মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)
বিবাহ অধ্যায়
হাদীস নং: ১৮১
বিবাহ অধ্যায়
পরিচ্ছেদ: ওলীমার দাওয়াতকারীর দাওয়াত কবুল করা।
১৮১। ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, "তোমাদের কাউকে ওলীমার দাওয়াত দেয়া হলে সে যেন তাতে উপস্থিত হয়।"
তাঁর থেকে দ্বিতীয় এক বর্ণনা সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, "যদি তোমাদের কাউকে বিবাহের ওলীমায় দাওয়াত দেয়া হয় তাহলে সে যেন তা কবুল করে।"
(বুখারী, মুসলিম, মালিক, আবূ দাউদ, ইবন মাজাহ, বায়হাকী)
তাঁর থেকে দ্বিতীয় এক বর্ণনা সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, "যদি তোমাদের কাউকে বিবাহের ওলীমায় দাওয়াত দেয়া হয় তাহলে সে যেন তা কবুল করে।"
(বুখারী, মুসলিম, মালিক, আবূ দাউদ, ইবন মাজাহ, বায়হাকী)
كتاب النكاح
باب إجابة الداعي الى الوليمة
عن ابن عمر (12) عن النبي صلى الله عليه سلم إذا نودي (13) أحدكم إلى وليمة فليأتها (وعنه من طريق ثان) (1) أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال إذا دعي أحدكم إلى وليمة عرس فليجب
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এক মুসলিমের উপর আরেক মুসলিমের একটি হক হচ্ছে দাওয়াত কবুল করা। কেউ যদি কাউকে বৈধ দাওয়াতে অংশগ্রহণের অনুরোধ করে, তবে তা কবুল করা উচিত। এর দ্বারা পরস্পরে মহব্বত সৃষ্টি হয়। দুই মুমিনের মধ্যে মহব্বত সৃষ্টি অত্যন্ত জরুরি। এটা জান্নাত লাভের উপায়। জান্নাত লাভ করা মুমিনদের পরম লক্ষ্য। যে দাওয়াতগ্রহণ তা লাভের পক্ষে সহায়ক হয়, তা কবুল করতে কুণ্ঠাবোধ করা উচিত নয়।
নির্দোষ দাওয়াত কবুল না করাটা অপরাধ। হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ- ومن دعي إلى وليمة فلم يجب فقد عصى الله ورسوله 'যে ব্যক্তিকে ওলীমায় দাওয়াত দেওয়া হয় আর সে তা কবুল না করে, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা করল।
অবশ্য দাওয়াত কবুল করা জরুরি কেবল তখনই, যখন তাতে আপত্তিকর কিছু না থাকে। যদি তাতে আপত্তিকর কিছু থাকে অথবা দাওয়াতটাই কোনও অবৈধ উপলক্ষ্যে হয়, তখন তা কবুল করা জরুরি নয়।
ইদানীংকার অধিকাংশ দাওয়াতই এমন, যাতে যাওয়ার পরিবেশ থাকে না। সুন্নত দাওয়াতকেও নানারকম পাপাচারে পঙ্কিল করে ফেলা হয়েছে। ওলীমার দাওয়াত সুন্নত। কিন্তু আজকাল অধিকাংশ ওলীমার অনুষ্ঠান সহীহ পন্থায় হয় না। তাতে গানবাদ্য থাকে, পর্দার পরিবর্তে থাকে পর্দাহীনতার প্রতিযোগিতা, নারী-পুরুষ একই জায়গায় বসে খাওয়া-দাওয়া করা হয়, থাকে উপহারের প্রদর্শনী ও উপহার লেনদেনের সামাজিক বাধ্যবাধকতা, এছাড়াও নানারকম অনুচিত উপসর্গ। দীনদার ব্যক্তির এ জাতীয় দাওয়াতে যাওয়ার কোনও উপায় থাকে না। তাদের বরং না যাওয়াই উচিত। হাঁ, যদি সেখানে গিয়ে আপত্তিকর বিষয়গুলো অপসারণ করতে পারবে বলে আত্মবিশ্বাস থাকে, তবে ভিন্ন কথা। আগেও এরকম শর্ত দেওয়া যেতে পারে যে, অনুষ্ঠানে আপত্তিকর কিছু করা চলবে না। তারপর যাওয়ার পর যদি দেখা যায় যথাযথভাবে কথা রাখা হয়নি, তবে কোনও কিছুর পরওয়া না করে ফিরে আসবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার ছবিযুক্ত পর্দা দেখে নিজ ঘরেই ঢোকা হতে বিরত থেকেছিলেন। একবার মেয়ে-জামাতা হযরত ফাতিমা রাযি. ও হযরত আলী রাযি.-এর বাড়ি থেকেও ফিরে এসেছিলেন। একবার হযরত আবূ আইয়ূব আনসারী রাযি. এক দাওয়াতে গিয়ে দেখতে পান দেওয়ালে পর্দা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কেন অর্থের এ অপচয়, এ কারণে তিনি সেখান থেকে ফিরে আসেন। তাঁরা আমাদের আদর্শ। তাঁদের পথে চলাতেই সঠিক সমাজগঠন ও সমাজ সংস্কারে সফলতা নির্ভর করে।
ওলীমার অনুষ্ঠানে ইদানীং নানারকম বিপত্তি লক্ষ করা যায়। তার মধ্যে একটা বেছে বেছে ধনীদেরকে দাওয়াত দেওয়া। মূলত এটা জাহিলী যুগের প্রবণতা। যে ওলীমায় ধনীদের প্রতি এরূপ পক্ষপাত করা হয়, আলোচ্য হাদীছে তার খাবারকে নিকৃষ্টতম খাবার বলা হয়েছে। কাজেই কোনও মুমিন-মুসলিমের এ জাহিলী রীতি অবলম্বন করা উচিত নয়। ইসলাম ধনী-গরীবের বৈষম্যকে প্রশ্রয় দেয় না। ইসলামের শিক্ষায় সকল মুমিন ভাই ভাই।
ধনী-গরীবের বৈষম্য ঈমানী ভ্রাতৃত্বের পরিপন্থী। যে ওলীমা একটি সুন্নত আমল, তা অবশ্যই ভ্রাতৃত্ববিরোধী নীতি থেকে মুক্ত থাকা চাই। তবেই এর দীনী ও দুনিয়াবী সুফল অর্জিত হবে। দীনী সুফল তো হচ্ছে খানার বরকত ও ছাওয়াব আর দুনিয়াবী সুফল হল পারস্পরিক ঐক্য ও সম্প্রীতি এবং দম্পতি থেকে শুরু করে বিবাহসম্পর্কিত সকল আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে সম্ভাব। পক্ষান্তরে ওলীমায় যদি ধনী গরীবের বৈষম্যকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়, তবে তা যেমন সম্পর্ক বিনষ্টের কারণ হয়, তেমনি তা গুনাহেরও কারণ।
একবার উপস্থিত লোকজনকে লক্ষ্য করে হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বলেন, তোমরা দাওয়াত দিয়ে বরং গুনাহগার হচ্ছ। কারণ যারা আসতে চায় না, তোমরা তাদেরকে দাওয়াত দিয়ে থাক আর যারা আসবে তাদেরকে দাওয়াত দাও না। অর্থাৎ গরীবদের ছেড়ে ধনীদেরকে দাওয়াত দাও।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. দোষমুক্ত ওলীমায় দাওয়াত দেওয়া হলে তা অবশ্যই কবুল করা চাই।
নির্দোষ দাওয়াত কবুল না করাটা অপরাধ। হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ- ومن دعي إلى وليمة فلم يجب فقد عصى الله ورسوله 'যে ব্যক্তিকে ওলীমায় দাওয়াত দেওয়া হয় আর সে তা কবুল না করে, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা করল।
অবশ্য দাওয়াত কবুল করা জরুরি কেবল তখনই, যখন তাতে আপত্তিকর কিছু না থাকে। যদি তাতে আপত্তিকর কিছু থাকে অথবা দাওয়াতটাই কোনও অবৈধ উপলক্ষ্যে হয়, তখন তা কবুল করা জরুরি নয়।
