আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৪৭- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
হাদীস নং: ৬২৬৫
৫৮. ছাকীফ গোত্রের মিথ্যাবাদী ও দুর্ধর্ষ খুনীর বর্ণনা
৬২৬৫। উকবা ইবনে মুকরাম আল-আম্মী (রাহঃ) ......... আবু নাওফাল (রাহঃ) বলেন যে, আমি (মক্কায়) আকাবাতুল মদীনা নামক ঘাঁটিতে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) কে (শুলীকাষ্ঠে ঝুলতে) দেখতে পেলাম। বর্ণনাকারী বলেন, তখন কুরাইশী ও অন্যান্য লোকজন তাঁর নিকট দিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) তাঁর নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় থামলেন এবং বললেন, আসসালামু আলাইকা ইয়া আবু খুবাইব, আসসালামু আলাইকা ইয়া আবু খুবাইব, আসসালামু আলাইকা ইয়া আবু খুবাইব। আল্লাহর কসম! আমি অবশ্য আপনাকে এ থেকে বিরত থাকতে বলেছিলাম, আমি অবশ্য আপনাকে এ থেকে বিরত থাকতে বলেছিলাম, আমি অবশ্য আপনাকে এ থেকে বিরত থাকতে বলেছিলাম।
আল্লাহর কসম! আমি যতদূর জানি আপনি ছিলেন অত্যধিক (নফল) রোযা পালনকারী, অত্যধিক নামায আদায়কারী এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক অধিক রক্ষাকারী। আল্লাহর কসম, যে উম্মতের আপনি নিকৃষ্ট ব্যক্তি (যদি তা-ই বাস্তব হয়) তবে সে উম্মতে অবশ্যই শ্রেষ্ঠ উম্মত। এরপর আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) সেখান থেকে চলে গেলেন। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) এর এই অবস্থান (থামা) ও তাঁর বক্তব্য হাজ্জাজ্জের কানে পৌঁছল। তখন সে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইরের কাছে লোক পাঠাল এবং তাঁকে শূলীর উপর থেকে নামানো হল।
এরপর ইয়াহুদীদের কবরস্থানে তাঁকে নিক্ষেপ করা হোল। এরপর সে তাঁর মা আসমা বিনত আবু বকর (রাযিঃ) কে ডেকে পাঠাল। তিনি তাঁর কাছে আসতে অস্বীকার করলেন। হাজ্জাজ পুনরায় তাঁর কাছে লোক পাঠাল, তাঁকে তাঁর কাছে আসার জন্য এই বলে যে, তোমাকে অবশ্যই আসতে হবে। অন্যথায় তোমার কাছে এমন লোক পাঠাবো যে তোমাকে তোমার চুলের বেণী ধরে টেনে আনবে। বর্ণনাকারী বললেন, এরপরও তিনি অস্বীকার করলেন এবং বললেন, আল্লাহর কসম! আমি সে পর্যন্ত তোমার কাছে আসব না যতক্ষণ না তুমি আমার কাছে এমন লোক পাঠাবে, যে আমার চুলের বেণী ধরে টেনে নিয়ে যাবে।
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর হাজ্জাজ বলল, আমার জুতা মোজা আন। তারপর সে জুতা পরিধান করলো এবং দ্রুতগতিতে আসমা বিনত আবু বকর (রাযিঃ) এর কাছে পৌঁছল এবং সে বলল, তুমি তো দেখলে আল্লাহর দুশমন (তোমার পুত্র ইবনে যুবাইর) এর সঙ্গে আমি কী আচরণ করেছি। তিনি বললেন, “হ্যাঁ আমি তোকে দেখছি, তুই তাঁর দুনিয়া নষ্ট করে দিয়েছিস। আর সে তোর আখিরাত বরবাদ করে দিয়েছে। আমি জানতে পেরেছি যে, তুই তাঁকে (তিরস্কার সরূপ) দুই কোমরবন্দ পরিহিতার পুত্র বলে সম্বোধন করে থাকিস। আল্লাহর কসম! আমিই দুই কোমরবন্দ পরিহিতা।
