আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

১৯- জানাযার অধ্যায়

হাদীস নং: ১২৭২
আন্তর্জাতিক নং: ১৩৫৪ - ১৩৫৫
৮৬২. বালক (অপ্রাপ্ত বয়স্ক) ইসলাম প্রহণ করে মারা গেলে তার জন্য জানাযা নামায আদায় করা হবে কি? বালকের নিকট ইসলামের দাওয়াত পেশ করা যাবে কি?
হাসান, শুরাইহ্, ইবরাহীম ও কাতাদা (রাহঃ) বলেছেন, পিতামাতার কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে সন্তান মুসলিম ব্যক্তির সঙ্গে থাকবে।
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) তাঁর মায়ের সাথে ‘মুস্তাযআফীন’ (দুর্বল ও নির্যাতিত জামাআত)-এর অন্তর্ভূক্ত ছিলেন, তাঁকে তাঁর পিতা (আব্বাস) এর সাথে তার কওমের (মুশরিকদের) ধর্মে গণ্য করা হত না।
নবী (ﷺ) ইরশাদ করেছেনঃ ইসলাম বিজয়ী হয়, বিজিত হয় না।
১২৭২। আবদান (রাহঃ) ......... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমর (রাযিঃ) নবী (ﷺ) এর সঙ্গে একটি দলের অন্তর্ভূক্ত হয়ে ইবনে সাইয়াদের (বাড়ীর) দিকে গেলেন। তারা তাকে (ইবনে সাইয়াদকে) বনু মাগালা দূর্গের পাশে অন্যান্য বালকদের সাথে খেলাধূলারত পেলেন। তখন ইবনে সাইয়াদ বালিগ হওয়ার নিকটবর্তী হয়েছিল। সে নবী (ﷺ) এর আগমন অনুভব করার আগেই নবী (ﷺ) তার হাত ধরে ফেললেন। তারপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি সাক্ষ্য দিচ্ছ যে, আমি আল্লাহর রাসূল? ইবনে সাইয়াদ তাঁর দিকে দৃষ্টি করে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি উম্মীদের রাসূল। এরপর সে নবী (ﷺ) কে বলল, আপনি কি সাক্ষ্য দিবেন যে, আমি আল্লাহর রাসূল? তখন নবী (ﷺ) তাকে ছেড়ে দিয়ে বললেনঃ আমি আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছি। তারপর তিনি তাকে (ইবনে সাইয়াদকে) জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি দেখে থাক? ইবনে সাইয়াদ বলল, আমার কাছে সত্যবাদী ও মিথ্যাবাদী আগমন করে থাকে। নবী (ﷺ) ইরশাদ করলেনঃ ব্যাপারটি তোমার কাছে বিভ্রান্তিকর করা হয়েছে। এরপর নবী (ﷺ) তাকে বললেনঃ আমি একটি বিষয়ে তোমার থেকে (আমার মনের মধ্যে) গোপন রেখেছি। (বলতো সেটি কি?) ইবনে সাইয়াদ বলল, তা হচ্ছে, الدُّخُّ “আদ-দুখখু”। তখন তিনি ইরশাদ করলেনঃ তুমি লাঞ্ছিত হও! তুমি কখনো তোমার (জন্য নির্ধারিত) সীমা অতিক্রম করতে পারবে না। তখন উমর (রাযিঃ) বললেন, আমাকে অনুমতি দিন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। নবী (ﷺ) ইরশাদ করলেনঃ যদি সে সে-ই (অর্থাৎ দাজ্জাল) হয়ে থাকে, তা হলে তাকে কাবু করার ক্ষমতা তোমাকে দেওয়া হবে না। আর যদি সে সে-ই (দাজ্জাল) না হয়, তা হলে তাকে হত্যা করার মধ্যে তোমার কোন কল্যাণ নেই।
রাবী সালিম (রাহঃ) বলেন, আমি ইবনে উমর (রাযিঃ) কে বলতে শুনেছি, এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং উবাই ইবনে কা’ব (রাযিঃ) ঐ খেজুর বাগানের দিকে গমন করলেন, যেখানে ইবনে সাইয়াদ ছিল। ইবনে সাইয়াদ তাকে দেখে ফেলার আগেই ইবনে সাইয়াদের কিছু কথা তিনি শুনে নিতে চাচ্ছিলেন। নবী (ﷺ) তাকে একটি চাঁদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকতে দেখলেন। যার ভিতর থেকে তার গুনগুন আওয়াজ** শোনা যাচ্ছিল। ইবনে সাইয়াদের মা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে দেখতে পেল যে, তিনি খেজুর (গাছের) কান্ডের আড়ালে আত্মগোপন করে চলেছেন। সে তখন ইবনে সাইয়াদকে ডেকে বলল, ও সাফ! (এটি ইবনে সাইয়াদের ডাক নাম)। এই যে মুহাম্মাদ (ﷺ), তখন ইবনে সাইয়াদ লাফিয়ে উঠল। নবী (ﷺ) ইরশাদ করলেনঃ সে (ইবনে সাইয়াদের মা) তাকে (যথাবস্থায়) থাকতে দিলে (ব্যাপারটি) স্পষ্ট হয়ে যেতো।
শুআইব (রাহঃ) তাঁর হাদীসে فَرَفَصَهُ বলেন, এবং সন্দেহের সাথে বলেন, رَمْرَمَةٌ অথবা زَمْزَمَةٌ এবং উকাইল (রাহঃ) বলেছন, رَمْرَمَةٌ আর মা’মার বলেছেন رَمْزَةٌ।

