আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৫৬- দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি ও হৃদয়গ্রাহী বিষয়াদির বর্ণনা

হাদীস নং: ৭২৩৭
আন্তর্জাতিক নং: ২৪৯৩-২
১৬. ধীর-স্থীরভাবে হাদীস বর্ণনা করা এবং ইলম লিপিবদ্ধ করার হুকুম
৭২৩৭। হারুন ইবনে মারুফ (রাহঃ) ......... উরাওয়া (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (একদিন) আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হাদীস বর্ণনা করছিলেন এবং বলছিলেন, হে হুজরাবাসিনী, শুনুন হে হুজরা বাসিনী! শুনুন। তখন আয়িশা (রাযিঃ) নামায আদায় করছিলেন। নামাযান্তে তিনি উরওয়া (রাযিঃ) কে বললেন, এ কি বলছে, তুমি তা শুনতে পেয়েছ কি? অথচ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এমনভাবে কথা বলতেন, যদি কোন গণনাকারী (তাঁর শব্দ ও বর্ণ) গণনা করতে চাইত তবে সে তা গুণতে পারত।
باب التَّثَبُّتِ فِي الْحَدِيثِ وَحُكْمِ كِتَابَةِ الْعِلْمِ
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ، حَدَّثَنَا بِهِ، سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ وَيَقُولُ اسْمَعِي يَا رَبَّةَ الْحُجْرَةِ اسْمَعِي يَا رَبَّةَ الْحُجْرَةِ . وَعَائِشَةُ تُصَلِّي فَلَمَّا قَضَتْ صَلاَتَهَا قَالَتْ لِعُرْوَةَ أَلاَ تَسْمَعُ إِلَى هَذَا وَمَقَالَتِهِ آنِفًا إِنَّمَا كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُحَدِّثُ حَدِيثًا لَوْ عَدَّهُ الْعَادُّ لأَحْصَاهُ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু এ উম্মতের শিক্ষক ছিলেন এবং তাঁর প্রতিটি কথাই উম্মতের জন্য শিক্ষণীয় ছিল, তাই তিনি প্রতিটি কথা বলতেন সুস্পষ্টভাবে। ফলে তাঁর কোনও কথা বুঝতে শ্রোতার কষ্ট হতো না। দীনী বিষয়ে যারা বক্তব্য দান করে, তাদের এদিকে লক্ষ রাখা দরকার। অনেকে বক্তব্যদানের সময় খুব তাড়াতাড়ি করে কথা বলে। শ্রোতার পক্ষে তা বুঝে ওঠা কঠিন হয়ে যায়। বক্তব্য দান করাই তো হয় মানুষকে বোঝানোর জন্য। তারা যদি বুঝতেই না পারে, তবে সে বক্তব্যদানের সার্থকতা কী? কাজেই কোনও বক্তারই হড়বড় করে কথা বলা উচিত নয়। ধীরে ধীরে গুছিয়ে বলা উচিত। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. কোনও কোনও বক্তার এরকম হড়বড় করে বলা বক্তব্য শুনে তাতে আপত্তি জানান। তিনি তাদের সংশোধনকল্পে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্যের ধরন তাদের সামনে তুলে ধরেন এবং সে প্রসঙ্গেই এ হাদীছটি তিনি বর্ণনা করেন। হাদীসে আছে যে-
ما كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يسرد سردكم هذا، ولكنه كان يتكلم بكلام يبينه، فصل، يحفظه من جلس إليه
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের মতো এরকম হড়বড় করতেন না। বরং তিনি সুস্পষ্টভাবে পরিষ্কার করে কথা বলতেন, তাঁর কাছে যারা বসত তারা মুখস্থ করে ফেলতে পারত।'(জামে' তিরমিযী: ৩৬৩৯; মুসনাদুল বাযযার ১৫৫; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৬৯৬; মুসনাদে ইসহাক ইবন রাহুয়াহ: ১৭০৪)

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

যে-কোনও কথা পরিষ্কারভাবে বলা উচিত, যাতে শ্রোতা তা ভালোভাবে বুঝতে পারে। শিক্ষকদের জন্য এটা আরও বেশি জরুরি।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ মুসলিম - হাদীস নং ৭২৩৭ | মুসলিম বাংলা