আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
১৬. অধ্যায়ঃ বিবাহ সংশ্লিষ্ট বিষয়
হাদীস নং: ২৯৬৫
অধ্যায়ঃ বিবাহ সংশ্লিষ্ট বিষয়
দীন ও অধিক সন্তান প্রসবিণী মহিলা দেখে বিয়ে করার প্রতি অনুপ্রেরণা
২৯৬৫. হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, বাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: মহিলাদের সৌন্দর্য রূপ-লাবণ্য, সম্পদ, চরিত্র ও দ্বীন ইত্যাদির যে কোন একটি দেখে বিবাহ করা হয়। তবে তুমি দ্বীন ও চরিত্রকে অবলম্বন কর, অন্যথায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
(আহমাদ সহীহ সনদে, বাযযার, আবু ই'আলা ও ইবনে হিব্বান তাঁর সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেন।)
(আহমাদ সহীহ সনদে, বাযযার, আবু ই'আলা ও ইবনে হিব্বান তাঁর সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেন।)
كتاب النكاح
التَّرْغِيب فِي النِّكَاح سِيمَا بِذَات الدّين الْوَلُود
2965- وَعَن أبي سعيد الْخُدْرِيّ رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم تنْكح الْمَرْأَة على إِحْدَى خِصَال لجمالها وَمَالهَا وخلقها ودينها فَعَلَيْك بِذَات الدّين والخلق تربت يَمِينك
رَوَاهُ أَحْمد بِإِسْنَاد صَحِيح وَالْبَزَّار وَأَبُو يعلى وَابْن حبَان فِي صَحِيحه
رَوَاهُ أَحْمد بِإِسْنَاد صَحِيح وَالْبَزَّار وَأَبُو يعلى وَابْن حبَان فِي صَحِيحه
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে চারটি বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে, যে চারটি বিষয় মানুষ সাধারণত বিবাহের ক্ষেত্রে বিবেচনা করে থাকে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মধ্যে চতুর্থটি অর্থাৎ দীনদারীকেই মৌলিকভাবে বিবেচনায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এর প্রতি উৎসাহ দিতে গিয়ে বলেন- فاظفر بذات الدين تربت يداك (সাবাশ হে! তুমি দীনদার নারী পেয়ে সফল হও)। এর দ্বারা স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়, বিবাহের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জনে সফলতা নির্ভর করে দীনদার স্ত্রী পাওয়ার উপর। অপর এক হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لا تزوجوا النساء لحسنهن، فعسى حسنهن أن يرديهن، ولا تزوجوهن لأموالهن، فعسى أموالهن أن تطغيهن، ولكن تزوجوهن على الدين، ولأمة خرماء سوداء ذات دين أفضل
'তোমরা নারীদের কেবল রূপ দেখে বিয়ে করো না। অসম্ভব নয় রূপই তাদের ধ্বংস করবে। তাদেরকে তাদের ধন-সম্পদের কারণে বিয়ে করো না। অসম্ভব নয় তাদের ধন-সম্পদ তাদের অবাধ্য করে তুলবে। বরং তাদেরকে বিয়ে করবে তাদের দীনদারীর ভিত্তিতে। একজন নাক-কান কাটা কালো দাসীও (রূপসী, ধনবতী, স্বাধীন নারী অপেক্ষা) শ্রেয়, যদি সে দীনদার হয়।২৪১
অপর এক বর্ণনায় এসেছে-
من تزوج امرأة لعزها لم يزده الله إلا ذلا، ومن تزوجها لمالها لم يزده الله إلا فقرا ومن تزوجها لحسبها لم يزده الله إلا دناءة، ومن تزوج امرأة لم يتزوجها إلا ليغض بصره أو ليحصن فرجه، أو يصل رحمه بارك الله له فيها، وبارك لها فيه
“যে ব্যক্তি কোনও নারীকে বিবাহ করবে কেবল তার ক্ষমতার কারণে, আল্লাহ তাআলা তার অসহায়ত্বই বৃদ্ধি করবেন। যে ব্যক্তি কোনও নারীকে বিবাহ করবে তার সম্পদের লোভে, আল্লাহ তাআলা তার দারিদ্র্যই বৃদ্ধি করবেন। যে ব্যক্তি কোনও নারীকে বিবাহ করবে কেবল তার বংশ-মর্যাদার কারণে, আল্লাহ তাআলা তার হীনতাই বৃদ্ধি করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনও নারীকে বিবাহ করবে নিজ দৃষ্টি সংযতকরণ, চরিত্রের হেফাজত ও আত্মীয়তা রক্ষার উদ্দেশ্যে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য তার স্ত্রীকে এবং স্ত্রীর জন্য তাকে কল্যাণময় করবেন।২৪২
