আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৪৭- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
হাদীস নং: ৬০৭৫
আন্তর্জাতিক নং: ২৪৪৪-২
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
১৩. আয়িশা (রাযিঃ) এর ফযীলত
৬০৭৫। আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা, আবু কুরায়ব ইবনে নুমাইর ও ইসহাক ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ......... হিশাম (রাহঃ) থেকে এ সনদেই অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।
كتاب فضائل الصحابة رضى الله تعالى عنهم
باب فِي فَضْلِ عَائِشَةَ رضى الله تعالى عنها
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ، نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، كُلُّهُمْ عَنْ هِشَامٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতকালীন অবস্থা বর্ণনা করেছেন। এতে দু'টি বিষয়ের উল্লেখ আছে। একটি হল ওফাতকালে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর শরীরে হেলান দেওয়া ছিলেন। আর দ্বিতীয় হল তিনি ওফাতকালে একটি বিশেষ দু'আ পড়ছিলেন।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর শেষ দিনগুলোতে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর ঘরে ছিলেন। এটা হয়েছিল অন্যান্য উম্মুল মুমিনীনের অনুমতিক্রমেই। ওফাতের পূর্বক্ষণে তিনি হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর বুকে হেলান দেওয়া অবস্থায় ছিলেন। তাঁর কোলে মাথা রাখা অবস্থায়ই প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত হয় এবং তাঁর ঘরেই তাঁর দাফন হয়। এটা আম্মাজান রাযি.-এর এক বিশেষ গৌরবের বিষয়। এ সম্পর্কে তিনি বর্ণনা করেন-
আমার প্রতি আল্লাহর এক অনুগ্রহ হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে, আমার দিনে এবং আমার বুকে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মওতকালে আল্লাহ তা'আলা তাঁর থুথুর সঙ্গে আমার থুথু মিলিয়ে দিয়েছিলেন। (আমার ভাই) আব্দুর রহমান আমার কাছে আসল। তার হাতে মিসওয়াক ছিল। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার সঙ্গে হেলান দিইয়ে রেখেছি। আমি দেখলাম তিনি সেদিকে তাকাচ্ছেন। বুঝতে পারলাম তিনি মিসওয়াক করতে চাচ্ছেন। বললাম, আপনাকে ওটি নিয়ে দেব? তিনি মাথা দিয়ে ইশারা করে বোঝালেন যে, হাঁ। আমি সেটি তাঁকে নিয়ে দিলাম। কিন্তু তাঁর কাছে সেটি শক্ত লাগল। বললাম, আমি এটি নরম করে দেব? তিনি মাথার ইশারায় বোঝালেন যে, হাঁ। আমি সেটি নরম করে দিলাম। তিনি সেটি দিয়ে মিসওয়াক করলেন। তাঁর সামনে একটি পাত্রে পানি রাখা ছিল। তিনি সেই পানিতে হাত রেখে তা দ্বারা চেহারা মুছছিলেন আর বলছিলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। নিশ্চয়ই মৃত্যুর যন্ত্রণা আছে। তারপর তিনি হাত বিস্তার করে দিলেন আর বলতে লাগলেন, মহান বন্ধুদের মাঝে। এভাবে তাঁর জান কবজ হয়ে গেল এবং তাঁর হাত ঢলে পড়ল।
(সহীহ বুখারী: ৪৪৪৯, ৪৪৫০, ৪৪৫১; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ৩২২৮২; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা: ৪৬০৪; সহীহ ইবনে হিব্বান ৬৬১৬; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর: ৭৯, ৮০; হাকিম, আল মুস্তাদরাক: ৬৭১৯; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৮২৬)
আরও বিভিন্ন হাদীছে এ কথাগুলো বর্ণিত আছে। এ হাদীছটির দ্বিতীয় বিষয় হল ওফাতকালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দু'আ। তিনি দু'আ করছিলেন- اللهم اغفرلي وارحمني (হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন। আমার প্রতি রহম করুন)। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মা'সুম। তাঁর কোনও গুনাহ ছিল না। তা সত্ত্বেও তিনি এরূপ দু'আ করেছেন। এটা ছিল তাঁর বিনয়। ছিল আল্লাহ তা'আলার প্রতি চরম আত্মনিবেদন। ছিল আল্লাহ তা'আলার প্রতি পরম শ্রদ্ধা-ভক্তি ও তাঁর গৌরব-গরিমার প্রকাশ। এর মাধ্যমে তিনি নিজ উম্মতকেও শিক্ষা দিয়েছেন যে, মৃত্যুকালে আল্লাহ তা'আলার কাছে নিজ গুনাহের জন্য ক্ষমা চাওয়া ও তাঁর রহমতের আশাবাদী থাকা উচিত। যেই মহানবীর কোনও গুনাহ ছিল না আর তা সত্ত্বেও তিনি এভাবে রহমত ও মাগফিরাত কামনা করেছেন, তাঁর উম্মতের জন্য রহমত ও মাগফিরাতের কামনা কতইনা বেশি জরুরি, যখন তারা নানারকম গুনাহ ও পাপাচারে লিপ্ত থাকে।
দু'আটির শেষাংশ হল- وألحقني بالرفيق الأعلى (আমাকে মহান বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে দিন)। الرفيق الأعلى এর দ্বারা যেমন আল্লাহ তা'আলাকে বোঝানো হয়, তেমনি জান্নাত ও জান্নাতের শ্রেষ্ঠতম বাসিন্দা আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামকেও বোঝানো হয়ে থাকে। সিদ্দীক, শহীদ ও সালিহগণও এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَالرَّسُولَ فَأُولَئِكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِينَ وَحَسُنَ أُولَئِكَ رَفِيقًا
'যারা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করবে, তারা সেইসকল লোকের সঙ্গে থাকবে, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন, অর্থাৎ নবীগণ, সিদ্দীকগণ, শহীদগণ ও সালিহগণের সঙ্গে। কতইনা উত্তম সঙ্গী তারা!’ (সূরা নিসা, আয়াত ৬৯)
এ দু'আটি দ্বারা বাহ্যত মনে হয় তিনি মৃত্যু কামনা করেছিলেন। বস্তুত বিষয়টি সেরকম নয়। সাধারণভাবে মৃত্যুকামনা করা উচিত নয়। নিষেধ আছে। তিনি এর দ্বারা আল্লাহ তা'আলার ফয়সালায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি তখন জানতে পেরেছিলেন যে, তাঁর আয়ু শেষ হয়ে গেছে। তাঁর জান কবজের ফয়সালা হয়ে গেছে। তিনি তা জানতে পেরেছিলেন ফিরিশতাদের আগমন দ্বারা। সাধারণ নেককারদেরও মৃত্যুর সময় সুসংবাদ দানকারী ফিরিশতাদের আগমন ঘটে। নবীগণের ক্ষেত্রে তো তা ঘটেই থাকে। এমনকি মৃত্যুর ফিরিশতা এসে নবীগণের কাছে জান কবজের অনুমতিও চেয়ে থাকে। হাদীছ দ্বারা এটা প্রমাণিত। তিনি যে নিজ মৃত্যু সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন তা প্রমাণ হয় এর দ্বারাও যে, তিনি নিজ কন্যা হযরত ফাতিমা যাহরা রাযি.-কে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিলেন, আজকের পর তোমার পিতার আর কোনও কষ্ট নেই। তো যখন মৃত্যুর ফয়সালা হয়ে গেছে এবং জান কবজকারী ফিরিশতাগণও এসে গেছেন, তখন তাঁর জন্য এটাই স্বাভাবিক ছিল যে, তিনি সে ফয়সালায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করবেন এবং পরম বন্ধু আল্লাহ তা'আলা ও আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করবেন। এ দু'আটি দ্বারা তিনি তাই করেছেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছটি দ্বারা উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদীকা রাযি.-এর উচ্চমর্যাদা ও বিশেষত্ব সম্পর্কে ধারণা লাভ হয়।
