই বল, এ লোকটি অধিক বিভ্রান্ত, না কি তার উট? তোমরা কি শুনেছ, সে কি বলেছে? সাহাবাগণ বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তুমি আল্লাহর অফুরন্ত রহমতকে সঙ্কুচিত করে ফেলেছে। আল্লাহ একশত রহমত সৃষ্টি করেছেন তার মধ্যে একটি রহমত সৃষ্টিকুলের জন্য নাযিল করেছেন তা দ্বারা সৃষ্টিকুলের জ্বিন-মানুষ ও জন্তু-জানোয়ার পরস্পরের প্রতি দয়া ও অনুকল্প প্রদর্শন করে। অপর নিরা নব্বইটি রহমত তাঁর কাছে রেখে দিয়েছেন, তোমরা কি মনে কর, সে বিভ্রান্ত না তার উটটি বিভ্রান্ত?
كتاب التوبة
باب ما جاء في أن الرحمة التي أودعها الله في قلوب خلقه جزء من مائة من رحمته لخلقه
عن جندب البجلي (4) قال جاء أعرابي فأناخ راحلته ثم عقلها ثم صلى خلف رسول الله صلى الله عليه وسلم فلما صلى رسول الله صلى الله عليه وسلم أتى راحلته فأطلق عقالها ثم نادى اللهم ارحمني ومحمدا ولا تشرك في رحمتنا أحدا (5) فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم أتقولون هذا أضل أم بعيره؟ الم تسمعوا ما قال؟ قالوا بلى قال لقد حظرت (6) رحمة الله واسعة ان الله خلق مائة حمة فأنزل الله رحمة واحدة يتعاطف بها الخلائق جنها وانسها وبهائمها وعنهد تسع وتسعون أتقولون هو أضل أم بعيره؟
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার রহমত ও দয়ার বিপুলতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। বলা হয়েছে, তিনি রহমতকে একশ' ভাগ করে তার মাত্র একটা ভাগ পৃথিবীতে দিয়েছেন আর নিরানব্বই ভাগ নিজের কাছে রেখেছেন। সেই একভাগের পরিমাণ হাদীছটির এক বর্ণনা অনুযায়ী আসমান-যমীনের বিস্তারের সমতূল্য। সেটাই পেয়েছে মানুষ, জীবজন্তু, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ সকলে। সৃষ্টির সূচনা থেকে অদ্যাবধি যত মাখলূক এসেছে, মানবীয় হিসাব-নিকাশের ঊর্ধ্বে সেই অপার সৃষ্টিপুঞ্জের মধ্যে ওই একভাগ বিতরণ করা হয়েছে। তাহলে একেকজনের ভাগে তার কতটুকু পড়েছে? অথচ সেই অসংখ্য ভাগ রহমতের সামান্য একভাগ নিয়ে একেকজন মায়ের আপন সন্তানের প্রতি মমত্বের কী আকুলতা! কী পরিমাণ তুমি নিজ সন্তানকে ভালোবাস হে মা? প্রত্যেক মায়েরই প্রাণের জবাব হল, আমি তার মাপ নাহি জানি।
রহমতের সেই একভাগের ভগ্নাংশ দিয়েই মা তার সন্তানকে ভালোবাসে, বন্যপশু তাদের শাবকদের আগলে রাখে, হিংস্র জন্তু তাদের বাচ্চাদের আদর জানায়, বিষাক্ত সাপ তাদের ছানাদের যত্ন নেয়, পাখিরা তাদের ছানাদের দানাপানি খাওয়ায়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মমতার দৃষ্টান্ত দিয়েছেন ঘোড়া দিয়ে। তিনি ইরশাদ করেন
حتى ترفع الدابة حافرها عن ولدها خشية أن تصيبه (এমনকি চতুষ্পদ জন্তু তার খুর তার বাচ্চা থেকে উঁচু করে রাখে, পাছে তাকে কষ্ট দিয়ে বসে)। এ দৃষ্টান্ত উল্লেখ করার কারণ ঘোড়া খুব অস্থির প্রাণী। খুব বেশি নড়াচড়া করে। পালিত পশু হওয়ার কারণে শাবকের প্রতি তার আচরণ সকলেরই জানা। লক্ষ করলেই দেখা যায় দ্রুত ছুটে আসা একটি ঘোড়া কিভাবে তার পা উঁচু করে রাখে, পাছে শুয়ে থাকা শাবকের গায়ে তা লেগে যায় আর সেটি কষ্ট পায়। এই যে নিজ বাচ্চার প্রতি ঘোড়ার এতটা সতর্কতা, এটা ওই রহমতেরই ফলশ্রুতি, যা সে একভাগের বণ্টন থেকে লাভ করেছে।
