আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

২১- হজ্জ্বের অধ্যায়

হাদীস নং: ১৫৩৬
আন্তর্জাতিক নং: ১৬৩৬ - ১৬৩৭
১০৩৬. যমযম প্রসঙ্গ।
আবদান (রাহঃ) ... আবু যর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ আমি মক্কায় অবস্থানকালে ঘরের ছাদ ফাঁক করা হল এবং জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) অবতরণ করলেন। এরপর তিনি আমার বক্ষ বিদারণ করলেন এবং তা যমযমের পানি দ্বারা ধুলেন, এরপর ঈমান ও হিকমতে পরিপূর্ণ একটি সোনার পেয়ালা নিয়ে এলেন এবং তা আমার বুকে ঢেলে দিয়ে জোড়া লাগিয়ে দিলেন। তারপর আমার হাত ধরে আমাকে নিয়ে দুনিয়ার আসমানে গেলেন এবং জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) এই আসমানের তত্ত্বাবধানকারী ফিরিশতাকে বললেন, (দরজা) খোল। তিনি বললেন কে? তিনি বললেন, আমি জিবরাঈল।
১৫৩৬। মুহাম্মাদ ইবনে সালাম (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যমযমের পানি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট পেশ করলাম। তিনি তা দাঁড়িয়ে পান করলেন। (রাবী’) আসিম বলেন, ইকরিমা (রাহঃ) হলফ করে বলেছেন, নবী (ﷺ) তখন উটের পিঠে আরোহী অবস্থায়ই ছিলেন।
بَاب مَا جَاءَ فِي زَمْزَمَ
1636 - وَقَالَ عَبْدَانُ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ: كَانَ أَبُو ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يُحَدِّثُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " فُرِجَ سَقْفِي وَأَنَا بِمَكَّةَ، فَنَزَلَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ، فَفَرَجَ صَدْرِي ثُمَّ غَسَلَهُ بِمَاءِ زَمْزَمَ، ثُمَّ جَاءَ بِطَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ، مُمْتَلِئٍ حِكْمَةً وَإِيمَانًا، فَأَفْرَغَهَا فِي صَدْرِي ثُمَّ أَطْبَقَهُ، ثُمَّ أَخَذَ بِيَدِي فَعَرَجَ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا، قَالَ جِبْرِيلُ لِخَازِنِ السَّمَاءِ الدُّنْيَا: افْتَحْ قَالَ: مَنْ هَذَا؟ قَالَ: جِبْرِيلُ "
1637 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ هُوَ ابْنُ سَلاَمٍ، أَخْبَرَنَا الفَزَارِيُّ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا حَدَّثَهُ قَالَ: «سَقَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ زَمْزَمَ، فَشَرِبَ وَهُوَ قَائِمٌ» قَالَ عَاصِمٌ: فَحَلَفَ عِكْرِمَةُ مَا كَانَ يَوْمَئِذٍ إِلَّا عَلَى بَعِيرٍ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

উল্লিখিত হাদীছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি দাঁড়িয়ে পানি পান করেছেন। হাদীছে যমযমের পানির কথা বলা হয়েছে। অনেকে মনে করে যমযমের পানি দাঁড়িয়ে খেতে হয়। প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি সেরকম নয়। সব পানিই বসে খাওয়া সুন্নত। যমযমের পানি যদি কা'বা শরীফের তাওয়াফের পর কুয়ার কাছে পান করা হয়, তবে সেখানে যেহেতু ভিড় লেগে থাকে এবং বসে পান করার সুযোগও সেখানে কম, তাই সেখানে দাঁড়িয়ে পান করার ওজর রয়েছে। এ ওজর অন্যত্র নেই। কাজেই অন্য কোনও স্থানে যমযমের পানি হোক বা সাধারণ পানি, তা বসে পান করাই সুন্নত, যদিও দাঁড়িয়ে পান করাও জায়েয আছে। জায়েয বলেই হাদীসে আছে, হযরত আলী রাযি. দাঁড়িয়ে পান করেছেন। সেইসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমলও বর্ণনা করেছেন যে, হযরত আলী রাযি. তাঁকে দাঁড়িয়ে পান করতে দেখেছেন।

সুতরাং এ হাদীছের দ্বারা পরিষ্কারই বোঝা যাচ্ছে যে, দাঁড়িয়ে পানি পান করা জায়েয। হারাম বা গুনাহ নয়। কারও কারও ধারণা ছিল দাঁড়িয়ে পান করা হারাম। হাদীসে আছে, হযরত আলী রাযি. তা রদ করার জন্য দাঁড়িয়ে পান করেছিলেন। তবে এ কথা ঠিক যে, উত্তম ও সুন্নত হল বসে পান করা।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

দাঁড়ানো অবস্থায় পানি পান করা যেতে পারে, যদিও সুন্নত হল বসে পান করা।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন