আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
২০. অধ্যায়ঃ হদ্দ
হাদীস নং: ৩৪৯৫
অধ্যায়ঃ হদ্দ
অধ্যায়: হদ্দ ও অপরাপর বিষয়।
সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধাজ্ঞার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং যে ব্যক্তি এ দু'টি বর্জন করেও তোষামদ করে তার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধাজ্ঞার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং যে ব্যক্তি এ দু'টি বর্জন করেও তোষামদ করে তার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৩৪৯৫. হযরত আবূ যার (রা) থেকে বর্ণিত। একদা লোকেরা বলল: ইয়া রাসূলাল্লাহ্! ধনবান ব্যক্তিরা সাওয়াব অর্জনে সফলকাম হয়েছে। আমরা যেমন সালাত আদায় করি, তারাও তদ্রুপ সালাত আদায় করে, আমরা যেমন সিয়াম পালন করি তারাও তদ্রূপ সিয়াম পালন করে এবং অতিরিক্ত সম্পদ আল্লাহর পথে দান করে। তিনি বলেন: আল্লাহ কি তোমাদের দান করার ব্যবস্থা রাখেন নি? প্রত্যেকটি তাসবীহ্ দান সমতুল্য প্রত্যেকটি তাকবীর দান, প্রত্যেকটি তাহমীদ দান, প্রত্যেকটি তাহলীল দান, সৎকাজের আদেশ দান এবং মন্দ কাজের নিষেধ করা সাদাকা স্বরূপ।
(মুসলিম ও অপরাপর গ্রন্থে বর্ণিত।)
(মুসলিম ও অপরাপর গ্রন্থে বর্ণিত।)
كتاب الحدود
كتاب الْحُدُود وَغَيرهَا
التَّرْغِيب فِي الْأَمر بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْي عَن الْمُنكر والترهيب من تَركهمَا والمداهنة فيهمَا
التَّرْغِيب فِي الْأَمر بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْي عَن الْمُنكر والترهيب من تَركهمَا والمداهنة فيهمَا
3495- وَعَن أبي ذَر رَضِي الله عَنهُ أَن أُنَاسًا قَالُوا يَا رَسُول الله ذهب أهل الدُّثُور بِالْأُجُورِ يصلونَ كَمَا نصلي وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُوم وَيَتَصَدَّقُونَ بِفُضُول أَمْوَالهم قَالَ أَو لَيْسَ قد جعل الله لكم مَا تصدقُونَ بِهِ إِن بِكُل تَسْبِيحَة صَدَقَة وَبِكُل تَكْبِيرَة صَدَقَة وَبِكُل تَحْمِيدَة صَدَقَة وَبِكُل تَهْلِيلَة صَدَقَة وَأمر بِالْمَعْرُوفِ صَدَقَة وَنهي عَن مُنكر صَدَقَة
رَوَاهُ مُسلم وَغَيره
رَوَاهُ مُسلم وَغَيره
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছ দ্বারা সাহাবায়ে কিরামের ছাওয়াব ও পুণ্যার্জনের কী তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল তা অনুমান করা যায়। তখন গরীবগণ পুণ্যার্জনের সকল ক্ষেত্রে ধনীদের পাশাপাশি ছিল। কিন্তু ধনীগণ দান-সদাকার মাধ্যমে যে ছাওয়াব অর্জন করতেন তা করতে না পারার কারণে গরীব সাহাবীদের মনে আক্ষেপ ছিল। এ হাদীছে তাঁরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে সে আক্ষেপের কথাই প্রকাশ করেছেন এবং জানতে চেয়েছেন কিভাবে তাঁরা তাঁদের এ কমতিটুকু পূরণ করতে পারেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গরীব সাহাবীদের সে আক্ষেপের কদর করেন এবং মমতাভরে তাদেরকে উপায় বাতলে দেন, যা এ হাদীছে বর্ণিত হয়েছে।
এ হাদীছেও তাসবীহ, তাহলীল ইত্যাদিকে সদাকা সাব্যস্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর পথে দানখয়রাত করলে যে ছাওয়াব পাওয়া যায়, এর মাধ্যমেও তেমনি ছাওয়াব পাওয়া যায়। কাজেই যাদের বেশি টাকাপয়সা নেই, সেই গরীবগণ বেশি বেশি তাসবীহ-তাহলীল ও যিকর-আযকারের মাধ্যমে দান-সদাকার দ্বারা পুণ্য অর্জন করতে না পারার প্রতিকার করতে পারে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ হাদীছে গরীব সাহাবীদেরকে সে পথই দেখিয়েছেন।
বলা হয়েছে স্ত্রী সহবাসেও সদাকার ছাওয়াব হয়। এটা প্রমাণ করে সহীহ নিয়ত দ্বারা মুবাহ কাজও 'ইবাদতে পরিণত হয়। স্ত্রী সহবাসে যদি স্ত্রীর হক আদায় করা, নিজ চরিত্রের হেফাজত করা, স্ত্রীর চরিত্রের হেফাজত করা, তাদের উভয়ের নজরের হেফাজত করা এবং সুসন্তান কামনা করার নিয়ত থাকে, তবে এটা কেবল একটা পার্থিব কাজ হিসেবেই থেকে যায় না; বরং 'ইবাদতের মর্যাদা লাভ করে। এই একই কথা পানাহার করা, হাট-বাজারে যাওয়া, বেচাকেনা করা, চাষাবাদ করা এমনকি বিশ্রাম করার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ইখলাস ও সহীহ নিয়তের দ্বারা যে-কোনও পার্থিব কাজ, যদি তা শরী'আতসম্মত পন্থায় করা হয়, তবে ‘ইবাদতে পরিণত হয়ে যায় এবং তার বিনিময়ে প্রভূত ছাওয়াব অর্জন করা যায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা যায় সাহাবায়ে কিরামের অন্তরে ছাওয়াব হাসিলের আকাঙ্ক্ষা কত তীব্র ছিল। অনুরূপ আকাঙ্ক্ষা যাতে আমাদের অন্তরেও এসে যায়, আমাদের উচিত সে উপায় খোঁজা।
খ. গরীবদের উচিত দান-সদাকা করতে না পারার কারণে আক্ষেপ না করে যিকর ও তিলাওয়াত দ্বারা তার প্রতিকারে সচেষ্ট থাকা।
গ. যে-কোনও মুবাহ কাজ ইখলাস ও নেক নিয়তের সাথে করা উচিত। তাতেও "ইবাদতের ছাওয়াব হবে।
এ হাদীছেও তাসবীহ, তাহলীল ইত্যাদিকে সদাকা সাব্যস্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর পথে দানখয়রাত করলে যে ছাওয়াব পাওয়া যায়, এর মাধ্যমেও তেমনি ছাওয়াব পাওয়া যায়। কাজেই যাদের বেশি টাকাপয়সা নেই, সেই গরীবগণ বেশি বেশি তাসবীহ-তাহলীল ও যিকর-আযকারের মাধ্যমে দান-সদাকার দ্বারা পুণ্য অর্জন করতে না পারার প্রতিকার করতে পারে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ হাদীছে গরীব সাহাবীদেরকে সে পথই দেখিয়েছেন।
বলা হয়েছে স্ত্রী সহবাসেও সদাকার ছাওয়াব হয়। এটা প্রমাণ করে সহীহ নিয়ত দ্বারা মুবাহ কাজও 'ইবাদতে পরিণত হয়। স্ত্রী সহবাসে যদি স্ত্রীর হক আদায় করা, নিজ চরিত্রের হেফাজত করা, স্ত্রীর চরিত্রের হেফাজত করা, তাদের উভয়ের নজরের হেফাজত করা এবং সুসন্তান কামনা করার নিয়ত থাকে, তবে এটা কেবল একটা পার্থিব কাজ হিসেবেই থেকে যায় না; বরং 'ইবাদতের মর্যাদা লাভ করে। এই একই কথা পানাহার করা, হাট-বাজারে যাওয়া, বেচাকেনা করা, চাষাবাদ করা এমনকি বিশ্রাম করার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ইখলাস ও সহীহ নিয়তের দ্বারা যে-কোনও পার্থিব কাজ, যদি তা শরী'আতসম্মত পন্থায় করা হয়, তবে ‘ইবাদতে পরিণত হয়ে যায় এবং তার বিনিময়ে প্রভূত ছাওয়াব অর্জন করা যায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা যায় সাহাবায়ে কিরামের অন্তরে ছাওয়াব হাসিলের আকাঙ্ক্ষা কত তীব্র ছিল। অনুরূপ আকাঙ্ক্ষা যাতে আমাদের অন্তরেও এসে যায়, আমাদের উচিত সে উপায় খোঁজা।
খ. গরীবদের উচিত দান-সদাকা করতে না পারার কারণে আক্ষেপ না করে যিকর ও তিলাওয়াত দ্বারা তার প্রতিকারে সচেষ্ট থাকা।
গ. যে-কোনও মুবাহ কাজ ইখলাস ও নেক নিয়তের সাথে করা উচিত। তাতেও "ইবাদতের ছাওয়াব হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)