আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
১৬. অধ্যায়ঃ বিবাহ সংশ্লিষ্ট বিষয়
হাদীস নং: ৩০৯২
অধ্যায়ঃ বিবাহ সংশ্লিষ্ট বিষয়
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার গোপনীয়তা প্রকাশের প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৩০৯২. হযরত আসমা বিনত ইয়াযীদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে ছিলেন, তখন কতিপয় পুরুষ ও মহিলা বসা ছিল। তিনি (নবী ﷺ) বলেনঃ সম্ভবত স্বামী তার স্ত্রীর সাথে যা করে এবং স্ত্রী তার স্বামীর সাথে যা করে, তা তারা বলাবলি করে। লোকেরা নীরব হয়ে গেল। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ! স্বামীগণ ও স্ত্রীগণ কি এরূপ করে? তিনি বললেনঃ তোমরা (এরূপ) করবে না। কেননা, এর উপমা হল শয়তানের সাথে। যেমন দু'টি শয়তান একে অপরকে জড়িয়ে ধরল অথচ মানুষ তাদের দিকে তাকিয়ে আছে, (অনুরূপ তাদের অবস্থা)।
(আহমাদ বর্ণনা করেছেন শাহর ইবনে হুওয়াইশের রেওয়ায়েত থেকে।
ارم القوم তারা নীরব হয়ে গেল। কারো কারো মতে, তারা ভয়ে নীরব হল।)
(আহমাদ বর্ণনা করেছেন শাহর ইবনে হুওয়াইশের রেওয়ায়েত থেকে।
ارم القوم তারা নীরব হয়ে গেল। কারো কারো মতে, তারা ভয়ে নীরব হল।)
كتاب النكاح
التَّرْهِيب من إفشاء السِّرّ سِيمَا مَا كَانَ بَين الزَّوْجَيْنِ
3092- وَعَن أَسمَاء بنت يزِيد رَضِي الله عَنْهَا أَنَّهَا كَانَت عِنْد رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَالرِّجَال وَالنِّسَاء قعُود عِنْده فَقَالَ لَعَلَّ رجلا يَقُول مَا فعل بأَهْله وَلَعَلَّ امْرَأَة تخبر بِمَا فعلت مَعَ زَوجهَا فأرم الْقَوْم فَقلت إِي وَالله يَا رَسُول الله إِنَّهُم ليفعلون وإنهن ليفعلن قَالَ فَلَا تَفعلُوا فَإِنَّمَا مثل ذَلِك مثل شَيْطَان لَقِي شَيْطَانَة فغشيها وَالنَّاس ينظرُونَ
رَوَاهُ أَحْمد من رِوَايَة شهر بن حَوْشَب
أرم الْقَوْم بِفَتْح الرَّاء وَتَشْديد الْمِيم أَي سكتوا وَقيل سكتوا من خوف وَنَحْوه
رَوَاهُ أَحْمد من رِوَايَة شهر بن حَوْشَب
أرم الْقَوْم بِفَتْح الرَّاء وَتَشْديد الْمِيم أَي سكتوا وَقيل سكتوا من خوف وَنَحْوه
হাদীসের ব্যাখ্যা:
বিবাহের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা দুই নারী-পুরুষের মধ্যে যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেন, অতটা ঘনিষ্ঠতা অন্য কোনও সম্পর্কের ক্ষেত্রে হয় না। অন্যসব ক্ষেত্রে দুই ব্যক্তি যতই কাছাকাছি হোক, একটা আড়াল ও অন্তরাল উভয়ের মধ্যে থাকেই, যা ভেদ করার কোনও সুযোগ তাদের নেই। এক দাম্পত্য সম্পর্কই এমন, যেখানে আল্লাহ তা'আলা দু'জনের মধ্যে কোনও আড়াল রাখেননি। সে নিবিড় ঘনিষ্ঠতা একান্তই তাদের নিজস্ব ভূবন। এখানে যেমন অন্যের কোনও প্রবেশাধিকার নেই, তেমনি তাদেরও সেখানে অন্য কাউকে টেনে আনার সুযোগ নেই। সে সুযোগ নেই কথাবার্তার ভেতর দিয়েও। অর্থাৎ তাদের একান্ত ঘনিষ্ঠতা ও অন্যসব গোপনীয় বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করে দিয়ে তাকে এ অঙ্গনের সঙ্গে পরিচিত করা কোনওক্রমেই জায়েয নয়। এটা এক রকম বিশ্বাসঘাতকতা। এটা অঙ্গীকার ভঙ্গের অন্তর্ভুক্ত। এটা যেমন স্বামীর জন্য জায়েয নয়, তেমনি জায়েয নয় স্ত্রীর জন্যও। এ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে একে অন্যের কাছে দায়বদ্ধ। বৈবাহিক চুক্তির মাধ্যমেই যেন তারা পরস্পরে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে যায় যে, তাদের মধ্যকার গোপনীয় কোনওকিছুই তারা অন্যের কাছে প্রকাশ করবে না।
তা প্রকাশ করা যেমন অঙ্গীকার ভঙ্গের অন্তর্ভুক্ত, তেমনি তা চরম নির্লজ্জতাও বটে। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে স্বামী-স্ত্রী তাদের নিবিড় ঘনিষ্ঠতার কথা অন্যের কাছে প্রকাশ করে, কিয়ামতের দিন তারা আল্লাহ তা'আলার কাছে মর্যাদার দিক থেকে সবচে নিকৃষ্টদের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তার মানে তারা নিকৃষ্টদের কাতারভুক্ত হয়ে জাহান্নামে চলে যাবে। কী কঠিন সতর্কবাণী! প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর এ বিষয়ে খুব সতর্ক থাকা দরকার। যত অন্তরঙ্গ বন্ধু বা প্রাণের বান্ধবীই হোক, স্বামী বা স্ত্রী কেউই তাদের কাছে নিজেদের একান্ত বিষয়সমূহ কিছুতেই প্রকাশ করবে না।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার গোপনীয় বিষয়সমূহ অন্যের কাছে প্রকাশ করা কঠিন পাপ। এর থেকে প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
তা প্রকাশ করা যেমন অঙ্গীকার ভঙ্গের অন্তর্ভুক্ত, তেমনি তা চরম নির্লজ্জতাও বটে। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে স্বামী-স্ত্রী তাদের নিবিড় ঘনিষ্ঠতার কথা অন্যের কাছে প্রকাশ করে, কিয়ামতের দিন তারা আল্লাহ তা'আলার কাছে মর্যাদার দিক থেকে সবচে নিকৃষ্টদের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তার মানে তারা নিকৃষ্টদের কাতারভুক্ত হয়ে জাহান্নামে চলে যাবে। কী কঠিন সতর্কবাণী! প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর এ বিষয়ে খুব সতর্ক থাকা দরকার। যত অন্তরঙ্গ বন্ধু বা প্রাণের বান্ধবীই হোক, স্বামী বা স্ত্রী কেউই তাদের কাছে নিজেদের একান্ত বিষয়সমূহ কিছুতেই প্রকাশ করবে না।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার গোপনীয় বিষয়সমূহ অন্যের কাছে প্রকাশ করা কঠিন পাপ। এর থেকে প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)