এসব হাদীছের শিক্ষা হচ্ছে, স্ত্রী নির্বাচনে দীনদারী ও আখলাক-চরিত্রকেই পয়লা নম্বরে বিবেচনায় রাখতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সাহচর্য একটি স্থায়ী সাহচর্য। এ সাহচর্য কেবল দীনী আমল-আখলাকের চর্চা দ্বারাই শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণজনক হতে পারে। একজন নেককার স্ত্রীর আমল-আখলাকের প্রভাব তার স্বামীর উপর পড়তে বাধ্য। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, নেককার স্ত্রীর উৎসাহ-অনুপ্রেরণায় উচ্ছৃঙ্খল ও দীনবিমুখ স্বামীর জীবন আমূল বদলে যায়। যে-কোনও সঙ্গ-সাহচর্যই যখন অনিবার্য প্রভাব বিস্তার করে, তখন স্বামী-স্ত্রীর সার্বক্ষণিক সাহচর্য কিভাবে প্রভাব না রেখে পারে? তাই এ হাদীছ পুরুষদের উৎসাহ দিচ্ছে তারা যেন নিজেদের ঈমান-আমলের হেফাজত, আখলাক-চরিত্রের সংরক্ষণ ও দীনদারীতে উন্নতি লাভের লক্ষ্যে মুত্তাকী-পরহেযগার নারীদের বিবাহ করে। একই কথা পাত্র নির্বাচনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বিভিন্ন হাদীছে সে বিষয়েও তাগিদ আছে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
বিবাহের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জনে সফলতার জন্য পাত্রী নির্বাচনে মৌলিকভাবে দীনদারীকেই বিবেচনায় রাখতে হবে। অনুরূপ পাত্র নির্বাচনেও।
২৪১. সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৮৫৯; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৩৪৬৯; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৬৩
২৪২. তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত, হাদীছ নং ২৩৪২
لا تزوجوا النساء لحسنهن، فعسى حسنهن أن يرديهن، ولا تزوجوهن لأموالهن، فعسى أموالهن أن تطغيهن، ولكن تزوجوهن على الدين، ولأمة خرماء سوداء ذات دين أفضل
'তোমরা নারীদের কেবল রূপ দেখে বিয়ে করো না। অসম্ভব নয় রূপই তাদের ধ্বংস করবে। তাদেরকে তাদের ধন-সম্পদের কারণে বিয়ে করো না। অসম্ভব নয় তাদের ধন-সম্পদ তাদের অবাধ্য করে তুলবে। বরং তাদেরকে বিয়ে করবে তাদের দীনদারীর ভিত্তিতে। একজন নাক-কান কাটা কালো দাসীও (রূপসী, ধনবতী, স্বাধীন নারী অপেক্ষা) শ্রেয়, যদি সে দীনদার হয়।২৪১
অপর এক বর্ণনায় এসেছে-
من تزوج امرأة لعزها لم يزده الله إلا ذلا، ومن تزوجها لمالها لم يزده الله إلا فقرا ومن تزوجها لحسبها لم يزده الله إلا دناءة، ومن تزوج امرأة لم يتزوجها إلا ليغض بصره أو ليحصن فرجه، أو يصل رحمه بارك الله له فيها، وبارك لها فيه
“যে ব্যক্তি কোনও নারীকে বিবাহ করবে কেবল তার ক্ষমতার কারণে, আল্লাহ তাআলা তার অসহায়ত্বই বৃদ্ধি করবেন। যে ব্যক্তি কোনও নারীকে বিবাহ করবে তার সম্পদের লোভে, আল্লাহ তাআলা তার দারিদ্র্যই বৃদ্ধি করবেন। যে ব্যক্তি কোনও নারীকে বিবাহ করবে কেবল তার বংশ-মর্যাদার কারণে, আল্লাহ তাআলা তার হীনতাই বৃদ্ধি করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনও নারীকে বিবাহ করবে নিজ দৃষ্টি সংযতকরণ, চরিত্রের হেফাজত ও আত্মীয়তা রক্ষার উদ্দেশ্যে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য তার স্ত্রীকে এবং স্ত্রীর জন্য তাকে কল্যাণময় করবেন।২৪২
এসব হাদীছের শিক্ষা হচ্ছে, স্ত্রী নির্বাচনে দীনদারী ও আখলাক-চরিত্রকেই পয়লা নম্বরে বিবেচনায় রাখতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সাহচর্য একটি স্থায়ী সাহচর্য। এ সাহচর্য কেবল দীনী আমল-আখলাকের চর্চা দ্বারাই শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণজনক হতে পারে। একজন নেককার স্ত্রীর আমল-আখলাকের প্রভাব তার স্বামীর উপর পড়তে বাধ্য। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, নেককার স্ত্রীর উৎসাহ-অনুপ্রেরণায় উচ্ছৃঙ্খল ও দীনবিমুখ স্বামীর জীবন আমূল বদলে যায়। যে-কোনও সঙ্গ-সাহচর্যই যখন অনিবার্য প্রভাব বিস্তার করে, তখন স্বামী-স্ত্রীর সার্বক্ষণিক সাহচর্য কিভাবে প্রভাব না রেখে পারে? তাই এ হাদীছ পুরুষদের উৎসাহ দিচ্ছে তারা যেন নিজেদের ঈমান-আমলের হেফাজত, আখলাক-চরিত্রের সংরক্ষণ ও দীনদারীতে উন্নতি লাভের লক্ষ্যে মুত্তাকী-পরহেযগার নারীদের বিবাহ করে। একই কথা পাত্র নির্বাচনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বিভিন্ন হাদীছে সে বিষয়েও তাগিদ আছে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
বিবাহের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জনে সফলতার জন্য পাত্রী নির্বাচনে মৌলিকভাবে দীনদারীকেই বিবেচনায় রাখতে হবে। অনুরূপ পাত্র নির্বাচনেও।
২৪১. সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ১৮৫৯; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৩৪৬৯; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৬৩
২৪২. তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত, হাদীছ নং ২৩৪২
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)