কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ
২. নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৯৯
আন্তর্জাতিক নং: ৪৯৯
৩২. আযানের নিয়ম সম্পর্কে।
৪৯৯. মুহাম্মাদ ইবনে মনসুর .... আব্দুল্লাহ্ ইবনে যায়দ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) শিংগা ধ্বনি করে লোকদের নামাযের জন্য একত্র করার নির্দেশ প্রদান করেন তখন একদা আমি স্বপ্নে দেখি যে, এক ব্যক্তি শিংগা হাতে নিয়ে যাচ্ছে। আমি তাকে বলি, হে আল্লাহর বান্দা! তুমি কি শিংগা বিক্রয় বরবে? সে বলে, তুমি শিংগা দিয়ে কি করবে? আমি বলি, আমি তার সাহায্যে নামাযের জামাআতে লোকদের ডাকব। সে বলল, আমি কি এর উত্তম কোন সন্ধান তোমাকে দেব না? আমি বলি, হ্যাঁ। রাবী বলেন, তখন সে বলল, তুমি এইরূপ শব্দ উচ্চারণ করবেঃ
“আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, আশ্হাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্; আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্; হাইয়া আলাস্-সালাহ্, হাইয়া আলাস্-সালাহ্, হাইয়া আলাল-ফালাহ্, হাইয়া আলাল-ফালাহ্, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্।”
রাবী রলেন! অতঃপর ঐ স্থান হতে ঐ ব্যক্তি একটু দুরে সরে গিয়ে দাঁড়ায় এবং বলে- তুমি যখন নামায পড়তে দাঁড়াবে তখন বলবেঃ “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্; আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্; হাইয়া আলাস্-সালাহ্; হাইয়া আলাল-ফালাহ্; কাদ কামাতিস্ সালাহ্; কাদ কামাতিস্-সালাহ্, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্”। অতঃপর ভোর বেলা আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খিদমতে হাযির হয়ে তাঁর নিকট আমার স্বপ্নের বর্ণনা করি। নবী (ﷺ) বলেন এটা অবশ্যই সত্য স্বপ্ন। অতঃপর তিনি বলেনঃ তুমি বিলালকে ডেকে তোমার সাথে নাও এবং তুমি যেরূপ স্বপ্ন দেখেছ- তদ্রূপ তাকে শিক্ষা দাও যাতে সে (বিলাল) ঐরূপে-আযান দিতে পারে। কেননা তাঁর কন্ঠস্বর তোমার স্বরের চাইতে অধিক উচ্চ।
অতঃপর আমি বিলাল (রাযিঃ)-কে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়াই এবং তাকে আযানের শব্দগুলি শিক্ষা দিতে থাকি এবং তিনি উচ্চারণ পূর্বক আযান দিতে থাকেন। বিলালের এই আযান ধ্বনি উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) নিজ আবাসে বসে শুনতে পান। তা শুনে উমর (রাযিঃ) এত দ্রুত পদে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খিদ্মতে আগমন করেন যে, তাঁর গায়ের চাঁদর মাটিতে হেচঁড়িয়ে যাচ্ছিলো। তিনি নবী (ﷺ)-এর নিকটে উপস্থিত হয়ে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ! যে মহান সত্তা আপনাকে সত্য নবী হিসাবে প্রেরণ করেছেন, আমিও ঐরূপ স্বপ্ন দেখেছি যেরূপ অন্যরা দেখেছে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেনঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
“আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, আশ্হাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্; আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্; হাইয়া আলাস্-সালাহ্, হাইয়া আলাস্-সালাহ্, হাইয়া আলাল-ফালাহ্, হাইয়া আলাল-ফালাহ্, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্।”
রাবী রলেন! অতঃপর ঐ স্থান হতে ঐ ব্যক্তি একটু দুরে সরে গিয়ে দাঁড়ায় এবং বলে- তুমি যখন নামায পড়তে দাঁড়াবে তখন বলবেঃ “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্; আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্; হাইয়া আলাস্-সালাহ্; হাইয়া আলাল-ফালাহ্; কাদ কামাতিস্ সালাহ্; কাদ কামাতিস্-সালাহ্, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্”। অতঃপর ভোর বেলা আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খিদমতে হাযির হয়ে তাঁর নিকট আমার স্বপ্নের বর্ণনা করি। নবী (ﷺ) বলেন এটা অবশ্যই সত্য স্বপ্ন। অতঃপর তিনি বলেনঃ তুমি বিলালকে ডেকে তোমার সাথে নাও এবং তুমি যেরূপ স্বপ্ন দেখেছ- তদ্রূপ তাকে শিক্ষা দাও যাতে সে (বিলাল) ঐরূপে-আযান দিতে পারে। কেননা তাঁর কন্ঠস্বর তোমার স্বরের চাইতে অধিক উচ্চ।
অতঃপর আমি বিলাল (রাযিঃ)-কে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়াই এবং তাকে আযানের শব্দগুলি শিক্ষা দিতে থাকি এবং তিনি উচ্চারণ পূর্বক আযান দিতে থাকেন। বিলালের এই আযান ধ্বনি উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) নিজ আবাসে বসে শুনতে পান। তা শুনে উমর (রাযিঃ) এত দ্রুত পদে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খিদ্মতে আগমন করেন যে, তাঁর গায়ের চাঁদর মাটিতে হেচঁড়িয়ে যাচ্ছিলো। তিনি নবী (ﷺ)-এর নিকটে উপস্থিত হয়ে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ! যে মহান সত্তা আপনাকে সত্য নবী হিসাবে প্রেরণ করেছেন, আমিও ঐরূপ স্বপ্ন দেখেছি যেরূপ অন্যরা দেখেছে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেনঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
باب كَيْفَ الأَذَانُ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَنْصُورٍ الطُّوسِيُّ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الْحَارِثِ التَّيْمِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَبْدِ رَبِّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ لَمَّا أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالنَّاقُوسِ يُعْمَلُ لِيُضْرَبَ بِهِ لِلنَّاسِ لِجَمْعِ الصَّلاَةِ طَافَ بِي وَأَنَا نَائِمٌ رَجُلٌ يَحْمِلُ نَاقُوسًا فِي يَدِهِ فَقُلْتُ يَا عَبْدَ اللَّهِ أَتَبِيعُ النَّاقُوسَ قَالَ وَمَا تَصْنَعُ بِهِ فَقُلْتُ نَدْعُو بِهِ إِلَى الصَّلاَةِ . قَالَ أَفَلاَ أَدُلُّكَ عَلَى مَا هُوَ خَيْرٌ مِنْ ذَلِكَ فَقُلْتُ لَهُ بَلَى . قَالَ فَقَالَ تَقُولُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ قَالَ ثُمَّ اسْتَأْخَرَ عَنِّي غَيْرَ بَعِيدٍ ثُمَّ قَالَ وَتَقُولُ إِذَا أَقَمْتَ الصَّلاَةَ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَلَمَّا أَصْبَحْتُ أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ بِمَا رَأَيْتُ فَقَالَ " إِنَّهَا لَرُؤْيَا حَقٌّ إِنْ شَاءَ اللَّهُ فَقُمْ مَعَ بِلاَلٍ فَأَلْقِ عَلَيْهِ مَا رَأَيْتَ فَلْيُؤَذِّنْ بِهِ فَإِنَّهُ أَنْدَى صَوْتًا مِنْكَ " . فَقُمْتُ مَعَ بِلاَلٍ فَجَعَلْتُ أُلْقِيهِ عَلَيْهِ وَيُؤَذِّنُ بِهِ - قَالَ - فَسَمِعَ ذَلِكَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَهُوَ فِي بَيْتِهِ فَخَرَجَ يَجُرُّ رِدَاءَهُ وَيَقُولُ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَقَدْ رَأَيْتُ مِثْلَ مَا رَأَى . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " فَلِلَّهِ الْحَمْدُ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ هَكَذَا رِوَايَةُ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ وَقَالَ فِيهِ ابْنُ إِسْحَاقَ عَنِ الزُّهْرِيِّ " اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ " . وَقَالَ مَعْمَرٌ وَيُونُسُ عَنِ الزُّهْرِيِّ فِيهِ " اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ " . لَمْ يُثَنِّيَا .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
উপরিউক্ত হাদীসের ভিত্তিতে আমরা উক্ত পদ্ধতির আযান ও ইকামাত আমাদের আমল হিসেবে গ্রহণ করেছি। (আলমগিরী: ১/৫৫) আমাদের গৃহীত পদ্ধতিতে আযানের শুরুতে الله أَكْبَرُ চারবার বলতে হয়। কোন কোন ইমাম অন্য হাদীসের ভিত্তিতে আযানের শুরুতে দু’বার الله أَكْبَرُ বলে থাকেন। আবার আমাদের গৃহীত পদ্ধতিতে আযানের মধ্যে কোন ‘তারজী’ নেই। উল্লেখ্য, ‘তারজী’ হলো: উভয় শাহাদাত দু’বার করে নীচু আওয়াজে বলে পুনরায় দু’বার উঁচু আওয়াজে বলা।
এর বিপরীতে কোন কোন ইমাম হযরত আবু মাহজুরা রা. থেকে বর্ণিত হাদীসের ভিত্তিতে আযানের মধ্যে ‘তারজী’ করে থাকেন। কিন্তু আমাদের গৃহীত পদ্ধতিই উত্তম। কারণ উপরোল্লিখিত হাদীস দ্বারা আযানের সূচনা হয়েছে। আর এতে যেমন ‘তারজী’ নেই, তেমন আযানের শুরুতে الله أَكْبَرُ দু’বারও বর্ণিত নেই। এ ব্যাপারে ইবনুল জাওঝী ‘আত তাহকীক ফী আহাদীসিল খিলাফ’ কিতাবে বর্ণনা করেন যে,وَهَذَا الحَدِيث أصل التأذين و لَيْسَ فِيهِ تَرْجِيع فَدلَّ عَلَى أَنه الْمُسْتَحبّ و عَلَيْهِ عمل أهل الْمَدِينَة وَالْأَخْذ بالمتأخر من حَال رَسُول الله صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّم এ হাদীসটি আযানের মূল। আর এখানে তারজী’ নেই। সুতরাং এ হাদীস এটা প্রমাণ করে যে, ‘তারজী’ না করা মুস্তাহাব। আর এটা মদীনাবাসীদের আমল এবং এটাকেই রসূলুল্লাহ স.-এর শেষ আমল হিসেবে গ্রহণ করা হয়। (আত তাহকীক: ৩৫৮ নাম্বার হাদীসের আলোচনায়)
এর বিপরীতে কোন কোন ইমাম হযরত আবু মাহজুরা রা. থেকে বর্ণিত হাদীসের ভিত্তিতে আযানের মধ্যে ‘তারজী’ করে থাকেন। কিন্তু আমাদের গৃহীত পদ্ধতিই উত্তম। কারণ উপরোল্লিখিত হাদীস দ্বারা আযানের সূচনা হয়েছে। আর এতে যেমন ‘তারজী’ নেই, তেমন আযানের শুরুতে الله أَكْبَرُ দু’বারও বর্ণিত নেই। এ ব্যাপারে ইবনুল জাওঝী ‘আত তাহকীক ফী আহাদীসিল খিলাফ’ কিতাবে বর্ণনা করেন যে,وَهَذَا الحَدِيث أصل التأذين و لَيْسَ فِيهِ تَرْجِيع فَدلَّ عَلَى أَنه الْمُسْتَحبّ و عَلَيْهِ عمل أهل الْمَدِينَة وَالْأَخْذ بالمتأخر من حَال رَسُول الله صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّم এ হাদীসটি আযানের মূল। আর এখানে তারজী’ নেই। সুতরাং এ হাদীস এটা প্রমাণ করে যে, ‘তারজী’ না করা মুস্তাহাব। আর এটা মদীনাবাসীদের আমল এবং এটাকেই রসূলুল্লাহ স.-এর শেষ আমল হিসেবে গ্রহণ করা হয়। (আত তাহকীক: ৩৫৮ নাম্বার হাদীসের আলোচনায়)
