আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
২০. অধ্যায়ঃ হদ্দ
হাদীস নং: ৩৪৯৮
অধ্যায়ঃ হদ্দ
অধ্যায়: হদ্দ ও অপরাপর বিষয়।
সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধাজ্ঞার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং যে ব্যক্তি এ দু'টি বর্জন করেও তোষামদ করে তার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধাজ্ঞার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং যে ব্যক্তি এ দু'টি বর্জন করেও তোষামদ করে তার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৩৪৯৮. হযরত আবু উমামা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (মিনায়) জামারায় উলার নিকট এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কোন প্রকারের জিহাদ সর্বোত্তম? তিনি এ সময় নীরব থাকেন। পরে আকাবায় কংকর নিক্ষেপ শেষ করে যখন তিনি (নবী ﷺ) সাওয়ারের উদ্দেশ্যে পাদানীতে পা রাখেন, তখন তিনি বলেন: প্রশ্নকারী কোথায়। লোকটি বলল: আমি এখানে ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তখন তিনি বলেন: অত্যাচারী শাসকের সামনে হক কথা বলাই উত্তম জিহাদ।
(ইবনে মাজা বিশুদ্ধ সনদসূত্রে বর্ণনা করেন।)
(ইবনে মাজা বিশুদ্ধ সনদসূত্রে বর্ণনা করেন।)
كتاب الحدود
كتاب الْحُدُود وَغَيرهَا
التَّرْغِيب فِي الْأَمر بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْي عَن الْمُنكر والترهيب من تَركهمَا والمداهنة فيهمَا
التَّرْغِيب فِي الْأَمر بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْي عَن الْمُنكر والترهيب من تَركهمَا والمداهنة فيهمَا
َ3498 - عَنْ أَبِي أمَامَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : عَرَضَ لِرَسُولِ اللهِ ﷺ رَجُلٌ عِنْدَ الْجَمْرَةِ الأُولَى ، فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ ، أَيُّ الْجِهَادِ أَفْضَلُ ، فَسَكَتَ عَنْهُ ، فَلَمَّا الْجَمْرَةَ الثَّانِيَةَ سَأَلَهُ ، فَسَكَت عَنْهُ ، فَلَمَّا رَمَى جَمْرَةَ الْعَقْبَةِ وَضَعَ رِجْلَهُ فِي الْغَرْزِ لِيَرْكَبَ ، قَالَ : أَيْنَ السَّائِلُ ؟ قَالَ : أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ - قَالَ : كَلِمَةٌ حَقٌّ تُقَالُ عِنْدَ ذي سُلْطَانٍ جَائِرٍ -
رواه ماجه بإسناد صحيح
رواه ماجه بإسناد صحيح
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে জালেম শাসকের সামনে ন্যায় ও সত্য কথা বলাকে শ্রেষ্ঠতম জিহাদ বলা হয়েছে। অর্থাৎ কোনও শাসক যদি সৎকাজ করতে গড়িমসি করে, তখন তাকে সে গড়িমসি ছেড়ে সৎকাজ করতে উৎসাহ দেওয়া, আর যদি অসৎকাজে লিপ্ত হয়, তবে তাকে তা থেকে ফেরানোর চেষ্টা করা এবং সে যা করছে তা যে অসৎ ও অন্যায় তা তার সামনে বলে দেওয়া এক প্রকার জিহাদ; বরং শ্রেষ্ঠতম জিহাদ। অবশ্য এর দ্বারা জিহাদের ফযীলত লাভ হবে তখনই, যখন উদ্দেশ্য থাকবে কেবলই আল্লাহ তা'আলাকে খুশি করা, বীর ও বাহাদুর হিসেবে খ্যাতি লাভ করা নয়।