ইদানীংকার অধিকাংশ দাওয়াতই এমন, যাতে যাওয়ার পরিবেশ থাকে না। সুন্নত দাওয়াতকেও নানারকম পাপাচারে পঙ্কিল করে ফেলা হয়েছে। ওলীমার দাওয়াত সুন্নত। কিন্তু আজকাল অধিকাংশ ওলীমার অনুষ্ঠান সহীহ পন্থায় হয় না। তাতে গানবাদ্য থাকে, পর্দার পরিবর্তে থাকে পর্দাহীনতার প্রতিযোগিতা, নারী-পুরুষ একই জায়গায় বসে খাওয়া-দাওয়া করা হয়, থাকে উপহারের প্রদর্শনী ও উপহার লেনদেনের সামাজিক বাধ্যবাধকতা, এছাড়াও নানারকম অনুচিত উপসর্গ। দীনদার ব্যক্তির এ জাতীয় দাওয়াতে যাওয়ার কোনও উপায় থাকে না। তাদের বরং না যাওয়াই উচিত। হাঁ, যদি সেখানে গিয়ে আপত্তিকর বিষয়গুলো অপসারণ করতে পারবে বলে আত্মবিশ্বাস থাকে, তবে ভিন্ন কথা। আগেও এরকম শর্ত দেওয়া যেতে পারে যে, অনুষ্ঠানে আপত্তিকর কিছু করা চলবে না। তারপর যাওয়ার পর যদি দেখা যায় যথাযথভাবে কথা রাখা হয়নি, তবে কোনও কিছুর পরওয়া না করে ফিরে আসবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার ছবিযুক্ত পর্দা দেখে নিজ ঘরেই ঢোকা হতে বিরত থেকেছিলেন। একবার মেয়ে-জামাতা হযরত ফাতিমা রাযি. ও হযরত আলী রাযি.-এর বাড়ি থেকেও ফিরে এসেছিলেন। একবার হযরত আবূ আইয়ূব আনসারী রাযি. এক দাওয়াতে গিয়ে দেখতে পান দেওয়ালে পর্দা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কেন অর্থের এ অপচয়, এ কারণে তিনি সেখান থেকে ফিরে আসেন। তাঁরা আমাদের আদর্শ। তাঁদের পথে চলাতেই সঠিক সমাজগঠন ও সমাজ সংস্কারে সফলতা নির্ভর করে।
ওলীমার অনুষ্ঠানে ইদানীং নানারকম বিপত্তি লক্ষ করা যায়। তার মধ্যে একটা বেছে বেছে ধনীদেরকে দাওয়াত দেওয়া। মূলত এটা জাহিলী যুগের প্রবণতা। যে ওলীমায় ধনীদের প্রতি এরূপ পক্ষপাত করা হয়, আলোচ্য হাদীছে তার খাবারকে নিকৃষ্টতম খাবার বলা হয়েছে। কাজেই কোনও মুমিন-মুসলিমের এ জাহিলী রীতি অবলম্বন করা উচিত নয়। ইসলাম ধনী-গরীবের বৈষম্যকে প্রশ্রয় দেয় না। ইসলামের শিক্ষায় সকল মুমিন ভাই ভাই।
ধনী-গরীবের বৈষম্য ঈমানী ভ্রাতৃত্বের পরিপন্থী। যে ওলীমা একটি সুন্নত আমল, তা অবশ্যই ভ্রাতৃত্ববিরোধী নীতি থেকে মুক্ত থাকা চাই। তবেই এর দীনী ও দুনিয়াবী সুফল অর্জিত হবে। দীনী সুফল তো হচ্ছে খানার বরকত ও ছাওয়াব আর দুনিয়াবী সুফল হল পারস্পরিক ঐক্য ও সম্প্রীতি এবং দম্পতি থেকে শুরু করে বিবাহসম্পর্কিত সকল আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে সম্ভাব। পক্ষান্তরে ওলীমায় যদি ধনী গরীবের বৈষম্যকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়, তবে তা যেমন সম্পর্ক বিনষ্টের কারণ হয়, তেমনি তা গুনাহেরও কারণ।
একবার উপস্থিত লোকজনকে লক্ষ্য করে হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বলেন, তোমরা দাওয়াত দিয়ে বরং গুনাহগার হচ্ছ। কারণ যারা আসতে চায় না, তোমরা তাদেরকে দাওয়াত দিয়ে থাক আর যারা আসবে তাদেরকে দাওয়াত দাও না। অর্থাৎ গরীবদের ছেড়ে ধনীদেরকে দাওয়াত দাও।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. দোষমুক্ত ওলীমায় দাওয়াত দেওয়া হলে তা অবশ্যই কবুল করা চাই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)