আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৩৯- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৪৪৯
আন্তর্জাতিক নং: ২১৫৪-২
৮. অনুমতি গ্রহণ প্রসঙ্গে
৫৪৪৯। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আবান (রাহঃ) ......... তালহা ইবনে ইয়াহয়া (রাহঃ) থেকে এ সনদে রিওয়ায়াত করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, উমর (রাযিঃ) (উবাইকে লক্ষ্য করে) বললেন, হে আবুল মুনযির আপনি কি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে একথা শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তবে, হে ইবনে খাত্তাব! আপনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাহাবীদের জন্য আযাব স্বরূপ হবেন না। কিন্তু উমর (রাযিঃ) এর সুবহানাল্লাহ ও পরবর্তী উক্তি উল্লেখ করেননি।
باب الاِسْتِئْذَانِ
وَحَدَّثَنَاهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ أَبَانٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ هَاشِمٍ، عَنْ طَلْحَةَ، بْنِ يَحْيَى بِهَذَا الإِسْنَادِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ فَقَالَ يَا أَبَا الْمُنْذِرِ آنْتَ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ نَعَمْ فَلاَ تَكُنْ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ عَذَابًا عَلَى أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . وَلَمْ يَذْكُرْ مِنْ قَوْلِ عُمَرَ سُبْحَانَ اللَّهِ . وَمَا بَعْدَهُ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

বস্তুত এটা ছিল হযরত উমর ফারুক রাযি.-এর দূরদর্শীতা ও হাদীছ বিষয়ে তাঁর কঠোর সতর্কতা। হযরত আবূ মূসা রাযি.-এর বিশ্বস্ততায় তাঁর কোনও সন্দেহ ছিল না। কিন্তু হাদীছ যেহেতু শরী'আতের দলীল, তাই এর বর্ণনায় যাতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয় সেটাই ছিল তাঁর লক্ষ্যবস্তু। তাঁর আমলে তিনি ছিলেন সমগ্র উম্মতের অভিভাবক। তাই উম্মতের দীন ও দুনিয়া উভয় বিষয়ে তাঁর সতর্ক অবস্থান বাঞ্ছনীয় ছিল। বিশেষত এ শরী'আত যেহেতু সর্বশেষ শরী'আত, তাই কিয়ামত পর্যন্ত এর সুরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা উম্মতের উলামা ও শাসকবর্গের অপরিহার্য কর্তব্য ছিল। সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু করে পরবর্তী শত শত বছর উম্মতের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ এ কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে এসেছে। ফলে আজ এ আখেরী শরী'আত ও এর উৎস কুরআন-সুন্নাহ যথাযথভাবে সংরক্ষিত আছে।

যাহোক অনুমতি চাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা হল তিনবার। তিনবারের পর আর অনুমতি চাওয়া সঙ্গত নয়। এটা পীড়াপীড়ির মধ্যে পড়ে। কাউকে পীড়াপীড়ি করে কষ্ট দেওয়া উচিত না। অনুমতি চাইলে যে অনুমতি দিতেই হবে এর কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। মানুষের নানারকম ওজর থাকতে পারে। হয়তো এমন সময় অনুমতি চাওয়া হয়েছে, যখন অনুমতি দেওয়াটা সম্ভব নয়। তা দিতে গেলে বিশেষ কষ্ট বা পেরেশানি হবে। সাক্ষাৎপ্রার্থীর উচিত মানুষের কষ্ট-ক্লেশ বা ওজর-অজুহাতকে সম্মান দেওয়া এবং অনুমতি না পাওয়াকে সহজভাবে গ্রহণ করা। হাঁ, সাক্ষাৎপ্রার্থীর প্রয়োজনও বিশেষ জরুরি হতে পারে। তাই যথাসম্ভব অনুমতি দেওয়া বাঞ্ছনীয়। কঠিন ওজর না থাকলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া সঙ্গত নয়।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে আগে অনুমতি নেওয়া জরুরি।

খ. অনুমতি চাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা তিনবার। তৃতীয়বারেও অনুমতি পাওয়া না গেলে ফিরে যেতে হবে। চতুর্থ বার অনুমতি চাওয়া বিধিসম্মত নয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)