জালেম শাসকের সামনে হক কথা বলা যে কারণে শ্রেষ্ঠতম জিহাদ
অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলা যে শ্রেষ্ঠতম জিহাদ, এর মূল কারণ দু'টি-
ক. যে ব্যক্তি শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ করে তার ভয় ও আশা দু'টোই থাকে। অর্থাৎ এই ভয়ও থাকে যে, সে হয়তো শত্রুর কাছে পরাজিত হবে এবং তার হাতে নিহত বা আহত হবে। আবার আশাও থাকে যে, সে-ই জয়ী হবে এবং শত্রুকে খতম করতে সক্ষম হবে। কিন্তু জালেম শাসকের সামনে সত্য কথা বলতে গেলে তেমন আশা থাকে না; বরং তার হাতে নিপীড়িত হওয়ার আশঙ্কাই সে ক্ষেত্রে প্রবল। সে নিপীড়ন কখনও হত্যা আকারে হয়, কখনও চাবুক মারা ও বিভিন্ন শারীরিক নির্যাতন দ্বারা হয়, কখনও কারাগারে নিক্ষেপ করা দ্বারা হয় এবং কখনও হয় নির্বাসন দ্বারা।
ইতিহাসে এমন বহু ঘটনা আছে, যাতে হক কথা বলার কারণে জালেম শাসক হয় বক্তার গর্দান উড়িয়ে দিয়েছে, নয়তো তাকে শূলে চড়িয়ে মেরেছে। কখনও হাত-পা কেটে টুকরো টুকরো করেছে, কখনও জিহ্বা কেটে ফেলেছে। এমনকি কখনও এমনও হয়েছে যে, জীবন্ত অবস্থায় তার শরীর থেকে চামড়া তুলে ফেলেছে!
জালেম শাসকের কলিজা বড় শক্ত থাকে। তার পক্ষে সবকিছুই করা সম্ভব। কাজেই যে ব্যক্তি জালেম শাসকের সামনে সত্য কথা বলতে যায়, তাকে তা বলতে হয় এসব ঝুঁকি মাথায় রেখেই। সুতরাং এ সকল ঝুঁকি সত্ত্বেও হক কথা বলাটা আল্লাহ তা'আলার প্রতি তার পূর্ণ তাওয়াক্কুল ও ইয়াকীন এবং তার প্রবল ঈমানী শক্তির পরিচায়ক। সে তার পূর্ণ আল্লাহনির্ভরতা ও ঈমানী শক্তির কারণেই জালেমের জুলুম-নিপীড়নকে উপেক্ষা করে সত্য বলতে প্রস্তুত হয়ে যায় এবং আল্লাহর আদেশ পালন ও তাঁর হক আদায়কে নিজ প্রাণরক্ষার ওপর অগ্রাধিকার দেয়, এমনকি সে জান্নাতের বিনিময়ে নিজ প্রাণটা আল্লাহর কাছে বিক্রিই করে দেয়। নিঃসন্দেহে এটা অনেক বড় ইখলাস ও হিম্মতের কাজ। তাই এটা শ্রেষ্ঠ জিহান।
খ. জালেম শাসকের জুলুম-নিপীড়ন দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রজা সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাজেই হক কথা বলে যদি তাকে জুলুম থেকে নিরস্ত করা যায়, তবে আমজনগণ তা দ্বারা উপকৃত হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুনিধন দ্বারাও মানুষের উপকার হয় বটে, কিন্তু তা এতটা ব্যাপক আকারে হয় না। উপকারের এ ব্যাপকতার কারণে জালেম শাসকের সামনে হক কথা বলা শ্রেষ্ঠ জিহাদ।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছ দ্বারা জালেম শাসকের সামনে সত্য বলার ফযীলত জানা গেল যে, এটা শ্রেষ্ঠতম জিহাদ। সুতরাং জিহাদের ফযীলত লাভের আশায় আমাদের উচিত এর জন্য প্রস্তুত থাকা এবং কখনও এরকম অবকাশ আসলে হিম্মতের সঙ্গে হক কথা বলে দেওয়া।
জালেম শাসকের সামনে হক কথা বলা যে কারণে শ্রেষ্ঠতম জিহাদ
অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলা যে শ্রেষ্ঠতম জিহাদ, এর মূল কারণ দু'টি-
ক. যে ব্যক্তি শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ করে তার ভয় ও আশা দু'টোই থাকে। অর্থাৎ এই ভয়ও থাকে যে, সে হয়তো শত্রুর কাছে পরাজিত হবে এবং তার হাতে নিহত বা আহত হবে। আবার আশাও থাকে যে, সে-ই জয়ী হবে এবং শত্রুকে খতম করতে সক্ষম হবে। কিন্তু জালেম শাসকের সামনে সত্য কথা বলতে গেলে তেমন আশা থাকে না; বরং তার হাতে নিপীড়িত হওয়ার আশঙ্কাই সে ক্ষেত্রে প্রবল। সে নিপীড়ন কখনও হত্যা আকারে হয়, কখনও চাবুক মারা ও বিভিন্ন শারীরিক নির্যাতন দ্বারা হয়, কখনও কারাগারে নিক্ষেপ করা দ্বারা হয় এবং কখনও হয় নির্বাসন দ্বারা।
ইতিহাসে এমন বহু ঘটনা আছে, যাতে হক কথা বলার কারণে জালেম শাসক হয় বক্তার গর্দান উড়িয়ে দিয়েছে, নয়তো তাকে শূলে চড়িয়ে মেরেছে। কখনও হাত-পা কেটে টুকরো টুকরো করেছে, কখনও জিহ্বা কেটে ফেলেছে। এমনকি কখনও এমনও হয়েছে যে, জীবন্ত অবস্থায় তার শরীর থেকে চামড়া তুলে ফেলেছে!
জালেম শাসকের কলিজা বড় শক্ত থাকে। তার পক্ষে সবকিছুই করা সম্ভব। কাজেই যে ব্যক্তি জালেম শাসকের সামনে সত্য কথা বলতে যায়, তাকে তা বলতে হয় এসব ঝুঁকি মাথায় রেখেই। সুতরাং এ সকল ঝুঁকি সত্ত্বেও হক কথা বলাটা আল্লাহ তা'আলার প্রতি তার পূর্ণ তাওয়াক্কুল ও ইয়াকীন এবং তার প্রবল ঈমানী শক্তির পরিচায়ক। সে তার পূর্ণ আল্লাহনির্ভরতা ও ঈমানী শক্তির কারণেই জালেমের জুলুম-নিপীড়নকে উপেক্ষা করে সত্য বলতে প্রস্তুত হয়ে যায় এবং আল্লাহর আদেশ পালন ও তাঁর হক আদায়কে নিজ প্রাণরক্ষার ওপর অগ্রাধিকার দেয়, এমনকি সে জান্নাতের বিনিময়ে নিজ প্রাণটা আল্লাহর কাছে বিক্রিই করে দেয়। নিঃসন্দেহে এটা অনেক বড় ইখলাস ও হিম্মতের কাজ। তাই এটা শ্রেষ্ঠ জিহান।
খ. জালেম শাসকের জুলুম-নিপীড়ন দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রজা সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাজেই হক কথা বলে যদি তাকে জুলুম থেকে নিরস্ত করা যায়, তবে আমজনগণ তা দ্বারা উপকৃত হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুনিধন দ্বারাও মানুষের উপকার হয় বটে, কিন্তু তা এতটা ব্যাপক আকারে হয় না। উপকারের এ ব্যাপকতার কারণে জালেম শাসকের সামনে হক কথা বলা শ্রেষ্ঠ জিহাদ।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছ দ্বারা জালেম শাসকের সামনে সত্য বলার ফযীলত জানা গেল যে, এটা শ্রেষ্ঠতম জিহাদ। সুতরাং জিহাদের ফযীলত লাভের আশায় আমাদের উচিত এর জন্য প্রস্তুত থাকা এবং কখনও এরকম অবকাশ আসলে হিম্মতের সঙ্গে হক কথা বলে দেওয়া।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)