আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৩৯- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৪৪৩
আন্তর্জাতিক নং: ২১৫৩-৩
৮. অনুমতি গ্রহণ প্রসঙ্গে
৫৪৪৩। আবু তাহির (রাহঃ) ......... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা উবাই ইবনে কা’ব (রাযিঃ) এর কাছে একটি মজলিসে ছিলাম। তখন আবু মুসা আশআরী (রাযিঃ) রাগান্বিত অবস্থায় এসে দাঁড়িয়ে বললেন, আমি তোমাদের আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, তোমাদের মধ্যে কেউ কি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছ যে, ‘অনুমতি গ্রহণ’ তিনবার, তাতে যদি তোমাকে অনুমতি দেওয়া হয়, ভাল, অন্যথায় তুমি ফিরে আস।
উবাই (রাযিঃ) বললেন এতে কী হয়েছে? তিনি বললেন, গতকাল (খলীফা) উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) এর কাছে আমি তিনবার অনুমতি চাইলাম। আমাকে অনুমতি দেওয়া হলো না, তাই আমি ফিরে এলাম। পরে আজ তাঁর কাছে গেলাম এবং তার কাছে প্রবেশ করে তাঁকে খবর দিলাম যে, আমি গতকাল এসেছিলাম এবং তিনবার সালাম করে (জবাব না পেয়ে) ফিরে গিয়েছিলাম। তিনি বললেন, আমরা তোমার আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলাম, তবে তখন আমরা ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু তোমাকে অনুমতি দেওয়া পর্যন্ত তুমি অনুমতি চাইতে থাকলে না কেন? তিনি বললেন, আমি তো তেমন অনুমতি চেয়েছি, যেমন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি।
উমর (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! তোমর পিঠে ও পেটে আঘাত করব; কিংবা তুমি এমন লোক উপস্থিত করবে, যে এ বিষয়ে তোমার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। তখন উবাই ইবনে কা’ব (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমাদের সবচে তরুণ বয়সের ব্যক্তি তোমার সাথে যাবে। হে আবু সাঈদ! উঠ, তখন আমি দাঁড়ালাম এবং উমর (রাযিঃ) এর কাছে এসে বললাম, আমি অবশ্যই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে একথা বলতে শুনেছি।
উবাই (রাযিঃ) বললেন এতে কী হয়েছে? তিনি বললেন, গতকাল (খলীফা) উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) এর কাছে আমি তিনবার অনুমতি চাইলাম। আমাকে অনুমতি দেওয়া হলো না, তাই আমি ফিরে এলাম। পরে আজ তাঁর কাছে গেলাম এবং তার কাছে প্রবেশ করে তাঁকে খবর দিলাম যে, আমি গতকাল এসেছিলাম এবং তিনবার সালাম করে (জবাব না পেয়ে) ফিরে গিয়েছিলাম। তিনি বললেন, আমরা তোমার আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলাম, তবে তখন আমরা ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু তোমাকে অনুমতি দেওয়া পর্যন্ত তুমি অনুমতি চাইতে থাকলে না কেন? তিনি বললেন, আমি তো তেমন অনুমতি চেয়েছি, যেমন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি।
উমর (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! তোমর পিঠে ও পেটে আঘাত করব; কিংবা তুমি এমন লোক উপস্থিত করবে, যে এ বিষয়ে তোমার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। তখন উবাই ইবনে কা’ব (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমাদের সবচে তরুণ বয়সের ব্যক্তি তোমার সাথে যাবে। হে আবু সাঈদ! উঠ, তখন আমি দাঁড়ালাম এবং উমর (রাযিঃ) এর কাছে এসে বললাম, আমি অবশ্যই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে একথা বলতে শুনেছি।
باب الاِسْتِئْذَانِ
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ بُكَيْرِ بْنِ الأَشَجِّ، أَنَّ بُسْرَ بْنَ سَعِيدٍ، حَدَّثَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، يَقُولُ كُنَّا فِي مَجْلِسٍ عِنْدَ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ فَأَتَى أَبُو مُوسَى الأَشْعَرِيُّ مُغْضَبًا حَتَّى وَقَفَ فَقَالَ أَنْشُدُكُمُ اللَّهَ هَلْ سَمِعَ أَحَدٌ مِنْكُمْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " الاِسْتِئْذَانُ ثَلاَثٌ فَإِنْ أُذِنَ لَكَ وَإِلاَّ فَارْجِعْ " . قَالَ أُبَىٌّ وَمَا ذَاكَ قَالَ اسْتَأْذَنْتُ عَلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ أَمْسِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ فَلَمْ يُؤْذَنْ لِي فَرَجَعْتُ ثُمَّ جِئْتُهُ الْيَوْمَ فَدَخَلْتُ عَلَيْهِ فَأَخْبَرْتُهُ أَنِّي جِئْتُ أَمْسِ فَسَلَّمْتُ ثَلاَثًا ثُمَّ انْصَرَفْتُ قَالَ قَدْ سَمِعْنَاكَ وَنَحْنُ حِينَئِذٍ عَلَى شُغْلٍ فَلَوْ مَا اسْتَأْذَنْتَ حَتَّى يُؤْذَنَ لَكَ قَالَ اسْتَأْذَنْتُ كَمَا سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَوَاللَّهِ لأُوجِعَنَّ ظَهْرَكَ وَبَطْنَكَ . أَوْ لَتَأْتِيَنَّ بِمَنْ يَشْهَدُ لَكَ عَلَى هَذَا . فَقَالَ أُبَىُّ بْنُ كَعْبٍ فَوَاللَّهِ لاَ يَقُومُ مَعَكَ إِلاَّ أَحْدَثُنَا سِنًّا قُمْ يَا أَبَا سَعِيدٍ . فَقُمْتُ حَتَّى أَتَيْتُ عُمَرَ فَقُلْتُ قَدْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ هَذَا .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
বস্তুত এটা ছিল হযরত উমর ফারুক রাযি.-এর দূরদর্শীতা ও হাদীছ বিষয়ে তাঁর কঠোর সতর্কতা। হযরত আবূ মূসা রাযি.-এর বিশ্বস্ততায় তাঁর কোনও সন্দেহ ছিল না। কিন্তু হাদীছ যেহেতু শরী'আতের দলীল, তাই এর বর্ণনায় যাতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয় সেটাই ছিল তাঁর লক্ষ্যবস্তু। তাঁর আমলে তিনি ছিলেন সমগ্র উম্মতের অভিভাবক। তাই উম্মতের দীন ও দুনিয়া উভয় বিষয়ে তাঁর সতর্ক অবস্থান বাঞ্ছনীয় ছিল। বিশেষত এ শরী'আত যেহেতু সর্বশেষ শরী'আত, তাই কিয়ামত পর্যন্ত এর সুরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা উম্মতের উলামা ও শাসকবর্গের অপরিহার্য কর্তব্য ছিল। সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু করে পরবর্তী শত শত বছর উম্মতের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ এ কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে এসেছে। ফলে আজ এ আখেরী শরী'আত ও এর উৎস কুরআন-সুন্নাহ যথাযথভাবে সংরক্ষিত আছে।
যাহোক অনুমতি চাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা হল তিনবার। তিনবারের পর আর অনুমতি চাওয়া সঙ্গত নয়। এটা পীড়াপীড়ির মধ্যে পড়ে। কাউকে পীড়াপীড়ি করে কষ্ট দেওয়া উচিত না। অনুমতি চাইলে যে অনুমতি দিতেই হবে এর কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। মানুষের নানারকম ওজর থাকতে পারে। হয়তো এমন সময় অনুমতি চাওয়া হয়েছে, যখন অনুমতি দেওয়াটা সম্ভব নয়। তা দিতে গেলে বিশেষ কষ্ট বা পেরেশানি হবে। সাক্ষাৎপ্রার্থীর উচিত মানুষের কষ্ট-ক্লেশ বা ওজর-অজুহাতকে সম্মান দেওয়া এবং অনুমতি না পাওয়াকে সহজভাবে গ্রহণ করা। হাঁ, সাক্ষাৎপ্রার্থীর প্রয়োজনও বিশেষ জরুরি হতে পারে। তাই যথাসম্ভব অনুমতি দেওয়া বাঞ্ছনীয়। কঠিন ওজর না থাকলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া সঙ্গত নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে আগে অনুমতি নেওয়া জরুরি।
খ. অনুমতি চাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা তিনবার। তৃতীয়বারেও অনুমতি পাওয়া না গেলে ফিরে যেতে হবে। চতুর্থ বার অনুমতি চাওয়া বিধিসম্মত নয়।
যাহোক অনুমতি চাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা হল তিনবার। তিনবারের পর আর অনুমতি চাওয়া সঙ্গত নয়। এটা পীড়াপীড়ির মধ্যে পড়ে। কাউকে পীড়াপীড়ি করে কষ্ট দেওয়া উচিত না। অনুমতি চাইলে যে অনুমতি দিতেই হবে এর কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। মানুষের নানারকম ওজর থাকতে পারে। হয়তো এমন সময় অনুমতি চাওয়া হয়েছে, যখন অনুমতি দেওয়াটা সম্ভব নয়। তা দিতে গেলে বিশেষ কষ্ট বা পেরেশানি হবে। সাক্ষাৎপ্রার্থীর উচিত মানুষের কষ্ট-ক্লেশ বা ওজর-অজুহাতকে সম্মান দেওয়া এবং অনুমতি না পাওয়াকে সহজভাবে গ্রহণ করা। হাঁ, সাক্ষাৎপ্রার্থীর প্রয়োজনও বিশেষ জরুরি হতে পারে। তাই যথাসম্ভব অনুমতি দেওয়া বাঞ্ছনীয়। কঠিন ওজর না থাকলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া সঙ্গত নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে আগে অনুমতি নেওয়া জরুরি।
খ. অনুমতি চাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা তিনবার। তৃতীয়বারেও অনুমতি পাওয়া না গেলে ফিরে যেতে হবে। চতুর্থ বার অনুমতি চাওয়া বিধিসম্মত নয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: