আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৫৫- ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতের আলামতের বর্ণনা

হাদীস নং: ৭১১৪
আন্তর্জাতিক নং: ২৯৪০-১
২৩. দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ এবং দুনিয়াতে তার অবস্থান, ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর অবতরণ এবং তার দ্বারা দাজ্জালকে হত্যা করা, দুনিয়া থেকে ভাল লোক এবং ঈমানের বিদায় গ্রহণ, এবং মন্দ লোকদের অবস্থান, তাদের মূর্তিপূজা, শিঙ্গায় ফুৎকার এবং কবর থেকে সকলের উত্থান
৭১১৪। উবাইদুল্লাহ ইবনে মুআয আল আনবারী (রাহঃ) ......... ইয়াকুব ইবনে আসিম ইবনে উরওয়া ইবনে মাসউদ সাকাফী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাযিঃ) কে আমি এ কথা বলতে শুনেছি যে, একদা এক ব্যক্তি তার নিকট এসে বললেন এ কেমন হাদীস আপনি বর্ণনা করছেন যে, এতো এতো দিনের মধ্যে কিয়ামত সংগঠিত হবে। এ কথা শুনে তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ অথবা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ অথবা অনুরূপ কোন শব্দ। অতঃপর তিনি বললেন, আমি তো কেবল এ কথাই বলেছিলাম যে অচিরেই তোমরা এমন ভয়াবহ ঘটনা প্রত্যক্ষ করবে যা ঘর-বাড়ী জ্বালিয়ে দিবে এবং এমন ঘটবে এমন ঘটবে ......।

অতঃপর তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ আমার উম্মতের মধ্যেই দাজ্জালের আবির্ভাব হবে এবং সে চল্লিশ পর্যন্ত অবস্থান করবে। আমি জানি না চল্লিশ দিন, না চল্লিশ মাস, না চল্লিশ বছর। এ সময় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মারইয়াম তনয় ঈসা (আলাইহিস সালাম) কে প্রেরণ করবেন। তাঁর আকৃতি উরওয়া ইবনে মাসউদের অনুরূপ হবে। তিনি দাজ্জালকে তালাশ করে তাকে ধ্বংস করে দিবেন। অতঃপর সাতটি বছর লোকেরা এমনভাবে অতিবাহিত করবে যে, দুই ব্যক্তির মাঝে কোন দুশমনী থাকবে না। তখন আল্লাহ তাআলা সিয়িয়ার দিক হতে ঠাণ্ডা বায়ু প্রবাহিত করবেন। ফলে যার অন্তরে কল্যাণ বা ঈমান থাকবে, এ ধরনের কোন ব্যক্তি এ পৃথিবীতে আর বেঁচে থাকবে না। বরং এ ধরনের প্রত্যেকের জান আল্লাহ তাআলা কবয করে নিবেন। এমন কি তোমাদের কোন ব্যক্তি যদি পাহাড়ের অভ্যন্তরে গিয়েও আত্মগোপন করে তবে সেখানেও বায়ু তার নিকট পৌছে তার জান কবয করে নিবে।

আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে একথা বলতে শুনেছি যে, তখন মন্দ লোকগুলো দুনিয়াতে বাকী থাকবে। দ্রুতগামী পাখি এবং জ্ঞানশূন্য হিংস্রপ্রাণীর ন্যায় তাদের আখলাক হবে। তারা কল্যাণকে কল্যাণ বলে জানবে না এবং অকল্যাণকে অকল্যাণ বলে মনে করবে না। এ সময় শয়তান এক আকৃতিতে তাদের নিকট এসে বলবে, তোমরা কি ডাকে সাড়া দিবে না? তারা বলবে, আপনি আমাদেরকে কোন বিষয়ের আদেশ দিচ্ছেন? তখন সে তাদেরকে মূর্তি পূজার নির্দেশ দিবে। সে সময় তাদের জীবনোপকরণে প্রাচুর্য থাকবে এবং তারা স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন যাপন করবে। তখনই শিংগায় ফুঁৎকার দেয়া হবে। যেই এ আওয়ায শুনবে সেই তার ঘাড় একদিকে অবনমিত করবে এবং অন্য দিকে উত্তলোন করবে।

এ আওয়ায সর্বপ্রথম ঐ ব্যক্তি শুনতে পাবে যে তার উটের জন্য হাউয মেরামতের কাজে মগ্ন থাকবে। আওয়ায শুনমাত্রই সে বেহুশ হয়ে পড়ে যাবে। সাথে সাথে অনান্য লোকেরাও বেহুশ হয়ে যাবে। অতঃপর মহান আল্লাহ শুক্র বিন্দুর মত গুড়িগুড়ি বৃষ্টি প্রেরণ করবেন বা ছায়ার বৃষ্টি বর্ষণ করবেন।

