সহীফায়ে হাম্মাম ইবনে মুনাব্বিহ

কিতাবের পরিচ্ছেদ সমূহ

হাদীস নং: ১১০
কিতাবের পরিচ্ছেদ সমূহ
হত্যাকারী ও নিহত দু’ব্যক্তি (এক সাথে) জান্নাতে প্রবেশ
১১০. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ তাআ’লা এমন দু’ব্যক্তির জন্য হাসবেন যাদের একজন অপরজনকে হত্যা করবে অথচ তাদের উভয়েই জান্নাতে প্রবেশ করবে। সাহাবীগণ বললেন, তা কেমন করে হবে ইয়া রাসুলাল্লাহ? তিনি বললেনঃ এক জন নিহত (শহীদ) হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করবে, তারপর আল্লাহ অপরজনের প্রতিও সদয় হবেন এবং তাকেও ইসলামের হেদায়েত দান করবেন। তারপর সেও আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে এবং শহীদ হয়ে যাবে।
أبواب الكتاب
باب بَيَانِ الرَّجُلَيْنِ يَقْتُلُ أَحَدُهُمَا الآخَرَ يَدْخُلاَنِ الْجَنَّةَ
110 - وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَضْحَكُ اللَّهُ لِرَجُلَيْنِ يَقْتُلُ أَحَدُهُمَا الْآخَرَ، كِلَاهُمَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ» ، قَالُوا: وَكَيْفَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «يُقْتَلُ هَذَا فَيَلِجُ الْجَنَّةَ، ثُمَّ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَى الْآخَرِ فَيَهْدِيهِ إِلَى الْإِسْلَامِ، ثُمَّ يُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيُسْتَشْهَدُ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছে আল্লাহ তা'আলার হাসি দ্বারা রূপকার্থে তাঁর সন্তুষ্টি বোঝানো হয়েছে। তিনি এই দুই ব্যক্তির প্রতি খুশি হন এ কারণে যে, তাদের মধ্যে ছিল চরম শত্রুতা, যে কারণে তাদের একজন অন্যজনকে হত্যা পর্যন্ত করেছে। যাকে হত্যা করা হয়েছে সে তো শহীদ, আর শহীদের ঠিকানা জান্নাত। যে ব্যক্তি হত্যা করেছে তার জাহান্নামে যাওয়ার কথা। কেননা একে সে কাফির, তদুপরি একজন মু'মিনকে হত্যা করার মত কঠিন পাপ করেছে। কিন্তু কি আশ্চর্য! সেও জান্নাতে চলে গেল আর তাদের শত্রুতা বন্ধুত্বে পরিণত হয়ে গেল। জান্নাতে কারও অন্তরে কারও প্রতি কোনওরকম শত্রুতা ও বিদ্বেষ থাকবে না। কুরআন মাজীদে ইরশাদ

وَنَزَعْنَا مَا فِي صُدُورِهِمْ مِنْ غِلٍّ إِخْوَانًا عَلَى سُرُرٍ مُتَقَابِلِينَ

অর্থ : তাদের অন্তরে যে দুঃখ-বেদনা থাকবে তা দূর করে দেব। তারা ভাই-ভাই রূপে মুখোমুখি হয়ে উঁচু আসনে আসীন হবে।

এই যে নিহত ও হত্যাকারী উভয়ই জান্নাতে চলে গেল এবং পূর্বশত্রুতার স্থলে তারা ভাই-ভাই হয়ে গেল, দৃশ্যত এটা একটা মুগ্ধকর ব্যাপারই বটে। সে কারণেই আল্লাহ তা'আলা খুশিতে হাসেন।
বলাবাহুল্য হত্যাকারীর ইসলামগ্রহণ ও শাহাদাতলাভ আল্লাহপ্রদত্ত তাওফীকের ফলেই সম্ভব হয়েছে। তা সত্ত্বেও তার প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্ট হওয়া তাঁর অপার মহানুভবতা ও রহমতের প্রকাশ ছাড়া কিছুই নয়।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. কাফের ব্যক্তি তার কুফর থেকে তাওবা করলে তার তাওবা কবূল হয়, যদিও সে এর আগে ইসলামের প্রতি শত্রুতাবশত মুসলিমদের জান-মালের ক্ষতিসাধন করে থাকে। বস্তুত ইসলামগ্রহণ দ্বারা পূর্বের সমস্ত গুনাহই মাফ হয়ে যায়।

খ. কোনও কাফিরকে তার বর্তমান কুফরী অবস্থার কারণে জাহান্নামী বলা ঠিক নয়। কেননা হতে পারে আল্লাহ তা'আলা তাকে তাওবার তাওফীক দেবেন, ফলে ঈমান অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটবে। ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তা'আলা তাকে জান্নাতবাসী করেন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)