আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৪৬- ফাযায়েল ও শামাঈল অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৯১১
আন্তর্জাতিক নং: ২৩৪৯-৫
৩৫. রাসুল (ﷺ) কে সম্মান প্রদর্শন করা, অপ্রয়োজনীয় অথবা এমন বিষয় যার সাথে শরী’আতের বিধি-বিধানের সম্পর্কে নেই এবং যা সংগঠিত হবে না এবং অনুরূপ বিষয়ে অধিক প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকা
৫৯১১। ইউসুফ ইবনে হাম্মাদ মা’নী (রাহঃ) ......... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, লোকেরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে প্রশ্ন করতে লাগল। এমনকি তারা তাঁকে প্রশ্ন করে জর্জরিত করে ফেললো। তখন একদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বের হয়ে এসে মিম্বরে উঠে বললেনঃ আমাকে জিজ্ঞাসা কর, যে কোন বিষয়ে তোমরা আমাকে জিজ্ঞাসা করবে আমি অবশ্যই তোমাদের বর্ণনা করে দেব। লোকেরা একথা শুনে তাঁকে প্রশ্ন করা থেকে মুখ বন্ধ রাখল এবং ঘাবড়িয়ে গেল, না জানি সম্মুখে কোন বিষয় উপস্থিত হয়ে পড়ে!
আনাস (রাযিঃ) বলেন আমি ডানে বাঁয়ে দেখতে লাগলাম। সব মানুষ নিজ নিজ মাথা কাপড়ে ঢেকে কাঁদছিল। তখন মসজিদ থেকে একজন লোক উঠল যাকে ঝগড়া লাগলে তার পিতা ব্যতীত অন্যের দিকে তাকে সম্পর্কিত করা হতো। সে বলল, হে আল্লাহর নবী! কে আমার পিতা? তিনি বললেন, তোমার পিতা হুযাফা।
এরপর উমর (রাযিঃ) উঠে বললেন, আমরা সন্তুষ্টচিত্তে আল্লাহকে রব, ইসলামকে দ্বীন এবং মুহাম্মাদ (ﷺ) কে রাসুল হিসেবে মেনে নিলাম। (আর) আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করি ফিতনার অকল্যাণ থেকে। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেলেনঃ আজকের মতো ভাল এবং মন্দ আমি কখনো দেখি নি। আমার সন্মুখে জান্নাত ও জাহান্নামের চিত্র তুলে ধরা হয়। তাই আমি উভয়টিকে এ দেওয়ালের পাশে দেখতে পাই।
আনাস (রাযিঃ) বলেন আমি ডানে বাঁয়ে দেখতে লাগলাম। সব মানুষ নিজ নিজ মাথা কাপড়ে ঢেকে কাঁদছিল। তখন মসজিদ থেকে একজন লোক উঠল যাকে ঝগড়া লাগলে তার পিতা ব্যতীত অন্যের দিকে তাকে সম্পর্কিত করা হতো। সে বলল, হে আল্লাহর নবী! কে আমার পিতা? তিনি বললেন, তোমার পিতা হুযাফা।
এরপর উমর (রাযিঃ) উঠে বললেন, আমরা সন্তুষ্টচিত্তে আল্লাহকে রব, ইসলামকে দ্বীন এবং মুহাম্মাদ (ﷺ) কে রাসুল হিসেবে মেনে নিলাম। (আর) আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করি ফিতনার অকল্যাণ থেকে। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেলেনঃ আজকের মতো ভাল এবং মন্দ আমি কখনো দেখি নি। আমার সন্মুখে জান্নাত ও জাহান্নামের চিত্র তুলে ধরা হয়। তাই আমি উভয়টিকে এ দেওয়ালের পাশে দেখতে পাই।
بَابُ تَوْقِيرِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَتَرْكِ إِكْثَارِ سُؤَالِهِ عَمَّا لَا ضَرُورَةَ إِلَيْهِ، أَوْ لَا يَتَعَلَّقُ بِهِ تَكْلِيفٌ وَمَا لَا يَقَعُ، وَنَحْوِ ذَلِكَ
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ حَمَّادٍ الْمَعْنِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّاسَ، سَأَلُوا نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَحْفَوْهُ بِالْمَسْأَلَةِ فَخَرَجَ ذَاتَ يَوْمٍ فَصَعِدَ الْمِنْبَرَ فَقَالَ " سَلُونِي لاَ تَسْأَلُونِي عَنْ شَىْءٍ إِلاَّ بَيَّنْتُهُ لَكُمْ " . فَلَمَّا سَمِعَ ذَلِكَ الْقَوْمُ أَرَمُّوا وَرَهِبُوا أَنْ يَكُونَ بَيْنَ يَدَىْ أَمْرٍ قَدْ حَضَرَ . قَالَ أَنَسٌ فَجَعَلْتُ أَلْتَفِتُ يَمِينًا وَشِمَالاً فَإِذَا كُلُّ رَجُلٍ لاَفٌّ رَأْسَهُ فِي ثَوْبِهِ يَبْكِي فَأَنْشَأَ رَجُلٌ مِنَ الْمَسْجِدِ كَانَ يُلاَحَى فَيُدْعَى لِغَيْرِ أَبِيهِ فَقَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ مَنْ أَبِي قَالَ " أَبُوكَ حُذَافَةُ " . ثُمَّ أَنْشَأَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رضى الله عنه فَقَالَ رَضِينَا بِاللَّهِ رَبًّا وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً عَائِذًا بِاللَّهِ مِنْ سُوءِ الْفِتَنِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَمْ أَرَ كَالْيَوْمِ قَطُّ فِي الْخَيْرِ وَالشَّرِّ إِنِّي صُوِّرَتْ لِيَ الْجَنَّةُ وَالنَّارُ فَرَأَيْتُهُمَا دُونَ هَذَا الْحَائِطِ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
তাঁর এবং জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝখান থেকে সমস্ত অন্তরাল সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ফলে জান্নাতের নিআমতরাশি ও জাহান্নামের শাস্তিসমূহ সরাসরি দেখতে পাচ্ছিলেন, যেমনটা মি'রাজের ঘটনার পর তাঁর সম্মুখ থেকে সব আড়াল সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যদ্দরুন তিনি সরাসরি বায়তুল মাকদিস দেখতে পেয়েছিলেন এবং তা দেখে দেখে সকলের সামনে তার বিবরণ দিয়েছিলেন।
তিনি একাধিকবার এভাবে জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখতে পেয়েছেন। বিভিন্ন হাদীছে তা বর্ণিত আছে। যাহোক তিনি জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখে সাহাবায়ে কেরামের সামনে অভিব্যক্তি পেশ করলেন فلم أر كاليوم في الخير والشر (এদিনের মত ভালো ও মন্দ কখনও দেখিনি)। অর্থাৎ জান্নাতের যে নি'আমতরাজি আজ আমি দেখতে পেয়েছি, এমন ভালো কিছু আমি আর কখনও দেখিনি। এমনিভাবে জাহান্নামে যেসব শাস্তির ব্যবস্থা দেখেছি, সেরকম মন্দ কিছুও আর কখনও দেখিনি।
এখানে হাদীসটি সংক্ষিপ্ত আকারে আনা হয়েছে। অন্যান্য বর্ণনায় আরো আছে, তারপর তিনি এই বলে তাদের উপদেশ দিলেন ولو تعلمون ما أعلم ، لضحكتم قليلا ، ولبكيتم كثيرا (তোমরা যদি জানতে যা আমি জানি, তবে অবশ্যই তোমরা কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে)। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা পাপীদের জন্য কী কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছেন, কী কঠিন কিয়ামতের বিভীষিকা এবং কত কঠিন হাশরের ময়ানের পরিস্থিতি, তা আমি যেমনটা জানি তেমনি তোমরাও যদি জানতে, তবে অবশ্যই কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে। এক বর্ণনায় এরপর আছে ولما ساغ لكم الطعام ولا الشراب، ولما نمتم على الفرش، ولهجرتم النساء ولخرجتم إلى الصعدات تجأرون ‘তোমাদের কাছে পানাহার ভালো লাগত না। তোমরা বিছানায় ঘুমাতে পারতে না। তোমরা নারীদের থেকে দূরে থাকতে। তোমরা চিৎকার করতে করতে রাস্তাঘাটে বের হয়ে পড়তে।
আরো আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের উপর এরচে' কঠিন কোনও দিন আর আসেনি। তারা তাদের মাথা ঢেকে ফেলেন এবং ডুকরে কাঁদতে থাকেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ওয়াজ-নসীহতে হাসানো নয়; বরং কাদানোই প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তরিকা।
তিনি একাধিকবার এভাবে জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখতে পেয়েছেন। বিভিন্ন হাদীছে তা বর্ণিত আছে। যাহোক তিনি জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখে সাহাবায়ে কেরামের সামনে অভিব্যক্তি পেশ করলেন فلم أر كاليوم في الخير والشر (এদিনের মত ভালো ও মন্দ কখনও দেখিনি)। অর্থাৎ জান্নাতের যে নি'আমতরাজি আজ আমি দেখতে পেয়েছি, এমন ভালো কিছু আমি আর কখনও দেখিনি। এমনিভাবে জাহান্নামে যেসব শাস্তির ব্যবস্থা দেখেছি, সেরকম মন্দ কিছুও আর কখনও দেখিনি।
এখানে হাদীসটি সংক্ষিপ্ত আকারে আনা হয়েছে। অন্যান্য বর্ণনায় আরো আছে, তারপর তিনি এই বলে তাদের উপদেশ দিলেন ولو تعلمون ما أعلم ، لضحكتم قليلا ، ولبكيتم كثيرا (তোমরা যদি জানতে যা আমি জানি, তবে অবশ্যই তোমরা কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে)। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা পাপীদের জন্য কী কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছেন, কী কঠিন কিয়ামতের বিভীষিকা এবং কত কঠিন হাশরের ময়ানের পরিস্থিতি, তা আমি যেমনটা জানি তেমনি তোমরাও যদি জানতে, তবে অবশ্যই কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে। এক বর্ণনায় এরপর আছে ولما ساغ لكم الطعام ولا الشراب، ولما نمتم على الفرش، ولهجرتم النساء ولخرجتم إلى الصعدات تجأرون ‘তোমাদের কাছে পানাহার ভালো লাগত না। তোমরা বিছানায় ঘুমাতে পারতে না। তোমরা নারীদের থেকে দূরে থাকতে। তোমরা চিৎকার করতে করতে রাস্তাঘাটে বের হয়ে পড়তে।
আরো আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের উপর এরচে' কঠিন কোনও দিন আর আসেনি। তারা তাদের মাথা ঢেকে ফেলেন এবং ডুকরে কাঁদতে থাকেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ওয়াজ-নসীহতে হাসানো নয়; বরং কাদানোই প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তরিকা।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