বর্ণনাকারী নুমান (রাহঃ) طل ওظل সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এতে মানুষর শরীর উদগত হবে। পুনরায় সিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে। তৎক্ষণাৎ তারা দণ্ডায়মান হয়ে তাকাতে থাকবো অতঃপর আহবান করা হবে যে, হে লোক সকল! তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট আস। অতঃপর বলা হবে, তাদেরকে থামাও, কারণ তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে। এরপর বলা হবে, জাহান্নামী দল বের কর। জিজ্ঞাসা করা হবে, কত জন? বলা হবে, প্রত্যেক হাজার থেকে নয়শ’ নিরানব্বই জন। অতঃপর তিনি বললেন, এ ই তো ঐ দিন, যেদিন শিশুদের পরিণত করবে বৃদ্ধে এবং এ-ই চরম সংকটের দিন।
بَابٌ فِي خُرُوجِ الدَّجَّالِ وَمُكْثِهِ فِي الْأَرْضِ، وَنُزُولِ عِيسَى وَقَتْلِهِ إِيَّاهُ، وَذَهَابِ أَهْلِ الْخَيْرِ وَالْإِيمَانِ، وَبَقَاءِ شِرَارِ النَّاسِ وَعِبَادَتِهِمُ الْأَوْثَانَ، وَالنَّفْخِ فِي الصُّورِ، وَبَعْثِ مَنْ فِي الْقُبُورِ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَالِمٍ، قَالَ سَمِعْتُ يَعْقُوبَ بْنَ عَاصِمِ بْنِ عُرْوَةَ بْنِ مَسْعُودٍ الثَّقَفِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، وَجَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ مَا هَذَا الْحَدِيثُ الَّذِي تُحَدِّثُ بِهِ تَقُولُ إِنَّ السَّاعَةَ تَقُومُ إِلَى كَذَا وَكَذَا . فَقَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ - أَوْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَوْ كَلِمَةً نَحْوَهُمَا - لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ لاَ أُحَدِّثَ أَحَدًا شَيْئًا أَبَدًا إِنَّمَا قُلْتُ إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ بَعْدَ قَلِيلٍ أَمْرًا عَظِيمًا يُحَرَّقُ الْبَيْتُ وَيَكُونُ وَيَكُونُ ثُمَّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَخْرُجُ الدَّجَّالُ فِي أُمَّتِي فَيَمْكُثُ أَرْبَعِينَ - لاَ أَدْرِي أَرْبَعِينَ يَوْمًا أَوْ أَرْبَعِينَ شَهْرًا أَوْ أَرْبَعِينَ عَامًا - فَيَبْعَثُ اللَّهُ عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ كَأَنَّهُ عُرْوَةُ بْنُ مَسْعُودٍ فَيَطْلُبُهُ فَيُهْلِكُهُ ثُمَّ يَمْكُثُ النَّاسُ سَبْعَ سِنِينَ لَيْسَ بَيْنَ اثْنَيْنِ عَدَاوَةٌ ثُمَّ يُرْسِلُ اللَّهُ رِيحًا بَارِدَةً مِنْ قِبَلِ الشَّأْمِ فَلاَ يَبْقَى عَلَى وَجْهِ الأَرْضِ أَحَدٌ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ أَوْ إِيمَانٍ إِلاَّ قَبَضَتْهُ حَتَّى لَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ دَخَلَ فِي كَبَدِ جَبَلٍ لَدَخَلَتْهُ عَلَيْهِ حَتَّى تَقْبِضَهُ " . قَالَ سَمِعْتُهَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " فَيَبْقَى شِرَارُ النَّاسِ فِي خِفَّةِ الطَّيْرِ وَأَحْلاَمِ السِّبَاعِ لاَ يَعْرِفُونَ مَعْرُوفًا وَلاَ يُنْكِرُونَ مُنْكَرًا فَيَتَمَثَّلُ لَهُمُ الشَّيْطَانُ فَيَقُولُ أَلاَ تَسْتَجِيبُونَ فَيَقُولُونَ فَمَا تَأْمُرُنَا فَيَأْمُرُهُمْ بِعِبَادَةِ الأَوْثَانِ وَهُمْ فِي ذَلِكَ دَارٌّ رِزْقُهُمْ حَسَنٌ عَيْشُهُمْ ثُمَّ يُنْفَخُ فِي الصُّورِ فَلاَ يَسْمَعُهُ أَحَدٌ إِلاَّ أَصْغَى لِيتًا وَرَفَعَ لِيتًا - قَالَ - وَأَوَّلُ مَنْ يَسْمَعُهُ رَجُلٌ يَلُوطُ حَوْضَ إِبِلِهِ - قَالَ - فَيَصْعَقُ وَيَصْعَقُ النَّاسُ ثُمَّ يُرْسِلُ اللَّهُ - أَوْ قَالَ يُنْزِلُ اللَّهُ - مَطَرًا كَأَنَّهُ الطَّلُّ أَوِ الظِّلُّ - نُعْمَانُ الشَّاكُّ - فَتَنْبُتُ مِنْهُ أَجْسَادُ النَّاسِ ثُمَّ يُنْفَخُ فِيهِ أُخْرَى فَإِذَا هُمْ قِيَامٌ يَنْظُرُونَ ثُمَّ يُقَالُ يَا أَيُّهَا النَّاسُ هَلُمَّ إِلَى رَبِّكُمْ . وَقِفُوهُمْ إِنَّهُمْ مَسْئُولُونَ - قَالَ - ثُمَّ يُقَالُ أَخْرِجُوا بَعْثَ النَّارِ فَيُقَالُ مِنْ كَمْ فَيُقَالُ مِنْ كُلِّ أَلْفٍ تِسْعَمِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِينَ - قَالَ - فَذَاكَ يَوْمَ يَجْعَلُ الْوِلْدَانَ شِيبًا وَذَلِكَ يَوْمَ يُكْشَفُ عَنْ سَاقٍ " .
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ মুসলিম - হাদীস নং ৭১১৪ | মুসলিম বাংলা