মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)

পানীয় অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৩
পানীয় অধ্যায়
পরিচ্ছেদ: এ বিষয়ে অবকাশ প্রসঙ্গে।
৩৩। আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু সুলায়ম (রা) আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার ঘরে উপস্থিত হলেন। তার ঘরে একটি মশক ঝুলন্ত ছিল। উম্মু সুলায়ম (রা) বলেন, তিনি এটা হতে দাঁড়ানো অবস্থায় পান করেছেন। উম্মু সুলায়ম (রা) বলেন, আমি উঠে (বরকতের জন্য) মশকের মুখের সে অংশটা কেটে নিলাম।
(তবারানী, তাহাবী, শামায়েলে তিরমিযী)
كتاب الأشربة
باب الرخصة فى ذلك
عن أنس (8) قال حدثنى أمى (أم سليم) أن رسول الله صلى الله عليه وسلم دخل عليها وفى بيتها قربة معلقة قالت فشرب من القربة قائمًا قالت فعمدت إلى فم القربة فقطعتها

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছ দ্বারা তিনটি বিষয় জানা যায়।

(ক) নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পানি পান করেছেন। এর দ্বারা বোঝা গেল দাঁড়িয়ে পানি পান করা মাকরূহে তানযীহী, হারাম নয়।

(খ) নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মশকের মুখে মুখ লাগিয়ে পানি পান করেছেন। অথচ পেছনে দুই হাদীছে তিনি এভাবে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন। এর দ্বারা বোঝা যায় ওই নিষেধাজ্ঞা হারাম পর্যায়ের নয়। নানারকম ক্ষতির আশঙ্কা থাকে বলেই তা নিষেধ করা হয়েছে। তার মানে ওভাবে পানি পান করা অপসন্দনীয়। অর্থাৎ মাকরূহে তানযীহী। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে যে মশকে মুখ দিয়ে পান করেছেন, এটা প্রমাণ করে এভাবে পান করা জায়েয আছে, যদিও মাকরূহ বা অপসন্দনীয়।

(গ) হযরত উম্মু ছাবিত রাযি. মশকের মুখ কেটে নিয়েছেন। এর ব্যাখ্যায় ইমাম নববী রহ. বলেন, যেহেতু মশকের মুখে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখ লেগেছিল, তাই মশকের সে স্থানটি তাবাররুক হিসেবে নিজের কাছে সংরক্ষণ করার জন্য তিনি সেটি কেটে নিয়েছিলেন।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. কলস বা মশকের মুখে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে নেই। এতে নানা ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

খ. এ হাদীছ দ্বারা তাবাররুকের বৈধতা প্রমাণ হয়। কাজেই কেউ যদি আল্লাহওয়ালাদের কোনও স্মৃতিচিহ্ন তাবাররুক হিসেবে সংরক্ষণ করে, তবে তাতে আপত্তি করার কোনও বৈধতা নেই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান