আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
১৬. অধ্যায়ঃ বিবাহ সংশ্লিষ্ট বিষয়
হাদীস নং: ৩০৯৩
অধ্যায়ঃ বিবাহ সংশ্লিষ্ট বিষয়
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার গোপনীয়তা প্রকাশের প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৩০৯৩. হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাবধান! তোমাদের কেউ তার স্ত্রীর সাথে নির্জনে দরজা বন্ধ করে নেয় এরপর পর্দা অবলম্বন করে এবং সে তার সাথে তার প্রয়োজন মিটিয়ে নেয়; পরে যখন সে বেরিয়ে আসে, তখন (তার এবং তার স্ত্রীর মধ্যকার গোপনীয় বিষয়) তার সঙ্গী-সাথীদের কাছে ফাঁস করে দেয়। সাবধান! তোমাদের কোন কোন নারী দরজা বন্ধ করে নিজকে পর্দা দ্বারা আবৃত করতে পারে। এরপর যখন সে তার প্রয়োজন মিটিয়ে নেয়, এরপর সে তার সাথীদের কাছে তা বলে দেয়। তখন, এক মহিলা ভ্রুকুঞ্জিত করে বলল, আল্লাহর শপথ, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তারা কি এরূপ করে, আর পুরুষরাও কি এরূপ করে? তিনি বললেনঃ তোমরা এরূপ করো না। কেননা, এরূপ করার উদাহরণ হল, যেমন একটি শয়তান অপর একটি শয়তানকে রাস্তায় জড়িয়ে ধরল, এরপর সে নিজের প্রয়োজন তার থেকে মিটিয়ে নিল এবং তাকে ছেড়ে চলে গেল।
(বাযযার, তাঁর হাদীসের সমর্থনে অনেক বর্ণনা রয়েছে, যা উক্ত সনদ শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে সহায়ক। আবু দাউদ (র)-এর বর্ণনায় উক্ত হাদীসটি তাঁর ওস্তাদ তাফাওয়া সূত্রে দীর্ঘ বর্ণনা রয়েছে। তবে আবু দাউদ সূত্রে (র) হাদীসটি তাফাওয়া হতে। তিনি অন্য কোন রাবীর নাম উল্লেখ না করে আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন।)
(বাযযার, তাঁর হাদীসের সমর্থনে অনেক বর্ণনা রয়েছে, যা উক্ত সনদ শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে সহায়ক। আবু দাউদ (র)-এর বর্ণনায় উক্ত হাদীসটি তাঁর ওস্তাদ তাফাওয়া সূত্রে দীর্ঘ বর্ণনা রয়েছে। তবে আবু দাউদ সূত্রে (র) হাদীসটি তাফাওয়া হতে। তিনি অন্য কোন রাবীর নাম উল্লেখ না করে আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন।)
كتاب النكاح
التَّرْهِيب من إفشاء السِّرّ سِيمَا مَا كَانَ بَين الزَّوْجَيْنِ
3093- وَرُوِيَ عَن أبي سعيد الْخُدْرِيّ رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ أَلا عَسى أحدكُم أَن يَخْلُو بأَهْله يغلق بَابا ثمَّ يُرْخِي سترا ثمَّ يقْضِي حَاجته ثمَّ إِذا خرج حدث أَصْحَابه بذلك أَلا عَسى إحداكن أَن تغلق بَابهَا وترخي سترهَا فَإِذا قَضَت حَاجَتهَا حدثت صواحبها فَقَالَت امْرَأَة سفعاء الْخَدين وَالله يَا رَسُول الله إنَّهُنَّ ليفعلن وَإِنَّهُم ليفعلون قَالَ فَلَا تَفعلُوا فَإِنَّمَا مثل ذَلِك مثل شَيْطَان لَقِي شَيْطَانَة على قَارِعَة الطَّرِيق فَقضى حَاجته مِنْهَا ثمَّ انْصَرف وَتركهَا
رَوَاهُ الْبَزَّار وَله شَوَاهِد تقويه وَهُوَ عِنْد أبي دَاوُد مطولا بِنَحْوِهِ من حَدِيث شيخ من طفاوة وَلم يسمه عَن أبي هُرَيْرَة
رَوَاهُ الْبَزَّار وَله شَوَاهِد تقويه وَهُوَ عِنْد أبي دَاوُد مطولا بِنَحْوِهِ من حَدِيث شيخ من طفاوة وَلم يسمه عَن أبي هُرَيْرَة
হাদীসের ব্যাখ্যা:
বিবাহের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা দুই নারী-পুরুষের মধ্যে যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেন, অতটা ঘনিষ্ঠতা অন্য কোনও সম্পর্কের ক্ষেত্রে হয় না। অন্যসব ক্ষেত্রে দুই ব্যক্তি যতই কাছাকাছি হোক, একটা আড়াল ও অন্তরাল উভয়ের মধ্যে থাকেই, যা ভেদ করার কোনও সুযোগ তাদের নেই। এক দাম্পত্য সম্পর্কই এমন, যেখানে আল্লাহ তা'আলা দু'জনের মধ্যে কোনও আড়াল রাখেননি। সে নিবিড় ঘনিষ্ঠতা একান্তই তাদের নিজস্ব ভূবন। এখানে যেমন অন্যের কোনও প্রবেশাধিকার নেই, তেমনি তাদেরও সেখানে অন্য কাউকে টেনে আনার সুযোগ নেই। সে সুযোগ নেই কথাবার্তার ভেতর দিয়েও। অর্থাৎ তাদের একান্ত ঘনিষ্ঠতা ও অন্যসব গোপনীয় বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করে দিয়ে তাকে এ অঙ্গনের সঙ্গে পরিচিত করা কোনওক্রমেই জায়েয নয়। এটা এক রকম বিশ্বাসঘাতকতা। এটা অঙ্গীকার ভঙ্গের অন্তর্ভুক্ত। এটা যেমন স্বামীর জন্য জায়েয নয়, তেমনি জায়েয নয় স্ত্রীর জন্যও। এ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে একে অন্যের কাছে দায়বদ্ধ। বৈবাহিক চুক্তির মাধ্যমেই যেন তারা পরস্পরে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে যায় যে, তাদের মধ্যকার গোপনীয় কোনওকিছুই তারা অন্যের কাছে প্রকাশ করবে না।
তা প্রকাশ করা যেমন অঙ্গীকার ভঙ্গের অন্তর্ভুক্ত, তেমনি তা চরম নির্লজ্জতাও বটে। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে স্বামী-স্ত্রী তাদের নিবিড় ঘনিষ্ঠতার কথা অন্যের কাছে প্রকাশ করে, কিয়ামতের দিন তারা আল্লাহ তা'আলার কাছে মর্যাদার দিক থেকে সবচে নিকৃষ্টদের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তার মানে তারা নিকৃষ্টদের কাতারভুক্ত হয়ে জাহান্নামে চলে যাবে। কী কঠিন সতর্কবাণী! প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর এ বিষয়ে খুব সতর্ক থাকা দরকার। যত অন্তরঙ্গ বন্ধু বা প্রাণের বান্ধবীই হোক, স্বামী বা স্ত্রী কেউই তাদের কাছে নিজেদের একান্ত বিষয়সমূহ কিছুতেই প্রকাশ করবে না।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার গোপনীয় বিষয়সমূহ অন্যের কাছে প্রকাশ করা কঠিন পাপ। এর থেকে প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
তা প্রকাশ করা যেমন অঙ্গীকার ভঙ্গের অন্তর্ভুক্ত, তেমনি তা চরম নির্লজ্জতাও বটে। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে স্বামী-স্ত্রী তাদের নিবিড় ঘনিষ্ঠতার কথা অন্যের কাছে প্রকাশ করে, কিয়ামতের দিন তারা আল্লাহ তা'আলার কাছে মর্যাদার দিক থেকে সবচে নিকৃষ্টদের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তার মানে তারা নিকৃষ্টদের কাতারভুক্ত হয়ে জাহান্নামে চলে যাবে। কী কঠিন সতর্কবাণী! প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর এ বিষয়ে খুব সতর্ক থাকা দরকার। যত অন্তরঙ্গ বন্ধু বা প্রাণের বান্ধবীই হোক, স্বামী বা স্ত্রী কেউই তাদের কাছে নিজেদের একান্ত বিষয়সমূহ কিছুতেই প্রকাশ করবে না।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার গোপনীয় বিষয়সমূহ অন্যের কাছে প্রকাশ করা কঠিন পাপ। এর থেকে প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)