বাকি যে নিরানব্বই ভাগ রহমত আল্লাহ তা'আলা নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন, তার প্রকাশ ঘটবে কিয়ামতের দিন। কিয়ামতের দিন তিনি মুমিনদের প্রতি তাঁর সেই নিরানব্বই ভাগ রহমতের আচরণ করবেন। এটা মুমিনদের জন্য কত বড়ই না আশার কথা। মাত্র একভাগ রহমতের যখন এ অবস্থা যে, তা দ্বারা তিনি পৃথিবীতে মুমিন কাফের নির্বিশেষে সকলের প্রতি অসংখ্য অগণিত নি'আমত ছড়িয়ে দিয়েছেন, পাপীদের হাজারও পাপ সত্ত্বেও নিত্যদিন তাদের প্রতি দয়া বর্ষণ করে যাচ্ছেন, তখন বাকি নিরানব্বই ভাগ রহমতের প্রকাশ তিনি মুমিন বান্দাদের প্রতি যে কিভাবে ঘটাবেন, তা কি কল্পনা করা সম্ভব? তাই তো ইরশাদ হয়েছে
فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
'সুতরাং কোনও ব্যক্তি জানে না এরূপ লোকদের জন্য তাদের কর্মফলস্বরূপ চোখ জুড়ানোর কত কী উপকরণ লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
একটি হাদীছে কুদসীতে ইরশাদ হয়েছে
قال الله تبارك وتعالى : أعددت لعبادي الصالحين، ما لا عين رأت، ولا أذن سمعت، ولا خطر على قلب بشر
'আল্লাহ তা'আলা বলেন, আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য এমনসব নি'আমত প্রস্তুত রেখেছি, যা কোনও চোখ দেখেনি, কোনও কান শোনেনি এবং কোনও মানুষের অন্তর কল্পনাও করেনি।
হাদীছটির সর্বশেষ বর্ণনায় বলা হয়েছে- فإذا كان يوم القيامة أكملها بهذه الرحمة (যেদিন কিয়ামত হবে, সেদিন আল্লাহ তা এই রহমত দ্বারা পূর্ণ করবেন)। অর্থাৎ নিরানব্বই ভাগের সঙ্গে একভাগ মিলিয়ে একশ' ভাগ পূর্ণ করবেন। সেদিন সবটা রহমতই হবে মুমিনদের জন্য। ইমাম কুরতুবী রহ.-এর মতে এদিকে ইঙ্গিত করেই ইরশাদ হয়েছে
وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِينَ رَحِيمًا
“তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু।
رحیم শব্দটি فعيل পরিমাপে গঠিত আতিশয্যজ্ঞাপক বিশেষ্য পদ। এর দ্বারা সংশ্লিষ্ট গুণটির এমন চূড়ান্ত রূপ বোঝানো হয়, যার উপর আর কোনও মাত্রা থাকে না। এর দ্বারা বোঝা যায়, কিয়ামতের দিন কাফেরদের জন্য রহমতের কোনও অংশ থাকবে না। দুনিয়ায় যে একভাগ রহমত দেওয়া হয়েছে তা থেকেও তারা সেদিন কিছু পাবে না এবং বাকি নিরানব্বই ভাগ থেকেও নয়। পূর্ণ একশ' ভাগ রহমত সেদিন মুমিনদের জন্যই নির্দিষ্ট থাকবে। যেমন এক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে
فَسَأَكْتُبُهَا لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَالَّذِينَ هُمْ بِآيَاتِنَا يُؤْمِنُونَ
"সুতরাং আমি এ রহমত (পরিপূর্ণভাবে) সেইসব লোকের জন্য লিখব, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, যাকাত দেয় এবং যারা আমার আয়াতসমূহে ঈমান রাখে।