এর একটির মধ্যে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং আবু বকর (রাযিঃ) এর আহার্য সামগ্রী বেঁধে তুলে রাখতাম, বাহনের পশু থেকে। আরেকটি হল যা স্ত্রীলোকের জন্য অপরিহার্য। জেনে রাখ, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের কাছে বর্ণনা করেছে যে, সাকীফ গোত্রে এক মিথ্যুকের আবির্ভাব ঘটবে এবং এক রক্ত প্রবাহকারী (খুনীর)। মিথ্যুককে তো আমরা সবাই দেখেছি, আমি রক্ত প্রবাহকারী তোকে ছাড়া আর কাউকে মনে করছি না” একথা শুনে সে (হাজ্জাজ) উঠে দাঁড়াল এবং তাঁর [আসমা (রাযিঃ) এর] কথার কোন প্রতি উত্তর করল না।
আল্লাহর কসম! আমি যতদূর জানি আপনি ছিলেন অত্যধিক (নফল) রোযা পালনকারী, অত্যধিক নামায আদায়কারী এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক অধিক রক্ষাকারী। আল্লাহর কসম, যে উম্মতের আপনি নিকৃষ্ট ব্যক্তি (যদি তা-ই বাস্তব হয়) তবে সে উম্মতে অবশ্যই শ্রেষ্ঠ উম্মত। এরপর আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) সেখান থেকে চলে গেলেন। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) এর এই অবস্থান (থামা) ও তাঁর বক্তব্য হাজ্জাজ্জের কানে পৌঁছল। তখন সে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইরের কাছে লোক পাঠাল এবং তাঁকে শূলীর উপর থেকে নামানো হল।
এরপর ইয়াহুদীদের কবরস্থানে তাঁকে নিক্ষেপ করা হোল। এরপর সে তাঁর মা আসমা বিনত আবু বকর (রাযিঃ) কে ডেকে পাঠাল। তিনি তাঁর কাছে আসতে অস্বীকার করলেন। হাজ্জাজ পুনরায় তাঁর কাছে লোক পাঠাল, তাঁকে তাঁর কাছে আসার জন্য এই বলে যে, তোমাকে অবশ্যই আসতে হবে। অন্যথায় তোমার কাছে এমন লোক পাঠাবো যে তোমাকে তোমার চুলের বেণী ধরে টেনে আনবে। বর্ণনাকারী বললেন, এরপরও তিনি অস্বীকার করলেন এবং বললেন, আল্লাহর কসম! আমি সে পর্যন্ত তোমার কাছে আসব না যতক্ষণ না তুমি আমার কাছে এমন লোক পাঠাবে, যে আমার চুলের বেণী ধরে টেনে নিয়ে যাবে।
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর হাজ্জাজ বলল, আমার জুতা মোজা আন। তারপর সে জুতা পরিধান করলো এবং দ্রুতগতিতে আসমা বিনত আবু বকর (রাযিঃ) এর কাছে পৌঁছল এবং সে বলল, তুমি তো দেখলে আল্লাহর দুশমন (তোমার পুত্র ইবনে যুবাইর) এর সঙ্গে আমি কী আচরণ করেছি। তিনি বললেন, “হ্যাঁ আমি তোকে দেখছি, তুই তাঁর দুনিয়া নষ্ট করে দিয়েছিস। আর সে তোর আখিরাত বরবাদ করে দিয়েছে। আমি জানতে পেরেছি যে, তুই তাঁকে (তিরস্কার সরূপ) দুই কোমরবন্দ পরিহিতার পুত্র বলে সম্বোধন করে থাকিস। আল্লাহর কসম! আমিই দুই কোমরবন্দ পরিহিতা।
এর একটির মধ্যে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং আবু বকর (রাযিঃ) এর আহার্য সামগ্রী বেঁধে তুলে রাখতাম, বাহনের পশু থেকে। আরেকটি হল যা স্ত্রীলোকের জন্য অপরিহার্য। জেনে রাখ, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের কাছে বর্ণনা করেছে যে, সাকীফ গোত্রে এক মিথ্যুকের আবির্ভাব ঘটবে এবং এক রক্ত প্রবাহকারী (খুনীর)। মিথ্যুককে তো আমরা সবাই দেখেছি, আমি রক্ত প্রবাহকারী তোকে ছাড়া আর কাউকে মনে করছি না” একথা শুনে সে (হাজ্জাজ) উঠে দাঁড়াল এবং তাঁর [আসমা (রাযিঃ) এর] কথার কোন প্রতি উত্তর করল না।
