আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
১৬. অধ্যায়ঃ বিবাহ সংশ্লিষ্ট বিষয়
হাদীস নং: ৩০৩৩
অধ্যায়ঃ বিবাহ সংশ্লিষ্ট বিষয়
পরিচ্ছেদ
৩০৩৩. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: যে ব্যক্তি তার নিকটাত্মীয় কোন ইয়াতীম অথবা তার অনাত্মীয় ইয়াতীমের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব গ্রহণ করে, তবে আমি এবং সে জান্নাতে একত্রে থাকব। এই বলে তিনি তাঁর দু'টি আংগুল একত্র করেন। তিনি আরো বলেন: যে ব্যক্তি তিনটি কন্যা সন্তান প্রতিপালন করবে, সে জান্নাতী এবং তার জন্য রয়েছে আল্লাহর পথে জিহাদকারী, সিয়াম ও কিয়ামকারীর অনুরূপ ফযীলত।
(লায়স ইবনে আবু সালীম সূত্রে বাযযার বর্ণনা করেছেন।)
(লায়স ইবনে আবু সালীম সূত্রে বাযযার বর্ণনা করেছেন।)
كتاب النكاح
فصل
3033- وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من كفل يَتِيما لَهُ ذَا قرَابَة أَو لَا قرَابَة لَهُ فَأَنا وَهُوَ فِي الْجنَّة كهاتين وَضم أصبعيه وَمن سعى على ثَلَاث بَنَات فَهُوَ فِي الْجنَّة وَكَانَ لَهُ كَأَجر مُجَاهِد فِي سَبِيل الله صَائِما قَائِما
رَوَاهُ الْبَزَّار من رِوَايَة لَيْث بن أبي سليم
رَوَاهُ الْبَزَّار من رِوَايَة لَيْث بن أبي سليم
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে কন্যাসন্তানকে লালন-পালন করার ফযীলত বলা হয়েছে।
লালন-পালন বলতে কেবল ভাত-কাপড় যোগানোই বোঝায় না। তার ইহজীবন রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ তো করতেই হবে, সেইসঙ্গে তার পরকালীন জীবন যাতে সাফল্যমণ্ডিত হয় সেদিকেও লক্ষ রাখা জরুরি। এর জন্য কর্তব্য তাকে জরুরি দীনী ইলম শিক্ষা দেওয়া। অর্থাৎ একজন মুসলিম নারী হিসেবে তার যা-কিছু করণীয় তা সবই তাকে শিক্ষা দেওয়া চাই। যেমন আকীদা-বিশ্বাস, ইবাদত-বন্দেগী, হালাল-হারামের মাসাইল, উত্তম আখলাক-চরিত্র, স্বামী ও সন্তানের প্রতি কর্তব্য, আত্মীয়-স্বজনের হক ইত্যাদি।
কন্যাসন্তান লালন-পালনের এ ফযীলত দ্বারা ধারণা পাওয়া যায় ইসলামে কন্যাসন্তানের কী মর্যাদা। ইসলামের আগে তার এ মর্যাদা ছিল না। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া পিতার পক্ষে লাঞ্ছনাকর গণ্য হত। তাই জন্ম নেওয়ামাত্র তাকে জ্যান্ত মাটিতে পুঁতেও ফেলা হত। কাউকে তার কন্যাসন্তান জন্মের সংবাদ দেওয়া হলে তার পক্ষে তা চরম বিব্রতকর মনে হত। কুরআন মাজীদে সে চিত্র এভাবে আঁকা হয়েছে-
وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُمْ بِالْأُنْثَى ظَلَّ وَجْهُهُ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ (58) يَتَوَارَى مِنَ الْقَوْمِ مِنْ سُوءِ مَا بُشِّرَ بِهِ أَيُمْسِكُهُ عَلَى هُونٍ أَمْ يَدُسُّهُ فِي التُّرَابِ أَلَا سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ (59)
‘যখন তাদের কাউকে কন্যাসন্তান ( জন্মগ্রহণ)-এর সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তার চেহারা মলিন হয়ে যায় এবং সে মনে মনে দুঃখ-ক্লিষ্ট হয়। সে এ সুসংবাদকে খারাপ মনে করে মানুষ থেকে লুকিয়ে বেড়ায় (এবং চিন্তা করে), হীনতা স্বীকার করে তাকে নিজের কাছে রেখে দেবে, নাকি তাকে মাটিতে পুঁতে ফেলবে। জেনে রেখ, তারা যে সিদ্ধান্ত স্থির করে তা অতি মন্দ!২৯৮
ইসলাম তার অনুসারীদেরকে এ গ্লানি থেকে মুক্ত করেছে। ইসলামের দৃষ্টিতে কন্যাসন্তানের জন্ম লাঞ্ছনাকর নয়; বরং মর্যাদাকর। তার দ্বারা পিতামাতার পক্ষে জান্নাতের পথ সুগম হয়; বরং জান্নাতের উচ্চমর্যাদা লাভ হয়। হাদীছে কেবল একটি কন্যাসন্তান নয় একাধিক কন্যাসন্তানের প্রতিও আগ্রহ প্রদান করা হয়েছে। দীনের সহীহ বুঝ যাদের মধ্যে নেই তারা একটি কন্যাসন্তানের জন্মেও মন খারাপ করে ফেলে।
এ ফযীলত নিজের কন্যাকে লালন-পালন করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বোন, ভাতিজী, নাতনী বা এরকম যে-কোনও দুই মেয়েকে লালন-পালন করলেও এ ফযীলত অর্জিত হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছাকাছি জান্নাতে থাকা বড়ই সৌভাগ্যের ব্যাপার। সুতরাং এ সৌভাগ্য অর্জনের লক্ষ্যে আমাদের উচিত অত্যন্ত মায়া-মমতার সাথে মেয়েদের লালন-পালন করা এবং কোনওক্রমেই মেয়ে হল বলে তাদেরকে অবহেলা ও অগ্রাহ্য না করা।
২৯৮. সূরা নাহল (১৬), আয়াত ৫৮-৫৯
লালন-পালন বলতে কেবল ভাত-কাপড় যোগানোই বোঝায় না। তার ইহজীবন রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ তো করতেই হবে, সেইসঙ্গে তার পরকালীন জীবন যাতে সাফল্যমণ্ডিত হয় সেদিকেও লক্ষ রাখা জরুরি। এর জন্য কর্তব্য তাকে জরুরি দীনী ইলম শিক্ষা দেওয়া। অর্থাৎ একজন মুসলিম নারী হিসেবে তার যা-কিছু করণীয় তা সবই তাকে শিক্ষা দেওয়া চাই। যেমন আকীদা-বিশ্বাস, ইবাদত-বন্দেগী, হালাল-হারামের মাসাইল, উত্তম আখলাক-চরিত্র, স্বামী ও সন্তানের প্রতি কর্তব্য, আত্মীয়-স্বজনের হক ইত্যাদি।
কন্যাসন্তান লালন-পালনের এ ফযীলত দ্বারা ধারণা পাওয়া যায় ইসলামে কন্যাসন্তানের কী মর্যাদা। ইসলামের আগে তার এ মর্যাদা ছিল না। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া পিতার পক্ষে লাঞ্ছনাকর গণ্য হত। তাই জন্ম নেওয়ামাত্র তাকে জ্যান্ত মাটিতে পুঁতেও ফেলা হত। কাউকে তার কন্যাসন্তান জন্মের সংবাদ দেওয়া হলে তার পক্ষে তা চরম বিব্রতকর মনে হত। কুরআন মাজীদে সে চিত্র এভাবে আঁকা হয়েছে-
وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُمْ بِالْأُنْثَى ظَلَّ وَجْهُهُ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ (58) يَتَوَارَى مِنَ الْقَوْمِ مِنْ سُوءِ مَا بُشِّرَ بِهِ أَيُمْسِكُهُ عَلَى هُونٍ أَمْ يَدُسُّهُ فِي التُّرَابِ أَلَا سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ (59)
‘যখন তাদের কাউকে কন্যাসন্তান ( জন্মগ্রহণ)-এর সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তার চেহারা মলিন হয়ে যায় এবং সে মনে মনে দুঃখ-ক্লিষ্ট হয়। সে এ সুসংবাদকে খারাপ মনে করে মানুষ থেকে লুকিয়ে বেড়ায় (এবং চিন্তা করে), হীনতা স্বীকার করে তাকে নিজের কাছে রেখে দেবে, নাকি তাকে মাটিতে পুঁতে ফেলবে। জেনে রেখ, তারা যে সিদ্ধান্ত স্থির করে তা অতি মন্দ!২৯৮
ইসলাম তার অনুসারীদেরকে এ গ্লানি থেকে মুক্ত করেছে। ইসলামের দৃষ্টিতে কন্যাসন্তানের জন্ম লাঞ্ছনাকর নয়; বরং মর্যাদাকর। তার দ্বারা পিতামাতার পক্ষে জান্নাতের পথ সুগম হয়; বরং জান্নাতের উচ্চমর্যাদা লাভ হয়। হাদীছে কেবল একটি কন্যাসন্তান নয় একাধিক কন্যাসন্তানের প্রতিও আগ্রহ প্রদান করা হয়েছে। দীনের সহীহ বুঝ যাদের মধ্যে নেই তারা একটি কন্যাসন্তানের জন্মেও মন খারাপ করে ফেলে।
এ ফযীলত নিজের কন্যাকে লালন-পালন করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বোন, ভাতিজী, নাতনী বা এরকম যে-কোনও দুই মেয়েকে লালন-পালন করলেও এ ফযীলত অর্জিত হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছাকাছি জান্নাতে থাকা বড়ই সৌভাগ্যের ব্যাপার। সুতরাং এ সৌভাগ্য অর্জনের লক্ষ্যে আমাদের উচিত অত্যন্ত মায়া-মমতার সাথে মেয়েদের লালন-পালন করা এবং কোনওক্রমেই মেয়ে হল বলে তাদেরকে অবহেলা ও অগ্রাহ্য না করা।
২৯৮. সূরা নাহল (১৬), আয়াত ৫৮-৫৯
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)