আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

২২. অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার

হাদীস নং: ৪১২১
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
সালামের ব্যাপক প্রসারের প্রতি অনুপ্রেরণা ও তার ফযীলত এবং যে ব্যক্তি তার সম্মানে দাঁড়ানো কামনা করে, তার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৪১২১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) সূত্রে রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন: 'আস্-সালাম' আল্লাহর নামসমূহের একটি মাত্র। তিনি তা যমীনে রেখে দেন। সুতরাং তোমাদের মাঝে তার ব্যাপক প্রসার ঘটাও। কেননা, যখন কোন মুসলমান কোন কাওমের কাছ দিয়ে পথ অতিক্রম করে এবং সে তাদের সালাম দেয় এবং তারা তার সালামের জবাব দেয় তবে সকলের জবাব দানের মর্যাদা সে লাভ করে। যদি তাদের কেউ জবাব না দেয়, তবে তাদেরও চেয়ে উত্তমদের পক্ষ থেকে জবাব দেয়া হয়।
(বাযযার ও তাবারানী বর্ণিত। তবে বাযযারের একটি সনদ অধিক শক্তিশালী।)
كتاب الأدب
التَّرْغِيب فِي إفشاء السَّلَام وَمَا جَاءَ فِي فَضله وترهيب الْمَرْء من حب الْقيام لَهُ
4121- وَعَن عبد الله يَعْنِي ابْن مَسْعُود رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ السَّلَام اسْم من أَسمَاء الله تَعَالَى وَضعه فِي الأَرْض فأفشوه بَيْنكُم فَإِن الرجل الْمُسلم إِذا مر بِقوم فَسلم عَلَيْهِم فَردُّوا عَلَيْهِ كَانَ لَهُ عَلَيْهِم فضل دَرَجَة بتذكيره إيَّاهُم السَّلَام فَإِن لم يردوا عَلَيْهِ رد عَلَيْهِ من هُوَ خير مِنْهُم

رَوَاهُ الْبَزَّار وَالطَّبَرَانِيّ وَأحد إسنادي الْبَزَّار جيد قوي

হাদীসের ব্যাখ্যা:

সালামের রেওয়াজদান
إفشاء السلام (সালামের প্রসার ঘটানো)। সালামের প্রসার ঘটানোর অর্থ বেশি বেশি সালাম দেওয়া। এমনভাবে এর প্রচার ও চর্চা করা, যাতে সালাম দেওয়া-নেওয়া সামাজিক রেওয়াজে পরিণত হয়ে যায়। তা সম্ভব হবে এভাবে যে, সালামের যতগুলো ক্ষেত্র আছে তার প্রত্যেকটিতেই আমরা সালাম বিনিময় করব। ঘরে প্রবেশকালে সালাম দেব। একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সালাম দেব। পরস্পর বিদায় গ্রহণকালে সালাম দেব। কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সালাম দেব। মজলিসে উপস্থিত হওয়ার সময় মজলিসের লোকদেরকে সালাম দেব। এমনিভাবে সালাম দেব বড় ছোটকে ও ছোট বড়কে। সালাম দেব পিতা-মাতাকে, ছেলেমেয়েকে, স্বামী তার স্ত্রীকে এবং স্ত্রী তার স্বামীকে। নিজে আগে সালাম দেওয়ার চেষ্টা করব। কাউকে সালাম দিতে লজ্জিত হব না, কুণ্ঠাবোধ করব না। যারা সালাম দেয় না তাদেরকে সালাম শেখাব। শিশুদেরকে সালামের তা'লীম দেব। ফোনালাপকালেও কথার সূচনা করব সালাম দ্বারা। আবার কথা শেষে সালাম দিয়েই ফোন রাখব। এভাবে নিজে সালামের চর্চা করার সাথে সাথে অন্যদেরকে সালাম দেওয়ার প্রতি উৎসাহ দিতে থাকলে এক পর্যায়ে ইসলামের এ সুন্নত সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে, আমাদেরকে কেবল সালাম দিতে বা নিতেই বলা হয়নি; বরং সালামের প্রসার ঘটাতে, একে রেওয়াজে পরিণত করতে আদেশ করা হয়েছে। সর্বত্র সালামকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখার দ্বারাই এ আদেশ যথাযথভাবে পালন হতে পারে। আমরা জান্নাতকে আমাদের আসল ঠিকানা মনে করি। সে ঠিকানায় পৌঁছার জন্য এ প্রচেষ্টা এক শক্তিশালী অবলম্বন।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. কেবল সালাম দিয়েই ক্ষান্ত হওয়া উচিত নয়; মুসলিম সমাজে যাতে সালামের ব্যাপক চর্চা হয়, সে চেষ্টা করাও জরুরি।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান