আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৫১- যিকর, দুআ, তাওবা ও ইসতিগফারের অধ্যায়
হাদীস নং: ৬৭৫৬
আন্তর্জাতিক নং: ২৭৬৭-২
৩৫. হত্যাকারীর তাওবা আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য; যদিও সে বহু হত্যা করে থাকে
৬৭৫৬। আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা (রাহঃ) ......... আবু বুরদা (রাহঃ) এর পিতা আবু মুসা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ যখনই কোন মুসলমান মারা যায় তখন আল্লাহ তার স্থলে একজন ইয়াহুদী বা খ্রীষ্টানকে জাহান্নামে দাখিল করেন। তারপর উমর ইবনে আব্দুল আযীয (রাহঃ) আবু বুরদা (রাহঃ) কে আল্লাহর নাম দিয়ে, যিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, তিনবার জিজ্ঞাসা করলেন যে, তার পিতা কি সত্যই এ কথাটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনে তাঁর নিকট বর্ণনা করেছেন? তিনি কসম খেয়ে বললেন, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। বর্ণনাকারী (কাতাদা) বলেন, “উমর ইবনে আব্দুল আযীয (রাহঃ) তাকে কসম দিয়েছেন এবং আউন এর বর্ণনা অস্বীকার করেননি।” এরূপ কথা সাঈদ আমার নিকট বর্ণনা করেনি।
باب قَبُولِ تَوْبَةِ الْقَاتِلِ وَإِنْ كَثُرَ قَتْلُهُ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، أَنَّ عَوْنًا، وَسَعِيدَ بْنَ أَبِي بُرْدَةَ، حَدَّثَاهُ أَنَّهُمَا، شَهِدَا أَبَا بُرْدَةَ يُحَدِّثُ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ يَمُوتُ رَجُلٌ مُسْلِمٌ إِلاَّ أَدْخَلَ اللَّهُ مَكَانَهُ النَّارَ يَهُودِيًّا أَوْ نَصْرَانِيًّا " . قَالَ فَاسْتَحْلَفَهُ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بِاللَّهِ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ أَنَّ أَبَاهُ حَدَّثَهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَحَلَفَ لَهُ - قَالَ - فَلَمْ يُحَدِّثْنِي سَعِيدٌ أَنَّهُ اسْتَحْلَفَهُ وَلَمْ يُنْكِرْ عَلَى عَوْنٍ قَوْلَهُ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে ইহুদী ও খৃষ্টানের কথা বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বোঝানো উদ্দেশ্য অমুসলিম। যেমন এক হাদীছে আছে-
إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ، أَعْطى الله كُلَّ رَجُلٍ مِنْ هَذِه الأمة رَجُلاً مِن الكفار، فيقال له هذَا فِداؤُكَ مِنَ النَّارِ
“কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা এ উম্মতের প্রত্যেককে একজন করে কাফের দেবেন। তারপর বলা হবে, এ হচ্ছে জাহান্নাম থেকে তোমার মুক্তিপণ।
অর্থাৎ মুসলিম ব্যক্তির বিনিময়ে সেই ব্যক্তিকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে এবং মুসলিম ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে নাজাত দিয়ে জান্নাত দান করা হবে। কী এ কথার অর্থ? ইমাম নববী রহ. বলেন, প্রত্যেক মুসলিমকে যে একজন ইহুদী বা একজন খৃষ্টান দিয়ে বলা হবে এ হল জাহান্নাম থেকে তোমার মুক্তিপণ, এর অর্থ হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বর্ণিত একটি হাদীছ দ্বারা স্পষ্ট হয়। তাতে আছে-
مَا مِنكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا لَهُ مَنزِلَانِ مَنْزِل فِي الْجَنَّةِ، وَمَنْزِل فِي النَّارِ، فَإِذَا مَاتَ، فَدَخَلَ النَّارَ، وَرِثَ أَهْلُ الْجَنَّةِ مَنْزِلَهُ، فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى: أُولَئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ
'প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য আছে দু'টি ঠিকানা। একটি ঠিকানা জান্নাতে, আরেকটি ঠিকানা জাহান্নামে। সে (কাফের ব্যক্তি) যখন মারা যায়, জাহান্নামে প্রবেশ করে আর জান্নাতবাসী তার ঠিকানার অধিকারী হয়ে যায়। এটাই আল্লাহ তা'আলার এ বাণীর মর্ম যে- (তারাই হবে উত্তরাধিকারী - সুরা মুমিনূন : ১০)।
অর্থাৎ ইমাম নববী রহ. বলতে চাচ্ছেন যে, হাদীছটি দ্বারা বাহ্যত যে অর্থ বোঝা যাচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে তা বোঝানো উদ্দেশ্য নয়। কেননা তাতে একজনের পাপের বোঝা আরেকজনের উপর ফেলা হয় এবং একজনের বদলে আরেকজনকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়। অথচ আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন-
وَلَا تَكْسِبُ كُلُّ نَفْسٍ إِلَّا عَلَيْهَا وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرُى
'প্রত্যেক ব্যক্তি যা-কিছু করে, তার লাভ-ক্ষতি অন্য কারও উপর নয়, স্বয়ং তার উপরই বর্তায় এবং কোনও ভার বহনকারী অন্য কারও ভার বহন করবে না।
মূলত হাদীছটি দ্বারা রূপক অর্থ বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা নিজ অনুগ্রহে মুমিন-মুসলিমদের পাপরাশি মাফ করে দেবেন এবং তাদের থেকে তা মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু ইহুদী-নাসারা ও অন্যান্য কাফেরদের কৃত গুনাহ তাদের কাধে থেকে যাবে। তা মাফ করা হবে না। তাদেরকে সে গুনাহের বোঝা নিয়ে জাহান্নামে যেতে হবে। তাদের জন্য জান্নাতেও একটা স্থান ছিল। কুফরীর কারণে তারা তা থেকে বঞ্চিত হবে। আল্লাহ তা'আলা নিজ মেহেরবানীতে জান্নাতবাসীদেরকে তা দিয়ে দেবেন।
জান্নাতবাসীদেরও একটা স্থান জাহান্নামে আছে। ঈমানের বদৌলতে তারা তা থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে। বাহ্যত দেখা যাচ্ছে অদল-বদল। জান্নাতবাসীগণ তাদের জাহান্নামের ঠিকানার পরিবর্তে চলে যাবে জান্নাতে। অপরদিকে জাহান্নামীগণ তাদের জান্নাতের ঠিকানার বদলে স্থান পাবে জাহান্নামে। প্রকৃতপক্ষে অদল-বদল নয়; প্রত্যেকেই আপন আপন কর্মফল অনুযায়ী প্রাপ্য ঠিকানায়ই যাবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছটি আমাদের জন্য অনেক বড় আশা জাগানিয়া। ঈমানের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করতে পারলে আশা করি আল্লাহ তা'আলা আমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন।
খ. কুফরের পরিণতি অতি ভয়ংকর। কুফরের সঙ্গে মৃত্যু হলে ক্ষমার আশা নেই। তাই ইহুদী-খৃষ্টান বা অন্য কোনও কাফের সম্প্রদায়ের কুফরী আকীদা-বিশ্বাস যাতে আমাদের মধ্যে ঢুকে না পড়ে সে ব্যাপারে সর্বদা সতর্ক থাকা চাই।
إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ، أَعْطى الله كُلَّ رَجُلٍ مِنْ هَذِه الأمة رَجُلاً مِن الكفار، فيقال له هذَا فِداؤُكَ مِنَ النَّارِ
“কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা এ উম্মতের প্রত্যেককে একজন করে কাফের দেবেন। তারপর বলা হবে, এ হচ্ছে জাহান্নাম থেকে তোমার মুক্তিপণ।
অর্থাৎ মুসলিম ব্যক্তির বিনিময়ে সেই ব্যক্তিকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে এবং মুসলিম ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে নাজাত দিয়ে জান্নাত দান করা হবে। কী এ কথার অর্থ? ইমাম নববী রহ. বলেন, প্রত্যেক মুসলিমকে যে একজন ইহুদী বা একজন খৃষ্টান দিয়ে বলা হবে এ হল জাহান্নাম থেকে তোমার মুক্তিপণ, এর অর্থ হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বর্ণিত একটি হাদীছ দ্বারা স্পষ্ট হয়। তাতে আছে-
مَا مِنكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا لَهُ مَنزِلَانِ مَنْزِل فِي الْجَنَّةِ، وَمَنْزِل فِي النَّارِ، فَإِذَا مَاتَ، فَدَخَلَ النَّارَ، وَرِثَ أَهْلُ الْجَنَّةِ مَنْزِلَهُ، فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى: أُولَئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ
'প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য আছে দু'টি ঠিকানা। একটি ঠিকানা জান্নাতে, আরেকটি ঠিকানা জাহান্নামে। সে (কাফের ব্যক্তি) যখন মারা যায়, জাহান্নামে প্রবেশ করে আর জান্নাতবাসী তার ঠিকানার অধিকারী হয়ে যায়। এটাই আল্লাহ তা'আলার এ বাণীর মর্ম যে- (তারাই হবে উত্তরাধিকারী - সুরা মুমিনূন : ১০)।
অর্থাৎ ইমাম নববী রহ. বলতে চাচ্ছেন যে, হাদীছটি দ্বারা বাহ্যত যে অর্থ বোঝা যাচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে তা বোঝানো উদ্দেশ্য নয়। কেননা তাতে একজনের পাপের বোঝা আরেকজনের উপর ফেলা হয় এবং একজনের বদলে আরেকজনকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়। অথচ আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন-
وَلَا تَكْسِبُ كُلُّ نَفْسٍ إِلَّا عَلَيْهَا وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرُى
'প্রত্যেক ব্যক্তি যা-কিছু করে, তার লাভ-ক্ষতি অন্য কারও উপর নয়, স্বয়ং তার উপরই বর্তায় এবং কোনও ভার বহনকারী অন্য কারও ভার বহন করবে না।
মূলত হাদীছটি দ্বারা রূপক অর্থ বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা নিজ অনুগ্রহে মুমিন-মুসলিমদের পাপরাশি মাফ করে দেবেন এবং তাদের থেকে তা মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু ইহুদী-নাসারা ও অন্যান্য কাফেরদের কৃত গুনাহ তাদের কাধে থেকে যাবে। তা মাফ করা হবে না। তাদেরকে সে গুনাহের বোঝা নিয়ে জাহান্নামে যেতে হবে। তাদের জন্য জান্নাতেও একটা স্থান ছিল। কুফরীর কারণে তারা তা থেকে বঞ্চিত হবে। আল্লাহ তা'আলা নিজ মেহেরবানীতে জান্নাতবাসীদেরকে তা দিয়ে দেবেন।
জান্নাতবাসীদেরও একটা স্থান জাহান্নামে আছে। ঈমানের বদৌলতে তারা তা থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে। বাহ্যত দেখা যাচ্ছে অদল-বদল। জান্নাতবাসীগণ তাদের জাহান্নামের ঠিকানার পরিবর্তে চলে যাবে জান্নাতে। অপরদিকে জাহান্নামীগণ তাদের জান্নাতের ঠিকানার বদলে স্থান পাবে জাহান্নামে। প্রকৃতপক্ষে অদল-বদল নয়; প্রত্যেকেই আপন আপন কর্মফল অনুযায়ী প্রাপ্য ঠিকানায়ই যাবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছটি আমাদের জন্য অনেক বড় আশা জাগানিয়া। ঈমানের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করতে পারলে আশা করি আল্লাহ তা'আলা আমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন।
খ. কুফরের পরিণতি অতি ভয়ংকর। কুফরের সঙ্গে মৃত্যু হলে ক্ষমার আশা নেই। তাই ইহুদী-খৃষ্টান বা অন্য কোনও কাফের সম্প্রদায়ের কুফরী আকীদা-বিশ্বাস যাতে আমাদের মধ্যে ঢুকে না পড়ে সে ব্যাপারে সর্বদা সতর্ক থাকা চাই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