প্রকাশ থাকে যে, আল্লাহ তা'আলার প্রতিটি গুণই অনন্ত অসীম। অনন্ত অসীম বিষয়ের মধ্যে ভাগ-বণ্টন কল্পনা করা যায় না। কাজেই এ হাদীছে যে একশ' ভাগ করার কথা বলা হয়েছে, তা দ্বারা মূলত আল্লাহ তা'আলার রহমতের বিপুলতা সম্পর্কে ধারণা দেওয়াই উদ্দেশ্য। বোঝানো হচ্ছে যে, মাখলুকের মধ্যে যে দয়ামায়া তা আল্লাহপ্রদত্ত এবং আল্লাহ তা'আলার নিজ দয়ামায়ার তুলনায় তা নিতান্তই নগণ্য। এই নগণ্য দয়ামায়ার দ্বারা যখন মাখলূক একে অন্যের প্রতি এতটা মমতা প্রকাশ করে, তখন অসীম অনন্ত দয়ার মালিক আল্লাহ তা'আলা আখিরাতে মুমিন বান্দাদের প্রতি কী পরিমাণ মমতা প্রকাশ করতে পারেন তা কি কল্পনা করা যায়? সুতরাং হে মুমিন ও বিশ্বাসী বান্দাগণ! তোমরা কিছুতেই আল্লাহ তা'আলার রহমত থেকে হতাশ হয়ো না।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ আমাদেরকে আল্লাহর রহমত পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী করে তোলে।
খ. আল্লাহ তা'আলা অসীম রহমতের মালিক। মানুষসহ সমস্ত মাখলুকের দয়ামায়া আল্লাহ তা'আলার সে অসীম রহমত থেকেই পাওয়া।
গ. কোনও ব্যক্তি যত বড় গুনাহগারই হোক, মাগফিরাত লাভের ব্যাপারে তার কিছুতেই হতাশ হওয়া উচিত নয়। সে খাঁটি তাওবা করলে আল্লাহ তা'আলা নিজ রহমতে তাকে অবশ্যই ক্ষমা করবেন।
রহমতের সেই একভাগের ভগ্নাংশ দিয়েই মা তার সন্তানকে ভালোবাসে, বন্যপশু তাদের শাবকদের আগলে রাখে, হিংস্র জন্তু তাদের বাচ্চাদের আদর জানায়, বিষাক্ত সাপ তাদের ছানাদের যত্ন নেয়, পাখিরা তাদের ছানাদের দানাপানি খাওয়ায়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মমতার দৃষ্টান্ত দিয়েছেন ঘোড়া দিয়ে। তিনি ইরশাদ করেন
حتى ترفع الدابة حافرها عن ولدها خشية أن تصيبه (এমনকি চতুষ্পদ জন্তু তার খুর তার বাচ্চা থেকে উঁচু করে রাখে, পাছে তাকে কষ্ট দিয়ে বসে)। এ দৃষ্টান্ত উল্লেখ করার কারণ ঘোড়া খুব অস্থির প্রাণী। খুব বেশি নড়াচড়া করে। পালিত পশু হওয়ার কারণে শাবকের প্রতি তার আচরণ সকলেরই জানা। লক্ষ করলেই দেখা যায় দ্রুত ছুটে আসা একটি ঘোড়া কিভাবে তার পা উঁচু করে রাখে, পাছে শুয়ে থাকা শাবকের গায়ে তা লেগে যায় আর সেটি কষ্ট পায়। এই যে নিজ বাচ্চার প্রতি ঘোড়ার এতটা সতর্কতা, এটা ওই রহমতেরই ফলশ্রুতি, যা সে একভাগের বণ্টন থেকে লাভ করেছে।
বাকি যে নিরানব্বই ভাগ রহমত আল্লাহ তা'আলা নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন, তার প্রকাশ ঘটবে কিয়ামতের দিন। কিয়ামতের দিন তিনি মুমিনদের প্রতি তাঁর সেই নিরানব্বই ভাগ রহমতের আচরণ করবেন। এটা মুমিনদের জন্য কত বড়ই না আশার কথা। মাত্র একভাগ রহমতের যখন এ অবস্থা যে, তা দ্বারা তিনি পৃথিবীতে মুমিন কাফের নির্বিশেষে সকলের প্রতি অসংখ্য অগণিত নি'আমত ছড়িয়ে দিয়েছেন, পাপীদের হাজারও পাপ সত্ত্বেও নিত্যদিন তাদের প্রতি দয়া বর্ষণ করে যাচ্ছেন, তখন বাকি নিরানব্বই ভাগ রহমতের প্রকাশ তিনি মুমিন বান্দাদের প্রতি যে কিভাবে ঘটাবেন, তা কি কল্পনা করা সম্ভব? তাই তো ইরশাদ হয়েছে
فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
'সুতরাং কোনও ব্যক্তি জানে না এরূপ লোকদের জন্য তাদের কর্মফলস্বরূপ চোখ জুড়ানোর কত কী উপকরণ লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
একটি হাদীছে কুদসীতে ইরশাদ হয়েছে
قال الله تبارك وتعالى : أعددت لعبادي الصالحين، ما لا عين رأت، ولا أذن سمعت، ولا خطر على قلب بشر
'আল্লাহ তা'আলা বলেন, আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য এমনসব নি'আমত প্রস্তুত রেখেছি, যা কোনও চোখ দেখেনি, কোনও কান শোনেনি এবং কোনও মানুষের অন্তর কল্পনাও করেনি।
হাদীছটির সর্বশেষ বর্ণনায় বলা হয়েছে- فإذا كان يوم القيامة أكملها بهذه الرحمة (যেদিন কিয়ামত হবে, সেদিন আল্লাহ তা এই রহমত দ্বারা পূর্ণ করবেন)। অর্থাৎ নিরানব্বই ভাগের সঙ্গে একভাগ মিলিয়ে একশ' ভাগ পূর্ণ করবেন। সেদিন সবটা রহমতই হবে মুমিনদের জন্য। ইমাম কুরতুবী রহ.-এর মতে এদিকে ইঙ্গিত করেই ইরশাদ হয়েছে
وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِينَ رَحِيمًا
“তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু।
رحیم শব্দটি فعيل পরিমাপে গঠিত আতিশয্যজ্ঞাপক বিশেষ্য পদ। এর দ্বারা সংশ্লিষ্ট গুণটির এমন চূড়ান্ত রূপ বোঝানো হয়, যার উপর আর কোনও মাত্রা থাকে না। এর দ্বারা বোঝা যায়, কিয়ামতের দিন কাফেরদের জন্য রহমতের কোনও অংশ থাকবে না। দুনিয়ায় যে একভাগ রহমত দেওয়া হয়েছে তা থেকেও তারা সেদিন কিছু পাবে না এবং বাকি নিরানব্বই ভাগ থেকেও নয়। পূর্ণ একশ' ভাগ রহমত সেদিন মুমিনদের জন্যই নির্দিষ্ট থাকবে। যেমন এক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে
فَسَأَكْتُبُهَا لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَالَّذِينَ هُمْ بِآيَاتِنَا يُؤْمِنُونَ
"সুতরাং আমি এ রহমত (পরিপূর্ণভাবে) সেইসব লোকের জন্য লিখব, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, যাকাত দেয় এবং যারা আমার আয়াতসমূহে ঈমান রাখে।
প্রকাশ থাকে যে, আল্লাহ তা'আলার প্রতিটি গুণই অনন্ত অসীম। অনন্ত অসীম বিষয়ের মধ্যে ভাগ-বণ্টন কল্পনা করা যায় না। কাজেই এ হাদীছে যে একশ' ভাগ করার কথা বলা হয়েছে, তা দ্বারা মূলত আল্লাহ তা'আলার রহমতের বিপুলতা সম্পর্কে ধারণা দেওয়াই উদ্দেশ্য। বোঝানো হচ্ছে যে, মাখলুকের মধ্যে যে দয়ামায়া তা আল্লাহপ্রদত্ত এবং আল্লাহ তা'আলার নিজ দয়ামায়ার তুলনায় তা নিতান্তই নগণ্য। এই নগণ্য দয়ামায়ার দ্বারা যখন মাখলূক একে অন্যের প্রতি এতটা মমতা প্রকাশ করে, তখন অসীম অনন্ত দয়ার মালিক আল্লাহ তা'আলা আখিরাতে মুমিন বান্দাদের প্রতি কী পরিমাণ মমতা প্রকাশ করতে পারেন তা কি কল্পনা করা যায়? সুতরাং হে মুমিন ও বিশ্বাসী বান্দাগণ! তোমরা কিছুতেই আল্লাহ তা'আলার রহমত থেকে হতাশ হয়ো না।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ আমাদেরকে আল্লাহর রহমত পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী করে তোলে।
খ. আল্লাহ তা'আলা অসীম রহমতের মালিক। মানুষসহ সমস্ত মাখলুকের দয়ামায়া আল্লাহ তা'আলার সে অসীম রহমত থেকেই পাওয়া।
গ. কোনও ব্যক্তি যত বড় গুনাহগারই হোক, মাগফিরাত লাভের ব্যাপারে তার কিছুতেই হতাশ হওয়া উচিত নয়। সে খাঁটি তাওবা করলে আল্লাহ তা'আলা নিজ রহমতে তাকে অবশ্যই ক্ষমা করবেন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)