কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ৯২৪
আন্তর্জাতিক নং: ৯২৪
১৭৬. নামাযে রত থাকাকালে সালামের জবাব দেয়া।
৯২৪. মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) ..... আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নামাযরত অবস্থায় সালাম দিতাম এবং আমাদের জরুরী কাজের কথা বলতাম। পরবর্তীকালে আমি হাবশা হতে প্রত্যাবর্তনের পর একদা তাঁকে নামাযের মধ্যে সালাম দিলে তিনি এর উত্তর দেননি। ফলে আমার মনে পুরাতন ও নতুন কথা স্মরণ হয় এবং সালামের জবাব না পাওয়ায় আমি শঙ্কিত হয়ে পড়ি।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নামায শেষে আমাকে বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা যখন যা ইচ্ছা করেন, তখন তাই নির্দেশ প্রদান করেন। এখন আল্লাহ তাআলা নামাযের মধ্যে কথা না বলার নির্দেশ জারী করেছেন”। একথা বলার পর তিনি আমার সালামের জবাব দেন।
باب رَدِّ السَّلاَمِ فِي الصَّلاَةِ
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبَانُ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا نُسَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ وَنَأْمُرُ بِحَاجَتِنَا فَقَدِمْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُصَلِّي فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَىَّ السَّلاَمَ فَأَخَذَنِي مَا قَدُمَ وَمَا حَدُثَ فَلَمَّا قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الصَّلاَةَ قَالَ " إِنَّ اللَّهَ يُحْدِثُ مِنْ أَمْرِهِ مَا يَشَاءُ وَإِنَّ اللَّهَ جَلَّ وَعَزَّ قَدْ أَحْدَثَ مِنْ أَمْرِهِ أَنْ لاَ تَكَلَّمُوا فِي الصَّلاَةِ " . فَرَدَّ عَلَىَّ السَّلاَمَ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. কর্তৃক রসূল স.কে সালাম দেয়ার ঘটনায় তিনি ইরশাদ করেন, “তোমরা নামাযে কথা বলবে না”। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, নামাযে সালাম দেয়া বা সালামের জবাব দেয়া, কথা বলার শামিল যা নামায ভঙ্গের কারণ। (শামী: ১/৬১৩, ৬১৫)
মুসলিম শরীফের এক বর্ণনায় উল্লেখ আছে যে, নতুন ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবা হযরত মুআবিয়া বিন হাকাম আস্ সুলামী রা. নামাযরত অবস্থায় এক লোকের হাঁচির জবাবে يَرْحَمُكَ الله বললে নামাযানেত্ম রসূল স. তাঁকে ইরশাদ করলেন: নামাযে কথাবার্তা বলা উচিত নয়। নামায তো তাসবীহ, তাকবীর ও কুরআন পাঠের জন্য। (মুসলিম: ১০৮২) শাব্দিক কিছু তারতম্যসহ এ হাদীসটি আবু দাউদ এবং নাসাঈ শরীফে বর্ণিত হয়েছে। (জামেউল উসূল-৩৬৯০)
এ হাদীসে রসূলুল্লাহ স. মূলত একটি নীতিমালার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন যে, নামায হলো তাসবীহ, তাকবীর এবং কুরআন পাঠের জায়গা। সুতরাং রসূলুল্লাহ স. নামাযের যে পদ্ধতি উম্মাতকে শিক্ষা দিয়েছেন, তার সবটাই হয়তো তাসবীহ, না হয় তাকবীর, (আল্লাহর বড়ত্ব প্রকাশ) অথবা কুরআন পাঠ। তাসবীহ ও কুরআন পাঠ কিসের দ্বারা হয় তা অনেকটা পরিস্কার। তবে তাকবীর কতভাবে কিসের দ্বারা প্রকাশ পায় তা সাধারণ মানুষের জানার বাইরে। এ কথার দ্বারা আমি আল্লাহু আকবার শব্দের দ্বারা বড়ত্ব প্রকাশের কথা বলছি না। কেননা এটা তো সকলেরই জানা। বরং রম্নকুর দ্বারা আল্লাহর বড়ত্ব প্রকাশ, সিজদার দ্বারা আল্লাহর বড়ত্ব প্রকাশ, কিয়ামের দ্বারা আল্লার বড়ত্ব প্রকাশ ইত্যাদির কথা বলছি। এটা এমন একটি বিষয় যা নববী ইল্ম ছাড়া অনুধাবন করা যায় না। অতএব, নামাযের মধ্যে যে সব কাজ করণীয় বলে প্রমাণিত, তার বাইরে কিছু করা যাবে না। এর বাইরে যত ধরণের কাজ আছে তার ধরণ হিসেবে কোন্‌টা নামায ভঙ্গের কারণ হবে, কোন্‌টা মাকরূহ হবে, আবার কোন্‌টা বৈধ হবে ইত্যাদি বিষয় ইজতিহাদ বা গবেষণার সাথে সম্পর্কিত। এ ব্যাপারে গবেষক ইমামগণের শরণাপন্ন হতে হবে।
সুনানে আবু দাউদ - হাদীস নং ৯২৪ | মুসলিম বাংলা