কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ৮৫৬
আন্তর্জাতিক নং: ৮৫৬
১৫৪. যে ব্যক্তি রুকু ও সিজদা হতে উঠে পিঠ সোজা করে না।
৮৫৬. আল-কানবী ..... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদে প্রবেশ করলেন। এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করতঃ নামায আদায়ের পর তাকে গিয়ে সালাম করল। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তার সালামের জবাব দিয়ে বলেন, তুমি পুনরায় গিয়ে নামায আদায় কর, কারণ তোমার নামায হয় নাই। অতঃপর ঐ ব্যক্তি পূর্ববত নামায পড়ে এসে নবী (ﷺ)-কে পুনরায় সালাম প্রদান করল। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তার সালামের জবাব দিয়ে বলেনঃ তুমি পুনরায় গিয়ে নামায আদায় কর, তোমার নামায হয় নাই। এভাবে সে তিনবার নামায পড়ল। তখন ঐ নামাযী ব্যক্তি বললঃ আল্লাহর শপথ! যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন, এর চাইতে উত্তমরূপে আমি নামায পড়তে জানি না। অতএব নামাযের পদ্ধতি আমাকে শিখিয়ে দিন।

তখন নবী (ﷺ) বলেনঃ যখন তুমি নামাযে দণ্ডায়মান হবে তখন সর্বপ্রথম তাকবীরে তাহরীমা বল। অতঃপর তোমার সুবিধা অনুযায়ী কুরআনের আয়াত পাঠ কর, অতঃপর শান্তি ও স্থিরতার সাথে রুকূ করবে, অতঃপর রুকূ হতে একদম সোজা হয়ে দাঁড়াবে। অতঃপর ধীরস্থিরভাবে সিজদা আদায় করবে এবং (দুই সিজদার মধ্যবর্তী স্থানে) সোজা হয়ে বসবে। তুমি তোমার সমস্ত নামায এরূপে আদায় করবে।

অন্য বর্ণনায় উল্লেখ আছে যে, নবী (ﷺ) সর্বশেষে উক্ত সাহাবীকে বলেন, যখন তুমি এরূপে নামায আদায় করবে, তখনই তোমার নামায পরিপূর্ণভাবে আদায় হবে। যদি তুমি এর কোন অংশ আদায়ে ক্রটি কর, তবে তোমার নামাযও ক্রটিপূর্ণ হবে। উক্ত বর্ণনায় এরূপও উল্লেখ আছে যে, নবী (ﷺ) তাকে বলেনঃ যখন তুমি নামায আদায়ের ইরাদা করবে, তখন প্রথমে উত্তমরূপে উযু করবে।
باب صَلاَةِ مَنْ لاَ يُقِيمُ صُلْبَهُ فِي الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ
حَدَّثَنِي الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ يَعْنِي ابْنَ عِيَاضٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، - وَهَذَا لَفْظُ ابْنِ الْمُثَنَّى - حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَدَخَلَ رَجُلٌ فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَرَدَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِ السَّلاَمَ وَقَالَ " ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " . فَرَجَعَ الرَّجُلُ فَصَلَّى كَمَا كَانَ صَلَّى ثُمَّ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ " . ثُمَّ قَالَ " ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " . حَتَّى فَعَلَ ذَلِكَ ثَلاَثَ مِرَارٍ فَقَالَ الرَّجُلُ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أُحْسِنُ غَيْرَ هَذَا فَعَلِّمْنِي . قَالَ " إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَكَبِّرْ ثُمَّ اقْرَأْ مَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَعْتَدِلَ قَائِمًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ اجْلِسْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا ثُمَّ افْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلاَتِكَ كُلِّهَا " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ الْقَعْنَبِيُّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَقَالَ فِي آخِرِهِ " فَإِذَا فَعَلْتَ هَذَا فَقَدْ تَمَّتْ صَلاَتُكَ وَمَا انْتَقَصْتَ مِنْ هَذَا شَيْئًا فَإِنَّمَا انْتَقَصْتَهُ مِنْ صَلاَتِكَ " . وَقَالَ فِيهِ " إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَأَسْبِغِ الْوُضُوءَ " .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, রুকু-সিজদায় স্থির হওয়া ওয়াজিব। রুকু-সিজদায় গিয়ে সর্বনি্ম কতটুকু সময় অপেক্ষা করলে ওয়াজিব আদায় হয় এ ব্যাপারে উপরিউক্ত হাদীসের ভিত্তিতে ইমাম ত্বহাবী রহ. বলেন, مِقْدَارُ الرُّكُوعِ أَنْ يَرْكَعَ حَتَّى يَسْتَوِيَ رَاكِعًا وَمِقْدَارُ السُّجُودِ أَنْ يَسْجُدَ حَتَّى يَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ، فَهَذَا مِقْدَارُ الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ الَّذِي لَا بُدَّ مِنْهُ . রুকু এবং সিজদায় যে পরিমাণ দেরি না করলেই নয় তা হলো, রুকু-সিজদায় গিয়ে স্থির হওয়া। (ত্বহাবী শরীফ-১৩৯২ নং হাদীসের আলোচনায়, খ--১, পৃষ্ঠা-১৬৭) ইমাম ত্বহাবীর এ বক্তব্য থেকেও সর্বসাধারণের নিকট ধীরস্থিরের পরিমাণ নির্ধারণ করা কষ্টকর হতে পারে। তাই তাদের জন্য আরো সহজ করে বলা যেতে পারে যে, একবার তাসবীহ পাঠ করা যায় এই পরিমাণ সময় রুকু-সিজদায় অপেক্ষা করলে সেটাকে স্থিরতা বলা যায় এবং এর দ্বারা রুকু-সিজদা পূর্ণ হয়ে যায়। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ৪৬৪) তবে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাতে এ ধরণের তাড়াহুড়া কোনক্রমে গ্রহণযোগ্য নয়। বরং কমপক্ষে তিনবার তাসবীহ পাঠ করার মতো সময় অপেক্ষা করা উচিত।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
সুনানে আবু দাউদ - হাদীস নং ৮৫৬ | মুসলিম বাংলা