আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
২১. অধ্যায়ঃ সদ্ব্যবহার
হাদীস নং: ৩৮২৬
অধ্যায়ঃ সদ্ব্যবহার
সম্পর্ক ছিন্নকারীর সাথে সম্পর্ক অটুট রাখার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং সম্পর্ক ছিন্নকরার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৩৮২৬. হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলে, আমি রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি। আল্লাহ তা'আলা বলেছেন: আমি আল্লাহ্ এবং আমি রাহমান। আমি রেহম সৃষ্টি করেছি। আমি আমার নাম হতে তা নির্গত করেছি। কাজেই, যে ব্যক্তি তা ঠিক রাখবে, আমিও তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব। আর যে ব্যক্তি তা ছিন্ন করবে, আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব অথবা তিনি قطعته -এর স্থলে بتته আমি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব" বলেছেন।
(আবু দাউদ, তিরমিযী (র) আবু সালামা সূত্রে বর্ণনা করেন। ইমাম তিরমিযী (র) বলেন, হাদীসটি হাসান-সহীহ।
(হাফিয আবদুল আযীম মুনযিরী (র) বলেন) ইমাম তিরমিযী (র)এর সংশয় রয়েছে। কারণ, আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান (র) তাঁর পিতা হতে কিছুই শুনেন নি। ইয়াহইয়া ইবনে মুঈন ও অন্যান্যগণ এরূপ অভিমত পেশ করেন। উক্ত হাদীসটি আবু দাউদ, ইবনে হিব্বান তাঁর সহীহ গ্রন্থে মা'মার হতে, তিনি আবু সালমা হতে, তিনি রাওয়াদ লায়সী হতে, তিনি আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা) সূত্রে বর্ণনা করেছেন। মূলত ইমাম তিরমিযী (র) এই দিকে ইংগিত করেছেন। পরে তিনি বুখারী (র) থেকে বর্ণনা করেছেন। মা'মার সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি ত্রুটিপূর্ণ। আল্লাহই ভালো জানে )
(আবু দাউদ, তিরমিযী (র) আবু সালামা সূত্রে বর্ণনা করেন। ইমাম তিরমিযী (র) বলেন, হাদীসটি হাসান-সহীহ।
(হাফিয আবদুল আযীম মুনযিরী (র) বলেন) ইমাম তিরমিযী (র)এর সংশয় রয়েছে। কারণ, আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান (র) তাঁর পিতা হতে কিছুই শুনেন নি। ইয়াহইয়া ইবনে মুঈন ও অন্যান্যগণ এরূপ অভিমত পেশ করেন। উক্ত হাদীসটি আবু দাউদ, ইবনে হিব্বান তাঁর সহীহ গ্রন্থে মা'মার হতে, তিনি আবু সালমা হতে, তিনি রাওয়াদ লায়সী হতে, তিনি আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা) সূত্রে বর্ণনা করেছেন। মূলত ইমাম তিরমিযী (র) এই দিকে ইংগিত করেছেন। পরে তিনি বুখারী (র) থেকে বর্ণনা করেছেন। মা'মার সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি ত্রুটিপূর্ণ। আল্লাহই ভালো জানে )
كتاب البر والصلة
التَّرْغِيب فِي صلَة الرَّحِم وَإِن قطعت والترهيب من قطعهَا
3826- وَعَن عبد الرَّحْمَن بن عَوْف رَضِي الله عَنهُ قَالَ سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول قَالَ الله عز وَجل أَنا الله وَأَنا الرَّحْمَن خلقت الرَّحِم وشققت لَهَا اسْما من اسْمِي فَمن وَصلهَا وصلته وَمن قطعهَا قطعته أَو قَالَ بتته
رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ من رِوَايَة أبي سَلمَة عَنهُ وَقَالَ التِّرْمِذِيّ حَدِيث حسن صَحِيح
قَالَ الْحَافِظ عبد الْعَظِيم وَفِي تَصْحِيح التِّرْمِذِيّ لَهُ نظر فَإِن أَبَا سَلمَة بن عبد الرَّحْمَن لم يسمع من أَبِيه شَيْئا قَالَه يحيى بن معِين وَغَيره وَرَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن حبَان فِي صَحِيحه
من حَدِيث معمر عَن الزُّهْرِيّ عَن أبي سَلمَة عَن رواد اللَّيْثِيّ عَن عبد الرَّحْمَن بن عَوْف وَقد أَشَارَ التِّرْمِذِيّ إِلَى هَذَا ثمَّ حكى عَن البُخَارِيّ أَنه قَالَ وَحَدِيث معمر خطأ وَالله أعلم
رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ من رِوَايَة أبي سَلمَة عَنهُ وَقَالَ التِّرْمِذِيّ حَدِيث حسن صَحِيح
قَالَ الْحَافِظ عبد الْعَظِيم وَفِي تَصْحِيح التِّرْمِذِيّ لَهُ نظر فَإِن أَبَا سَلمَة بن عبد الرَّحْمَن لم يسمع من أَبِيه شَيْئا قَالَه يحيى بن معِين وَغَيره وَرَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن حبَان فِي صَحِيحه
من حَدِيث معمر عَن الزُّهْرِيّ عَن أبي سَلمَة عَن رواد اللَّيْثِيّ عَن عبد الرَّحْمَن بن عَوْف وَقد أَشَارَ التِّرْمِذِيّ إِلَى هَذَا ثمَّ حكى عَن البُخَارِيّ أَنه قَالَ وَحَدِيث معمر خطأ وَالله أعلم
হাদীসের ব্যাখ্যা:
যে ব্যক্তি আত্মীয়তা রক্ষা করবে, আল্লাহ তাআলা নিজের সঙ্গে তার সম্পর্ক রক্ষা করবেন। আর যে ব্যক্তি আত্মীয়তা ছিন্ন করবে, আল্লাহ তাআলা তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন। আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কারও স্থানগতভাবে সংযুক্ত থাকা অসম্ভব। কাজেই এর দ্বারা স্থানগত নয়; বরং মর্যাদাগত মিলন ও সংযোগ বুঝতে হবে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি আত্মীয়তা রক্ষা করবে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি খুশি হয়ে দুনিয়ায় তাকে ইজ্জত-সম্মান দেবেন এবং আখেরাতে তাঁর সন্তুষ্টির স্থান জান্নাতের সম্মানজনক জীবন দান করবেন।
বিজ্ঞজনদের কেউ কেউ বলেন, আত্মীয়তা রক্ষা বলতে মূলত আত্মীয়ের প্রতি সদয় আচরণ বোঝানো হয়। সে হিসেবে বাক্যটির মর্ম হচ্ছে- যে ব্যক্তি আত্মীয়ের প্রতি সদয় আচরণ করবে, আল্লাহ তাআলাও তার প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের আচরণ করবেন।
বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি আত্মীয়তা ছিন্ন করবে, আল্লাহ তাআলাও তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন। অর্থাৎ তার প্রতি দয়া ও রহমতের আচরণ করা হবে না। বলাবাহুল্য বান্দা প্রতি মুহূর্তে আল্লাহ তাআলার রহমতের মুহতাজ। আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত ব্যক্তি দুনিয়ায় প্রকাশ্য ও গুপ্ত হাজারও পেরেশানি ও বালা-মসিবতের শিকার হয়ে যায়। কাজেই আত্মীয়তা ছিন্নের পরিণামে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের যে সতর্কবাণী শোনানো হয়েছে, তার কঠোরতা ও গভীরতা উপলব্ধি করা চাই। বিশেষত এ কারণেও যে, আখেরাতের নাজাত ও মুক্তি কেবলই আল্লাহ তাআলার রহমতের উপর নির্ভরশীল। যার সঙ্গে আল্লাহ তাআলা সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলবেন, সে কী করে আখেরাতে তাঁর রহমত লাভের আশা করবে?
আত্মীয়তা ছিন্ন করার পরিণাম যে অত্যন্ত ভয়াবহ তা স্পষ্ট করার জন্য কুরআন মাজীদে আয়াতও আছে। তাতে ইরশাদ হয়েছে فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ أُولَئِكَ الَّذِينَ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فَأَصَمَّهُمْ وَأَعْمَى أَبْصَارَهُمْ ‘অতঃপর তোমরা (জিহাদ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিলে কি তোমাদের দ্বারা ভূমিতে অশান্তি বিস্তার এবং আত্মীয়তা ছিন্ন করার সম্ভাবনা আছে? এরাই তারা, যাদেরকে আল্লাহ লা'নত করেছেন (অর্থাৎ তাঁর রহমত থেকে দূর করে দিয়েছেন।) ফলে তাদেরকে বধির বানিয়ে দিয়েছেন এবং তাদের চোখ অন্ধ করে দিয়েছেন'। অর্থাৎ জিহাদের ব্যতিব্যস্ততা ছেড়ে দিলে সমাজে অশান্তি বিস্তারে লিপ্ত হয়ে পড়ার ও আত্মীয়তা ছিন্ন করার আশঙ্কা থাকে। জিহাদ করা অবস্থায় সবটা শক্তি ব্যয় হয় আল্লাহ তাআলার দুশমনদের দমন করার কাজে। মন-মস্তিষ্কও সেই ফিকিরেই রত থাকে। পক্ষান্তরে জিহাদ থেকে অবসর হয়ে কেবল দুনিয়াবী কাজকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়লে পরস্পরে হিংসা-বিদ্বেষ দেখা দেয় এবং তার পরিণামে দেখা দেয় আত্মকলহ। তখন শারীরিক ও মানসিক সবরকম শক্তি-ক্ষমতা একে অন্যকে দমন করা ও দাবিয়ে রাখার পেছনে ব্যয় হয়। যে শক্তি ব্যয় হত দীনের শত্রুদমনে, তা আত্মঘাতী ভ্রাতৃদমনে নিঃশেষ করা হয়। এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, বর্তমানকার মুসলিম জাতির আত্মকলহ ও সর্বাত্মক পশ্চাদপদতা তাদের জিহাদবিমুখতারই পরিণাম।
توليتم এর এক অর্থ হতে পারে ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব লাভ করা। এ হিসেবে আয়াতটির অর্থ হবে- তোমরা যদি কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার অধিকারী হও, তবে কি তোমাদের দ্বারা ভূমিতে অশান্তি বিস্তার এবং আত্মীয়তা ছিন্ন করার সম্ভাবনা আছে?' অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতা মানুষকে আত্মকলহ ও আত্মীয়তা ছিন্ন করার পথে টেনে নেয়। ক্ষমতা দখল ও ক্ষমতা রক্ষার লোভ এমনই সর্বনাশা ব্যাধি, যা মানুষের অন্তর থেকে মায়া-মমতা কেড়ে নেয়। ক্ষমতালোভী ব্যক্তির কাছে আত্মীয়তার কোনও মূল্য থাকে না। কেবল আত্মীয়তা ছিন্ন করাই নয়, পরমাত্মীয় রক্তের ভাইকে পর্যন্ত হত্যা করতেও সে কুণ্ঠাবোধ করে না। কেননা ক্ষমতার লোভ ও ক্ষমতার দর্পে সে অন্ধ ও বধির হয়ে যায়। না সে সত্য ও ন্যায়ের পথ দেখতে পায় আর না সত্য-ন্যায়ের বাণী শুনতে পায়। এ অবস্থায় কঠিন থেকে কঠিনতর অপরাধে লিপ্ত হতেও তার দ্বিধাবোধ হয় না। এ আয়াতে সে আশঙ্কাই ব্যক্ত হয়েছে। এ অনর্থের কারণেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়া উচিত নয়। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে যদি ক্ষমতা এসে যায়, কেবল তখনই আল্লাহভীতির সঙ্গে তা গ্রহণ ও পরিচালনা করা চাই।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে আত্মীয়তা রক্ষা করা। এটা আল্লাহ তাআলার সঙ্গে নিজ সম্পর্ক অটুট রাখার একটি উপায়।
খ. আত্মীয়তা ছিন্ন করা অতি বিপজ্জনক কাজ। কেননা এর পরিণামে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।
বিজ্ঞজনদের কেউ কেউ বলেন, আত্মীয়তা রক্ষা বলতে মূলত আত্মীয়ের প্রতি সদয় আচরণ বোঝানো হয়। সে হিসেবে বাক্যটির মর্ম হচ্ছে- যে ব্যক্তি আত্মীয়ের প্রতি সদয় আচরণ করবে, আল্লাহ তাআলাও তার প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্যের আচরণ করবেন।
বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি আত্মীয়তা ছিন্ন করবে, আল্লাহ তাআলাও তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন। অর্থাৎ তার প্রতি দয়া ও রহমতের আচরণ করা হবে না। বলাবাহুল্য বান্দা প্রতি মুহূর্তে আল্লাহ তাআলার রহমতের মুহতাজ। আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত ব্যক্তি দুনিয়ায় প্রকাশ্য ও গুপ্ত হাজারও পেরেশানি ও বালা-মসিবতের শিকার হয়ে যায়। কাজেই আত্মীয়তা ছিন্নের পরিণামে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের যে সতর্কবাণী শোনানো হয়েছে, তার কঠোরতা ও গভীরতা উপলব্ধি করা চাই। বিশেষত এ কারণেও যে, আখেরাতের নাজাত ও মুক্তি কেবলই আল্লাহ তাআলার রহমতের উপর নির্ভরশীল। যার সঙ্গে আল্লাহ তাআলা সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলবেন, সে কী করে আখেরাতে তাঁর রহমত লাভের আশা করবে?
আত্মীয়তা ছিন্ন করার পরিণাম যে অত্যন্ত ভয়াবহ তা স্পষ্ট করার জন্য কুরআন মাজীদে আয়াতও আছে। তাতে ইরশাদ হয়েছে فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ أُولَئِكَ الَّذِينَ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فَأَصَمَّهُمْ وَأَعْمَى أَبْصَارَهُمْ ‘অতঃপর তোমরা (জিহাদ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিলে কি তোমাদের দ্বারা ভূমিতে অশান্তি বিস্তার এবং আত্মীয়তা ছিন্ন করার সম্ভাবনা আছে? এরাই তারা, যাদেরকে আল্লাহ লা'নত করেছেন (অর্থাৎ তাঁর রহমত থেকে দূর করে দিয়েছেন।) ফলে তাদেরকে বধির বানিয়ে দিয়েছেন এবং তাদের চোখ অন্ধ করে দিয়েছেন'। অর্থাৎ জিহাদের ব্যতিব্যস্ততা ছেড়ে দিলে সমাজে অশান্তি বিস্তারে লিপ্ত হয়ে পড়ার ও আত্মীয়তা ছিন্ন করার আশঙ্কা থাকে। জিহাদ করা অবস্থায় সবটা শক্তি ব্যয় হয় আল্লাহ তাআলার দুশমনদের দমন করার কাজে। মন-মস্তিষ্কও সেই ফিকিরেই রত থাকে। পক্ষান্তরে জিহাদ থেকে অবসর হয়ে কেবল দুনিয়াবী কাজকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়লে পরস্পরে হিংসা-বিদ্বেষ দেখা দেয় এবং তার পরিণামে দেখা দেয় আত্মকলহ। তখন শারীরিক ও মানসিক সবরকম শক্তি-ক্ষমতা একে অন্যকে দমন করা ও দাবিয়ে রাখার পেছনে ব্যয় হয়। যে শক্তি ব্যয় হত দীনের শত্রুদমনে, তা আত্মঘাতী ভ্রাতৃদমনে নিঃশেষ করা হয়। এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, বর্তমানকার মুসলিম জাতির আত্মকলহ ও সর্বাত্মক পশ্চাদপদতা তাদের জিহাদবিমুখতারই পরিণাম।
توليتم এর এক অর্থ হতে পারে ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব লাভ করা। এ হিসেবে আয়াতটির অর্থ হবে- তোমরা যদি কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার অধিকারী হও, তবে কি তোমাদের দ্বারা ভূমিতে অশান্তি বিস্তার এবং আত্মীয়তা ছিন্ন করার সম্ভাবনা আছে?' অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতা মানুষকে আত্মকলহ ও আত্মীয়তা ছিন্ন করার পথে টেনে নেয়। ক্ষমতা দখল ও ক্ষমতা রক্ষার লোভ এমনই সর্বনাশা ব্যাধি, যা মানুষের অন্তর থেকে মায়া-মমতা কেড়ে নেয়। ক্ষমতালোভী ব্যক্তির কাছে আত্মীয়তার কোনও মূল্য থাকে না। কেবল আত্মীয়তা ছিন্ন করাই নয়, পরমাত্মীয় রক্তের ভাইকে পর্যন্ত হত্যা করতেও সে কুণ্ঠাবোধ করে না। কেননা ক্ষমতার লোভ ও ক্ষমতার দর্পে সে অন্ধ ও বধির হয়ে যায়। না সে সত্য ও ন্যায়ের পথ দেখতে পায় আর না সত্য-ন্যায়ের বাণী শুনতে পায়। এ অবস্থায় কঠিন থেকে কঠিনতর অপরাধে লিপ্ত হতেও তার দ্বিধাবোধ হয় না। এ আয়াতে সে আশঙ্কাই ব্যক্ত হয়েছে। এ অনর্থের কারণেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়া উচিত নয়। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে যদি ক্ষমতা এসে যায়, কেবল তখনই আল্লাহভীতির সঙ্গে তা গ্রহণ ও পরিচালনা করা চাই।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে আত্মীয়তা রক্ষা করা। এটা আল্লাহ তাআলার সঙ্গে নিজ সম্পর্ক অটুট রাখার একটি উপায়।
খ. আত্মীয়তা ছিন্ন করা অতি বিপজ্জনক কাজ। কেননা এর পরিণামে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)