আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

২২. অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার

হাদীস নং: ৪১১০
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
সালামের ব্যাপক প্রসারের প্রতি অনুপ্রেরণা ও তার ফযীলত এবং যে ব্যক্তি তার সম্মানে দাঁড়ানো কামনা করে, তার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৪১১০. শায়বা হুজাবী তাঁর চাচা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন। তুমি তিনটি গুণ অর্জন করবে। আর তা হলেই তোমার ও তোমার ভাইয়ের মধ্যে ভালোবাসা নিরংকুশ হবে। তা হল: ১. তুমি যখন তার সাথে দেখা করবে, তখন তাকে সালাম দেবে, ২. মুজলিসে তার জন্য জায়গা প্রশস্ত করে দেবে এবং তাকে তার পসন্দনীয় নাম ধরে ডাকবে।
ত্ববারানী আওসাতে বর্ণনা করেছেন।
كتاب الأدب
التَّرْغِيب فِي إفشاء السَّلَام وَمَا جَاءَ فِي فَضله وترهيب الْمَرْء من حب الْقيام لَهُ
4110- وَرُوِيَ عَن شيبَة الحَجبي عَن عَمه رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم ثَلَاث يصفين لَك ود أَخِيك تسلم عَلَيْهِ إِذا لَقيته وَتوسع لَهُ فِي الْمجْلس وَتَدْعُوهُ بِأحب أَسْمَائِهِ إِلَيْهِ

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْأَوْسَط

হাদীসের ব্যাখ্যা:

সালাম দেওয়া
হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলিম ব্যক্তির একটি হক বলেছেন সালাম দেওয়া। সালাম দেওয়া ইসলামের একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। এটা ইসলামেরই বৈশিষ্ট্য যে, কারও সঙ্গে দেখা হলে প্রথমে সালাম দেবে। এটা সুন্নত। এর মাধ্যমে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে নিরাপত্তা দান করা হয়। বোঝানো হয়, আমি তোমার বা তোমাদের শত্রু নই, বন্ধু। তোমাদের জান, মাল ও ইজ্জত আমার দিক থেকে নিরাপদ। কাজেই আমার ব্যাপারে তোমরা আশ্বস্ত থাক। সালাম না দিলে সন্দেহ সৃষ্টি হয় যে, সে তাদের পক্ষে নিরাপদ কি না। কাউকে এরকম সন্দেহে রাখা উচিত নয়।
সকল মুসলিম ভাই ভাই। ইসলামী ভ্রাতৃত্বের দাবি একজন অন্যজনের প্রতি জুলুম করবে না। কেউ কারও জান, মাল ও ইজ্জতের ক্ষতি করবে না। এ নিরাপত্তা পাওয়া প্রত্যেকের হক ও অধিকার। সালামের মাধ্যমে তাদের সে অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়। কাজেই এটা দেওয়া চাই। মুখোমুখি সাক্ষাতকালে যে প্রথমে সালাম দেবে সেই উত্তম। সাধারণ নিয়ম হচ্ছে ছোট বড়কে সালাম দেবে, চলন্ত ব্যক্তি বসে থাকা ব্যক্তিকে সালাম দেবে এবং ছোট দল বড় দলকে সালাম দেবে।
তবে ছোটকে শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে বড়র পক্ষ থেকে তাকে সালাম দেওয়া ভালো। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরকম করতেন। এটা বিনয়েরও আলামত।
শুধু السلام عليكم বললে দশ নেকী। السلام عليكم ورحمة الله বললে বিশ নেকী, আর السلام عليكم ورحمة الله وبركاته বললে ত্রিশ নেকী।
অনেকে এর পর ومغفرته যোগ করে থাকে। সহীহ হাদীছে এর প্রমাণ নেই। হাদীছ দ্বারা যা প্রমাণিত, কেবল তার উপরই আমল করা উচিত।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. এক মুসলিমের প্রতি আরেক মুসলিমের একটি কর্তব্য সালাম দেওয়া। এটা তার হক, যা আদায় করা আবশ্যক।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান