কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ
১৭. শপথ ও মান্নতের বিধান
হাদীস নং: ৪২৪০
আন্তর্জাতিক নং: ৪২৯০
১. ইমাম মাহদী (আলাইহিস সালাম) সম্পর্কে।
ইমাম আবু দাউদ (রাহঃ) হারূন ইবনে মুগীরা থেকে, তিনি আবু ইসহাক (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, একদা আলী (রাযিঃ) তাঁর পুত্র হাসানের প্রতি দৃষ্টিপাত করে বলেনঃ আমার এ ছেলে জান্নাতের যুবদের সর্দার, যেমন নবী (ﷺ) বলেছেনঃ তিনি আরো বলেনঃ অতি সত্তর তার বংশে এমন এক ব্যক্তি জন্ম গ্রহণ করবে, যার নাম হবে তোমাদের নবীর অনুরূপ। স্বভাব-চরিত্রে তিনি তাঁরই মত হবেন, তবে আকৃতিতে নয়। এরপর আলী (রাযিঃ) বলেনঃ তিনি পৃথিবীকে আদল-ইনসাফে পরিপূর্ণ করবেন।
হারূন (রাহঃ) .... আমর ইবনে কায়স (রাহঃ) থেকে, তিনি হিলাল ইবনে আমর (রাহঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ আমি আলী (রাযিঃ)-কে এরূপ বর্ণনা করতে শুনেছি যে, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ ‘অরাইন-নাহার’ থেকে এমন এক ব্যক্তি বের হবে, যার নাম হবে ‘হারিছ ইবনে হারবাছ’ এবং তার আগে অপর এক ব্যক্তি বের হবে, যাকে লোকেরা ‘মনসুর’ বলবে। তিনি মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর পরিবার-পরিজনদের তেমনি ভাবে আশ্রয় দেবেন, যেমনি ভাবে কুরাইশগণ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে আশ্রয় দিয়েছিল। প্রত্যেক মু’মিনের উচিত হবে তাঁকে সাহায্য করা এবং তাঁর আহব্বানে সাড়া দেওয়া।
হারূন (রাহঃ) .... আমর ইবনে কায়স (রাহঃ) থেকে, তিনি হিলাল ইবনে আমর (রাহঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ আমি আলী (রাযিঃ)-কে এরূপ বর্ণনা করতে শুনেছি যে, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ ‘অরাইন-নাহার’ থেকে এমন এক ব্যক্তি বের হবে, যার নাম হবে ‘হারিছ ইবনে হারবাছ’ এবং তার আগে অপর এক ব্যক্তি বের হবে, যাকে লোকেরা ‘মনসুর’ বলবে। তিনি মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর পরিবার-পরিজনদের তেমনি ভাবে আশ্রয় দেবেন, যেমনি ভাবে কুরাইশগণ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে আশ্রয় দিয়েছিল। প্রত্যেক মু’মিনের উচিত হবে তাঁকে সাহায্য করা এবং তাঁর আহব্বানে সাড়া দেওয়া।
باب المهدى
الْمُغِيرَةِ، قَالَ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ أَبِي قَيْسٍ، عَنْ شُعَيْبِ بْنِ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ قَالَ عَلِيٌّ - رضى الله عنه - وَنَظَرَ إِلَى ابْنِهِ الْحَسَنِ فَقَالَ إِنَّ ابْنِي هَذَا سَيِّدٌ كَمَا سَمَّاهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَسَيَخْرُجُ مِنْ صُلْبِهِ رَجُلٌ يُسَمَّى بِاسْمِ نَبِيِّكُمْ يُشْبِهُهُ فِي الْخُلُقِ وَلاَ يُشْبِهُهُ فِي الْخَلْقِ ثُمَّ ذَكَرَ قِصَّةَ يَمْلأُ الأَرْضَ عَدْلاً .
وَقَالَ هَارُونُ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ أَبِي قَيْسٍ عَنْ مُطَرِّفِ بْنِ طَرِيفٍ عَنْ أَبِي الْحَسَنِ عَنْ هِلاَلِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ سَمِعْتُ عَلِيًّا - رضى الله عنه - يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " يَخْرُجُ رَجُلٌ مِنْ وَرَاءِ النَّهْرِ يُقَالُ لَهُ الْحَارِثُ بْنُ حَرَّاثٍ عَلَى مُقَدِّمَتِهِ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ مَنْصُورٌ يُوَطِّئُ أَوْ يُمَكِّنُ لآلِ مُحَمَّدٍ كَمَا مَكَّنَتْ قُرَيْشٌ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَجَبَ عَلَى كُلِّ مُؤْمِنٍ نَصْرُهُ " . أَوْ قَالَ " إِجَابَتُهُ " .
وَقَالَ هَارُونُ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ أَبِي قَيْسٍ عَنْ مُطَرِّفِ بْنِ طَرِيفٍ عَنْ أَبِي الْحَسَنِ عَنْ هِلاَلِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ سَمِعْتُ عَلِيًّا - رضى الله عنه - يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " يَخْرُجُ رَجُلٌ مِنْ وَرَاءِ النَّهْرِ يُقَالُ لَهُ الْحَارِثُ بْنُ حَرَّاثٍ عَلَى مُقَدِّمَتِهِ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ مَنْصُورٌ يُوَطِّئُ أَوْ يُمَكِّنُ لآلِ مُحَمَّدٍ كَمَا مَكَّنَتْ قُرَيْشٌ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَجَبَ عَلَى كُلِّ مُؤْمِنٍ نَصْرُهُ " . أَوْ قَالَ " إِجَابَتُهُ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এটি একটি ভবিষ্যদ্বাণী। এতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাচ্ছেন, কিয়ামতের আগে একটা সময় আসবে যখন মানুষের ঈমান-আমলের ব্যাপক অবক্ষয় দেখা দেবে। মানুষ 'সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ'-এর দায়িত্ব পালনে চরম শৈথিল্য প্রদর্শন করবে। সেই সময় কোনও এক জালেম রাজা তার সেনাবাহিনী নিয়ে পবিত্র কা'বা ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য অভিযান চালাবে। কিন্তু সে তার এ দুরভিসন্ধিতে সফল হবে না। পবিত্র কা'বায় পৌঁছার আগেই এক তরুলতাহীন প্রান্তরে আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে মাটির ভেতর ধ্বসিয়ে দেবেন। তাদের মধ্যে এমন কিছু লোকও থাকবে, যারা মূল বাহিনীর সদস্য নয়। তারা কেবল মালামাল বেচার জন্য তাদের সঙ্গী হবে। আরেকদল লোক কেবলই তাদের পথের সহযাত্রী হবে। হয়তো বাহিনীর লোক তাদের সঙ্গে যেতে বাধ্য করবে। কিন্তু সকলেই যেহেতু একসঙ্গেই থাকবে, তাই সাধারণভাবে সকলেই আযাবের কবলে পড়ে যাবে। তবে আখিরাতের ব্যাপারটা হবে আলাদা। সেখানে প্রত্যেকের সংগে তার নিয়ত অনুযায়ী আচরণ করা হবে। যাদের নিয়ত থাকবে পবিত্র কা'বাঘরের ক্ষতি করা, তারা দুনিয়ার শাস্তির সাথে আখিরাতের আযাবও ভোগ করবে। আর যাদেরকে জোরপূর্বক তাদের সংগে যেতে বাধ্য করা হবে, তারা আখিরাতে শাস্তির সম্মুখীন হবে না। অবশ্য যারা স্বেচ্ছায় তাদের সংগে যোগদান করবে, তা বেচাকেনার উদ্দেশ্যে হোক বা অন্য কোনও উদ্দেশ্যে, তাদের কারণে যেহেতু অপরাধীদের দল ভারী হবে এবং দেখতে তাদেরকে একটি বড় বাহিনী মনে হবে, সেহেতু তারাও অপরাধীদের দলে গণ্য হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারাও নিয়তের গুরুত্ব বোঝা গেল। নিয়ত দ্বারাই কাজের ভালোমন্দ নির্ণিত হবে এবং সে অনুযায়ী আখিরাতে বদলা দেওয়া হবে।
খ. যাদের দ্বারা অপরাধকারীদের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটে, অপরাধকারীদের অনুরূপ শাস্তি তাদের জন্যও প্রযোজ্য হয়।
গ. যারা অন্যায়-অপরাধে লিপ্ত থাকে তাদের সংগে চলাফেরা ও উঠাবসা করার অশুভ পরিণাম সম্পর্কে এ হাদীছে কঠিন সতর্কবাণী। সুতরাং এর থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মু'মিনের অবশ্যকর্তব্য। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন-
وَاتَّقُوا فِتْنَةً لَا تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْكُمْ خَاصَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থ : এবং সেই বিপর্যয়কে ভয় কর, যা বিশেষভাবে তোমাদের মধ্যে যারা জুলুম করে কেবল তাদেরকেই আক্রান্ত করবে না। জেনে রেখ, আল্লাহর আযাব সুকঠিন। - আনফালঃ ২৫
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারাও নিয়তের গুরুত্ব বোঝা গেল। নিয়ত দ্বারাই কাজের ভালোমন্দ নির্ণিত হবে এবং সে অনুযায়ী আখিরাতে বদলা দেওয়া হবে।
খ. যাদের দ্বারা অপরাধকারীদের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটে, অপরাধকারীদের অনুরূপ শাস্তি তাদের জন্যও প্রযোজ্য হয়।
গ. যারা অন্যায়-অপরাধে লিপ্ত থাকে তাদের সংগে চলাফেরা ও উঠাবসা করার অশুভ পরিণাম সম্পর্কে এ হাদীছে কঠিন সতর্কবাণী। সুতরাং এর থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মু'মিনের অবশ্যকর্তব্য। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন-
وَاتَّقُوا فِتْنَةً لَا تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْكُمْ خَاصَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থ : এবং সেই বিপর্যয়কে ভয় কর, যা বিশেষভাবে তোমাদের মধ্যে যারা জুলুম করে কেবল তাদেরকেই আক্রান্ত করবে না। জেনে রেখ, আল্লাহর আযাব সুকঠিন। - আনফালঃ ২৫
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
