আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
২২. অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
হাদীস নং: ৪১১৯
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
সালামের ব্যাপক প্রসারের প্রতি অনুপ্রেরণা ও তার ফযীলত এবং যে ব্যক্তি তার সম্মানে দাঁড়ানো কামনা করে, তার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৪১১৯. হযরত আবু উমামা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন। সেই ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে সর্বাধিক নিকটবর্তী, যে প্রথমে সালাম দেয়।
(আবু দাউদ, তিরমিযী বর্ণিত। ইমাম তিরমিযী (র) বলেন: হাদীসটি হাসান।
ইমাম তিরমিযী (র) নিজ শব্দে বর্ণনা করেন যে, বলা হলঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! দুই ব্যক্তির মধ্যে সাক্ষাৎ হলে কে প্রথমে সালাম দেবে? তিনি বলেন। যে ব্যক্তি তাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বাধিক নিকটবর্তী, সেই প্রথমে সালাম দেবে।)
(আবু দাউদ, তিরমিযী বর্ণিত। ইমাম তিরমিযী (র) বলেন: হাদীসটি হাসান।
ইমাম তিরমিযী (র) নিজ শব্দে বর্ণনা করেন যে, বলা হলঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! দুই ব্যক্তির মধ্যে সাক্ষাৎ হলে কে প্রথমে সালাম দেবে? তিনি বলেন। যে ব্যক্তি তাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বাধিক নিকটবর্তী, সেই প্রথমে সালাম দেবে।)
كتاب الأدب
التَّرْغِيب فِي إفشاء السَّلَام وَمَا جَاءَ فِي فَضله وترهيب الْمَرْء من حب الْقيام لَهُ
4119- وَعَن أبي أُمَامَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِن أولى النَّاس بِاللَّه من بدأهم بِالسَّلَامِ
رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ وَحسنه وَلَفظه قيل يَا رَسُول الله الرّجلَانِ يَلْتَقِيَانِ أَيهمَا يبْدَأ بِالسَّلَامِ قَالَ أولاهما بِاللَّه تَعَالَى
رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ وَحسنه وَلَفظه قيل يَا رَسُول الله الرّجلَانِ يَلْتَقِيَانِ أَيهمَا يبْدَأ بِالسَّلَامِ قَالَ أولاهما بِاللَّه تَعَالَى
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছ দ্বারা আগে সালাম দেওয়ার ফযীলত জানা যায়। যে আগে সালাম দেয় তার সম্পর্কে হাদীছটিতে বলা হয়েছে- أولى الناس بالله (মানুষের মধ্যে আল্লাহ তা'আলার বেশি নিকটবর্তী লোক)। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলার রহমত ও মাগফিরাতলাভের বেশি নিকটবর্তী। যে ব্যক্তি আগে আগে সালাম দিতে অভ্যস্ত, অন্যসব লোকের তুলনায় সে আল্লাহ তা'আলার রহমত ও মাগফিরাত লাভ করার বেশি উপযুক্ত হয়। কারও কারও মতে আগে সালাম দেওয়ার ছাওয়াব বেশি। যার ছাওয়াব বেশি, আল্লাহ তা'আলার নৈকট্যও অন্যদের তুলনায় তার বেশি হবে বৈ কি।
উল্লেখ্য, যে ব্যক্তি আগে আগে সালাম দিতে অভ্যস্ত, সে সাধারণভাবে সকলের তুলনায় আল্লাহ তা'আলার বেশি নিকটবর্তী, এমনটি বলা যাবে না। কেননা আল্লাহ তা'আলার নৈকট্যলাভের জন্য বহু আমল আছে। তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ আমল হল নামায। বান্দা সিজদার অবস্থায় আল্লাহ তা'আলার সর্বাপেক্ষা বেশি নিকটবর্তী হয়ে থাকে। কাজেই এ হাদীছটিতে সাধারণভাবে নয়; বরং বিশেষ দৃষ্টিতে আগে সালামদাতাকে আল্লাহ তা'আলার বেশি নিকটবর্তী বলা হয়েছে। তার মানে সালামের মাধ্যমে যে নৈকট্য লাভ হয়, সে ক্ষেত্রে পরে সালামদাতার তুলনায় আগে সালামদাতা আল্লাহ তা'আলার বেশি নৈকট্য লাভ করে থাকে। হযরত আবূ উমামা রাযি. থেকে বর্ণিত পরের হাদীছটি দ্বারা এ কথা পরিষ্কার হয়। তাতে বলা হয়েছে যে, যখন দুই ব্যক্তির মধ্যে সাক্ষাৎ হয়, তখন তাদের মধ্যে যে আল্লাহর বেশি নিকটবর্তী সে-ই আগে সালাম দেয়। কাজেই তুলনাটা অন্যদের সঙ্গে সালামদাতার নয়; বরং এক সালামদাতার সঙ্গে অন্য সালামদাতার। তার মানে সালামের যে জবাব দেয় তার তুলনায় যে ব্যক্তি সালাম দেয় সে আল্লাহ তা'আলার বেশি নিকটবর্তী হয়ে থাকে।
আগে সালামদাতা যে শ্রেষ্ঠ, এ কথার প্রয়োগ অন্য একটি ক্ষেত্রেও আছে। তা হল, দুই ব্যক্তির মধ্যে যদি মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়, ফলে তারা মুখ দেখাদেখি বন্ধ করে দেয়, তবে তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি আগে সালাম দিয়ে তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করবে, সে আল্লাহর কাছে অপর ব্যক্তির তুলনায় উত্তম। এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لَا يَحِلُّ لِرَجُلٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ يَلْتَقِيَانِ فَيُعْرِضُ هَذَا وَيُعْرِضُ هَذَا وَخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلَامِ
'কোনও ব্যক্তির জন্য এটা জায়েয নয় যে, সে তার ভাইকে এভাবে তিন দিনের বেশি এড়িয়ে চলবে যে, তাদের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়, কিন্তু এ ওকে পাশ কাটায় এবং সেও একে পাশ কাটায়। তাদের মধ্যে উত্তম সেই, যে আগে সালাম দেয়’।
(সহীহ বুখারী: : ৬০৭৭; সহীহ মুসলিম: : ২৫৬০; সুনানে আবূ দাউদ: ৪৯১১; জামে তিরমিযী : ১৯৩২; মুসনাদুল হুমায়দী : ৩৮১; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ২৫৩৬৮; বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ : ৪০৬; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৯; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর : ৩৯৫৮; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ২০০২৭; শু'আবুল ঈমান: ৬১৯৩)
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
আল্লাহ তা'আলার নৈকট্য অর্জনের লক্ষ্যে এবং তাঁর রহমত ও মাগফিরাত পাওয়ার আশায় আমাদেরকে আগে আগে সালাম দিতে অভ্যস্ত হতে হবে।
উল্লেখ্য, যে ব্যক্তি আগে আগে সালাম দিতে অভ্যস্ত, সে সাধারণভাবে সকলের তুলনায় আল্লাহ তা'আলার বেশি নিকটবর্তী, এমনটি বলা যাবে না। কেননা আল্লাহ তা'আলার নৈকট্যলাভের জন্য বহু আমল আছে। তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ আমল হল নামায। বান্দা সিজদার অবস্থায় আল্লাহ তা'আলার সর্বাপেক্ষা বেশি নিকটবর্তী হয়ে থাকে। কাজেই এ হাদীছটিতে সাধারণভাবে নয়; বরং বিশেষ দৃষ্টিতে আগে সালামদাতাকে আল্লাহ তা'আলার বেশি নিকটবর্তী বলা হয়েছে। তার মানে সালামের মাধ্যমে যে নৈকট্য লাভ হয়, সে ক্ষেত্রে পরে সালামদাতার তুলনায় আগে সালামদাতা আল্লাহ তা'আলার বেশি নৈকট্য লাভ করে থাকে। হযরত আবূ উমামা রাযি. থেকে বর্ণিত পরের হাদীছটি দ্বারা এ কথা পরিষ্কার হয়। তাতে বলা হয়েছে যে, যখন দুই ব্যক্তির মধ্যে সাক্ষাৎ হয়, তখন তাদের মধ্যে যে আল্লাহর বেশি নিকটবর্তী সে-ই আগে সালাম দেয়। কাজেই তুলনাটা অন্যদের সঙ্গে সালামদাতার নয়; বরং এক সালামদাতার সঙ্গে অন্য সালামদাতার। তার মানে সালামের যে জবাব দেয় তার তুলনায় যে ব্যক্তি সালাম দেয় সে আল্লাহ তা'আলার বেশি নিকটবর্তী হয়ে থাকে।
আগে সালামদাতা যে শ্রেষ্ঠ, এ কথার প্রয়োগ অন্য একটি ক্ষেত্রেও আছে। তা হল, দুই ব্যক্তির মধ্যে যদি মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়, ফলে তারা মুখ দেখাদেখি বন্ধ করে দেয়, তবে তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি আগে সালাম দিয়ে তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করবে, সে আল্লাহর কাছে অপর ব্যক্তির তুলনায় উত্তম। এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لَا يَحِلُّ لِرَجُلٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ يَلْتَقِيَانِ فَيُعْرِضُ هَذَا وَيُعْرِضُ هَذَا وَخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلَامِ
'কোনও ব্যক্তির জন্য এটা জায়েয নয় যে, সে তার ভাইকে এভাবে তিন দিনের বেশি এড়িয়ে চলবে যে, তাদের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়, কিন্তু এ ওকে পাশ কাটায় এবং সেও একে পাশ কাটায়। তাদের মধ্যে উত্তম সেই, যে আগে সালাম দেয়’।
(সহীহ বুখারী: : ৬০৭৭; সহীহ মুসলিম: : ২৫৬০; সুনানে আবূ দাউদ: ৪৯১১; জামে তিরমিযী : ১৯৩২; মুসনাদুল হুমায়দী : ৩৮১; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ২৫৩৬৮; বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ : ৪০৬; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৯; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর : ৩৯৫৮; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ২০০২৭; শু'আবুল ঈমান: ৬১৯৩)
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
আল্লাহ তা'আলার নৈকট্য অর্জনের লক্ষ্যে এবং তাঁর রহমত ও মাগফিরাত পাওয়ার আশায় আমাদেরকে আগে আগে সালাম দিতে অভ্যস্ত হতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)