আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৪৬- ফাযায়েল ও শামাঈল অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৭৪৩
আন্তর্জাতিক নং: ২২৭৯-২
৩. নবী (ﷺ) এর মু’জিযা প্রসঙ্গে
৫৭৪৩। ইসহাক ইবনে মুসা আনসারী ও আবু তাহির (রাহঃ) ......... আনাস মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে দেখলাম, তখন আসরের নামাযের সময় হয়ে গিয়েছিল আর লোকেরা উযুর পানি খুজছিল কিন্তু তারা তা পেল না। এ সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট কিছু উযুর পানি আনা হল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সে পানির পাত্রে তাঁর হাত মুবারক রেখে দিলেন এবং লোকদের তা থেকে উযু করতে বললেন, রাবী বলেন। আমি দেখলাম, পানি তাঁর অঙ্গুলিসমূহের নিচ থেকে উদ্বেলিত হয়ে বেবিয়ে আসছে। তখন লোকেরা উযু করল, এমন কি তাদের শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত সকলেই উযু করল।
باب فِي مُعْجِزَاتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
وَحَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، ح وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَحَانَتْ صَلاَةُ الْعَصْرِ فَالْتَمَسَ النَّاسُ الْوَضُوءَ فَلَمْ يَجِدُوهُ فَأُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِوَضُوءٍ فَوَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي ذَلِكَ الإِنَاءِ يَدَهُ وَأَمَرَ النَّاسَ أَنْ يَتَوَضَّئُوا مِنْهُ - قَالَ - فَرَأَيْتُ الْمَاءَ يَنْبُعُ مِنْ تَحْتِ أَصَابِعِهِ فَتَوَضَّأَ النَّاسُ حَتَّى تَوَضَّئُوا مِنْ عِنْدِ آخِرِهِمْ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীছটির বর্ণনায় দেখা যাচ্ছে, যাদের বাড়ি মসজিদের কাছে ছিল তারা ওযু করার জন্য বাড়িতে চলে গেলেন। এটাই আদব। বাড়ি মসজিদের কাছে হলে মসজিদের পানির উপর চাপ কমানোর জন্য কিংবা ভিড় কমানোর জন্য নিজ নিজ বাড়িতে চলে যাওয়া চাই। হাঁ, বাড়ি দূর হলে ভিন্ন কথা। এ ঘটনায় উপস্থিত সাহাবীদের অনেকের বাড়ি দূরে ছিল। তারা থেকে গেলেন। তাদের সংখ্যা প্রায় ৮০ জন। মসজিদে পানির অভাব। বরং পানি নেই-ই। বর্তমানকালের মতো তখন মসজিদে পানির স্থায়ী ব্যবস্থা ছিল না। তাহলে তাদের ওযূর ব্যবস্থা কী হবে? এরূপ সংকটমুহূর্তে আল্লাহ আল্লাহ তা'আলা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে অনেক অলৌকিক ঘটনা প্রকাশ করেছেন। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। একটা পাথরের বাটি আনা হল। সেটি খুব ছোট। তাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাত বিছানো যাচ্ছে না। পরের বর্ণনায় আছে, তিনি তাতে নিজ আঙ্গুল রাখলেন আর আঙ্গুলের ফাঁক থেকে ঝর্ণার মতো পানি বের হতে থাকল। পাত্রে পানি ছিল সামান্যই। কিন্তু আঙ্গুলের ফাঁক থেকে পানি বের হতে থাকায় উপস্থিত সকল সাহাবী ওযু করতে পারলেন। তাদের সংখ্যা ছিল ৭০/৮০ জনের মতো।
আল্লাহ তা'আলা নবীদের সত্যতার প্রমাণস্বরূপ অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। তবে দুনিয়া যেহেতু আসবাব-উপকরণের জগৎ, তাই অলৌকিক ঘটনা বা মু'জিযায়ও কিছু না কিছু আসবাব-উপকরণ লাগে। যেমন এ ঘটনায় পাত্রে সামান্য পানি ছিল। একদম শূন্যপাত্র ছিল না। তাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাত রেখেছেন। তারপর আঙ্গুলের ফাঁক থেকে পানি বের হয়েছে। এমন নয় যে, হাত রাখা ছাড়াই সেই পানি বেড়ে গেছে কিংবা শূন্যপাত্র পানিতে ভরে গেছে। তবে এই যে উপকরণের ব্যবহার করতে হয়েছে আর তা সত্ত্বেও এটা মু'জিযা, এটা এ কারণে যে, নবী ছাড়া অন্য কারও দ্বারা এই সামান্য উপকরণ দ্বারা এমন কিছু ঘটানো সম্ভব নয়। হাঁ, জাদু, তেলেসমাতি দ্বারা অনেককিছুই করা হয়ে থাকে। কিন্তু জাদুকরের জাদু ও নবীর মু'জিযার মধ্যে পার্থক্য এমনই সুস্পষ্ট যে, যে-কারও দ্বারা তা ধরা সম্ভব। তাই জাদুকরের জাদুতে কেউ বিভ্রান্ত হয় না। পক্ষান্তরে নবীর মু'জিযা দেখে মানুষ সত্যের পরিচয় পায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. নামাযের সময় হওয়ার আগে ওযু করা জরুরি নয়।
খ. নামাযের সময় হয়ে গেলে পানির সন্ধান করা জরুরি।
গ. কারও কাছে পানি থাকলে তা দ্বারা অন্যদের সেবা করার সুযোগ নেওয়া উচিত।
ঘ. যার বাড়ি মসজিদের কাছে, তার জন্য বাড়ি থেকেই ওযু করে আসা উত্তম।
৪. ওযূতে পাথরের পাত্র ব্যবহার করা জায়েয। অন্যান্য প্রয়োজনেও তা ব্যবহার করা যাবে।
চ. নবীদের মু'জিযা সত্য।
আল্লাহ তা'আলা নবীদের সত্যতার প্রমাণস্বরূপ অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। তবে দুনিয়া যেহেতু আসবাব-উপকরণের জগৎ, তাই অলৌকিক ঘটনা বা মু'জিযায়ও কিছু না কিছু আসবাব-উপকরণ লাগে। যেমন এ ঘটনায় পাত্রে সামান্য পানি ছিল। একদম শূন্যপাত্র ছিল না। তাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাত রেখেছেন। তারপর আঙ্গুলের ফাঁক থেকে পানি বের হয়েছে। এমন নয় যে, হাত রাখা ছাড়াই সেই পানি বেড়ে গেছে কিংবা শূন্যপাত্র পানিতে ভরে গেছে। তবে এই যে উপকরণের ব্যবহার করতে হয়েছে আর তা সত্ত্বেও এটা মু'জিযা, এটা এ কারণে যে, নবী ছাড়া অন্য কারও দ্বারা এই সামান্য উপকরণ দ্বারা এমন কিছু ঘটানো সম্ভব নয়। হাঁ, জাদু, তেলেসমাতি দ্বারা অনেককিছুই করা হয়ে থাকে। কিন্তু জাদুকরের জাদু ও নবীর মু'জিযার মধ্যে পার্থক্য এমনই সুস্পষ্ট যে, যে-কারও দ্বারা তা ধরা সম্ভব। তাই জাদুকরের জাদুতে কেউ বিভ্রান্ত হয় না। পক্ষান্তরে নবীর মু'জিযা দেখে মানুষ সত্যের পরিচয় পায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. নামাযের সময় হওয়ার আগে ওযু করা জরুরি নয়।
খ. নামাযের সময় হয়ে গেলে পানির সন্ধান করা জরুরি।
গ. কারও কাছে পানি থাকলে তা দ্বারা অন্যদের সেবা করার সুযোগ নেওয়া উচিত।
ঘ. যার বাড়ি মসজিদের কাছে, তার জন্য বাড়ি থেকেই ওযু করে আসা উত্তম।
৪. ওযূতে পাথরের পাত্র ব্যবহার করা জায়েয। অন্যান্য প্রয়োজনেও তা ব্যবহার করা যাবে।
চ. নবীদের মু'জিযা সত্য।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