** زَمْزَمَةٌ , رَمْرَمَةٌ , رَمْزَةٌ শব্দগুলো সমার্থবোধক। অর্থাৎ অস্পষ্ট ও গুনগুন শব্দ।
باب إِذَا أَسْلَمَ الصَّبِيُّ فَمَاتَ هَلْ يُصَلَّى عَلَيْهِ وَهَلْ يُعْرَضُ عَلَى الصَّبِيِّ الإِسْلاَمُ وَقَالَ الْحَسَنُ وَشُرَيْحٌ وَإِبْرَاهِيمُ وَقَتَادَةُ إِذَا أَسْلَمَ أَحَدُهُمَا فَالْوَلَدُ مَعَ الْمُسْلِمِ. وَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا مَعَ أُمِّهِ مِنَ الْمُسْتَضْعَفِينَ، وَلَمْ يَكُنْ مَعَ أَبِيهِ عَلَى دِينِ قَوْمِهِ. وَقَالَ الإِسْلاَمُ يَعْلُو وَلاَ يُعْلَى
1354 - حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَخْبَرَهُ أَنَّ عُمَرَ انْطَلَقَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي رَهْطٍ قِبَلَ ابْنِ صَيَّادٍ، حَتَّى وَجَدُوهُ يَلْعَبُ مَعَ الصِّبْيَانِ عِنْدَ أُطُمِ بَنِي مَغَالَةَ، وَقَدْ قَارَبَ ابْنُ صَيَّادٍ الحُلُمَ، فَلَمْ يَشْعُرْ حَتَّى ضَرَبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ، ثُمَّ قَالَ لِابْنِ صَيَّادٍ: «تَشْهَدُ أَنِّي رَسُولُ اللَّهِ؟» ، فَنَظَرَ إِلَيْهِ ابْنُ صَيَّادٍ، فَقَالَ: أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُولُ الأُمِّيِّينَ، فَقَالَ ابْنُ صَيَّادٍ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:94]: أَتَشْهَدُ أَنِّي رَسُولُ اللَّهِ؟ فَرَفَضَهُ وَقَالَ: «آمَنْتُ بِاللَّهِ وَبِرُسُلِهِ» فَقَالَ لَهُ: «مَاذَا تَرَى؟» قَالَ ابْنُ صَيَّادٍ: يَأْتِينِي صَادِقٌ وَكَاذِبٌ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خُلِّطَ عَلَيْكَ الأَمْرُ» ثُمَّ قَالَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي قَدْ خَبَأْتُ لَكَ خَبِيئًا» فَقَالَ ابْنُ صَيَّادٍ: هُوَ الدُّخُّ، فَقَالَ: «اخْسَأْ، فَلَنْ تَعْدُوَ قَدْرَكَ» فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: دَعْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ أَضْرِبْ عُنُقَهُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنْ يَكُنْهُ فَلَنْ تُسَلَّطَ عَلَيْهِ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْهُ فَلاَ خَيْرَ لَكَ فِي قَتْلِهِ»
1355 - وَقَالَ سَالِمٌ: سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا يَقُولُ: انْطَلَقَ بَعْدَ ذَلِكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ إِلَى النَّخْلِ الَّتِي فِيهَا ابْنُ صَيَّادٍ، وَهُوَ يَخْتِلُ أَنْ يَسْمَعَ مِنْ ابْنِ صَيَّادٍ شَيْئًا قَبْلَ أَنْ يَرَاهُ ابْنُ صَيَّادٍ، فَرَآهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ مُضْطَجِعٌ - يَعْنِي فِي قَطِيفَةٍ لَهُ فِيهَا رَمْزَةٌ أَوْ زَمْرَةٌ - فَرَأَتْ أمُّ ابْنِ صَيّادٍ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَهُوَ يَتَّقِي بِجُذُوعِ النَّخْلِ، فَقَالَتْ لِابْنِ صَيَّادٍ: يَا صَافِ - وَهُوَ اسْمُ ابْنِ صَيَّادٍ - هَذَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَثَارَ ابْنُ صَيَّادٍ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ تَرَكَتْهُ بَيَّنَ» ، وَقَالَ شُعَيْبٌ فِي حَدِيثِهِ: فَرَفَصَهُ رَمْرَمَةٌ - أَوْ زَمْزَمَةٌ - وَقَالَ إِسْحَاقُ الكَلْبِيُّ، وَعُقَيْلٌ: رَمْرَمَةٌ، وَقَالَ مَعْمَرٌ: رَمْزَةٌ
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)