আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৫৬- দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি ও হৃদয়গ্রাহী বিষয়াদির বর্ণনা
হাদীস নং: ৭১৬৯
আন্তর্জাতিক নং: ২৯৬৮
শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৭১৬৯। মুহাম্মাদ ইবনে উমর (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাহাবীগণ প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কিয়ামতের দিন আমরা কি আমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাব? উত্তরে বললেন, আকাশে মেঘ না থাকা অবস্থায় দুপুরের সময় সূর্য দেখতে তোমাদের কোন সমস্যা হয় কি? সাহাবীগণ বললেন, জী না। অতঃপর তিনি বললেন, আকাশে মেঘ না থাকা অবস্থায় পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে তোমাদের কোন সমস্যা হয় কি? সাহাবীগণ বললেন, জি না। এরপর তিনি বললেন, ঐ সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ! চন্দ্র সূর্যের কোন একটি দেখতে তোমাদের যেরূপ সমস্যা হয় না তোমাদের প্রতিপালককেও দেখতে তোমাদের ঠিক তদ্রূপ সমস্যা হবে না। আল্লাহর সাথে বান্দার সাক্ষাত হবে। তখন তিনি বললেন, হে অমুক! আমি কি তোমাকে ইজ্জত দান করিনি, নেতৃত্ব দান করিনি, জোড়া মিলিয়ে (বিয়ে করিয়ে) দেইনি, ঘোড়া, উট তোমার বশীভূত করে দেইনি এবং নেতৃত্ব ও এক-চতুর্থাংশ ভোগের মাধ্যমে প্রাচুর্যের মাঝে তোমার পানাহারের ব্যবস্থা করিনি?
সে বলবে, হ্যাঁ, হে আমার প্রতিপালক! অতঃপর তিনি বলবেন, তুমি কি মনে করতে যে, তুমি আমার সাথে সাক্ষাত করবে? সে বলবে, না। তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি যেমনিভাবে আমাকে ভুলে গিয়েছিলে অনুরূপভাবে আমিও তোমাকে ভুলে যাচ্ছি।
অতঃপর দ্বিতীয় অপর এক ব্যক্তির আল্লাহর সাথে সাক্ষাত হবে। তখন তিনি তাকেও বলবেন, হে অমুক! আমি কি তোমাকে সম্মান দান করিনি, নেতৃত্ব দেই নি, তোমার জোড়া মিলিয়ে দেইনি, উট-ঘোড়া তোমার অনুগত করে দেইনি এবং সূখ-সাচ্ছন্দ্যে পানাহারের জন্য তোমাকে কি সুযোগ করে দেই নি? সে বলবে, হ্যাঁ করেছেন, হে আমার প্রতিপালক! অতঃপর তিনি বলবেন, আমার সাথে তোমার সাক্ষাত হবে এ কথা তুমি মনে করতে? সে বলবে, না। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, তুমি যেমন আমাকে ভুলে গিয়েছিলে অনুরূপভাবে আমিও তোমাদেরকে বিষ্মিৃত হব।
অতঃপর তিনি অপর এক ব্যক্তির আল্লাহর সাথে সাক্ষাত হবে। অতঃপর পূর্বের অনুরূপ বলবেন। তখন লোকটি বলবে, হে আমার প্রতিপালক! আমি আপনার প্রতি এবং কিতাব ও রাসুলগণের প্রতি ঈমান আনয়ন করেছি। আমি নামায আদায় করেছি, রোযা পালন করেছি এবং সাদ্কা করেছি। এমনিভাবে সে যথাসম্ভব নিজের প্রশংসা করবে। এমতাবস্থায় আল্লাহ তাআলা বলবেন, এখনই তোমার মিথ্যা প্রকাশিত হয়ে যাবে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ এরপর তাকে বলা হবে, এখনই আমি তোমার উপর আমার সাক্ষী কায়িম করব। তখন বান্দা মনে মনে চিন্তা করতে থাকবে যে, কে তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিবে? তখন তার মুখে মোহর দেয়া হবে। এবং তার উরু, গোশত ও হাড়কে বলা হবে, তোমরা কথা বল। ফলে তার উরু, গোশত ও হাড়ি তার আমল সম্পর্কে বলতে থাকবে। এ ব্যবস্থা এ জন্য করা হবে যেন, আত্মপক্ষ সমর্থন করার কোন অবকাশ তার আর বাকি না থাকে। এই ব্যক্তি হচ্ছে মুনাফিক। তার প্রতি আল্লাহ তাআলা অন্তুষ্ট হবেন।
সে বলবে, হ্যাঁ, হে আমার প্রতিপালক! অতঃপর তিনি বলবেন, তুমি কি মনে করতে যে, তুমি আমার সাথে সাক্ষাত করবে? সে বলবে, না। তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি যেমনিভাবে আমাকে ভুলে গিয়েছিলে অনুরূপভাবে আমিও তোমাকে ভুলে যাচ্ছি।
অতঃপর দ্বিতীয় অপর এক ব্যক্তির আল্লাহর সাথে সাক্ষাত হবে। তখন তিনি তাকেও বলবেন, হে অমুক! আমি কি তোমাকে সম্মান দান করিনি, নেতৃত্ব দেই নি, তোমার জোড়া মিলিয়ে দেইনি, উট-ঘোড়া তোমার অনুগত করে দেইনি এবং সূখ-সাচ্ছন্দ্যে পানাহারের জন্য তোমাকে কি সুযোগ করে দেই নি? সে বলবে, হ্যাঁ করেছেন, হে আমার প্রতিপালক! অতঃপর তিনি বলবেন, আমার সাথে তোমার সাক্ষাত হবে এ কথা তুমি মনে করতে? সে বলবে, না। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, তুমি যেমন আমাকে ভুলে গিয়েছিলে অনুরূপভাবে আমিও তোমাদেরকে বিষ্মিৃত হব।
অতঃপর তিনি অপর এক ব্যক্তির আল্লাহর সাথে সাক্ষাত হবে। অতঃপর পূর্বের অনুরূপ বলবেন। তখন লোকটি বলবে, হে আমার প্রতিপালক! আমি আপনার প্রতি এবং কিতাব ও রাসুলগণের প্রতি ঈমান আনয়ন করেছি। আমি নামায আদায় করেছি, রোযা পালন করেছি এবং সাদ্কা করেছি। এমনিভাবে সে যথাসম্ভব নিজের প্রশংসা করবে। এমতাবস্থায় আল্লাহ তাআলা বলবেন, এখনই তোমার মিথ্যা প্রকাশিত হয়ে যাবে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ এরপর তাকে বলা হবে, এখনই আমি তোমার উপর আমার সাক্ষী কায়িম করব। তখন বান্দা মনে মনে চিন্তা করতে থাকবে যে, কে তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিবে? তখন তার মুখে মোহর দেয়া হবে। এবং তার উরু, গোশত ও হাড়কে বলা হবে, তোমরা কথা বল। ফলে তার উরু, গোশত ও হাড়ি তার আমল সম্পর্কে বলতে থাকবে। এ ব্যবস্থা এ জন্য করা হবে যেন, আত্মপক্ষ সমর্থন করার কোন অবকাশ তার আর বাকি না থাকে। এই ব্যক্তি হচ্ছে মুনাফিক। তার প্রতি আল্লাহ তাআলা অন্তুষ্ট হবেন।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ " هَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الشَّمْسِ فِي الظَّهِيرَةِ لَيْسَتْ فِي سَحَابَةٍ " . قَالُوا لاَ . قَالَ " فَهَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لَيْسَ فِي سَحَابَةٍ " . قَالُوا لاَ . قَالَ " فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ رَبِّكُمْ إِلاَّ كَمَا تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ أَحَدِهِمَا - قَالَ - فَيَلْقَى الْعَبْدَ فَيَقُولُ أَىْ فُلْ أَلَمْ أُكْرِمْكَ وَأُسَوِّدْكَ وَأُزَوِّجْكَ وَأُسَخِّرْ لَكَ الْخَيْلَ وَالإِبِلَ وَأَذَرْكَ تَرْأَسُ وَتَرْبَعُ فَيَقُولُ بَلَى . قَالَ فَيَقُولُ أَفَظَنَنْتَ أَنَّكَ مُلاَقِيَّ فَيَقُولُ لاَ . فَيَقُولُ فَإِنِّي أَنْسَاكَ كَمَا نَسِيتَنِي . ثُمَّ يَلْقَى الثَّانِيَ فَيَقُولُ أَىْ فُلْ أَلَمْ أُكْرِمْكَ وَأُسَوِّدْكَ وَأُزَوِّجْكَ وَأُسَخِّرْ لَكَ الْخَيْلَ وَالإِبِلَ وَأَذَرْكَ تَرْأَسُ وَتَرْبَعُ فَيَقُولُ بَلَى أَىْ رَبِّ . فَيَقُولُ أَفَظَنَنْتَ أَنَّكَ مُلاَقِيَّ فَيَقُولُ لاَ . فَيَقُولُ فَإِنِّي أَنْسَاكَ كَمَا نَسِيتَنِي . ثُمَّ يَلْقَى الثَّالِثَ فَيَقُولُ لَهُ مِثْلَ ذَلِكَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ آمَنْتُ بِكَ وَبِكِتَابِكَ وَبِرُسُلِكَ وَصَلَّيْتُ وَصُمْتُ وَتَصَدَّقْتُ . وَيُثْنِي بِخَيْرٍ مَا اسْتَطَاعَ فَيَقُولُ هَا هُنَا إِذًا - قَالَ - ثُمَّ يُقَالُ لَهُ الآنَ نَبْعَثُ شَاهِدَنَا عَلَيْكَ . وَيَتَفَكَّرُ فِي نَفْسِهِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْهَدُ عَلَىَّ فَيُخْتَمُ عَلَى فِيهِ وَيُقَالُ لِفَخِذِهِ وَلَحْمِهِ وَعِظَامِهِ انْطِقِي فَتَنْطِقُ فَخِذُهُ وَلَحْمُهُ وَعِظَامُهُ بِعَمَلِهِ وَذَلِكَ لِيُعْذِرَ مِنْ نَفْسِهِ . وَذَلِكَ الْمُنَافِقُ وَذَلِكَ الَّذِي يَسْخَطُ اللَّهُ عَلَيْهِ " .