باب ذِكْرِ كَذَّابِ ثَقِيفٍ وَمُبِيرِهَا
حَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ مُكْرَمٍ الْعَمِّيُّ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - يَعْنِي ابْنَ إِسْحَاقَ الْحَضْرَمِيَّ - أَخْبَرَنَا الأَسْوَدُ بْنُ شَيْبَانَ، عَنْ أَبِي نَوْفَلٍ، رَأَيْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الزُّبَيْرِ عَلَى عَقَبَةِ الْمَدِينَةِ - قَالَ - فَجَعَلَتْ قُرَيْشٌ تَمُرُّ عَلَيْهِ وَالنَّاسُ حَتَّى مَرَّ عَلَيْهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ فَوَقَفَ عَلَيْهِ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَبَا خُبَيْبٍ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَبَا خُبَيْبٍ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَبَا خُبَيْبٍ أَمَا وَاللَّهِ لَقَدْ كُنْتُ أَنْهَاكَ عَنْ هَذَا أَمَا وَاللَّهِ لَقَدْ كُنْتُ أَنْهَاكَ عَنْ هَذَا أَمَا وَاللَّهِ لَقَدْ كُنْتُ أَنْهَاكَ عَنْ هَذَا أَمَا وَاللَّهِ إِنْ كُنْتَ مَا عَلِمْتُ صَوَّامًا قَوَّامًا وَصُولاً لِلرَّحِمِ أَمَا وَاللَّهِ لأُمَّةٌ أَنْتَ أَشَرُّهَا لأُمَّةٌ خَيْرٌ . ثُمَّ نَفَذَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ فَبَلَغَ الْحَجَّاجَ مَوْقِفُ عَبْدِ اللَّهِ وَقَوْلُهُ فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ فَأُنْزِلَ عَنْ جِذْعِهِ فَأُلْقِيَ فِي قُبُورِ الْيَهُودِ ثُمَّ أَرْسَلَ إِلَى أُمِّهِ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ فَأَبَتْ أَنْ تَأْتِيَهُ فَأَعَادَ عَلَيْهَا الرَّسُولَ لَتَأْتِيَنِّي أَوْ لأَبْعَثَنَّ إِلَيْكِ مِنْ يَسْحَبُكِ بِقُرُونِكِ - قَالَ - فَأَبَتْ وَقَالَتْ وَاللَّهِ لاَ آتِيكَ حَتَّى تَبْعَثَ إِلَىَّ مَنْ يَسْحَبُنِي بِقُرُونِي - قَالَ - فَقَالَ أَرُونِي سِبْتَىَّ . فَأَخَذَ نَعْلَيْهِ ثُمَّ انْطَلَقَ يَتَوَذَّفُ حَتَّى دَخَلَ عَلَيْهَا فَقَالَ كَيْفَ رَأَيْتِنِي صَنَعْتُ بِعَدُوِّ اللَّهِ قَالَتْ رَأَيْتُكَ أَفْسَدْتَ عَلَيْهِ دُنْيَاهُ وَأَفْسَدَ عَلَيْكَ آخِرَتَكَ بَلَغَنِي أَنَّكَ تَقُولُ لَهُ يَا ابْنَ ذَاتِ النِّطَاقَيْنِ أَنَا وَاللَّهِ ذَاتُ النِّطَاقَيْنِ أَمَّا أَحَدُهُمَا فَكُنْتُ أَرْفَعُ بِهِ طَعَامَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَطَعَامَ أَبِي بَكْرٍ مِنَ الدَّوَابِّ وَأَمَّا الآخَرُ فَنِطَاقُ الْمَرْأَةِ الَّتِي لاَ تَسْتَغْنِي عَنْهُ أَمَا إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَدَّثَنَا " أَنَّ فِي ثَقِيفٍ كَذَّابًا وَمُبِيرًا " . فَأَمَّا الْكَذَّابُ فَرَأَيْنَاهُ وَأَمَّا الْمُبِيرُ فَلاَ إِخَالُكَ إِلاَّ إِيَّاهُ - قَالَ - فَقَامَ عَنْهَا وَلَمْ يُرَاجِعْهَا .