খ. নবীগণও মানুষ। অপরাপর মানুষের মতো তাঁদেরও রোগ-ব্যাধি হয় এবং তাঁরাও মৃত্যুবরণ করেন।
গ. মৃত্যুকালে আল্লাহ তা'আলার কাছে নিজ গুনাহের জন্য মাগফিরাতের দু'আ করা উচিত এবং তাঁর রহমতের আশাবাদী থাকা উচিত।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর শেষ দিনগুলোতে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর ঘরে ছিলেন। এটা হয়েছিল অন্যান্য উম্মুল মুমিনীনের অনুমতিক্রমেই। ওফাতের পূর্বক্ষণে তিনি হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর বুকে হেলান দেওয়া অবস্থায় ছিলেন। তাঁর কোলে মাথা রাখা অবস্থায়ই প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত হয় এবং তাঁর ঘরেই তাঁর দাফন হয়। এটা আম্মাজান রাযি.-এর এক বিশেষ গৌরবের বিষয়। এ সম্পর্কে তিনি বর্ণনা করেন-
আমার প্রতি আল্লাহর এক অনুগ্রহ হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে, আমার দিনে এবং আমার বুকে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মওতকালে আল্লাহ তা'আলা তাঁর থুথুর সঙ্গে আমার থুথু মিলিয়ে দিয়েছিলেন। (আমার ভাই) আব্দুর রহমান আমার কাছে আসল। তার হাতে মিসওয়াক ছিল। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার সঙ্গে হেলান দিইয়ে রেখেছি। আমি দেখলাম তিনি সেদিকে তাকাচ্ছেন। বুঝতে পারলাম তিনি মিসওয়াক করতে চাচ্ছেন। বললাম, আপনাকে ওটি নিয়ে দেব? তিনি মাথা দিয়ে ইশারা করে বোঝালেন যে, হাঁ। আমি সেটি তাঁকে নিয়ে দিলাম। কিন্তু তাঁর কাছে সেটি শক্ত লাগল। বললাম, আমি এটি নরম করে দেব? তিনি মাথার ইশারায় বোঝালেন যে, হাঁ। আমি সেটি নরম করে দিলাম। তিনি সেটি দিয়ে মিসওয়াক করলেন। তাঁর সামনে একটি পাত্রে পানি রাখা ছিল। তিনি সেই পানিতে হাত রেখে তা দ্বারা চেহারা মুছছিলেন আর বলছিলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। নিশ্চয়ই মৃত্যুর যন্ত্রণা আছে। তারপর তিনি হাত বিস্তার করে দিলেন আর বলতে লাগলেন, মহান বন্ধুদের মাঝে। এভাবে তাঁর জান কবজ হয়ে গেল এবং তাঁর হাত ঢলে পড়ল।
(সহীহ বুখারী: ৪৪৪৯, ৪৪৫০, ৪৪৫১; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ৩২২৮২; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা: ৪৬০৪; সহীহ ইবনে হিব্বান ৬৬১৬; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর: ৭৯, ৮০; হাকিম, আল মুস্তাদরাক: ৬৭১৯; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৮২৬)
আরও বিভিন্ন হাদীছে এ কথাগুলো বর্ণিত আছে। এ হাদীছটির দ্বিতীয় বিষয় হল ওফাতকালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দু'আ। তিনি দু'আ করছিলেন- اللهم اغفرلي وارحمني (হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন। আমার প্রতি রহম করুন)। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মা'সুম। তাঁর কোনও গুনাহ ছিল না। তা সত্ত্বেও তিনি এরূপ দু'আ করেছেন। এটা ছিল তাঁর বিনয়। ছিল আল্লাহ তা'আলার প্রতি চরম আত্মনিবেদন। ছিল আল্লাহ তা'আলার প্রতি পরম শ্রদ্ধা-ভক্তি ও তাঁর গৌরব-গরিমার প্রকাশ। এর মাধ্যমে তিনি নিজ উম্মতকেও শিক্ষা দিয়েছেন যে, মৃত্যুকালে আল্লাহ তা'আলার কাছে নিজ গুনাহের জন্য ক্ষমা চাওয়া ও তাঁর রহমতের আশাবাদী থাকা উচিত। যেই মহানবীর কোনও গুনাহ ছিল না আর তা সত্ত্বেও তিনি এভাবে রহমত ও মাগফিরাত কামনা করেছেন, তাঁর উম্মতের জন্য রহমত ও মাগফিরাতের কামনা কতইনা বেশি জরুরি, যখন তারা নানারকম গুনাহ ও পাপাচারে লিপ্ত থাকে।
দু'আটির শেষাংশ হল- وألحقني بالرفيق الأعلى (আমাকে মহান বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে দিন)। الرفيق الأعلى এর দ্বারা যেমন আল্লাহ তা'আলাকে বোঝানো হয়, তেমনি জান্নাত ও জান্নাতের শ্রেষ্ঠতম বাসিন্দা আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামকেও বোঝানো হয়ে থাকে। সিদ্দীক, শহীদ ও সালিহগণও এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَالرَّسُولَ فَأُولَئِكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِينَ وَحَسُنَ أُولَئِكَ رَفِيقًا
'যারা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করবে, তারা সেইসকল লোকের সঙ্গে থাকবে, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন, অর্থাৎ নবীগণ, সিদ্দীকগণ, শহীদগণ ও সালিহগণের সঙ্গে। কতইনা উত্তম সঙ্গী তারা!’ (সূরা নিসা, আয়াত ৬৯)
এ দু'আটি দ্বারা বাহ্যত মনে হয় তিনি মৃত্যু কামনা করেছিলেন। বস্তুত বিষয়টি সেরকম নয়। সাধারণভাবে মৃত্যুকামনা করা উচিত নয়। নিষেধ আছে। তিনি এর দ্বারা আল্লাহ তা'আলার ফয়সালায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি তখন জানতে পেরেছিলেন যে, তাঁর আয়ু শেষ হয়ে গেছে। তাঁর জান কবজের ফয়সালা হয়ে গেছে। তিনি তা জানতে পেরেছিলেন ফিরিশতাদের আগমন দ্বারা। সাধারণ নেককারদেরও মৃত্যুর সময় সুসংবাদ দানকারী ফিরিশতাদের আগমন ঘটে। নবীগণের ক্ষেত্রে তো তা ঘটেই থাকে। এমনকি মৃত্যুর ফিরিশতা এসে নবীগণের কাছে জান কবজের অনুমতিও চেয়ে থাকে। হাদীছ দ্বারা এটা প্রমাণিত। তিনি যে নিজ মৃত্যু সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন তা প্রমাণ হয় এর দ্বারাও যে, তিনি নিজ কন্যা হযরত ফাতিমা যাহরা রাযি.-কে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিলেন, আজকের পর তোমার পিতার আর কোনও কষ্ট নেই। তো যখন মৃত্যুর ফয়সালা হয়ে গেছে এবং জান কবজকারী ফিরিশতাগণও এসে গেছেন, তখন তাঁর জন্য এটাই স্বাভাবিক ছিল যে, তিনি সে ফয়সালায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করবেন এবং পরম বন্ধু আল্লাহ তা'আলা ও আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করবেন। এ দু'আটি দ্বারা তিনি তাই করেছেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছটি দ্বারা উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদীকা রাযি.-এর উচ্চমর্যাদা ও বিশেষত্ব সম্পর্কে ধারণা লাভ হয়।
খ. নবীগণও মানুষ। অপরাপর মানুষের মতো তাঁদেরও রোগ-ব্যাধি হয় এবং তাঁরাও মৃত্যুবরণ করেন।
গ. মৃত্যুকালে আল্লাহ তা'আলার কাছে নিজ গুনাহের জন্য মাগফিরাতের দু'আ করা উচিত এবং তাঁর রহমতের আশাবাদী থাকা উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
বর্ণনাকারী: