আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৪৭- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল

হাদীস নং: ৬১৭৬
আন্তর্জাতিক নং: ২৪৯৪-১
৩৬. হাতিব ইবনে আবু বালতা’আ (রাযিঃ) এবং বদরী সাহাবীগণ (রাযিঃ) এর ফযীলত
৬১৭৬। আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা, আমর নাকিদ, যুহাইর ইবনে হারব, ইসহাক ইবনে ইবরাহীম ও ইবনে আবু উমর (রাহঃ) ......... আলী (রাযিঃ) এর কাতিব উবাইদুল্লাহ ইবনে আবু রাফি (রাহঃ) বর্ণনা করেন যে, তিনি আলী (রাযিঃ) কে বলতে শুনেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে এবং যুবাইর ও মিকদাদ (রাযিঃ) কে (বিশেষ কাজে) পাঠালেন এবং বললেনঃ তোমরা রাওযা খাখ (মদীনার নিকটবর্তী একটি স্থানের নাম) যাও। সেখানে উটের পিঠে আরোহি এক মহিলা আছে। তার কাছে একখানা গোপন চিঠি আছে। তোমরা তার কাছ থেকে সেটা নিয়ে এসো। আমরা ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করে ছুটে চললাম। সেখানে আমরা এক মহিলাকে দেখতে পেলাম।

আমরা তাকে বললাম, চিঠি বের করে দাও সে বলল, আমার কাছে কোন চিঠি নেই। আমরা বললাম, তোমাকে চিঠি বের করতেই হবে, অন্যথায় তোমার পোশাকাদি খুলে ফেলেতে হবে। এরপর সে তার চুলের বেণীর মধ্য থেকে তা বের করে দিল। তখন আমরা তা নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এলাম। চিঠিতে দেখা গেল যে, হাতিব ইবনে আবু বালতা (রাযিঃ) এর পক্ষ থেকে মক্কার কতক মুশরিকের প্রতি লেখা ছিল। তিনি (এই চিঠিতে) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কতিপয় বিষয় সম্পর্কে তাদের অবহিত করছিলেন (গুরুত্বপূর্ণ কাজের গোপন তথ্য ফাঁস করে দিয়েছিলেন)।

তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ হে হাতিব! তুমি একি কাজ করলে? সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিবেন না। আমি কুরাইশ সংযুক্ত একজন লোক। সুফিয়ান (রাহঃ) বলেন, তিনি তাদের (চুক্তিবদ্ধ) মিত্র ছিলেন, তাদের গোত্রভুক্ত ছিলেন না। আর আপনার মুহাজির সাহাবীদের অনেকের আত্মীয় স্বজন সেখানে রয়েছে, যাদের বদৌলতে তাদের পরিবার পরিজনের নিরপত্তা নিশ্চিত হচ্ছিল। তাই আমি মনস্থ করলাম যে, কুরাইশের শঙ্গে যখন আমার কোন আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই তখন তাদের প্রতি এমন কোন (কাজ) উপকার করি যার কারণে তারা আমার পরিবার পরিজন রক্ষা করবে। আমি এ কাজটি এজন্য করিনি যে, আমি কাফির হয়ে গেছি কিংবা দ্বীন থেকে মুরতাদ হয়েছি। আমি ইসলাম গ্রহণের পরে কুফরের প্রতি আসক্তও হইনি।

এরপর নবী (ﷺ) বললেন, সে সত্যই বলেছ। উমর (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে অনুমতি দিন, আমি এই মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দেই। তখন তিনি বললেন, সে তো বদর যুদ্ধে শরীক হয়েছিল আর নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা বদরী সাহাবিদের বিষয়ে অবগত আছেন। আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন: اعْمَلُوا مَا شِئْتُمْ فَقَدْ غَفَرْتُ لَكُمْ অর্থাৎ “তোমরা যা খুশী করতে পার, আমি তোমাদের (অগ্রিম) ক্ষমা করে দিয়েছি”। এরপর আল্লাহ তাআলা এই আয়াত নাযিল করেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ অর্থাৎ “হে মুমিনগণ! আমার শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুরূপে গ্রহণ কর না”। (সূরা মুমতাহানাঃ ১)।

