আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৫৪- জান্নাতের নিআমত ও জান্নাতীদের বর্ণনা
হাদীস নং: ৬৯০৪
১২. জাহান্নামের আগুনের প্রবল উত্তাপ এবং তলদেশের গভীরতা
৬৯০৪। ইয়াহয়া ইবনে আইয়ুব (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে বসাছিলাম। হঠাৎ ’ধপাস’ আওয়াজ তিনি শুনতে পেলেন। তখন নবী (ﷺ) বললেনঃ এ কিসের আওয়াজ, তোমরা কি জান? বর্ণনাকারী বলেন, আমরা বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ এ একটি পাথর যা সত্তর বছর পূর্বে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। অতঃপর তা কেবল গড়াতে থাকে। যেতে যেতে এখন তা তার অতল তলে গিয়ে পৌঁছেছে।
باب فِي شِدَّةِ حَرِّ نَارِ جَهَنَّمَ وَبُعْدِ قَعْرِهَا
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا خَلَفُ بْنُ خَلِيفَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ كَيْسَانَ، عَنْ أَبِي، حَازِمٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ سَمِعَ وَجْبَةً فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " تَدْرُونَ مَا هَذَا " . قَالَ قُلْنَا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " هَذَا حَجَرٌ رُمِيَ بِهِ فِي النَّارِ مُنْذُ سَبْعِينَ خَرِيفًا فَهُوَ يَهْوِي فِي النَّارِ الآنَ حَتَّى انْتَهَى إِلَى قَعْرِهَا " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীছটির বক্তব্য দ্বারা বোঝা যায় জাহান্নামের তলদেশে পাথর পড়ার শব্দ সাহাবীগণও শুনতে পেয়েছিলেন। তারা শুনতে পেয়েছিলেন বলেই নবী কারীম সাল্লাল্লা আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে জিজ্ঞেস করেছিলেন-
هل تدرون ما هذا (তোমরা জান এটা কিসের শব্দ?)। সে শব্দ শুনতে পাওয়াটা সাহাবায়ে কেরামের এক বিশেষ মর্যাদা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্যের বরকতে আল্লাহ তাআলা অদৃশ্য জগতের এ শব্দটি তাঁর মত তাদেরকেও শুনিয়ে দিয়েছিলেন। এরকম আরও অনেক সৌভাগ্যই তাদের লাভ হয়েছিল, যেমন মসজিদে নববীর ভেতর মরা খেজুর গাছের কান্নার আওয়াজ শুনতে পাওয়া, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতের ভেতর থেকে কঙ্করের ‘তাসবীহ' ধ্বনি শুনতে পাওয়া ইত্যাদি।
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেছিলেন- الله ورسوله اعلم (আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন)। এটা তাদের আদব। যা জানা ছিল না তার জ্ঞান আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ন্যস্ত করেছেন। 'জানি না' বললেও উত্তর হয়ে যেত, কিন্তু তা এই পর্যায়ের আদব হত না। তাদের এই আদব দ্বারা আমাদের জন্য শিক্ষা হলো যে, অজানা বিষয়ে আনুমানিক উত্তর দিতে নেই। যা-তা বলে জ্ঞান জাহির করাও সমীচীন নয়।
হাদীছটির মূল বিষয় হলো জাহান্নামের গভীরতা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। যে পাথর জাহান্নামের উপরিভাগ থেকে নিক্ষেপ করার পর জাহান্নামের তলদেশে পৌঁছতে সেটির সত্তর বছর লেগেছে, তাকে কতটা দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়েছে তা সহজেই অনুমেয়। যার গভীরতা এত বেশি, তার দৈর্ঘ্য ও প্রশস্ততা কেমন হবে? এমন অতল গভীর ও বিশাল বিস্তৃত জাহান্নাম পাপীদেরকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আল্লাহ তাআলা তৈরি করে রেখেছেন। আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে জাহান্নাম ও জাহান্নামের আযাব থেকে পানাহ চাই।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. জাহান্নাম এক অস্তিত্বমান মাখলুক। তা ভবিষ্যতে সৃষ্টি করা হবে এমন নয়; বরং সৃষ্টি করেই রাখা হয়েছে।
খ. জাহান্নাম অতি গভীর ও অতি বিস্তৃত অগ্নিকুণ্ড। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তারিকা অনুসরণে রত থেকে আল্লাহ তাআলার কাছে তা থেকে নাজাত প্রার্থনা করা উচিত।
গ. যে বিষয়ে জানা নেই সে বিষয়ে আনুমানিক কথা বলতে নেই; বরং অজ্ঞতা স্বীকার করাই সমীচীন।
هل تدرون ما هذا (তোমরা জান এটা কিসের শব্দ?)। সে শব্দ শুনতে পাওয়াটা সাহাবায়ে কেরামের এক বিশেষ মর্যাদা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্যের বরকতে আল্লাহ তাআলা অদৃশ্য জগতের এ শব্দটি তাঁর মত তাদেরকেও শুনিয়ে দিয়েছিলেন। এরকম আরও অনেক সৌভাগ্যই তাদের লাভ হয়েছিল, যেমন মসজিদে নববীর ভেতর মরা খেজুর গাছের কান্নার আওয়াজ শুনতে পাওয়া, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতের ভেতর থেকে কঙ্করের ‘তাসবীহ' ধ্বনি শুনতে পাওয়া ইত্যাদি।
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেছিলেন- الله ورسوله اعلم (আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন)। এটা তাদের আদব। যা জানা ছিল না তার জ্ঞান আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ন্যস্ত করেছেন। 'জানি না' বললেও উত্তর হয়ে যেত, কিন্তু তা এই পর্যায়ের আদব হত না। তাদের এই আদব দ্বারা আমাদের জন্য শিক্ষা হলো যে, অজানা বিষয়ে আনুমানিক উত্তর দিতে নেই। যা-তা বলে জ্ঞান জাহির করাও সমীচীন নয়।
হাদীছটির মূল বিষয় হলো জাহান্নামের গভীরতা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। যে পাথর জাহান্নামের উপরিভাগ থেকে নিক্ষেপ করার পর জাহান্নামের তলদেশে পৌঁছতে সেটির সত্তর বছর লেগেছে, তাকে কতটা দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়েছে তা সহজেই অনুমেয়। যার গভীরতা এত বেশি, তার দৈর্ঘ্য ও প্রশস্ততা কেমন হবে? এমন অতল গভীর ও বিশাল বিস্তৃত জাহান্নাম পাপীদেরকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আল্লাহ তাআলা তৈরি করে রেখেছেন। আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে জাহান্নাম ও জাহান্নামের আযাব থেকে পানাহ চাই।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. জাহান্নাম এক অস্তিত্বমান মাখলুক। তা ভবিষ্যতে সৃষ্টি করা হবে এমন নয়; বরং সৃষ্টি করেই রাখা হয়েছে।
খ. জাহান্নাম অতি গভীর ও অতি বিস্তৃত অগ্নিকুণ্ড। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তারিকা অনুসরণে রত থেকে আল্লাহ তাআলার কাছে তা থেকে নাজাত প্রার্থনা করা উচিত।
গ. যে বিষয়ে জানা নেই সে বিষয়ে আনুমানিক কথা বলতে নেই; বরং অজ্ঞতা স্বীকার করাই সমীচীন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
