আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৩৭- পানাহার ও পানীয় দ্রব্যাদীর বিবরণ

হাদীস নং: ৫১৩৭
১৮. মেযবানের দাওয়াত ছাড়াই যদি কেউ মাহমানের অনুগামী হয়, তবে মেহমান কি করবে? অনুগমনকারীর জন্য মেযবান থেকে অনুমতি নেয়া মুস্তাহাব
৫১৩৭। আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা, ইসহাক ইবনে ইবরাহীম, নসর ইবনে আলী জাহযামী, আবু সাঈদ আশাজ্জ, উবাইদুল্লাহ ইবনে মুআয ও আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমান দারিমী (রাহঃ) ......... আবু মাসউদ (রাযিঃ) এর সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে জারীর (রাযিঃ) এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন।

নসর ইবনে আলী এই হাদীসে তাঁর বর্ণনায় বলেন, আবু উসামা (রাহঃ) আ’মাশ (রাহঃ) শাকীক ইবনে সালামা (রাহঃ) এবং আবু মাসউদ আনসারী (রাযিঃ) এ সূত্র পরম্পরায় তিনি হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
باب مَا يَفْعَلُ الضَّيْفُ إِذَا تَبِعَهُ غَيْرُ مَنْ دَعَاهُ صَاحِبُ الطَّعَامِ وَاسْتِحْبَابُ إِذْنِ صَاحِبِ الطَّعَامِ لِلتَّابِعِ
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ أَبِي مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَاهُ نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، وَأَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، ح وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، ح وَحَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ سُفْيَانَ، كُلُّهُمْ عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، بِهَذَا الْحَدِيثِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِنَحْوِ حَدِيثِ جَرِيرٍ . قَالَ نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ فِي رِوَايَتِهِ لِهَذَا الْحَدِيثِ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا شَقِيقُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مَسْعُودٍ، الأَنْصَارِيُّ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এক বর্ণনা দ্বারা জানা যায়, দাওয়াতদাতা ছিলেন হযরত আবূ শু‘আয়ব রাযি.। এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যায়, দাওয়াতপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিজ ইচ্ছামতো কাউকে সঙ্গে নিয়ে দাওয়াতের খাবারে শরীক করাতে পারবে না। কেউ তার সঙ্গে গেলে বা নিজ ইচ্ছায় কাউকে নিয়ে গেলে গৃহকর্তার অনুমতি নিতে হবে। গৃহকর্তা অনুমতি দিলে সে খেতে পারবে, অন্যথায় নয়। অতিথি ব্যস অতিথিই। সে খাবারের মালিক নয় যে, যাকে ইচ্ছা তাকে খাওয়াবে। তার সামনে যে খাবার পরিবেশন করা হয়, তা থেকে কেবল সে নিজেই খেতে পারবে। গৃহকর্তার পক্ষ থেকে তার জন্য কেবল খাওয়ারই অনুমতি থাকে, দান করার নয়। অনেকে দাওয়াতের খানা নিজ ইচ্ছামতো সঙ্গে করে নিয়েও যায়। গৃহকর্তার অনুমতি ছাড়া এটা কিছুতেই জায়েয নয়।

প্রকাশ থাকে যে, যাকে দাওয়াত করা হয়, সাধারণ নিয়ম অনুসারে দাওয়াতে সে একাই যেতে পারে। সঙ্গে অন্য কাউকে নিতে পারে না। তবে হাঁ, দাওয়াতদাতার সঙ্গে যদি তার ঘনিষ্ঠতা থাকে এবং বুঝতে পারে সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠ কাউকে নিয়ে গেলে তাতে সে নারাজ হবে না; বরং খুশিই হবে, তবে এ অবস্থায় সেরকম কাউকে সঙ্গে নেওয়া যাবে। এক বর্ণনায় আছে, একবার এক দর্জির দাওয়াতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আনাস রাযি.-কে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. মানুষকে দাওয়াত করে খাওয়ানো সুন্নত।

খ. যারা খুশিমনে দাওয়াত দেয়, তাদের দাওয়াত কবুল করা উচিত।

গ. দাওয়াতী মেহমানের সঙ্গে অতিরিক্ত কেউ গেলে তার কর্তব্য গৃহকর্তার কাছে তার জন্য অনুমতি চাওয়া।

ঘ. দাওয়াতী মেহমানের সঙ্গে অতিরিক্ত কেউ আসলে এবং তার জন্য অনুমতি চাওয়া হলে গৃহকর্তার তা মঞ্জুর করা উচিত।

ঙ. দাওয়াতদাতা সাধারণ পর্যায়ের কেউ হলে তার দাওয়াত অবজ্ঞা করা উচিত নয়।

চ. দাওয়াতের খাবার মেহমানের জন্য কেবল খাওয়ারই অনুমতি থাকে, দান করার বা সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়ার নয়। তাই বিনা অনুমতিতে এটা করা যাবে না।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
সহীহ মুসলিম - হাদীস নং ৫১৩৭ | মুসলিম বাংলা