আবু বকর ও যুহাইর বর্ণিত হাদীসে আয়াতের উল্লেখ নেই। আর ইসহাক তাঁর বর্ণনায় আয়তটিকে সুফিয়ানের তিলাওয়াত হিসাবে গণ্য করেছেন।
باب مِنْ فَضَائِلِ أَهْلِ بَدْرٍ رضى الله عنهم وَقِصَّةِ حَاطِبِ بْنِ أَبِي بَلْتَعَةَ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ - وَاللَّفْظُ لِعَمْرٍو - قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرُونَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ، عُيَيْنَةَ عَنْ عَمْرٍو، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي رَافِعٍ، - وَهُوَ كَاتِبُ عَلِيٍّ قَالَ سَمِعْتُ عَلِيًّا، رضى الله عنه وَهُوَ يَقُولُ بَعَثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَا وَالزُّبَيْرَ وَالْمِقْدَادَ فَقَالَ " ائْتُوا رَوْضَةَ خَاخٍ فَإِنَّ بِهَا ظَعِينَةً مَعَهَا كِتَابٌ فَخُذُوهُ مِنْهَا " . فَانْطَلَقْنَا تَعَادَى بِنَا خَيْلُنَا فَإِذَا نَحْنُ بِالْمَرْأَةِ فَقُلْنَا أَخْرِجِي الْكِتَابَ . فَقَالَتْ مَا مَعِي كِتَابٌ . فَقُلْنَا لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ لَتُلْقِيَنَّ الثِّيَابَ . فَأَخْرَجَتْهُ مِنْ عِقَاصِهَا فَأَتَيْنَا بِهِ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا فِيهِ مِنْ حَاطِبِ بْنِ أَبِي بَلْتَعَةَ إِلَى نَاسٍ مِنَ الْمُشْرِكِينَ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ يُخْبِرُهُمْ بِبَعْضِ أَمْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَا حَاطِبُ مَا هَذَا " . قَالَ لاَ تَعْجَلْ عَلَىَّ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي كُنْتُ امْرَأً مُلْصَقًا فِي قُرَيْشٍ - قَالَ سُفْيَانُ كَانَ حَلِيفًا لَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ مِنْ أَنْفُسِهَا - وَكَانَ مِمَّنْ كَانَ مَعَكَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ لَهُمْ قَرَابَاتٌ يَحْمُونَ بِهَا أَهْلِيهِمْ فَأَحْبَبْتُ إِذْ فَاتَنِي ذَلِكَ مِنَ النَّسَبِ فِيهِمْ أَنْ أَتَّخِذَ فِيهِمْ يَدًا يَحْمُونَ بِهَا قَرَابَتِي وَلَمْ أَفْعَلْهُ كُفْرًا وَلاَ ارْتِدَادًا عَنْ دِينِي وَلاَ رِضًا بِالْكُفْرِ بَعْدَ الإِسْلاَمِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " صَدَقَ " . فَقَالَ عُمَرُ دَعْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ أَضْرِبْ عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ . فَقَالَ " إِنَّهُ قَدْ شَهِدَ بَدْرًا وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ اللَّهَ اطَّلَعَ عَلَى أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ اعْمَلُوا مَا شِئْتُمْ فَقَدْ غَفَرْتُ لَكُمْ " . فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ( يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ) وَلَيْسَ فِي حَدِيثِ أَبِي بَكْرٍ وَزُهَيْرٍ ذِكْرُ الآيَةِ وَجَعَلَهَا إِسْحَاقُ فِي رِوَايَتِهِ مِنْ تِلاَوَةِ سُفْيَانَ .
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ মুসলিম - হাদীস নং ৬১৭৬ | মুসলিম বাংলা