আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৩৮- পোশাক-পরিচ্ছদ ও সাজসজ্জা সংক্রান্ত অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৩২৬
আন্তর্জাতিক নং: ২১০০-১
১৮. ’ইশতিমালে সাম্মা’ (সমস্ত দেহ একটি কাপড় দ্বারা এমনভাবে পেঁচিয়ে রাখা যাতে হাত বের করাও দুস্কর হয়) ও ইহতিবা (গুপ্তাঙ্গের কিয়দংশ অনাবৃত হয়ে যাতে পারে এমনভাবে এক কাপড়ে গুটি মেরে বসার) নিষেধাজ্ঞা এবং এক পায়ের উপর অপর পা রেখে চিৎ হয়ে শোয়ার বিধান সম্বন্ধে
৫৩২৬। ইয়াহয়া ইবনে ইয়াহয়া (রাহঃ) ......... আব্বাদ ইবনে তামীম (রাহঃ) এর চাচা থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে মসজিদে চিৎ হয়ে শোয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অপর পা তুলে রাখতে দেখেছেন।
باب النهى عن اشتمال الصماء والاحتباء فى ثوب واحد كاشفا بعض عورته وحكم الاستلقاء على ظهره رافعا إحدى رجليه على الأخرى
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، أَنَّهُ رَأَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُسْتَلْقِيًا فِي الْمَسْجِدِ وَاضِعًا إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الأُخْرَى .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে দেখা যাচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে এভাবে চিত হয়ে শুয়েছিলেন যে, তাঁর এক পা অন্য পায়ের উপর রাখা ছিল। এর দ্বারা বোঝা যায় এভাবে শোওয়ায় কোনও দোষ নেই। কিন্তু অপর এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়াসাল্লাম এভাবে শুইতে নিষেধ করেছেন। যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لَا يَسْتَلْقِيَنَّ أَحَدُكُمْ ثُمَّ يَضَعُ إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى
'তোমাদের কেউ যেন চিত হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা না রাখে’।
(সহীহ মুসলিম : ২০৯৯; সুনানে আবূ দাউদ: ৪৮৬৫; জামে' তিরমিযী : ২৭৬৬; মুসনাদুল বাযযার: ৪৬৮৪; মুসনাদে আবু ইয়া'লা: ২১৮১; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৯০৫৯; হাকিম, আল মুস্তাদরাক: ৭৭০১)
এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যাচ্ছে চিত হয়ে শোওয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা যাবে না। সুতরাং উভয় হাদীছকে পরস্পরবিরোধী মনে হয়। প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নেই। কেননা চিত হয়ে শোওয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা নিষেধ তখন, যখন হাঁটু খাড়া থাকে। কারণ হাঁটু দাঁড় করিয়ে এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে উভয় পা যদি সোজা করে বিছানো থাকে, তবে সে অবস্থায় এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খোলার কোনও আশঙ্কা থাকে না। তাই সে অবস্থায় চিত হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা নিষেধ নয়। মোটকথা দুই হাদীছের সম্পর্ক দুই অবস্থার সঙ্গে। সে হিসেবে উভয়ের মধ্যে কোনও বিরোধ থাকে না। উল্লেখ্য, হাঁটু দাঁড় করানো অবস্থায় এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খোলার আশঙ্কা থাকে তখন, যখন পরিধানে লুঙ্গি থাকে। পক্ষান্তরে পরিধানে যদি পায়জামা থাকে, তবে সতর খোলার আশঙ্কা থাকে না। সে ক্ষেত্রে হাঁটু দাঁড় করানো অবস্থায়ও এক পায়ের উপর আরেক পা রাখা নিষেধ হবে না।
বোঝা গেল অন্যের সামনে সতর ঢেকে রাখা জরুরি। পোশাক পরিধানের মূল উদ্দেশ্যই সতর ঢাকা। তাই শয়ন, জাগরণ, চলাফেরা, ওঠাবসা সর্বাবস্থায় এদিকে লক্ষ রাখা চাই। এমন কোনওভাবে পোশাক পরতে নেই বা এমন কোনও অঙ্গভঙ্গি অবলম্বন করতে নেই, যাতে অন্যের সামনে সতর বের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ইসলামে সতর ঢাকার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোনও অবস্থায়ই যাতে অন্যের সামনে সতর উন্মুক্ত হয়ে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখা একান্ত কর্তব্য।
খ. শোওয়া ও ঘুমন্ত অবস্থায় সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ সময় সতরের বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন খুব বেশি।
لَا يَسْتَلْقِيَنَّ أَحَدُكُمْ ثُمَّ يَضَعُ إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى
'তোমাদের কেউ যেন চিত হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা না রাখে’।
(সহীহ মুসলিম : ২০৯৯; সুনানে আবূ দাউদ: ৪৮৬৫; জামে' তিরমিযী : ২৭৬৬; মুসনাদুল বাযযার: ৪৬৮৪; মুসনাদে আবু ইয়া'লা: ২১৮১; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৯০৫৯; হাকিম, আল মুস্তাদরাক: ৭৭০১)
এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যাচ্ছে চিত হয়ে শোওয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা যাবে না। সুতরাং উভয় হাদীছকে পরস্পরবিরোধী মনে হয়। প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নেই। কেননা চিত হয়ে শোওয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা নিষেধ তখন, যখন হাঁটু খাড়া থাকে। কারণ হাঁটু দাঁড় করিয়ে এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে উভয় পা যদি সোজা করে বিছানো থাকে, তবে সে অবস্থায় এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খোলার কোনও আশঙ্কা থাকে না। তাই সে অবস্থায় চিত হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা নিষেধ নয়। মোটকথা দুই হাদীছের সম্পর্ক দুই অবস্থার সঙ্গে। সে হিসেবে উভয়ের মধ্যে কোনও বিরোধ থাকে না। উল্লেখ্য, হাঁটু দাঁড় করানো অবস্থায় এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খোলার আশঙ্কা থাকে তখন, যখন পরিধানে লুঙ্গি থাকে। পক্ষান্তরে পরিধানে যদি পায়জামা থাকে, তবে সতর খোলার আশঙ্কা থাকে না। সে ক্ষেত্রে হাঁটু দাঁড় করানো অবস্থায়ও এক পায়ের উপর আরেক পা রাখা নিষেধ হবে না।
বোঝা গেল অন্যের সামনে সতর ঢেকে রাখা জরুরি। পোশাক পরিধানের মূল উদ্দেশ্যই সতর ঢাকা। তাই শয়ন, জাগরণ, চলাফেরা, ওঠাবসা সর্বাবস্থায় এদিকে লক্ষ রাখা চাই। এমন কোনওভাবে পোশাক পরতে নেই বা এমন কোনও অঙ্গভঙ্গি অবলম্বন করতে নেই, যাতে অন্যের সামনে সতর বের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ইসলামে সতর ঢাকার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোনও অবস্থায়ই যাতে অন্যের সামনে সতর উন্মুক্ত হয়ে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখা একান্ত কর্তব্য।
খ. শোওয়া ও ঘুমন্ত অবস্থায় সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ সময় সতরের বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন খুব বেশি।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: